Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

তুমি কোলাজ, নারী কিংবা মায়াবিমান

দেবজিৎ অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়

একটা সাদা ঘোড়া আমার জানলার পাশ দিয়ে পূর্ণিমা রাতে ফেরে, একটা মানুষ সেই রাতেই ডানা গজিয়ে উড়ে গেল, একটা শহরের পেটে জল জমল আর বিষ খেল ষোড়শী। সাধু হারিয়ে গেল শহরের গলিতে- আমরা যদিও ভেবেছিলাম, সে ফিরে আসবে। সে ফিরে আসেনি, পুজো এসে গেছিল। আমরা সবাই ভুলেও যাচ্ছিলাম আস্তে আস্তে। রাস্তার ধারে ছোটা হাতির ডালার মধ্যে বছর পনেরোর মেয়েটার রেট ওঠে তিনশো টাকা। আমরা এগরোলের কাগজ ছিঁড়ে শহর নোংরা করেছি। এই সবকিছুই আমি লিখেছি। এই সবকিছুই জানতাম। আরও অনেক কিছু জানতাম। পুজো আসলেই আমাদের পাড়া উড়োজাহাজের গন্ধে ম ম করে। অনেকে বাড়ি ফেরে। কে কত কমে বেঙ্গালুরু-কোলকাতা টিকিটের দাঁও মেরেছে, সেই গল্পে পাড়া থই থই করে।

আমার জানার অনেকটাই একটা প্রস্তরীভূত হাসিওয়ালা মুর্তির থেকে। তার বুক, ঠোঁট, পেট রুক্ষ, খরখরে। সে দারুণ দারুণ গল্প বলে। কার ভাঁজ খুললেই বেড়িয়ে আসবে গত শীত, কর্পূরের মত; আর কী কী উবে যায়, সেভেন-ও-ক্লকে দাড়ি কাটতে কেন ফুসকুড়ি বেরোয় না, তারপর চন্দননগরের আলো, সোনাগাছি, অমৃতাক্ষর ছন্দ, ঝুমকো ঋতুর অসামান্য সব গলির ঋতুকাল, রাজবল্লভপাড়া, আরও হাবিজাবি কত কী! সে অনর্গল বকেই যায়। একসময় তার মুখ থেকে পেকে ফেটে যাওয়া তুলো ফুল বেড়িয়ে আসে। কেউ অসময়ের বরফ ভেবে তার পাশে চুপ করে বসে থাকল। কেউ ডাস্ট অ্যালার্জিতে হেঁচেকেশে একসা। তরুণ কবির বইয়ের ওপর গিয়ে সেই ফুল জমে। আলো করেছিল এই দৃশ্যের যে মানুষটি, তিনি ঘাবড়ে গিয়ে ভাবছেন, ফোকাসটা তুলো কুচিতে রাখবেন নাকি প্রস্তরীভূত হাঁ গালে। মূর্তি আমার দিকে তাকিয়ে বলে, “কেমন দিলাম বলো?”

