Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

শ্রীজাতা গুপ্ত

কলকাতা ২০২১ -- শ্রীজাতা গুপ্ত

কলকাতা ২০২১

 

গেলাস ঠুকে স্বাস্থ্যপানের নিয়মরক্ষা যে অনাড়ম্বর সময় দাবী করে
সেখান থেকে ধার করে
আমরা চুমু খেলাম ভগ্নাংশ সেকেন্ড
এক বোতল চিলড্ দুপুর ভাগ করে খেলাম সাবেকি বিয়র-মাগ-এ
তর্জনীর ডগা খুঁটে চিনেবাদামের নুন চেটে নিলে তুমি
আর আমি ভেবেছি, ওই কপালের ধার বেয়ে নামা ঘামবিন্দু
ভাদ্রের আপেক্ষিক আর্দ্রতার নিরিখে কতখানি লবণাক্ত।

……………

 

দীর্ঘ নির্বাসন জুড়ে
মায়ের জন্য এক ছাদ বাগান গুছিয়ে দিয়েছি
জানলায় ভার্টিক্যাল উপবন।
পাতা শিকড় মাটি
আমার অনুপস্থিতি
সারজল যত্ন দিয়ে গড়েছি দুই হাতে

আশ্বিনে কুড়িয়ে নেবে শিউলি, করবীতে কুঁড়ির আভাস পেলে ছবি পাঠাবে শিশুর উচ্ছ্বাসে
টেবিল সাজাবে মৌসুমী ফুল

রোজ সকালে গাছেদের আশেপাশে ঘুরবে যখন
আমার হাতের পাতায় ছুঁয়ে যাবে মায়ের আঙুল

…………

 

অসময়ের বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচানোর আগে হাতঘড়ি আড়াল করে আমরা বাড়ির দিকে ছুটছি।
সামনে বাবা, পিছুপিছু আমি
আগে কখনও খেয়াল করিনি,
ঘড়ি পরা হাত পিছমোড়া করে পিঠে শার্টের গায়ে উলটোনো কবজি চেপে
অবিকল এক ভঙ্গিমায় আমি আর বাবা আগলে রাখতে শিখেছি সময়।

….……

 

ভিক্টোরিয়ান ড্রামায় দেখি রাজপরিবারের ব্ল্যাকশিপ সদস্যরা একা মদ খেতে বসলেও সামনে দুটো গেলাস সাজায়। একটা নিজের, অন্যটা আনুষ্ঠানিক। শিলং-এ সন্দেহজনক শুঁড়িখানায় যেমন বৃদ্ধ মাতাল বামমুষ্ঠিতে ধরে রাখে অক্লান্ত প্রতীক্ষা, ডানহাতে একের পর এক গলায় ঢালে হাঁড়িয়ার শট্। পার্শ্বচরিত্রে শূন্যপাত্রের ভূমিকা-নির্মাণ একাকিত্বের দক্ষ অনুবাদ। এমন আর কোনও চিত্রায়ণ সম্ভব কিনা ভাবতে ভাবতে চিত্রনাট্যে ঢুকে পড়ে আমার ব্যক্তিগত সান্ধ্য ঠেক। যে কোনও চুমুকে এবার বেজে উঠবে ডোরবেল। তোমার দিকে এগিয়ে দেব শেষ পাত্র। শুকনো করতল।

…………..

 

বড়ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা জেনেও
হানিকর ইচ্ছেগুলি নিজের চৌহদ্দির মধ্যে রাখতে পারি না
সিগারেটে আগুন দিলে
মুর্খ আবহাওয়া যেমন নন-স্মোকারের দিকে ঘুরিয়ে দেয় ধোঁয়ার অভিমুখ
সমস্ত প্রতিরোধ তুচ্ছ করে
আধপোড়া মন গুটিগুটি চলেছে তোমার কাছে।

বিধিবদ্ধ সতর্কতা জারি করে অনায়াসে
এড়িয়ে গেছ তুমি
অস্বস্তি বলে সরে দাঁড়ালে ধূম্রপায়ীর থেকে দূরে।