Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

করোনা কি কেবলই কাতিল?

প্রসূন মজুমদার

 






লেখক কবি ও শিক্ষক




ধারণাগুলো অতিদ্রুত এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। সম্ভবত আমার একার নয়। অনেকেরই। আসলে এই হঠাৎ এসে পড়া অতিমারির দিনগুলো অনেক ভাবনার গোড়া ধরে টান দিতে শুরু করেছে আমাদের। এই সময়, এই সমাজ আর তার প্রেক্ষিতে ব্যক্তিগত অবস্থানকে ঝালিয়ে নিতে নিতে চিন্তাগুলোকে নতুন করে ছেনে দেখার অবসর এসেছে এখন। বিশ্বপরিস্থিতির এই সঙ্কটকে একটু নেড়েচেড়ে দেখতে বসে মনে হচ্ছে অতীতের তত্ত্বগত অবস্থানকে বর্তমানের খোপে না ফেলে আমাদের চলাচলকে নতুন করে মেপে দেখার খুব দরকার আজ। বিশেষ করে এই অসময়ে যখন অনেক মানুষ বিপন্ন তখন কী হবে আমাদের ভূমিকা? এইসব ভাবতে ভাবতে আসুন আমরা একটু সেইসব সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলি যে সমস্যারা বৈদ্যুতিন মাধ্যমগুলোর সান্ধ্যবাসরে এখনও ততটা আলোচিত নয়।

কোনও চিন্তা দাঁড়িয়ে থাকে প্রধানত যে বিষয়টার উপরে সেটা হল তথ্য। তথ্য থেকেই তত্ত্বের দিকে যাওয়ার যাবতীয় চেষ্টা আমাদের। আর এই তথ্যের দুনিয়াতেই প্রবল সঙ্কট উপস্থিত এখন। রাষ্ট্র তার প্রয়োজন মোতাবেক তথ্যকে ব্যবহার করে একথা আমরা প্রায় সকলেই জানি। কোন তথ্য কখন, কতটা এবং কীভাবে জনগণের সামনে নিয়ে আসা হবে সেটা রাষ্ট্রযন্ত্রই ঠিক করে দেয়। সুতরাং সরকারি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে থিসিস তৈরি হতে পারে কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না সেই থিসিসের কোনও এন্টিথিসিস তৈরি হয় ততক্ষণ নতুন ডিসকোর্সে যাওয়া সম্ভব না। এখন কথা হল সরকারি তথ্যের বিপরীতে যে বেসরকারি তথ্যের সরবরাহ তার বাস্তবতা নিয়ে তৈরি হচ্ছে দোলাচল। সোশাল মিডিয়ায় ফেক নিউজ এবং সেই ফেকের ফেক নিউজে এখন ছড়াছড়ি। এই মিথ্যাতথ্যের বানিয়ে তোলা এতটাই কারুকার্যময় যে মাঝেমধ্যে মিথ্যেকেই সত্যি বলে ভেবে বসে লোক। লোকের উপরে দোষ দেওয়াও যায় না। কিন্তু ইন্টেলেকচুয়ালরাও বিচারের জায়গায় তথ্যের মিথ্যায় আক্রান্ত হলে গুবলেট হওয়ার সঙ্কট সমাজের মাথায় পাথরের মতো চেপে বসে। বিশেষ করে এই অতিমারির দিনগুলোতে, যখন কী হচ্ছে যেমন বিচার্য হয়তো তার থেকেও বেশি বিবেচনার বিষয় আজ যে, কী হবে।  যখন সমাজ, অর্থনীতি এবং সম্পদ মহাসঙ্কটের সময় পেরোচ্ছে তখন কেবল ‘তোমার দেখা নাই’ বা ‘দুঃখ কি সহজে যায়’ বলার কাব্যিক ঘোরের ভিতর কাটানো যোগীদেরও কাজ হতে পারে কিনা সে বিষয়ে চিন্তার অবকাশ রয়েছে। কী হচ্ছে এখন? তথ্য যা বলছে তাকে ততটা বিশ্বাস না করে অভিজ্ঞতার দিকে যদি চোখ রাখি তবে দেখব মানুষ মৃত্যুভয় পেয়েছে। অর্থাৎ তাদের লড়তে হচ্ছে অস্তিত্বরক্ষার একদম বেসিক লড়াই। কিছুদিন আগে যে লড়াই ছিল আত্মপরিচয়রক্ষার আজ সেটা সরাসরি প্রাণ বাঁচানোর লড়াইতে বদলে গেছে। যারা আর্থিকভাবে একটু স্থিতিশীল তারা লড়াইটা একরকমভাবে লড়বে আর দরিদ্রদের লড়াইয়ের ধরন হবে আলাদা। এটাই স্বাভাবিক। এই লড়াইতে ব্যক্তি আর রাষ্ট্রের ভূমিকা কী হবে সেটাই ভাবার।