#

এক আধপাগলের সাথে দেখা হয়ে যায়… তার কাছে যেতে চাই… তার মতো হতে চাই… অথচ সবকিছুর নঞর্থক শেষ যে কেন হচ্ছে… সে তার ক্রমশ আলগা হয়ে আসা সংসারের কথা বলে… এক ঘর ছেলেপিলে নিয়ে তার বউ নাস্তানাবুদ… সে ক্রমশ নিজের মত হয়ে উঠছে… সে বাহবা দেয়…।বাচ্চাগুলোর একটাও বাপ-ন্যাওটা হয়নি… লোকটা কেন এরকম আমি বুঝিনি… কিসের জন্য সে এরকম ছাড়া ছাড়া… এরকম অসাংসারিক কেনই বা তার জীবন… দিব্য ফাটিয়ে সংসারটা সে করতেই পারত… অথচ বাড়ি ফেরা চাই… বাচ্চাগুলো আর বউ ঘুমিয়ে পড়ার পর তার বাড়ি ফিরতে সবসময় ভালো লাগে নাকি… আর তার সাথে খুব অল্প দেখা হয়…আর দেখা হলেই বলে, “ওইসব আগের মতই আছে… আগের মতই চলছে…” … আগেও একই কথা বলত… সেই য্যানো কবে শুরু হয়েছে… তারপর চলেই যাচ্ছে… চলেই যাবে… যার কোনও শেষ নেই… তার য্যানো বয়স বাড়ে না… বয়স কত জিজ্ঞেস করলে বলে, “আগে যা ছিল… তাই আছে… খুব বেড়ে গেলে ছেঁটে দি… বাহারি গাছের মত… আমাদের পাড়ার সেলুনটা ভালো… কলপ করালে মাথায় লাগিয়ে দেয় না… কালোটাও দাঁড়কাকের মত না”… আমার পাতিকাকের গলার কালোটা খুব ভালোলাগে… আর ভালো লাগে সাদা দাড়ি…বড় না, ছোট… তার ভেঙে আসা শরীরে কাঁচা-পাকা দাড়িটা অসুস্থ লাগে… আমি চপের দোকানের উনুনের পাশে দাঁড়াই… দেখি তিনি, ছ’খানা বেগুনী কিনে চলে যাচ্ছেন… তার হারিয়ে ফেলা প্রথম সাইকেলটা শহরের অলিতে গলিতে ভূতের মত ঘুরে বেড়ায়…

#

পুজো এসেছে। সে কী আলোর দমক! ঘুম থেকে উঠলেই পাড়ার মাইক বলছে, “আসবো আরেকদিন… আজ যাই”। কোথাও শরতের গন্ধ নেই। দিনে চারবার স্নান করতে হচ্ছে। ঘুম থেকে উঠেই বোঝা গেল, এইরকম দিনের আরেকটা ক্লোন করা কিছুতেই সম্ভব না। সে হলুদ আর লাল পাথরের দিকে চেয়ে থাকে। জন্মদিন কেটে যাচ্ছে। স্যান্ড ক্যাসলের মত জন্মদিন। ধাবার খাটিয়ার পেটে ঢুকে যাওয়ার মত উৎসাহ আর কিছুতে আসছে না। এমনকি আনকোরা সঙ্গমেও না। প্রত্যেকটা মানুষ আসলে জীবনে তার নিজের প্রিয় নদীটাকে খুঁজে বার করে। তারপর একটা লাশ ক্রমে ভেসে গেছিল মোহনার দিকে। যদিও সে পৌঁছাতে পারেনি। তার আগেই জোয়ারের টান শুরু হয়েছিল। এভাবে সে কোনওবারই মোহনা অব্ধি পৌঁছাতে পারে না। দশটা পাঁচটা অফিসের মত সে যাতায়াত করে। প্রত্যেকটা মানুষ তার প্রিয় নদীর ওপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এভাবে। ব্যাস। গল্পে এটুকুই ছিল। এরপর আলো কমে আসবে আস্তে আস্তে। ড্রপ স্ক্রিন নেমে আসবে। দর্শক উঠে হাততালি দিতেও পারে আবার নাও দিতে পারে। অথচ আলো কমছে না, ড্রপ স্ক্রিন নামছে না। কলাকুশলী, আলো, প্রপ সব ভেসে যাচ্ছে মোহনার দিকে। আবার ফিরে আসছে। দর্শক সম্মোহিত দর্শকের মত তাই দেখছে। ভাবছে, এরকমটা মঞ্চে আগে কখনও ঘটেনি। এবার ড্রপ সিনের বদলে, পরিচালকের ঝুলন্ত দেহ নেমে আসছে দৃশ্যের সামনে। তার ক্ষীণ শরীর আর কতটাই বা ঢাকতে পারছে? অথচ সে চেয়েছিলো ঢাকতে। দর্শক উঠে দাঁড়িয়ে কানফাটানো হাততালি দিতে থাকে। এমন ঘটনা তারা মঞ্চে কোনওদিন দেখেনি।

