Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

চায়ের পেয়ালায় ঝড়?

সোমনাথ মুখোপাধ্যায়

 

আমাদের বাড়ির ঠিক উল্টোদিকে থাকেন স্বপনদা, স্বপন কুমার বোস। একসময় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কাজ করতেন। এখন অবশ্য আমার মতোই অবসরপ্রাপ্ত মানুষ। মেজাজের বিচারে খুব দাপুটে মানুষ। এমন ঘোলাটে সময়েও যথাসম্ভব স্পষ্ট কথা বলতে ভালবাসেন। তাতে অবশ্য আশেপাশের লোকজন, মায় বাড়ির একান্ত পরিজনরাও, তাঁকে খানিকটা এড়িয়েই চলে। পত্নীবিয়োগের পর অনেকটাই মিইয়ে গেছেন এই মানুষটি। বয়স বাহাত্তরের ওপর হলে কী হবে, এখনও নিজের প্রয়োজনের টুকিটাকি কাজ নিজেই পরিপাটিভাবে করতে পারেন।

আজ‌কেও তেমনটাই করছিলেন। ইলেকট্রিক কেটলিতে জল গরম করে তাতে টি-ব্যাগ ডুবিয়ে দিয়ে অপেক্ষা করছিলেন লিকারের পছন্দসই রং আসার। কড়া ধাতের মানুষ, তাই কড়া লিকারের চা তাঁর পছন্দের। স্বপনদা দোতলার বারান্দায় বসে একমনে দিনের প্রথমবারের মতো চায়ে চুমুক দেওয়ার তোড়জোড় করছিলেন, আর আমি নিচে কল থেকে বালতিতে জল ভরতে ভরতে তৃষিত নজরে তাঁকে লক্ষ করছিলাম। প্রতিদিন এমন অবস্থানে থেকেই আমাদের কথোপকথনের প্রভাতী পর্বটি শুরু হয়। সারাদিন ধরে বেশ কয়েকবার এমন কথালাপের পর্বটি চলে। ভরা বালতি নিয়ে ঘরে ঢুকতে ঢুকতে আমি হাঁক পাড়ি— গুডমর্নিং স্বপনদা। চায়ের পেয়ালায় আয়েশি চুমুক দিতে দিতে স্বপনদাও প্রত্যুত্তরে বলেন— ভেরি গুড মর্নিং। আমার চা-পানের পর্বটি শুরু হতে তখনও খানিকটা বিলম্ব আছে। তাই স্বপনদার গরম চায়ের পেয়ালার কথা ভাবতে থাকি একমনে। অবশ্য এর মধ্যেই একরাশ প্রশ্ন এসে মাথায় কিলবিল করতে থাকে। আচ্ছা, অমন ব্যাগে ভরা পাতায় তৈরি চায়ের সোয়াদ কেমন? ওই চাপাতা-ভরা ছোট্ট ছোট্ট ব্যাগগুলো কী দিয়ে তৈরি? ওই ব্যাগ থেকে আবার কোনও শরীরী বিপদের আশঙ্কা নেই তো?

এই বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে আমাদের একেবারে শুরুতেই জেনে নিতে হবে চা-পিপাসুদের জন্য ঠিক কবে থেকে এই বিশেষ ধরনের ব্যাগের প্রচলন করা হল? আজ যে বুনো ভেষজ উদ্ভিদের পাতা গরম জলে ভিজিয়ে মৃদু উত্তেজক এবং বলবর্ধক পানীয় হিসেবে সারা দুনিয়া জুড়েই পান করা হয় সেই ক্যামেলিয়া সিনেনসিস্-এর জন্মভূমি আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র চিনে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে আজ থেকে ৫০০০ বছর আগেও এই উদ্ভিদের গুণাগুণ সম্পর্কে ভারতীয় ভেষজ বিজ্ঞানীরা অবহিত ছিলেন। তবে চিন থেকে কীভাবে এই জংলি ভেষজ উদ্ভিদের ভারতে অনুপ্রবেশ তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা রয়েছে। অনেক পরে এই উদ্ভিদের বাণিজ্যিক গুরুত্ব টের পেয়েই ইংরেজ সাহেবদের উদ্যোগে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অসম ও আমাদের রাজ্যের দার্জিলিং জেলায় বাগিচা ফসল হিসেবে ক্যামেলিয়া সিনেনসিস্-এর ব্যাপক বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়। সেই চাকে ছোট ছোট ব্যাগে বন্দি করে কবে থেকে কীভাবে দুনিয়ার তাবৎ চা-প্রেমীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হল তা আরেক কাহিনি।

