Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

ক্যাপ্টেন দুপুরে ভাত খেতে গেছে আর নাবিকেরা দখল নিয়েছে জাহাজের — নবম পর্ব

চার্লস বুকাওস্কি

 

অনুবাদ : শুভঙ্কর দাশ

অষ্টম পর্বের পর

 

১০/২০/৯১

রাত ১২টা ১৮ মিনিট

এটা তেমন একটা রাত যখন কিস্যু নেই। ভাবুন সারাক্ষণ এভাবে থাকা। ভেতরটা চেঁচে কেউ ফাঁকা করে দিয়েছে। হতোদ্যম। কোনও আলো নেই। কোনও নাচ নেই। এমনকি কোনও বিতৃষ্ণাও।

এভাবে তো মাথা ঠিক রেখে আত্মহত্যাও করা যাবে না। ওটা মাথাতেই আসবে না।

উঠে পড়ো। গা চুলকোও খানিকটা। জল খাও।

নিজেকে মনে হচ্ছে জুলাই মাসের রাস্তার কুত্তার মতো, যদিও এখন অক্টোবর।

তবু বছরটা ভালোই গেছে। গাদা গাদা কাগজ পড়ে আছে আমার পেছনের বুককেসে। ১৮ই জানুয়ারি থেকে লেখা। যেন একটা ছেড়ে দেওয়া পাগল। কোনও সুস্থ লোক অতগুলো পাতা লিখতে পারবে না। এটা একটা অসুখ।

এ বছরটা ভালোই চলছে কারণ নিজেকে আমি আঁটকে রেখেছি অতিথিদের কাছ থেকে, এতটা কখনও নিজেকে আঁটকে রাখিনি আমি। একবার অবশ্য আমাকে ভুলকি দিয়ে দিয়েছিল। কেউ একজন লন্ডন থেকে আমাকে লিখল যে সে সোয়েটোতে পড়িয়েছে আর যখন সে তার ছাত্রদের বুকাওস্কি শুনিয়েছে তারা তখন বেশ উৎসাহ দেখিয়েছে। কালো আমেরিকান বাচ্চারা। আমার সেটা ভালো লেগেছিল। দূর থেকে এ ধরনের ঘটনা সব সময় ভালো লাগে আমার। পরে সে আমাকে লিখে জানায় যে সে ‘গার্ডিয়ান’-এর জন্য এখন কাজ করে আর সে এসে আমার একটা সাক্ষাৎকার নিতে চায়। সে মেল-এ আমার ফোন নাম্বার চায় আর আমি তা জানাই তাকে। সে আমাকে ফোন করে। ব্যাপারটা ঠিকঠাকই লেগেছিল। আমরা একটা দিন আর সময় ঠিক করি আর সে আমার কাছে আসার জন্য যাত্রা শুরু করে। সেই রাত আর সময় এসে পড়ে আর সে এসে উপস্থিত হয়। লিন্ডা আর আমি তাকে ওয়াইন দিয়ে আপ্যায়ন করি আর সে শুরু করে। সাক্ষাৎকারটা ঠিকঠাকই লাগছিল শুধু মনে হচ্ছিল আগে থেকে না তৈরি হয়ে করা কাঠখোট্টা প্রশ্ন সব, অদ্ভুত। সে একটা প্রশ্ন করছে, আমি তার উত্তর দিচ্ছি আর সে বলতে শুরু করছে তার অভিজ্ঞতার কথা যা প্রশ্ন আর উত্তরের সাথে কিছুটা হলেও সম্পর্কিত। ওয়াইন ঢালা চলছে আর সাক্ষাৎকার শেষ হয়ে গেছে। আমরা মদ্যপান করে চলেছি আর সে বলে চলেছে আফ্রিকা ইত্যাদি নিয়ে। ওর কথা বলার ভঙ্গি পালটাতে থাকল, পালটে আরও মোটা দাগের হয়ে উঠল। আর সে যেন ধীরে ধীরে আরও স্টুপিড হয়ে উঠতে লাগল। আমাদের চোখের সামনে ঘটে যেতে থাকল তার এই রূপান্তর। সে শুরু করল যৌনতা নিয়ে আর তাই নিয়ে চালিয়ে যেতে থাকল। তার কালো মেয়েদের পছন্দ। আমি বললাম আমরা ওরকম মেয়েদের বেশি চিনি না, লিন্ডার একজন বন্ধু আছে অবশ্য কিন্তু যে মেক্সিকান। ব্যাস ওটা শুনেই ও শুরু করে দিল ও মেক্সিকান মেয়েদের কতটা পছন্দ করে। ওই মেক্সিকান মেয়েটি যে লিন্ডার বন্ধু তার সাথে ওকে আলাপ করতেই হবে। হবেই। আমরা বললাম, ঠিক আছে, দেখা যাক। কিন্তু ও চালিয়ে যেতে থাকল। আমরা ভালো ওয়াইন খাচ্ছিলাম কিন্তু ওর মাথাটা এরকমভাবে কাজ করছিল যেন সেটা গোলমাল পাকিয়ে গেছে হুইস্কিতে। কিছুক্ষণের মধ্যে ব্যাপারটা গিয়ে দাঁড়াল ‘মেক্সিকান… মেক্সিকান… কোথায় সেই মেক্সিকান মেয়ে?’ ও পুরো ঘেঁটে গেছিল। ও জাস্ট হয়ে উঠল একটা বোধহীন বাররুমের পেঁচো মাতাল। আমি বললাম রাতটা শেষ হয়ে গেছে আর আমাকে পরেরদিন ঘোড়দৌড়ের মাঠে যেতে হবে। আমরা ওকে ধরে দরজার কাছে নিয়ে গেলাম। ‘মেক্সিকান… মেক্সিকান…’ ও বিড় বিড় করে চলল।