#

তিনি বাড়ি ফিরে দেখেন, সব ভোঁ ভাঁ… একটা চিরকুটে ত্যাড়াব্যাঁকা অক্ষরে লেখা, “ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়ি গেলাম… এভাবে আর থাকা যাচ্ছে না… ভালো থেকো…”। সে বলে ওঠে, “মাগী…”। ঘর থেকে ছুটে বেড়িয়ে এসে সাইকেলটাকে লাথি মারে। সাইকেল ভাঙা সংসারের মত আওয়াজ করে শুয়ে পড়ে। ছ’খানা চপ ছুঁড়ে ফেলে দেয় উঠোনে। বুকপকেট থেকে একশো ত্রিশ টাকা ছুঁড়ে দেয় ঘরের দিকে। বলতে থাকে, “এই টাকায় আরেকটা দিন চলত না শালি?”

#

তোমার গায়ে দিন, কাল, মুহুর্ত লেগে থাকে। বুকের মাপ বদলায়। গালে ব্রণর দাগ বাড়ে। আমরা কিছুতেই আদি শীতকাল বাঁচিয়ে তুলতে পারছি না। আমাদের জ্বর আসছে। এসি কমিয়ে দিচ্ছি। বালিশের নিচে এ এম আই কিলবিল করে। বালিশের ওপরের হেলদি সেক্স লাইফ মুড়ে ঘুমাই। থিতানো শহর জুড়ে সাঁতার শিখছে সবাই। সবার ডুবে মরতে ভীষণ ভয়। মায়ের উজান আসে, আমার চতুর ধূপের আলো… গন্ধে ঘোরালো সিঁড়ি। বাসি পায়েস ঘিরে ধরে পিঁপড়ে। ইদানীং রাংতা মানেই ভালো। সর্বনাশ জ্বলে। তার গন্ধ পবিত্র। তার নাভি পোড়ে না।

#

সমবেত কবিতার কাছে বড় ক্লান্ত হয়ে গেছিলাম। তুঙ্গে ছিলো আদর। স্খলন, দেখা দাও- এই ছিল আমাদের আর্তি। প্রার্থনার মত নতজানু হয়ে, যদিও তার সুর ছিলো অন্যরকমের, বলেছিলাম, এই পর্বের সব ও সমস্তটা আমরা আজীবন মনে রাখব। হ্যাঁ, অবশ্যই আমাদের কড়া দাবি থাকবে। আমরা ক্রমশ নিজেদের ঈশ্বর ও ঈশ্বরী ভাবতে শুরু করেছিলাম। তখন সম্ভবত মাঝরাতের আশেপাশে আর কোলকাতার পিনকোডের অনেকদূরে ছিলাম আমরা। পরমসৃষ্টির মুহুর্তে যেরকম বিষ্ফোরণের কথা ছিল, তার ধারপাশ দিয়েও না গিয়ে ব্যাপারটা পুরোটাই এগোচ্ছিলো ভিজে, স্যাঁতসেঁতে, ক্ষণ উষ্ণ আর দীর্ঘ শীতলের দিকে।

আসলে লং-রেঞ্জে, আমরা ইস্যু নেওয়ার প্ল্যান করেছিলাম। তুমিও কনসিভ করতে প্রস্তুত ছিলে। আমাদের বয়স সঠিক ছিল। শর্ট রেঞ্জে আমরা ভীরু পাখির মত কাঁপছিলাম। আমাদের ভয় ছিল, ধেড়িয়ে ফেলার।

