Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

অন্য মুখ

অরণ্যা সরকার

 

—তুমি তো জানো মা, আমার মেকআপটা স্ট্যান্ডার্ড ছিল না বলে স্পেশাল ছবিগুলোতে মিতুলদি আমাকে পাশে বসতে দেয়নি। ইভেন্টের ছেলেটা কেমন বলেই দিল আপনার মেকআপটা ঠিক নেই। একটু সরে আসুন। আপনাকে আমি স্পেশাল কিছু ছবি তুলে দিচ্ছি। এমন মিষ্টি হেসে বলেছিল গা জ্বলে গিয়েছিল আমার। আমি ভুলে গেছি সে অপমান?
—কী জানি বাবা তোদের এসব মান অপমান আমি বুঝি না।
—বুঝতে হবে না। ছোড়দার বিয়েতে আমি পার্লার থেকে সেজে আসব। দেখি আমাকে বউদির পাশ থেকে কে সরায়। তুমি শুধু আমাকে পাঁচ হাজার টাকা দিও।
—সেকী রে! এত টাকা আমি পাব কোথায়? আর সাজতে এত টাকা লাগে?
—লাগে মা। এসব একটু জানো। বাবা তো কিছুই বোঝে না। তুমি অন্তত বোঝো। সব জায়গায় এত ছোট হয়ে থাকা যায় না। বাড়ির কাজের লোকদের লাইফস্টাইল দেখেছ। আমার তো লজ্জাই করে।
—জানিস তো, সোনার জিনিস দিতে হচ্ছে। তার মধ্যে শুধু সাজের জন্য পাঁচ হাজার! তোর বাবাকে আমি বলতেই পারব না।
—ম্যানেজ করো মা, নইলে আমার যাওয়াই হবে না। কতদিন ধরে আশা করে বসে আছি।
—এসব যে কী শুরু হয়েছে। বলে বিড়বিড় করতে করতে রান্নাঘরে চলে যায় আলোকণা।

এমন অনেক শুরু তো দেখছে আলোকণা। শুনছেও কতকিছু। বুঝছে না তার যথার্থতা। কখনও ভাবছে আমার আর বুঝে কাজ নেই। কখনও শুনছে সে পঞ্চাশ বছর পিছিয়ে আছে। তাতে কি খুব ক্ষতি হচ্ছে?

প্রতি মুহূর্তে মেয়েটা কিছু না কিছুর জন্য ঘ্যানঘ্যান করছে। চাহিদার শেষ নেই। ওকেও তো বিয়ে দিতে হবে। এত সব কি পারবে তারা? এখন তো শুনছে বিয়ের আগের দিন থেকে অষ্টমঙ্গলা পর্যন্ত ভালো মেকআপ আর্টিস্টের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। বাড়ির ছুঁড়ি থেকে বুড়ি সবাইকে সাজিয়ে ছবি তোলার যোগ্য করে তোলা হয়। বিয়ের মন্ত্র, আচারবিচার, নড়াচড়া সবই নিয়ন্ত্রণ করে ইভেন্ট ম্যানেজার, ফটোগ্রাফার। অ্যালবাম তৈরি হয়। অনেক টাকার খেলা। গ্ল্যামার কমে গেলেই বাজার খারাপ। কাজেই তীক্ষ্ণ নজর থাকে। কনেকে হাল্কা করে টিসু দিয়ে মুছে ফেলতে হবে চোখের জল। নইলে মেকআপ গলে গিয়ে ছবি খারাপ হবে। ছবিকে সমর্পণ করো আবেগ। সমর্পণ করো স্বস্তি। এসব দেখতে দেখতে ভয় হয় আলোকণার। দিন দিন পূর্ণা জেদি হয়ে উঠছে। সব পেতে হবে এমন একটা ভাবনা পেয়ে বসেছে। চারদিকেও তো এমনটাই দেখছে। আমাদের ঘরে এসব মানায়?— কথাটা আর মানায় না।