ইংরেজরা হল ধুরন্ধর ব্যবসায়িক জাতি। সুপরিকল্পিতভাবে চাষের ফলে চায়ের উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে উপভোক্তা তথা ক্রেতাদের কাছে সহজে পৌঁছে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হল। টি-ব্যাগের প্রচলন এই তাগিদসূত্রেই।

প্রথম টি-ব্যাগের ব্যবহার কবে থেকে শুরু হল তার নিয়ে কিন্তু বিতর্ক রয়েছে। এক দলের মতে মার্কিন চা আমদানিকারক Thomas Sullivan ১৯০৮ সালে সর্বপ্রথম সিল্কের তৈরি পুঁটুলি বা ব্যাগে করে চা বাজারে সরবরাহ করা শুরু করেন। তবে এই তথ্য নিয়েও বিতর্ক রয়েছে কেননা স্যুলিভান সাহেবের টি-ব্যাগ বাজারে আসার ঢের আগেই ১৯০১ সালে আমেরিকার মিল‌ওয়াকি শহরের দুই অধিবাসী Roberta C. Lawson এবং Mary Molaren “চায়ের পাতা ধারক” বা tea leaf holder তৈরির জন্য পেটেন্ট পাওয়ার আবেদন করেন। আজকাল বাজারে যে-ধরনের টি-ব্যাগের দেখা পাওয়া যায় ঠিক তেমনি ছিল এঁদের তৈরি চায়ের পুঁটুলি। লসন আর মোলারেন তাঁদের পেটেন্ট আবেদনে জানান যে, এই ব্যাগে ঠিক ততটুকু চা পাতাই রয়েছে যতটুকু এক পেয়ালা সুবাসিত চা তৈরির জন্য পর্যাপ্ত। এর ফলে চা তৈরির সময় অপচয় কমানো সম্ভব হবে। এই আবেদনে আরও বলা হয়েছিল— “the bag needed to hold the tea leaves together so that they didn’t float into the drinker’s mouth, but not so tightly that the water could not circulate through them to be infused.” মোদ্দা কথা হচ্ছে জলে ভেজানো চাপাতা যাতে চাপায়ীদের মুখে ঢুকে রসাস্বাদনে ব্যাঘাত না ঘটায় তাই এমন পুঁটুলিতে চাপাতা রাখার ব্যবস্থা। এসব পড়ে নিশ্চই প্রশ্ন জাগে— সেকালে ছাঁকনির ব্যবহার ছিল না? আসলে টি-ব্যাগের ব্যবহার বাড়ায় চা রফতানি তথা বিপণন বেড়ে গেল অনেকটাই। পেটেন্টের আবেদনে বলা হয়েছিল যে সিল্কের কাপড় দিয়ে পুঁটলিগুলো তৈরি করা হবে। পরে অবশ্য সুছিদ্র গজ কাপড় দিয়ে ব্যাগগুলো তৈরি করা শুরু হয়। স্যুলিভান সাহেব‌ও সিল্ক কাপড় ছেড়ে গজ কাপড়ের ব্যবহার করতে থাকেন। এ-পর্যন্ত সবকিছুই একরকম ঠিকঠাক‌ ছিল। চাপ্রেমীদের মন জয় করতে উৎপাদনকারীদের পক্ষ থেকে টি-ব্যাগ নিয়ে নানান ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়েছে নানা সময়। ঠিক কোন বিশেষ উপকরণের সাহায্যে ব্যাগগুলো তৈরি করা হলে তাতে চায়ের স্বাদ গন্ধ বর্ণ অবিকৃত থাকবে তা নিয়ে চলেছে গবেষণা, নিত্যনতুন প্রয়াস। একবার এই বিষয়ে নজর দিই।