#

আমাকে শেখানো হয়েছিলো সময় একখানা চলমান বেয়াদপ ঘোড়া। আর আমি নিজেকে শিখিয়েছিলাম, উড়োজাহাজ মানে একরকমের পক্ষীরাজ। একফোঁটা ফুরসত ছিল না তখন আকাশের। এখন সেসব আমার হাতের রেখায় চলে এসেছে। নেভা কয়লাখাদানের মত রোদ্দুরের ক্যান্ডি মুখে আমি জড়িয়ে জড়িয়ে বলেছি, একটা বউ থাকলে ভালোই হতো। আস্ত বিস্কুটের মত আমার সময় চিবোচ্ছে কেউ খিদেতে। তার গুঁড়ো ছড়িয়ে পড়ছে উইন্ড চার্মে। ফলে আমাদের ঘুম ভাঙছে দেরি করে। বাইরে ততক্ষণে ভিড় আর শহরে ঘুমের ওষুধের বিক্রি বেড়ে গেছে। হাঁয়ের মধ্যে কেউ ঢুকিয়ে নিচ্ছে আদর, পিল, ওভারডোজ, বিশ্বরূপ। দাঁতে ধাক্কা খেতে খেতে, লালায় ভিজতে ভিজতে আমরা ক্যালেন্ডারের সঙ্গে পুরোনো হচ্ছি। আমাদের বোরোলীনের গন্ধে জাঁকিয়ে নস্টালজিয়া। তার ক্ষয়ক্ষতিহীন বদলে জয়স্তু। অমরত্বেও। উজ্জ্বলতম রোদের মত মেইলবক্স। হ্যাঙারে ঝুলছে সংসার। একটু থমকে আবার আমরা শুধুমাত্র নিজেকে নিয়েই ভাবতে শুরু করি। আমাদের ফিরতে হচ্ছে আগামীকাল। ছুটি ফুরিয়ে আসছে মফস্বলের মত।

#

বচ্ছরকালের দিনে সে একচিলিম গাঁজা খায় আর তারপর দু’টো পিঁয়াজি… তার চেবানো খুব শান্ত… ধীরলয়ে… তারপর প্রত্যেকবারের মতই সাইকেলটা হাঁটিয়ে কোথাও একটা চলে যায়… মাঝেমধ্যে দু একজনকে জিজ্ঞেস করে,

–একটা ফর্সা মতন বউকে দেখেছ এদিকে যেতে? সঙ্গে চারটে বাচ্চা থাকবে!

আমি ততবার বুঝতে পারি, সে সংসারের মায়া কিছুতেই কাটাতে পারছে না… তার সাথে আমার ক্রমে কথা জমছে…

একদিন উনুনের পাশে বসে সে ঝিমাচ্ছিল। তাকে জিজ্ঞেস করলাম,

–ফেরেনি?

–না… ফিরবে না আর হয়তো…

–চলে গেল কেন?

–ওই যে, ভাতার হয়ে ভাত না জোগালে থাকবে? কেন থাকবে?

আমি চুপ করে থাকি। সেও। তারপর ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে,

–আজ পূর্ণিমা না?

–হ্যাঁ

–হুম

–কেন? বাতের ব্যাথা বাড়ে নাকি?

–উঁহু

–তাহলে?

–বললে বিশ্বাস করবে না

–বলোই না

–পূর্ণিমার রাতে আমার কেমনপানা হয়… কিচ্ছু মনে থাকে না… শেষে ফিট মতো লেগে যায়…

–ভয় করছে?

–হুম

–আমারও

#

তলপেট মুচড়ে ওঠে। শূন্যস্থানে খেলে বেড়াচ্ছে আলো। আলোয় তার লজ্জা খুব। সে বরং ছায়ার অনেক সাহসী। আর অন্ধকারে নিজের মত। তখন ফুরসত নেই থামার। সে নামাবলিকে পর্যন্ত অহেতুক প্রণাম করে। মৃত্যুসংক্রান্ত সমস্ত কিছুতে তার ভয়। আমি তাকে বলি, সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে আমি একবার ঈশ্বরের সান্নিধ্য পেয়েছিলাম। সে ধ্যাৎ বলে উড়িয়ে দেয়। সে বলে, ঈশ্বর শুধুমাত্র সিঁড়ির ওপরের দিকেই থাকেন। একমাত্র অনেক ওপরে উঠলেই তার সাথে দেখা হওয়া সম্ভব। আমার উচ্চতায় আগে থেকেই ভয় ছিলো। জাঁকিয়ে ধরছে। ঈশ্বর নিয়ে মিথ্যে গল্পটা সে খেলই না, উলটে আমার সাথে ঈশ্বরের দেখা হওয়া যে আর কোনওভাবেই সম্ভব না, সেটা বুঝিয়ে দিল ঠারেঠোরে।

