Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

সুপ্রীতি সান্থাল মাইতির লেখা

ধন্য বিচার

 

দেশের সর্বোচ্চ আদালত যদি বিচারপ্রক্রিয়াকে চরম প্রহসনে পরিণত করেন তাহলে মানুষের কর্তব্য কী?

যেখানে সিবিএসই নিজেদের গাফিলতি স্বীকার করেই নিয়েছে একপ্রকার, সেখানে সুপ্রিম কোর্ট বিচারের নামে যে ন্যক্কারজনক নোংরামির উদাহরণ রাখলেন তার তুলনা মেলা ভার।

ইংরেজি ও হিন্দি বাদে অন্য ভাষাভাষী পরীক্ষার্থীরা কী অপরাধ করেছিল পরীক্ষায় বসে তার জবাব সুপ্রীম কোর্টের কাছে আছে কি? একই পরীক্ষায়, যেখানে ইভ্যালুয়েশন ওএমআর শীটে হয়, তাতে প্রশ্ন আলাদা আলাদা হয় কী করে তার কোনও জবাব আছে কি সুপ্রীম কোর্টের কাছে?

ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই।

আজ বিশ্বাস করতে বাধ্য হচ্ছি, ইন্ডিয়া আর ভারত সত্যিই দুটি আলাদা দেশ। ইন্ডিয়ান সুপ্রীম কোর্ট, আপনি ভারতের মেধাবী ছেলেদের সাথে চরম অন্যায় করলেন। একে ন্যায়বিচার বলে না।

——–
পূর্বকথা:

দেশের অভিন্ন মেডিকেল ও ডেন্টাল প্রবেশিকা পরীক্ষা NEET, পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিল CBSE। এই পরীক্ষা ইংরেজি ও হিন্দি বাদে ছটি ভারতীয় ভাষায় নেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন এই সর্বোচ্চ আদালত, স্বেচ্ছায় নয়, নানা প্রতিবাদ আবেদনের পরে।

সেই মতো পরীক্ষা দিতে গিয়ে দেখা যায়, ভাষার সাথে সাথে প্রশ্নপত্রেও বিস্তর ফারাক রয়েছে। শুধু তাই নয়, ইংরেজি ও হিন্দির তুলনায় অন্য ভাষার প্রশ্নগুলি অনেক শক্তও ছিল।

ওএমআর শীটে যেখানে উত্তর দিতে হবে, সেখানে এই ধরণের ফারাক শুধু অস্বাভাবিকই নয়, সঙ্গত কারণেই অত্যন্ত বেআইনিও বটে।

CBSE তাদের নিজেদের বোর্ডের ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা করে দিতেই যে এই অন্যায়ের পথ নিয়েছে তাতে কারও সন্দেহ নেই।

বিভিন্ন হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত নানা অভিযোগ দাখিল হয়। মাদ্রাজ হাইকোর্ট বিষয়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করে নিটের ফলপ্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

সুপ্রীম কোর্ট সেই আদেশ শুধু উড়িয়েই দেয়নি, এও বলে যে আর এই নিয়ে কোনও অভিযোগ কোনও আদালতেই গ্রাহ্য হবে না। গতকাল ফল প্রকাশ হয়ে যায় এবং যা আশঙ্কা ছিল, তাই প্রমাণিত হয়। মাতৃভাষায় পরীক্ষা দেওয়া ছাত্রছাত্রীদের সামগ্রিক ফলাফল খুব খারাপ হয়েছে। তারা বুঝল না তাদের দোষটা আসলে কী?