সরস্বতী পুজোয় বন্ধুদের সঙ্গে স্টুডিওতে গিয়ে গ্রুপ ছবি তোলার জন্য মার কাছে দশ টাকা চেয়েছিল আলোকণা। অনেক কান্নাকাটির পর মা টাকাটা দিয়ে বলেছিল, এসব আমাদের ঘরে মানায় না। টাকাটা পেয়ে মার কথা সাময়িকভাবে ভুলে গিয়েছিল ক্লাস সেভেনের আলো। তারপর কথাটা যে কতবার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। ‘আমাদের ঘর’ বিশেষ এক শ্রেণির সঙ্গে পরিচয় করে দিয়েছে। ধীরে ধীরে কথাটা বিশ্বাস আদায় করেছে। কোনও প্রশ্ন বা বিরোধ উঁকিঝুঁকি দিলেও তাকে খুব মৃদু ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে সেই বিশ্বাস।

 

দুই.

চায়ের দোকান থেকে সংগ্রহ করা মিহি ছাইয়ের সঙ্গে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে কলতলায় বসে বাসন মাজছিল আলোকণা। কাকটা বাথরুমের অ্যাসবেস্টরের চালে বসে তার চাহিদা জানাচ্ছিল। বারবার নিচে নেমে আসছিল। থালাগুলো কাচিয়ে খানিকটা ভাত ছড়িয়ে দিতেই সে খাওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল। ঘুঘু ডাকছিল কাছে কোথাও। একটা ঘন দুপুর এসে উঁকি দিয়ে যাচ্ছিল ভাড়াবাড়ির কলতলায়। ছবিটা ঝলক দেখিয়ে যায় আলোকণার মনে। এখন বেসিনে বাসন। কাক নেই। ছাই নেই। ভিম বার অথবা লিকুইডে লেবুর সুগন্ধ। প্রতিদিন একটু একটু বদল। তবু আরও একটা ফিকে দুপুর আসে। চাতালে উপুড় করা চাঁদির মতো চকচকে বাসনের পাশে এসে বসে ফেরিওয়ালার কাছে কাপড় দিয়ে কেনা থালা অথবা গামলা। মায়েদের চুল দিয়ে কেনা ছোট্ট বাটিটা নিয়ে দুই ভাই-বোনের কাড়াকাড়ি দেখতে পায় আলোকণা। মুখে ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদের মতো হাসি ফোটে। বাঁশি বেজে উঠেছিল। হ্যাঁ বাঁশিই তো। ঠিক গলা নয় কণ্ঠ, কণ্ঠ। হাঁপিয়ে যাওয়া রোদ্দুর। চলে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত। আলোর উপর সর পড়ছে। এমন সময় আনন্দ সংবাদ… আনন্দ সংবাদ। কণ্ঠজাদু। ছটফটিয়ে উঠছে একটা মন। ছুট দিতে চাইছে একজোড়া চোখ। কীসের আনন্দ, কী-ই বা সংবাদ এসবে আগ্রহ নেই। রিকশা গলিতে ঢোকার আগেই গেটের সামনে দাঁড়ায় আলোকণা। সাদা শার্ট, সাদা প্যান্ট, সাদা চটি আর মিঠুনছাঁট চুলের ছেলেটি রিকশায় পায়ের উপর পা তুলে মাইক্রোফোন মুখের সামনে ধরে কথা বলে চলেছে। আনন্দ সংবাদ, আনন্দ সংবাদ! আগামী রবিবার পনেরোই সেপ্টেম্বর বিনোদিনী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্ধে সাত ঘটিকায় এক ম্যাজিক প্রদর্শনী হতে চলেছে। ম্যাজিক দেখাবেন বিখ্যাত জাদুকর জুনিয়ার সিআর মজুমদার। টিকিট পঞ্চাশ টাকা। টিকিট পাওয়া যাচ্ছে গণপতি ভাণ্ডারে। আপনারা দলে দলে যোগদান করুন। কথা বলতে বলতে ছেলেটি একটা মিষ্টি হাসি পাঠিয়ে দেয় আলোকণার দিকে। এই তো ম্যাজিক। এর চেয়েও কি বেশি কিছু জাদুকরের ম্যাজিক? রবিদার মতো কি তিনি ম্যাজিশিয়ান? এমন করে চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দিতে পারে? গলাটা শুনলেই যেখানে যত ইচ্ছে পাথর হয়ে থাকে, সব জল হয়ে যায়। মনে হয় কোথাও কোনও অন্ধকার নেই। রবিদা, রবিদা আহা নামটা মুখে আনলেও জুড়িয়ে যায় সব। এমন রবিদার হাসিটুকু নিয়ে ঘরে ঢুকে গিয়েছিল আলোকণা।