‘সাক্ষাৎকারটার একটা কপি আমাদের পাঠাবে নিশ্চয়ই?’ আমি জিজ্ঞাসা করি।

‘নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই,’ সে বলে। ‘মেক্সিকান…’

আমরা দরজাটা বন্ধ করি আর ও চলে যায়।

ওকে মাথা থেকে বার করতে আমাদের আবার মদ্ নিয়ে বসতে হয়।

এটা বেশ কিছু মাস আগের ঘটনা। কোনওদিনই কোনও সাক্ষাৎকার এসে পৌঁছোয় না। আসলে গার্ডিয়ান-এর সাথে ওর কোনও সম্পর্কই নেই। আমি জানি না ও সত্যিই লন্ডন থেকে ফোন করেছিল কিনা। ও হয়ত ফোন করছিল লংবিচ থেকে। সাক্ষাৎকার নেওয়ার ভান করে লোকে ঘরের ভেতর ঢুকতে চায়। আর যেহেতু সাক্ষাৎকারের জন্য কেউ পয়সা দেয় না সচরাচর তাই যে কেউ দরজায় কড়া নাড়তে পারে একটা টেপরেকর্ডার আর প্রশ্নের লিস্টি নিয়ে। এক রাতে একটি লোক এল একটা টেপরেকর্ডার আর তার জার্মান বাচনভঙ্গি নিয়ে। সে দাবি করল সে এসেছে কোনও এক জার্মান প্রকাশনা থেকে যার প্রচার কয়েক লক্ষ। সে থাকল বেশ কয়েক ঘণ্টা। ওর প্রশ্নগুলো বেশ বোকা বোকা লাগলেও আমি উত্তর দিতে শুরু করি, ব্যাপারটাকে প্রাণোচ্ছল সুন্দর করার চেষ্টা করি। ও প্রায় ঘণ্টা তিনেকের রেকর্ডিং করে। আমরা মাল খেতে থাকি, আরও আরও। কিছুক্ষণের মধ্যে ওর মাথাটা ঝুঁকে পড়ে সামনের দিকে। শেষ অবধি মাল খাওয়া চলে টেবিলের তলায় গিয়ে আর আরও চালাব আমরা ভাবি। একটা তেড়ে মজা হবে। ওর মাথাটা নুয়ে আসে ওর বুকের কাছে। ঠোঁটের কোণ দিয়ে লালা গড়াতে থাকে। আমি ওকে ঝাঁকাই, ‘আরে ওঠো ওঠো, জাগো!’ ওর চটকা ভাঙে আর আমার দিকে তাকায়। ‘একটা কথা আপনাকে বলতে হবে আমায়,’ সে বলে, ‘আমি কেউ নই সাক্ষাৎকার নেওয়ার, আমি শুধু আপনাকে দেখতে এসেছিলাম।’