#

সে ইদানীং রাস্তার প্রায় সব মানুষকেই জিজ্ঞাসা করে,

–একটা লোককে যেতে দেখেছ এই রাস্তা দিয়ে? যার সাইকেল আছে…কিন্তু হাঁটিয়ে ঘোরে… দেখেছ?

#

অনেকদূর থেকে দেখি, কুণ্ডলি পাকিয়ে আছে থরেথরে সংসার। তাদের কোমর থেকে কাপড় খসে গেছে। যোনি সম্পর্কে যেমন বিতৃষ্ণা এসে যায় কারোর কারোর, তেমনভাবেই এলিয়ে ঘুমোচ্ছে ব্যাগবন্দি মাসকাবারি। আমি এলোবিলি লিখছি বোধহয়। আদিযৌবনের মত খিদে পাচ্ছে কম। ঠাকুরদালান ভরে উঠেছে না’তে। আমার একবছর মন্দিরে ওঠা বারণ। এক বছরের মধ্যে বিয়ে করাও দৃষ্টিকটু। অথচ আমার সেলাইজ্ঞান শূন্য।

#

সে উনুনের পাশে বসে ঝিমোচ্ছে। আজ আবার ছ’টা বেগুনীর অর্ডার দিয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে ফিরে এসেছে। নিজেই বকে যাচ্ছে। কেউ শুনছে কেউ শুনছে না।

–হ্যাহ… যাবে কোথায় মাগী?… জানতুম ঠিক ফিরে আসবে… আবার একগাদা জিনিস আনা হয়েছে… লাথ মেরে ফেলে দেব…

–কেন?

–হ্যাঁ?

–ফেলবে কেন?

–তাহলে কি ভিক্ষা নেব?

–উঁহু… উপহার তো

–উপহারের গুয়া মারি…সেদিন কি হল জানো?

–কি?

–ফিট অব্ধি সব ঠিকঠাকই ছিল… ওরকম হওয়ারই কথা ছিল… তারপর মনে হল কে য্যানো মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে… তাকিয়ে দেখলুম বউ… কেমন পরীপানা দেখতে লাগছে… ঘরে কেমন ডাকছিল?

–গেলে না?

–পাগল?… যায় নাকি?… ওসব জ্বীন… আকার নেয়… কিছুই জানো না…

–ওহ…ঝগড়া করো না…কেমন?

–হুম

#

সে ইদানীং শহরের সব মানুষকেই জিজ্ঞেস করে,

–একটা ফর্সামতন বউ আর চারটে বাচ্চাকে একদিক দিয়ে ফিরতে দেখেছ? সঙ্গে অনেক জিনিস ছিল… দেখেছ?

#

দর্শক হাততালি দিয়েই চলেছেন। পরিচালকের লাশে ততক্ষণে রাইগর মর্টিস লেগেছে। কলাকুশলীদের মধ্যে যারা সাঁতার জানতেন না, তারা ইতিমধ্যে ডুবে গিয়ে আবার লাশ হয়ে ভেসেও উঠেছেন। যারা সাঁতার জানতেন, তারাও ক্রমে নেতিয়ে পড়ছেন। খানিকবাদে তারাও ডুবে যাবেন। মেকআপম্যান কোনও কাজ না পেয়ে, জলে নীল মেশাচ্ছেন ক্রমাগত- যাতে দৃশ্য ক্রমে সুদৃশ্য হয়। আর দর্শকগণ মাংসের দম দেওয়া পুতুলের মত এক তাল, এক লয়ে হাততালি দিয়ে যাচ্ছেন। মঞ্চে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি কখনওই।