তৃষ্ণা বসাক
শুধু মায়েদের, বাবাদের বড় ভয় হবে। মেয়েটা বাইরে আছে, ফিরছে না, মেয়েটা নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছে, ক্লাসে যেতে চাইছে না, মেয়েটা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, মেয়েটা সেলিব্রিটি, মেয়েটা, এখনও মেয়েই হয়নি, ন-বছরের রোগা শালিক একটা, মেয়েটা ওদের পার্টিই করে— তবু, ভয় হবে। সিস্টেম যে এখন অন্ধ ভস্মাসুর, কাকে ছুঁচ্ছে, নিজেই জানে না। একদিন যদি নিজের মাথায় হাত দিয়ে ফেলে ভুল করে…
দোলন আবার সেই স্বপ্নটা দেখছিল। একটা খুব বড় টেবিল, এত বড় যে সমুদ্রের কথা মনে হল তার। এপার ওপার দেখা যায় না। কিন্তু সমুদ্র কী করে হবে? এটা তো কমিটি রুম নাম্বার টু। দেওয়ালে পর পর মণীষীদের অয়েল পোর্ট্রেট, দেখে দেখে মুখস্থ হয়ে গেছে ওর। এই, এই ঘরেই তো এর আগে সে ছবার এসেছে। কী ঠান্ডা ভেতরটা। দোলনচাঁপা বলে উঠল ‘একটু এসিটা কমানো যাবে? আমিই কমিয়ে দিয়ে আসছি’ এই কথা শুনে তার ডাইনে বাঁয়ে বসে থাকা চারজন চারজন আটজন লোক গলা ফাটিয়ে হাসতে শুরু করল। মাঝরাতে ঢেউয়ের কানফাটানো আওয়াজ যেমন হয়, তেমনি হাসি। ওর যে মনে হচ্ছিল সমুদ্র, সেটা তাহলে বাজে কথা নয়। শুধু ওভাল টেবিলের একেবারে ওপ্রান্তে, ওর ঠিক উল্টোদিকে যে লোকটা বসে আছে, সে ওর দিকে ঠান্ডা চোখে চেয়ে বলল ‘পুট অফফ ইয়োর ক্লোথস প্লিজ। কুইক’ দোলন বলতে পারত, ‘আমি তো ইন্টারভিউ দিতে এসেছি, জামা খুলব কেন?’ তার বদলে সে বলল ‘আমার বড্ড শীত করছে জানেন’ অমনি সবাই আবার সেইরকম কানে তালা লেগে যাওয়ার মতো হেসে ওঠে। দোলন দু কানে হাত চাপা দিয়ে চিৎকার করে বলে ‘প্লিজ স্টপ! ফর গডস সেক’ অমনি তার ঘুম ভেঙে যায়। এক্ষুনি তার শীত করছিল না? এখন তো দরদর করে ঘাম হচ্ছে। তাহলে কি ওটা স্বপ্ন ছিল? নাকি এটা স্বপ্ন? এটাই দোলনের একমাত্র সমস্যা। সে বুঝতে পারে না, তার জীবনে সত্যি সত্যি কোনটা ঘটেছে? ডঃ নিয়োগী ওকে বলেছেন, আপনি বিশ্বাস করতে পারেন আপনার জীবনে এসব কিছুই ঘটেনি। আপনি কোনও ইন্টারভিউই দেননি, তো কীভাবে ভাবছেন আপনি একজন লুজার? চাকরি করার ইচ্ছে থাকলে, এটা কি একটাই জায়গা? এই ইউনিভার্সিটি ছাড়া কত পড়ানোর স্কোপ আছে। এত ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট আপনার’ যতক্ষণ ডঃ নিয়োগীর চেম্বারে থাকে, এসব কথা বিশ্বাস করে সে। বাড়ি এসে দু-একদিন ফুরফুরে লাগে নিজেকে। কন্ট্রোলের বইগুলো খুলে বসে। তারপর আবার যে কে সেই। স্বপ্নটা ফিরে ফিরে আসে। নজন লোক মিলে তাকে গ্যাং রেপ করছে। আর সে চিৎকার করে উঠছে। বিছানায় নিজের হাঁটুর ওপর মুখ গুঁজে গুঁজে কাঁদতে কাঁদতে চমকে ওঠে দোলন। চিৎকারটাও কি সত্যি নয়? সত্যি সে চিৎকার করলে কি তার পাশে শুয়ে প্রদীপ্ত এমন অঘোরে ঘুমোতে পারত? নাকি তার চিৎকার কেউ মিউট করে দিয়েছে?