থমাস সুলিভান

Thomas Sullivan-এর সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কমবেশি প্রায় দশরকমের উপকরণ দিয়ে টি-ব্যাগ তৈরি করা হয়েছে। গোড়ার দিকে সিল্কের কাপড় দিয়ে ব্যাগগুলো তৈরি করা হলেও পরবর্তীতে গজ কাপড়, কাগজ, নাইলন অথবা প্লাস্টিকের মতো উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে চায়ের এই পুঁটুলিগুলো। ব্যাগের মুখ আটকাতে কাজে লাগানো হয় বিশেষ ধরনের রাসায়নিক গ্লু বা আঠা এবং অন্যান্য চটচটে আঠালো পদার্থ। অনেক সময় ছোট পিন মেরে কাজ সারা হয়। মজার ব্যাপার হল এই যে, স্বপনদার মতো চা-পিয়াসী মানুষ চায়ের লিকার নিয়ে যতটা আগ্রহী ব্যাগ কোন্ উপকরণে তৈরি সেই বিষয়ে সামান্যতম সচেতন নন। এটা এক ধরনের উদাসীনতা বা অজ্ঞানতা। ব্যবহারকারীর এই অসচেতন অবস্থাকে কাজে লাগিয়েই উৎপাদনকারী সংস্থাগুলো যথেচ্ছভাবে সুবিধামতো ব্যাগের আচ্ছাদনকে পাল্টে চলেছে। ব্লিচ্ করা কাগজ দিয়ে তৈরি ব্যাগ বা বিশেষ ধরনের প্লাস্টিকে তৈরি চা-ব্যাগ কতটা শরীরস্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর তা না জেনেই যথেচ্ছভাবে আমরা এগুলোকে ব্যবহার করে চলেছি সকাল-সন্ধ্যা দুবেলা। সাধারণভাবে এই উপাদানগুলো হয়তো তেমন ক্ষতিকর নয়, কিন্তু গরম জল তথা চায়ের সংস্পর্শে এসে বিপুলসংখ্যক মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা বেরিয়ে আসে যা আমাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত হানিকর। এক সমীক্ষা সূত্রে জানা গিয়েছে যে গরম জলে ভিজে যাওয়া একটা টি-ব্যাগ থেকে ১১ বিলিয়ন মাইক্রোপ্লাস্টিক কণিকা চায়ের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। মনে রাখতে হবে যে এর সঙ্গে মিশে যায় বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ, ব্লিচিং ও রকমারি আঁঠালো পদার্থ। আমাদের শরীরে এই সমস্ত উপাদানের ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া যে কতটা সুদূরপ্রসারী তা বোধহয় নতুন করে বুঝিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। বহুজাতিক চা-উৎপাদক কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফা নিয়ে যতটা ব্যস্ত থাকে টি-ব্যাগের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে তার সামান্যও নয়। ফলে টি-ব্যাগের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে তারা নীরবতা পালন করে। গরম জলে ডোবানো আপনার টি-ব্যাগ থেকে ৩.১ বিলিয়ন ক্ষতিকর ন্যানো প্লাস্টিক চায়ের কাপে মিশছে বললে নিশ্চয়ই আপনি নিঃশঙ্ক চিত্তে পেয়ালায় চুমুক দিতে সাহস পাবেন না। পলিপ্রপিলিন হল এক ধরনের সিন্থেটিক রজন যা টি-ব্যাগের খোলা মুখগুলো জুড়তে ব্যবহার করা হয়। এটি এক বিশেষ ধরনের পলিমার যৌগ যা শরীরের পক্ষে সহনীয় নয়।

আগেই বলেছি যে টি-ব্যাগ ঠিক কোন উপাদান দিয়ে তৈরি তা নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা করা হয়েছে। কাগজের টি-ব্যাগকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ বলে মনে করা হলেও বাস্তবে তেমনটা কখনওই নয়। কেননা কাগজকে সাদা করার জন্য তাতে যথেষ্ট পরিমাণে ব্লিচিং মেশানো হয়। ক্লোরিনের সঙ্গে মেশে ডায়োক্সিন যৌগরা। এসব‌ই কিন্তু কাগজের উপাদানের সঙ্গে পানীয় চায়ের সঙ্গে আমাদের শরীরে ঢুকে নানা বিপত্তির সৃষ্টি করে। কাগজের টি-ব্যাগ যাতে গরম জলে ডুবে সহজেই বিগলিত না হয় সেজন্য কাগজকে শক্তপোক্ত করতে মেশানো হয় epichlorohydrin যা থেকে শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মুখ বন্ধ করতে যে আঠা লাগানো হয় তা যে ক্ষতিকর তা তো আগেই বলেছি।

প্লাস্টিকের তৈরি টি-ব্যাগগুলো একটু বড়সড় চেহারার হয়ে থাকে। ফলে এমন ব্যাগে বেশি চা ধরে। এই অবধি ঠিকঠাক আছে। কিন্তু যেই তার টিকি ধরে গরম জলে ভেজানো হল অমনি বিপুল সংখ্যক মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক মিশে গেল আপনার চায়ের কাপে। ব্যস! প্রতি চুমুকে যতটা স্বস্তি স্ফূর্তি পাচ্ছেন বলে মনে করছেন আদপে তা দীর্ঘমেয়াদি অস্বস্তির সূচনা করল বলা যায়। তার ওপর বাড়তি সমস্যা। প্লাস্টিক ব্যাগ জৈববিয়োজ্য নয়। ফলে এরা পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