বদলে গেছে ঘর। তবু হাসিটা দেখছে সে। দেখাকে আদর করে রেখেছে এত দিন। এই রাখা শুধু অভ্যেস নয়। আরও কিছু। সব অভ্যেসেই কিছু ভালোবাসা থাকে। বিকেলে তরকারি গরম করতে সে মাকে দেখেছে। নিজেও করেছে অনেক দিন। এ-সময় রোজ আলোকণার তরকারি গরমের কথা মনে হয়। কতদিন করতে হয় না। তবু মনে হয়। মনে হয় কী যেন করা হল না। স্টোভ জ্বালিয়ে রাতের তরকারি গরম করা, চুল বাঁধা, গা ধোয়া, সন্ধে দেওয়া এসব তো কিছুই নেই। তবু এইসব অভ্যেসের মায়া আছে। সন্ধেবেলা শুধু ধূপকাঠি জ্বালায়। ধুনো ধূপকাঠি জ্বালিয়ে স্মৃতি ঝালিয়ে নেয়। গা ধোয় রাতে শোওয়ার আগে, বিকেলে পাউডারমাখা মুখ, সরু কাজলপরা চোখ নেই। তেমন তীব্র অপেক্ষা নেই। তবে অপেক্ষার মায়া আছে। এখনও মনে হয় সারাদিনের ধকল শেষে একজন তার কাছে ফিরবে। রিকশা গলিটা পেরিয়ে চলে গেলেও, সেদিনও আলোকণার মনে হত রবিদা তার কাছেই ফিরে এল। বাতাসে ছড়িয়ে যেত রবিদার গলা আর লিফলেট। জনতা সার্কাস, জনতা সার্কাস…। অথবা দেখুন, সাড়া জাগানো যাত্রাপালা কালের বাঁশি…। বাঁশি বাজত গলি জুড়ে। বাঁশি বাজত বালিকা বয়সে। বাঁশিওয়ালাও শুধু সুরের ডাকে থেমে থাকল না। হিরো সাইকেলে হাজিরা দিতে লাগল। টিউশনফেরত আলোকণা টুকরো হয়ে হয়ে শুধু কণা হয়ে গেল। চপলদার কেবিনে মোগলাই আর রবিদার মুখে কণা ডাকে পৃথিবীর সব আলোর খোঁজ পেয়ে গেল আলোকণা। এরপর স্টুডিওতে পেছনে আকাশ পাহাড় রেখে কাঁধে হাত দিয়ে ছবি তোলা হল। উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরোল। সেকেন্ড ডিভিশন। পালাল দুজনে। শহর বদলে গেল। আলোকণাদের বাড়িতে সবাই ছোটখাটো হলেও চাকরি করত। কাজেই অমন লাফাঙ্গা ছেলেকে খুব স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিল না। বিএ-পাশ রবিদা মানে রবিরঞ্জন পাল নতুন শহরে একটা প্রেসে কাজ জোগাড় করেছিল। সঙ্গে চলছিল তার আনন্দ সংবাদ বিলির কাজ। রোজগার বাড়ল। বইয়ের ব্যবসা শুরু করল। নিজের প্রেস হল। ধীরে ধীরে পরিবার মেনে নিল। ভাড়াবাড়ি বদলে বদলে গেল। বদল এল বাজারে। মানুষের চাহিদা, প্রয়োজন পাল্টে গেল। কাজেই প্রেস ও বইয়ের ব্যবসা হোঁচট খেতে খেতে চলল। পরিশ্রমী রবিরঞ্জনও সময়কে মান্যতা দিয়ে ব্যবসাপদ্ধতি পালটাতে পালটাতে এগিয়ে চলল।