কিছু কিছু সময় এমনও গেছে আমি লোভী হয়ে পড়েছি ফোটগ্রাফারদের ব্যাপারে। তারা দাবি করে তারা একে চেনে ওকে চেনে, নিজেদের কাজের নমুনাও পাঠায়। তারা আসে তাদের স্ক্রিন নিয়ে আর তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে আর তাদের ফ্ল্যাশ নিয়ে আর তাদের সহকারী নিয়ে। তারপর তাদেরও কোনও পাত্তা পাওয়া যায় না। মানে তারা কোনও ছবিই পাঠায় না আরকি। একটাও না। ওরা হচ্ছে সব থেকে বড় মিথ্যাবাদী। ‘আমি আপনাকে একটা পুরো সেট পাঠিয়ে দেব।’ একটি লোক একবার বলেছিল আমায়, ‘আপনাকে একটা ফুল সাইজ ছবি পাঠাব আমি।’ ‘তার মানে কী?’ আমি জিজ্ঞাসা করি। ‘আমি আপনাকে একটা ৭ বাই ৪ ফুট ছবি পাঠাব।’ বেশ কয়েক বছর হয়ে গেল সে ঘটনার।

আমি চিরকালই বলেছি, একজন লেখকের কাজ হল লেখা। এইসব বালের লোকজন খানকির ছেলেদের জন্য আমি যদি জ্বলে পুড়ে যাই সে দোষ আমার। ওদের প্রতি আমার আর কোনও উৎসাহ নেই। ওরা যাক না এলিজাবেথ টেলারের কাছে তেল মারতে।

১০/২২/৯১

বিকেল ৪টে ৪৬

একটা বিপদজনক জীবন। সকাল ৮টাতে উঠে পড়তে হয়েছে বেড়ালদের খেতে দেওয়ার জন্য কারণ ওয়েস্টেক সিকিউরিটির লোক আসবে সকাল ৮-৩০-এর ভেতর আরও একটা আধুনিক বিপদ সংকেত লাগানোর জন্য। (আমিই কি সেই লোক যে নোংরা ফেলার টিনের উপর ঘুমিয়ে রাত কাটিয়েছে?)

ওয়েস্টেক সিকিউরিটির লোক ঠিক ৮-৩০-এ এল। এটা ভালো লক্ষণ। আমি তাকে নিয়ে বাড়ির চারদিক ঘুরিয়ে দেখালাম, দেখালাম কোথায় জানালা, দরজাগুলো আছে। বেশ, বেশ। ওগুলো আমরা তার লাগিয়ে জুড়ে দেব, কাচ ভাঙার ডিটেক্টর লাগিয়ে দেব, লো বিম, ক্রস বিম, আগুনের জন্য জল ছেটানোর ফোয়ারা ইত্যাদি। লিন্ডা নেমে এসে কতগুলো প্রশ্ন করল। এ ব্যাপারে ও আমার থেকে পারদর্শী।

আমার একটাই চিন্তা, ‘কতক্ষণ লাগবে এইসব করতে?’

‘তিন দিন’, লোকটা উত্তর দিল।

‘হে ভগবান’, আমি বললাম। (এর ভেতর দুদিন বন্ধ থাকবে ঘোড়দৌড়ের মাঠ।)

আমরা আনাড়ির মতো কিছুক্ষণ এদিক সেদিক করে লোকটাকে ওখানেই ছেড়ে এলাম এই বলে যে আমরা আসছি এখনি। আমাদের কাছে ছিল একটা ১০০ ডলারের গিফট সার্টিফিকেট, আই ম্যাগ্নিন-এর, কেউ একজন আমাদের বিয়ের তারিখে দিয়েছিল। তাছাড়া আমার রয়্যালটি চেকটাও জমা দিতে হবে। তো ব্যাঙ্কে গেলাম। চেকটাতে সই করলাম।

