খালিদা খানুম
মাঝে মাঝে একটা স্বপ্ন দেখে ছন্দা।
ঘন বন। সরু পথ চলে গেছে বনে। পাশে পাশে লম্বা লম্বা গাছ। চাঁদের আলোতে কিছুটা পথ দেখা যায়। পথ ধরে কিছুটা হাঁটতে হাঁটতে, চাঁদনি আলো বাড়তে থাকে, আরও প্রখর হয়, জোছনা রাতে তাপ লাগে। বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে।
ঘুমটা ভেঙে যায়।
ঘুমটা ভেঙে গেলেই স্বপ্নটা চলে যায়। ছন্দার মন খারাপ লাগে।
–পিউ, কফি খাবি না চা?
–নো কফি, নো চা ডারলিং, ওনলি গ্রিন টি।
–তোদের এই স্বাস্থ্য সচেতনতা!
–হোয়াট? আমাদের এই মানে কী? তুই বড় নাকি আমার থেকে? শাড়ি পরে বউ হয়ে গেছিস। আগেই বলেছিলাম, বিয়েটা করিস না। না তো প্রেমে হাবুডুবু। সিঁদুর পরে বউ সেজে নিলি।
পিউয়ের কথায় হেসে উঠে দুজনেই।
–আজ বিকালে কিন্তু মার্কেটিং-এ যাব। বাইরে ডিনার। পিউ বলে।
–তাহলে তুই সেই বিদেশে যাচ্ছিস?
–হ্যাঁ, তুই শুনলি আমার কথা? বিয়ে করে নিলি। ডিগ্রিটাও শেষ করলি না।
–দেশে তো জব করতে পারিস।
কী মনে হয়, ছন্দা কেঁদে ফেলে। পিউ জড়িয়ে ধরে চুলে বিলি কেটে দেয় — কাঁদিস কেন? আমি তোকে কনটাক্ট করব।
সুজিত নেভিতে কাজ করে। তিন মাস জল, তিন মাস ডাঙ্গা। মাসতুতো দিদির বিয়েতে দেখা হয়েছিল সুজিতের সাথে। সবে মাস্টার্স প্রথম বর্ষ ছন্দা। ছয় মাসের প্রেম, বিয়ে। বিয়ের গন্ধ কাটতে না কাটতে সুজিত আবার জলে।
আজ আবার স্বপ্নটা দেখা শুরু করে ছন্দা। আজ জোৎস্নাটা যেন আরও ঘন। নেশা নেশা লাগে।
মনে হয় স্বপ্নটা চলুক, চলতে থাকুক।
আবার ঘুমটা ভেঙে যায়। পিউ পাশে শুয়ে।
–ঘুমাসনি?
–না।
–নিড উ।
বলেই পিউ চুমুতে ভরিয়ে দিতে শুরু করে ছন্দার গাল ঠোঁট, ধীরে ধীরে নামতে থাকে বুকে।
ছন্দার তাপ লাগে, বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে। প্রচণ্ড জোরে জড়িয়ে ধরে পিউকে।
এই স্বপ্ন সে কিছুতেই শেষ হতে দেবে না।