এখন ওদের নিজের বাড়ি। ছোট্ট উঠোন। বোগেনভেলিয়ার সঙ্গে পেঁপে-পেয়ারাও আছে। বেশ বড় বড় জানালা। খুব শখ করে বানানো। সন্ধে। ফোনের ইউটিউবে ‘ওম’ ধ্বনি ঘরে সাঁতরে বেড়াচ্ছে। ধূপকাঠির জুঁইগন্ধ গুলে যাচ্ছে সুরে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে জনালা দিয়ে ছোট্ট গেটের দিকে চোখ রাখছে আলোকণা। রবিরঞ্জন আসে রাত নটায়। ক্লান্ত, হাসিটা নরম। কৌতুক নেই। তবুও কণা খুঁজে নেয় তার রবিদার হাসি। রবিরঞ্জন এখন বইয়ের ব্যবসা, ছোট আকারের প্রকাশনা সংস্থার কাজে ব্যস্ত থাকলেও তবু প্রিয় কাজটা মাঝে মাঝে করে। আজ আর দলে দলে যোগদান করুন বলে না। বলে, অফারটা নিতে আজই আসুন। বুটিক, বিউটিপার্লার আর কিছু দোকানের বিজ্ঞাপন করে। এখন টোটো। এখন কথার কারসাজি। ছোট করে কাটা চুল। জিনস টিশার্ট। যে কোনও রঙের। তবে গলায় এখনও তেমনি সম্মোহন। পূর্ণা বলে, বাবা আর বিজ্ঞাপনের কাজ কোরো না। বন্ধুরা হাসে। রবিরঞ্জনও হাসে। কুয়াশামাখা হাসি। আলোকণা ঝাঁঝিয়ে ওঠে। কেন, হাসে কেন? তোর বাবার মতো কজনের এমন গলা? সবাই এমন করে কথা বলতে পারে? তোমরা কিছুতেই কিছু বুঝবে না। বলে মুখ লাল করে চলে যায় পূর্ণা।

—ছেড়েই দেব ভাবছি। মেয়ে লজ্জা পাচ্ছে।
—না ছাড়বে কেন? মেয়ে যা বলবে শুনতে হবে?
—তোমার আবেগ ও বুঝবে কেন? আমাদের সময় এখন শেষ কণা।
—না কিছুই শেষ হয় না। সব থাকে।
—জোর করে সব রাখা যায়?
—সব যায়।

হাসে রবিরঞ্জন। সেই রবিদার হাসি। ভাবে কী মনের জোর কণার। কিছুতেই যেতে দেবে না ফেলে আসা সময়কে। কী নিষ্ঠায় সে রবিদাকে খুঁড়ে খুঁড়ে বের করে আনে। এ যে কী পরম পাওয়া! এই পাওয়াটুকু নিয়েই সব অতৃপ্তি পেরিয়ে আসা যায়। আলোকণা মেয়ের মেকআপের কথা রবিরঞ্জনকে সব বলে। সব শুনে তিনি বলেন, বাবা এত সব হয়। কত কিছুই জানি না। তা কী করবে?