‘আপনার সইটা আমার খুব পছন্দ’, মেয়েটি বলল।

আরেকটা মেয়ে এসে সইটা দেখল। ‘ওর সই সারাক্ষণই পালটে পালটে যায়,’ লিন্ডা বলল।

‘আমাকে আমার নাম বইয়ে সই করতে হয়।’ আমি বলি।

‘ও একজন লেখক’, লিন্ডা বলে।

‘সত্যি? আপনি কী লেখেন?’ একটা মেয়ে জিজ্ঞাসা করে।

‘বলো ওকে,’ আমি লিন্ডাকে বলি।

‘ও কবিতা, ছোট গল্প আর উপন্যাস লেখে,’ লিন্ডা বলে।

‘আর একটা চিত্রনাট্য,’ আমি বলি। ‘বারফ্লাই’।

‘ওহ’, একটি মেয়ে হাসে, ‘আমি দেখেছি ওটা।’

‘তোমার কি ভালো লেগেছিল?’

‘হ্যাঁ’, সে হাসে।

‘ধন্যবাদ’, আমি বলি।

তারপর আমরা বেরিয়ে আসি।

‘আমরা যখন ভিতরে ঢুকছিলাম আমি শুনতে পেয়েছিলাম একটা মেয়ের কথা, ‘আমি জানি ওনাকে’, বলে লিন্ডা।

দেখছ তাহলে? আমরা তো বিখ্যাত। আমরা গাড়িতে উঠে একটা শপিং সেন্টারে যাই খাওয়ার জন্য।

আমাদের একটা টেবিল জোটে, আমরা টার্কি স্যান্ডউইচ, আপেলের জুস আর ক্যাপুচিনো খেলাম। আমাদের টেবিল থেকে মলের অনেকটাই দেখা যাচ্ছিল। জায়গাটা প্রায় খালি। ব্যবসায় মন্দা চলছে। যাক আমাদের ওড়ানোর জন্য আছে একশো ডলারের কুপন। আমরা এই খারাপ আর্থিক অবস্থাকে সাহায্য করব।

আমিই একমাত্র পুরুষ ওখানে। শুধু মেয়েরা টেবিলে বসে আছে একা একা অথবা দুজনে মিলে। পুরুষরা আছে অন্য কোথাও। আমি কিছু মনে করিনি বরং মেয়েদের সাথে অনেক স্বচ্ছন্দ বোধ করেছি। আমি বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। আমার ক্ষত শুকোচ্ছিল। অল্প ছায়া ভালোই লাগছিল। সারাক্ষণ পাহাড়ের চূড়ো থেকে লাফ আর কে দিতে চায়। হয়ত খানিকটা বিশ্রামের পর আবার গিয়ে লাফ মারব আমি। হয়ত।

আমরা খাওয়া শেষ করে গেলাম আই ম্যাগ্নিনে।

আমার জামা দরকার। জামা দেখলাম। কিন্তু কিছুই বাঁড়া ভালো লাগল না। দেখে মনে হচ্ছিল শালা কোনও এক হাবা এগুলো ডিজাইন করেছে। আমি এগিয়ে গেলাম। লিন্ডার একটা পার্সের দরকার ছিল। ও পেল একটা, ৫০% ডিস্কাউন্ট কার্ড লাগানো। ৩৯৫ ডলার। ওটা আদৌ ৩৯৫ ডলারের পার্সের মতো দেখতে নয়। বরং ৪৯. ৫০ ডলারের মতো দেখতে। লিন্ডাও এগিয়ে গেল। ২টো চেয়ার ছিল পিছনে হাতির মাথা লাগানো। সুন্দর। কিন্তু ওগুলোর দাম কয়েক হাজার ডলার। একটা কাচের পাখি ছিল, সুন্দর, ৭৫ ডলার কিন্তু লিন্ডা বলল ওটা রাখার জায়গা নেই আমাদের। একই কথা বলল ওই নীল ডোরা কাটা মাছটার ব্যাপারে। আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ছিলাম। এই জিনিসপত্র দেখা আমাকে ক্লান্ত করছিল। এইসব ডিপার্টমেন্ট স্টোর আমাকে ক্লান্ত করে তোলে আমাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে গুঁড়ো করে দেয়। ওখানে আসলে কিছুই নেই। টন টন ফালতু জিনিসপত্র। ওগুলো যদি ফ্রিও হত আমি নিতাম না। ওরা কি কখনও এমন জিনিস বেচে না যা ভালো লাগবে?

