Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

অরুণাংশু ভট্টাচার্যের কবিতা

গন্ধ

 

 

গ্রাম জুড়ে কত যে প্রত্নবস্তু ছড়িয়ে আছে, থাকত
কারা ছিল এখানে?
কাদের রান্নার গন্ধ এখনও অবর্ণনীয়
শনিবার হাট আর শাঁখের গল্পের দিকে
এতগুলি ঝিল পুষ্করিণী
সবই তো গঙ্গার অংশ-
এদিকে
ক্ষণে ক্ষণে মেলায় হারিয়ে যাচ্ছেন জটেশ্বর শিব
আর
জন্মস্থান মহানাদ জামির লেবুর গন্ধে

 

টিভি

 

আমাদের গ্রামের বাড়িতে, সেই বাড়িতে
প্রথম যেদিন টেলিভিশন দেখলাম সেদিন মাংস হয়েছিল,
টিভির কল্যাণেই কিনা
কী দারুণ গন্ধ
একসময় গা গুলিয়েও উঠল
মাংস খাওয়ার আগে মহাত্মা গান্ধীকে মনে পড়ল হঠাৎ
রান্নাঘর, মাটির মেঝে- দু-চারটে লাল পিঁপড়ে

 

সোয়েটার

 

চারিদিকে অগুণতি পুকুর, দূরে ঝিল
ছেলেবেলায় ছোটবড় কোনওরকম নদী দেখিনি-
শুধু দরজা, যখন কাকার বিয়ে হল, তখন দেখলাম পর্দা,
আশ্চর্য, কার যেন এইরকম রঙের একটা সোয়েটার;
তাকের ওপর নীল মোটা কাচের শিশিতে মিল্ক অফ ম্যাগনেশিয়া
দাদু আমাকে কোলে নিয়ে রঘুবংশের গল্প করছে–

কোনও নদী ছিল না, শুধু সোয়েটার

 

বল

 

বল হারিয়ে গিয়েছিল–
লালশাক-ভর্তি উঠোন, একপাশে ধনেপাতা
স্কুল শেষ হয়ে গেল, বাবা আসছে
তারপর যে কী একটা ঘটনা ঘটবে;
খুব ঠাণ্ডা পড়ত তখন
এত ঠাণ্ডা আর রবারের বল সম্ভবত লাল রংয়েরই

লাল বললে কাঠের উনান জ্বলছে আর মায়ের হাত

 

সন্ধ্যা

 

মাঠের মাঝখানে এক ধরনের গা-ছমছম করা সন্ধ্যা
এখন আর নেই
বেড়ার গায়ে হেলান দেওয়া অস্পষ্ট সাইকেল
হারিয়ে যাওয়া বল আর পাওয়া যায় না
একদিন ঘুড়ি ওড়াতে ওড়াতে খেয়াল নেই
নির্জন বিস্তীর্ণ সন্ধ্যা,
আকাশে একাকী চাঁদ দেখে খুব ভয় করছিল