—কী আবার করব? দেয়া সম্ভব?
—না দিলে ও যে যাবে না বলেছে।
—ওসব বলে, তুমি ভেবো না। ঠিক ম্যানেজ করে নেব। আমি ভাবছি দিন দিন ওর চাহিদা যেমন বেড়ে যাচ্ছে সেটা ওর পক্ষেও তো ভালো না। এখনও তো আমাদের বলছে। এরপর তো ভালোমন্দ বিচার থাকবে না। চারদিকে যা চলছে। ভাবলেও ভয় করে। যাকগে খেতে চলো।

 

তিন.

—বিয়ের আর মাত্র পনেরো দিন বাকি। ভাগ্যিস ড্রেসগুলো আগে কেনা হয়েছিল। বাবাকে বলেছ মা?
—তোর কি মায়ামমতা নেই? বাবার পরিশ্রম চোখে দেখিস না?
—তার মানে দেবে না, তাই তো?
—হ্যাঁ তা-ই। নিজে বড় চাকরি করে এসব শখ মেটাস। আমরা পারব না।
—ঠিক আছে, নিজের টাকাতেই করব।

ঘরে গিয়ে শব্দ করে দরজা বন্ধ করে পূর্ণা। ভয় হয় আলোকণার। কিছু বললেই তো আজকাল সুইসাইড করছে ছেলেমেয়ে। সে নরম করে ডাকে। দরজা ধাক্কায়। বলে, আগে দরজা খোল, তারপর কথা হবে। দরজা খোলে পূর্ণা। তখন কথা হয় না। পরদিন নিজেদের অবস্থার কথা খুব ভালো করে বোঝায়। পূর্ণা চুপ করে যায়। জেদ করে না।

সব কাজ সেরে আলোকণা ম্যাগাজিন নিয়ে বিছানায় এসে বসেছে। গেটের মাধবীলতা যেন তাকিয়ে আছে বাড়িটার দিকে। মাঝে মাঝে জানালায় চোখ রাখছে আলোকণা। পাড়ার ভেতরে এখনও মাঝেমাঝে ফেরিওয়ালা আসে। নাইটি, কুর্তি, পাপোশ, বিছানার চাদর এসব বিক্রি করে। আলোকণার দুপুর ঠিক জমে ওঠে না ফেরিওয়ালার সুর করে হেঁকে যাওয়া না শুনলে। তাই সে স্মৃতিতে ফিরে যায়। টিনভাঙা… লোহাভাঙা… শিশিবোতলভাঙা… বি…ক্রি……। মেয়ে খেয়েদেয়ে স্পেশাল ক্লাসে গেছে। দুপুরটা স্মৃতি মেখে মেখে বেশ থকথকে। আলোকণার চোখের পাতা ভারি হয়। ঘুম ভাঙে কলিংবেলের আওয়াজে।

দরজা খুলতেই খুব দ্রুত নিজের ঘরে চলে যায় পূর্ণা। যেন পালিয়ে যায় মায়ের সামনে থেকে। আলোকণা কিছু বলে না। আবার বিছানায় এসে বসে। পশ্চিমের জানালা থেকে রোদ্দুর সরে যাচ্ছে। পূর্ণা ছুটে এসে মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। জমে থাকা সমস্ত দ্বিধা, দ্বন্দ্ব, অভিমান, ইচ্ছে, চাহিদা, বিশ্বাস, অবিশ্বাস, সব যেন চিৎকার করে সমর্পণ করছে নিজেদের। সন্তান তার পরাজয় ঢেলে দিচ্ছে মার কাছে। গলির মুখে শ্লথ হচ্ছে টোটোর গতি। রবিদার কণ্ঠ বলে চলেছে, এই পুজোয় আসুন নতুন করে নিজেকে দেখি। লাবণ্য বিউটি পার্লার আপনাদের জন্য এনেছে দারুণ দারুণ অফার। আসুন আর পুরনো আয়নায় দেখুন নতুন নতুন মুখ…। আলোকণা দেখছে একটা নতুন মুখের জন্য পূর্ণার ঘাড়ে, গলায়, মুখে, কালশিটে, আঁচড়-কামড় আর জীবনের প্রথম পাঠের বিস্ফোরণ।