পাশে শুয়ে প্রদীপ্ত নির্বিকারে ঘুমোচ্ছে। ওর মতো ঘুমোচ্ছে এই শহর, এই সময়।
—অজিত সিং বনাম অজিত সিং, লেখক
সরকারি বাড়িগুলোর রং বদলেছে, ক্ষমতার পীঠস্থান বদলে গেছে, কিন্তু মেয়েদের অবস্থা বদলায়নি, উত্তরোত্তর তার অবনমন হয়েছে, হয়েই চলেছে।
একটা ব্যবস্থা যখন পুরোটা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখন যা হয় তা আমাদের চোখের সামনে। বরফের বলের মতোই ছোট্ট থেকে বড় হয়েছে দুর্নীতির বলটা, সেইটাকে ভাঙার চেষ্টা না করে এখন আমরা তারই পাশাপাশি সমান্তরাল এক একটা ছোট ছোট দুর্নীতির পিণ্ড হয়ে গড়িয়ে চলেছি, চলতে চলতে বেড়েই চলেছি। আর যত গড়াচ্ছি, ততই আমাদের দ্রুতি বেড়ে চলেছে। এই পিণ্ডটা একটা মেটাভার্সের মতোই একইসঙ্গে বাস্তব এবং ভার্চুয়াল।
আশির দশকের গোড়ার দিক থেকেই লক্ষ করতে শুরু করি আমাদের ছোট শহরে লোকাল কমিটি বা এলসি-র দাপট বাড়ছে। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ায় তারা এসে সালিশি করছে, বাড়িতে ভাড়াটে বসাতে গেলেও এলসি-র অনুমতি লাগবে। মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রণ করার প্রবণতাই শুধু নয়, তাকে ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখা, সমস্ত সুযোগসুবিধা নিজেদের অনুগত ঘনিষ্ঠদের মধ্যে ভাগবাঁটোয়ারা করার সংস্কৃতি, অন্য মত ও পথের পথিকদের ‘অপর’ করে রাখা— এসব আমাদের কৈশোরেই শুরু হতে দেখেছি। বামপন্থী নেতারাও ভেতরে ভেতরে স্বীকার করেছেন সিস্টেম পচতে শুরু করেছে। কিন্তু তার এই দ্রুতি অকল্পনীয় ছিল। পার্টির একটা কাঠামোগত বৈশিষ্ট্য, একটা ন্যূনতম আদর্শের পিছুটান, সর্বোপরি বিশ্বায়ন-পূর্ব পৃথিবীর কিছু মূল্যবোধ ছিল। এখন সেসব বালাই ঘুচে গেছে। সারা বিশ্ব জুড়েই দক্ষিণপন্থী রাজনীতির জয়জয়কার। কর্পোরেট কায়দায় সারফেস হিপনোটিজম। বামপন্থীরা আদর্শ বা বিবেকের পোকায়, কিংবা স্রেফ বদলে যাওয়া সময়কে বুঝতে না পারায় কিংবা বুঝেও বুঝতে না চাওয়ায়, অনেক সময় নিত, এদের চোখের পাতা ফেলার আগেই কাজ সারা হয়ে যায়। আর সেই কাজ আলোর চেয়েও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সোশাল মিডিয়ার দৌলতে। পোস্ট ট্রুথের কল্যাণে সত্যি কোনটা আর বানানো কোনটা বোঝা যায় না। তাই চরম অন্যায়গুলো কেমন সহনীয় হয়ে যায় স্ক্রল আর সার্ফ করতে করতে।