নাইলনের টি-ব্যাগের ব্যবহার বাড়ছে। তবে এই বিষয়টি কতটা প্রভাব ফেলবে আমাদের শরীরে তা নিয়ে আরও গবেষণা করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। সকাল সন্ধ্যা চায়ের আসরে জমিয়ে আড্ডা দিতে অভ্যস্ত আমজনতা যে এমন খবরে খুব স্বস্তি পাবে না তা বলার অপেক্ষা রাখে না। খুব সম্প্রতি এই টি-ব্যাগ সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়টি নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এক গবেষণার সূত্র ধরে। স্পেনের বার্সেলোনার অটোনমাস ইউনিভার্সিটির তরফে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে ব্যবহারিক সুবিধার কথা মাথায় রেখে আমরা টি-ব্যাগ ব্যবহার করলেও এই ব্যাগগুলো মোটেই স্বাস্থ্যবিধিসম্মত নয় কেননা যে উপাদান দিয়ে এই ব্যাগগুলো তৈরি করা হয় তা থেকে বিপুল পরিমাণে মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিক প্রতিনিয়ত চায়ের মাধ্যমে মিশে গিয়ে জমা হচ্ছে চাপায়ীদের পাকস্থলিতে। সেখান থেকে রক্তের মাধ্যমে পৌঁছে যায় সারা শরীরে। এখানেই শেষ নয়। বাজারচলতি বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের টি-ব্যাগের নমুনা পরীক্ষার পর জানিয়েছেন যে বর্তমানে নাইলন-৬, পলিপ্রোপাইলিন এবং সেলুলোজ দিয়ে তৈরি টি-ব্যাগগুলোকে গরম জলে ভেজানোর ফলে বিপুল পরিমাণে ক্ষতিকারক টক্সিক পদার্থ মিশে যায় চায়ের কাপে। যেমন পলিপ্রোপাইলিন থেকে প্রতি মিলিলিটার চায়ে যুক্ত হয় ১.২ বিলিয়ন পার্টিকেল যাদের গড় আয়তন হল ১৩৬.৭ ন্যানোমিটার; সেলুলোজ দিয়ে তৈরি ব্যাগ থেকে নিঃসৃত হয় প্রতি মিলিলিটারে ১৩৫ মিলিয়ন পার্টিকেল যাদের আয়তন ২৪৪ ন্যানোমিটার; অন্যদিকে নাইলন-৬ দিয়ে তৈরি টি-ব্যাগ থেকে বেরিয়ে আসে প্রতি মিলিলিটারে ৮.১৮ মিলিয়ন পার্টিকেল যাদের গড় আয়তন ১৩৮.৪ ন্যানোমিটার। বিষয়টি যে রীতিমতো গুরুতর সে-বিষয়ে সন্দেহ নেই।

এই গবেষণা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বিশিষ্ট মাইক্রোবায়োলজিস্ট Alba Garcia-Rodriguez-এর অভিমত— এই গবেষণার জন্য আমরা এক বিশেষভাবে উদ্ভাবিত প্রযুক্তির ব্যবহার করেছি যা মাইক্রোপ্লাস্টিকের মতো অতি সংবেদনশীল উপাদানগুলোকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি মানবশরীরে তাদের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কেও স্পষ্ট বক্তব্য রাখতে সাহায্য করেছে। মাইক্রোপ্লাস্টিক এই মুহূর্তের সবচেয়ে আলোচিত এক দূষকের নাম এ-বিষয়ে সন্দেহ নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের তৈরি নানা উপকরণের ব্যবহারকে আমরা একরকম অপরিহার্য করে ফেলেছি। এভাবেই বেড়েছে অণু প্লাস্টিকের ভয়াবহ সমস্যা। চায়ের মতো এক অতি জনপ্রিয় পানীয়ের মধ্যে এর উপস্থিতি আমাদের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক বড় প্রশ্নচিহ্ন হয়ে উঠেছে। অথচ এই অভ্যাস থেকে নিজেদের নিরাপদে রাখাটা খুব কঠিন একদম নয়। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এই ভেষজ পানীয় আমাদের হৃদযন্ত্রের দেখভাল করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, হজমক্ষমতা বাড়ায়, শরীরের পক্ষে উপযোগী মাইক্রোবসদের সংখ্যা বাড়ায়, সবুজ চা বা গ্রিন টি শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে, মগজকে ক্ষুরধার করার ক্ষেত্রেও এই ভেষজ পানীয়ের জুড়ি নেই। সুতরাং চায়ের পেয়ালায় ঝড় উঠুক। টি-ব্যাগ ছেড়ে দিলেই যখন এতসব সমস্যা খানিকটা এড়ানো যায়, তখন তা করতে বাধা কোথায়? আসুন, সবাই মিলে এক জমাটি চায়ের আসর বসাই।