আমরা ঠিক করলাম হয়ত আরেক দিন আসব আমরা। আমরা একটা বইয়ের দোকানে গেলাম। আমার কম্পিউটারের জন্য আমার একটা বইয়ের দরকার। আমাকে আর একটু জানতে হবে। একটা বই পেলাম। দোকানির কাছে গেলাম। সে ট্যাবে বিল করল। আমি দাম মেটালাম কার্ড দিয়ে। ‘ধন্যবাদ’, সে বলল, ‘আপনি কি দয়া করে এটাতে সই দেবেন?’ সে আমাকে আমার সদ্য প্রকাশিত বইটা দিল। দেখো, আমি বিখ্যাত। দু দুবার একই দিনে লোকে আমাকে চিনেছে। দুবার যথেষ্ট। তিন বার বা তার বেশি হলে আপনার বিপদ আছে। ভগবান আমাকে একেবারে ঠিকঠাক নিয়ে চলেছে। আমি তার নাম জিজ্ঞাসা করলাম, লিখলাম সেটা বইয়ের ভেতর, আরও কিছু হিজিবিজি লিখলাম, আমার নাম আর একটা ড্রইং।

ফেরবার সময় কম্পিউটারের দোকানে থামলাম আমরা। আমার লেজার প্রিন্টারটার জন্য কাগজের দরকার ছিল। ওদের কাছে পেলাম না। দোকানির দিকে হাত মুঠো করে ঘুঁসি পাকালাম। পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল। ও একটা জায়গার কথা বলল। ফেরার পথে সেটা খুঁজে পেলাম আমরা। ওখানে সব কিছু পেলাম সস্তায়। প্রচুর লেজারের জন্য কাগজ নিলাম যা কম করে বছর দুয়েক তো চলবেই আর খামও নিলাম, কলম, কাগজ আঁটকানোর জন্য ক্লিপ ইত্যাদি। আর এবার জাস্ট আমাকে লিখতে হবে।

আমরা ফিরে এলাম। সিকিউরিটির লোকটা চলে গেছে। টাইলস লাগাবার লোকটা এসে ঘুরে গেছে। সে একটা নোট রেখে গেছে, ‘আমি বিকেল ৪টের ভেতর ফিরে আসব।’ আমরা জানি ও ৪টের ভেতর ফিরে আসবে না। ও একটু পাগলা আছে। একটা খারাপ ছোটবেলা কাটিয়েছে বেচারা। খুব কনফিউসড। কিন্তু টাইলসের কাজে খুব ভালো।

আমি উপরে জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখলাম। আমি তৈরি এবার। আমি বিখ্যাত। আমি একজন লেখক।

বসে পড়ে খুললাম কম্পিউটারটা। বোকা বোকা খেলাগুলো খুলেছিলাম। তারপর টাও খেলতে শুরু করলাম। ধীরে ধীরে আরও আরও ভালো খেলছিলাম আমি। আমি কম্পিউটারের বিরুদ্ধে খুব কম সময়ই হারি। ঘোড়ার উপর বাজি ধরার থেকে এটা অনেক সোজা কিন্তু ঘোড়দৌড়ের মতো পরিপূরক নয়। যাক বুধবার তো ফিরে যাচ্ছি ফের। ঘোড়দৌড় আমার স্ক্রুগুলোকে টাইট করে দেবে আবার। এটা ছকের একটা অংশ। কাজে দেয় খুব। আর আমাকে ৫০০০ লেজার কাগজের পাতা ভরে লিখতে হবে যে।   

আবার আগামী সংখ্যায়