সর্বত্র টাকা ছড়িয়ে মাখনের মতো সিন্ডিকেট ব্যবস্থা। দুর্নীতি এখন বোরোলিনের মতো বঙ্গজীবনের অঙ্গ, শিশু স্বচ্ছন্দে মাস্টারমশাইকে জিগ্যেস করে ‘কত টাকা দিয়ে আপনি স্কুলে পড়ানোর চাকরি পেয়েছেন মাসশাই?’ এই একটি প্রশ্ন আমাদের দেখিয়ে দেয় আমাদের আসলে সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যখন জেনে যায় এটাই স্বাভাবিক, এইভাবেই চাকরি পেতে হয়, তখন তাদের কাছে মেধা উদ্যমের কোনও অর্থ থাকে না। তারা জেনে যায় পয়সা দিয়ে সব কেনা যায়। আমরা কোন পৃথিবী তাদের জন্যে রেখে যাচ্ছি? শিক্ষকরা বাচ্চা নিয়ে মাসের পর মাস রাস্তায় বসে, আমরা পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছি। আমরা কোনও কিছু দেখেও দেখি না। ওটিটি আর ফেসবুকে ডুবে থাকি। চারদিকে মোচ্ছব, দুয়ারে কার্নিভাল! আমাদেরই টাকা কেড়ে ভিখারি বানিয়ে হাতে ডিম্ভাত ধরানো হচ্ছে আর আমরা মহানন্দে গিলছি! মানুষ এখন এতটাই উদ্গাণ্ডু। রাষ্ট্র যখন নিজেই উলঙ্গ, তখন নারীর সম্মান থাকবে এমন আশা করাই বাতুলতা।
গত বছর ৯ আগস্ট হাসপাতালের সাদা চাদর ঢাকা বিছানায় শুয়ে। রাস্তার কোলাহল কেমন অলীক লাগে। বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘরে, ওটি থেকে বেরিয়ে কতক্ষণ আচ্ছন্ন। আর সে আচ্ছন্নতা ভেদ করে এসেছিল অভয়ার খবর। প্রথমে বুঝতেই পারিনি। একটা সরকারি হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় একজন ডাক্তার, লিঙ্গপরিচয়ে সে মেয়ে ছিল, কিন্তু কর্মরত অবস্থায় সে প্রথমত ও শেষত ছিল একজন ডাক্তার, তাকে ধর্ষণ ও খুন করা যেতে পারে? ধীরে ধীরে চেতনা আসে, কড়া অ্যানেস্থেশিয়া আর ফিনাইলের গন্ধ ছাপিয়ে মৃত্যুর গন্ধ ঢুকে যায় নাকে। যে-সময়ে আমার পূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন ছিল, সে-সময়ে আমি ক্রোধে ফেটে পড়ি, চেনা ঘুমিয়ে পড়া চরিত্র বদলে যায় শহরের, পবিত্র ক্রোধে ফেটে পড়ে আমার শহর। স্বতঃস্ফূর্ত ক্রোধ ও প্রতিবাদের এই বিস্ফোরণ আমার জীবনভর কখনও দেখিনি। কিন্তু এক বছর পরে আমরা যে তিমিরে, তার চেয়েও অতল তিমিরে চলে গেছি। প্রাতিষ্ঠনিক হত্যাকাণ্ডকে দেওয়া হয়েছে ধর্ষণের মোড়ক, হাতের কাছে সুলভ শৌচালয়ের মতো এক ধর্ষক চরিত্র, যেন হযবরল-র ন্যাড়া ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এই গান গাইবি? পয়সা পাবি! ধরে আন ওকে, একেবারে খাপে খাপে পঞ্চুর বাপ। আইন একটি তামাশা সে তো বহু বছর জানি, কিন্তু প্রশাসনের