Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

পাঁচটি কবিতা

কুণাল বিশ্বাসের পাঁচটি কবিতা

কুণাল বিশ্বাস

 

অন্তর্জলী

করুণাধারায় এসো
তোমার পরশখানি লেগে আছে ঝর্ণায় পাথরে
ব্রততী সোপান, ঝরোকা, হ্লাদিনী সেতু
পার করে আমার পর্ণকুটির
অবসরে খাদ্য ও পানীয়, রাষ্ট্র
এমনকি যৌন-নিশ্চেতনা বিষয়ক
আলোচনা হয়, স্বাদুজলে নেচে ওঠে
খলসে মাছের ঝাঁক

দূর ওই তটভূমি — তমালসুরভি
শ্মশানযাত্রীর ঘুম…

এই সব কিছু থেকে
আরও দূর কোনো ক্রান্তীয় সন্ধ্যায়
শুনি তালবাদ্য… বৈজু চাঁড়ালের গান

তুমি, একে ভগবত জ্ঞান করো

 

বাঁক

সুখচাঁদ, ভুলে যাও বৃথা অভিমান, রাগ
একদা তোমার বন্ধুদের প্রতি
মনে রেখো তারাও কখনো পড়েছিল বাশোর কবিতা
অশ্রু, ছাপাখানা, হোটেলের লেবুডাল শেষে
হাইকুর স্তব বলেছিল জনে জনে ডেকে
মাসকাবারির ছক কষে দিয়েছিল
নির্জলা দুপুরে, কুণ্ঠিত মেসের বারান্দায়
দ্যাখো, শিউলি তলায় কুসুম কুড়িয়ে ঘরে
ফিরে যাচ্ছে পুতুলের মাসি
কুলপুরুতের মতো শীর্ণ হাওয়া দিচ্ছে আজ
সকাল থেকেই
বলো সুখচাঁদ, কেন এত অনুযোগ
তোমার প্রাণের ‘পরে কী-এমন গূঢ় সন্ধি
লিখে দিয়ে গেছে ওই ঝাঁঝালো রাত্রির আলো
যে তুমি বেশ্যাগমন ভুলে আজ ক্যারম খেলেছ

 

হারমোনিয়াম

তোমাকে ভাবার দিন শেষ হয়ে এল
রেলইয়ার্ডের পাশে বালি ও খেজুর,
স্বপ্নাতুর মেঘ, সহসা বিকেল…

সূর্যাস্তের আগে কোমল নি ধরেছে হরির বোন…

 

পলাশবাড়ি

রাত্রির সীমিত আয়োজন
ভীত চাঁদ হেঁটে যায়
একা একা
মুখচোরা বালিকার প্রায়

ছিপছিপে জোনাকির বন
পাতা ঝরে খালি
কাঁপে বিজনে বাবুইয়ের বাসা
বাতাসের দীর্ঘসূত্রিতায়

 

শাওন

আজ রাতে ভুলে যাই তার
অপরূপ দুটি চোখ
হে দূরত্বময়ী, দ্যাখো
বাতাস এসেছে কাছে
আমার সামান্য ঘুম চলে গেছে
একা হিমঘরে

গ্রন্থিত আমার লেখা তুমি
নিজে হাতে খুন করো
কেড়ে নাও স্বীয় অক্ষর, প্রতিমা—
যেন কুপিত ঈশ্বর
শুল্কারোপ করে যান পৃথিবীর ‘পরে

এভাবেই কখনো আকাশনীল, রক্তে রাঙা
শালবন পার করে
তোমাকে পড়েছে মনে
ভ্যান্ডার বগির মতো স্বতন্ত্র দিনের শেষে