প্রতিটি স্তর কার্যত তামাশায় পরিণত হয়েছে। তাই তো আরজিকরের এক বছরের মধ্যেই কসবা ল কলেজ ঘটতে পারে, এটাই স্বাভাবিক নির্গমন একটা আপাদমস্তক নষ্ট সিস্টেমের। প্রতিটি কলেজে এইরকম কোড নেম জে বা এমএম বা এলএমএনওপি থিকথিক করছে নর্দমার পোকার মতো, যাদের কাজ টাকা তোলা, তুলে ওপরের দিকে পাঠানো, ফ্লোলাইনকে যে-কোনও মূল্যে সচল রাখতে হবে। তার বিনিময়ে এদের খুশি রাখা ওপরতলার নৈতিক দায়িত্ব। দিল তো বাচ্চা হ্যায় জি, নাদানিয়া দুষ্টুমিও তাই থাকবেই। এখানে মেয়েরা সেবাদাসীর ভূমিকায়, তাই কলেজে এবং জীবনে টিকে থাকতে হলে ইউনিয়ন রুমে মাথা টিপে দিতে হবে দাদাদের, খুব অল্পের ওপর দিয়ে গেলে। একটি ছবি দেখছিলাম না? সেখানে ওই কোড নেম জে কিংবা মরুক গে যাই হোক, নটখট কানহাইয়া সেজে ক্ষীরের মটকা ভাঙছে। এরা মাঝেমাঝেই স্বাদবদলের জন্য সহপাঠিনীর সঙ্গে লীলা করতে চাইবে, এতে কোনও অবাক হওয়ার জায়গাই নেই।
সেদিন আমার এক অনুবাদক বন্ধু বলছিলেন তাঁর মেয়ে দিল্লিতে চাকরি করছে, কিন্তু সে ওখানে একদম থাকতে চাইছে না। আমি বললাম ‘হোম সিক?’
‘আরে না, মেয়েরা কিছু বললেই, কোনও মিটিং-এ কোনও ইনপুট দিলে বা কোনও বিষয়ে মতামত দিলেই মেল কলিগরা বলে আরে চুপ বে, জাদা বকবক না কর। ওই যে ওখানকার জাঠ, হরিয়ানভি মাচো কালচার এটাই, মেয়েদের দমিয়ে দেওয়া।’
তখন আরেকজন বলল কেরলে কাজ করা তার মেয়ের অভিজ্ঞতা খুব ভালো এ-বিষয়ে।
আমি চুপ করে ভাবছিলাম। নারীর সম্মান ও সুরক্ষায় সবার আগে থাকা আমাদের এই বঙ্গের কথা। সেখানে প্রতি মিনিটেই এরকম কত ঘটনা ঘটে চলেছে এখন। কোনও কোনও সংস্কৃতির মধ্যে নারীকে অপমান করার প্রবণতা থাকে, যেটা আমাদের ছিল না বলেই জানি। কিন্তু সেটা অন্যভাবে পুষিয়ে নেওয়া গেছে। একদিকে অবাধ লুম্পেনতন্ত্র তৈরি করে, অন্যদিকে আইন বিচার প্রশাসনকে সম্পূর্ণ কোলাপস করিয়ে দিয়ে। আমার পুলিশ আমার প্রশাসন, আমার স্কুল, আমার লাইব্রেরি, আমার বই। সব জায়েজ। স্কুলে স্কুলে লাইব্রেরিতে বিশেষ বই ঢুকিয়ে দেওয়াও কিন্তু ধর্ষণ সংস্কৃতিরই অঙ্গ, শিশুমনকে ধর্ষণ করে তার মেরুদণ্ড গোড়াতেই ভেঙে ফেলা।
এই লেখাটি যখন লিখছি, তখন আইআইএম ক্যাম্পাস হস্টেলে এক মনোবিদের ধর্ষণের ঘটনাও ঘটে গেছে। আজ সন্ধেবেলা আবার চ্যানেল আলো করে বসবেন ধর্ষণজীবীরা, কোনও কোনও অতি-তৎপর চ্যানেল দেখিয়ে ফেলবে ধর্ষণের হাতেগরম ভিডিও, প্রথম দিন বাহাত্তর পয়েন্টে হেডিং হবে, তারপর সরতে সরতে সে খবরটিকে খুঁজেই পাওয়া যাবে না, ততক্ষণ আমরা মিম দেখব, রিল বানাব, হাসব, মোম পোড়াব, হাঁটব মাপা পদক্ষেপে। ‘পোতিবাদ’ করব, মৃদু মন্দ ঘেউ, যাতে কারও কানেই না পৌঁছয়। কিছু পালটাবে না। আর পালটালেও তো জিনিসটা আদতে চানাচুরই থাকবে।
…লোকটা কিন্তু নির্বিকার মুখে বলে ‘আমি কিন্তু এ লাইনে নতুন নই স্যার। সেই কবে থেকে বিক্রি করছি। প্রথমে ছিল বঙ্গলক্ষ্মী চানাচুর, তারপর এল আজাদ হিন্দ চানাচুর, তারপর একের পর এক বিপ্লব চানাচুর, সর্বহারা চানাচুর, উন্নততর সর্বহারা চানাচুর, এখন চলছে বিশ্ববাংলা। এখানেই কি ভাবছেন গল্প ফুরিয়ে গেল? এবার আসছে একে ফিফটি সিক্স চানাচুর।…
আমরাও তো ছোট ছোট দুর্নীতির পিণ্ড, বড় পিণ্ডের পাশাপাশি সগৌরবে গড়িয়ে চলেছি। নতুন মডেলের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির সাফল্য এটাই। তার বাইরে কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায় না। সবাইকে দুর্নীতিকল্যাণের আওতায় আনা গেছে। মোহরমালার মতো অনেকেই জেনে গেছে ওপরে ওঠার অঙ্ক।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাপ, ওপর থেকে পার্টির চাপ, অজিত, অফ অল পার্সনস অজিতের সঙ্গে সম্পর্ক। কিছু দিলে তবে কিছু পাওয়া যায়, এই অঙ্ক কবে থেকে রক্তে ঢুকে গেল? এক ছোট শহরের মেয়ে মোহর, এম ফিল করার সময় থেকেই জেনে গেলেন এই অঙ্ক, পিএইচডি, চাকরি, একের পর এক সিঁড়ি ভাঙ্গা— সব এই অঙ্ক মেনে। এই অঙ্ক একটু উল্টোপাল্টা হয়ে গেলেই মুখ থুবড়ে পড়তে হবে। খাওয়া পরার হয়তো অভাব থাকবে না। কিন্তু এই যে এত বড় জায়গায় সবার নজরে বসে থাকা, অজিতকে হাতের মুঠোয় রেখে যত গোপন ব্যাপারের স্বাদ নেওয়া, রাজ্য রাজনীতি থেকে সিনেমা জগতের অন্দরমহল— এর যে থ্রিল, তা কি দিতে পারত অধ্যাপনা?
শুধু মায়েদের, বাবাদের বড় ভয় হবে। মেয়েটা বাইরে আছে, ফিরছে না, মেয়েটা নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছে, ক্লাসে যেতে চাইছে না, মেয়েটা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, মেয়েটা সেলিব্রিটি, মেয়েটা, এখনও মেয়েই হয়নি, ন-বছরের রোগা শালিক একটা, মেয়েটা ওদের পার্টিই করে— তবু, ভয় হবে। সিস্টেম যে এখন অন্ধ ভস্মাসুর, কাকে ছুঁচ্ছে, নিজেই জানে না। একদিন যদি নিজের মাথায় হাত দিয়ে ফেলে ভুল করে…
ততদিন ধর্ষণ-ফ্রেন্ডলি করিডরে বিনিয়োগের স্বপ্ন দেখা যাক।