প্রথমেই আমরা যদি পূর্বলব্ধ জ্ঞানগুলোকে একটু ঝাড়াইবাছাই করে নিই তাহলে হয়তো এই সঙ্কটের ইতি দেখতে পেলেও পেতে পারি। এই মুহূর্তে আমরা যে জ্ঞানবিশ্বে রয়েছি সেখানে বৈজ্ঞানিক ভাবনাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই বৈজ্ঞানিক ভাবনাকে মনে করা হয় সারসত্য। অথচ দেখুন বিজ্ঞান নিজেই আজ বলছে যে নতুন এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কীভাবে লড়তে হয় তা সে পুরোপুরি  জানে না। সে পথ খুঁজছে। আমরা পথ হাতড়ে বেড়ানো ডাক্তারদের ‘হাতুড়ে ডাক্তার’ বলে এতদিন ছোট করে এসেছি। অথচ কোভিড ১৯ আজ প্রমাণ করে ছেড়েছে যে সব ডাক্তারই একটা পর্যায়ে এসে হাতুড়ে। তাহলে কতটা নির্ভর করব আমরা বিজ্ঞানের দেখিয়ে দেওয়া রাস্তার ওপর? যে রাস্তা রোজই পালটায় সেই গোলকধাঁধায় ঘুরে বেড়াব আমরা? এখানে কেউ হয়তো ভাববেন বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা ছেড়ে আমরা ধর্মের কাছে ফিরে যাব নাকি! সেইসব মানুষকে বলি ধর্মও একধরনের দর্শন, কিন্তু বিজ্ঞানের এই প্রযুক্তিসাধনার যুগে ধর্মের কিছু খুব বেসিক দর্শন ছাড়া আর কিছুই বোধহয় আমাদের পথ দেখাতে পারবে না। তাই আমার মনে হয় প্রচলিত বিজ্ঞানভাবনা থেকে এবার বেরিয়ে আসার সময় এসেছে। ধর্ম বা বিজ্ঞান যার দর্শনই যখন আমাদের চালিকাশক্তি হয়ে উঠুক না কেন, দুটোই কিন্তু আমরা অভিজ্ঞতা থেকে প্রয়োজনের তাগিদে তৈরি করেছি। সুতরাং এবারও সময়ের দাবি মেনে অভিজ্ঞতা থেকে তৈরি করতে হবে বাঁচার অস্ত্র।

কী হতে পারে সেই অস্ত্র?

রাজনীতি তার নিজস্ব নিয়মে মানুষকে ততখানিই সাহায্য করবে যতটা বা যেভাবে ভাবালে তার ক্ষমতা বজায় রাখতে সুবিধা হয়। রাজনীতির ব্যাপারটাই মূলত মানুষের সঙ্গে অপর মানুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ক্ষমতার সমীকরণ। একেবারে আদিযুগে যখন মানুষ একা গাছে চড়ে অস্তিত্বরক্ষার লড়াই চালাত তখনও রাজনীতি ছিল। সেটা ছিল যৌনতার রাজনীতি। কেবল যৌনসঙ্গী নির্বাচন ছাড়া অপরের থেকে কোনও সাহায্য পাওয়ার কথা ভাবেনি সে। এরপরে এল বর্বর যুগ। এবার কিন্তু মানুষ শিকার করতে শুরু করল আর শিকার হিসেবে তার সফট টার্গেট অপেক্ষাকৃত কম ক্ষমতাবান মানুষ।

আদিবাসীদের মধ্যে নরমাংস খাওয়ার চল এখনও কিছু কিছু গোষ্ঠীতে বজায় আছে। সেই চল কি আজও মানুষের ভিতর থেকে উবে গেছে? আজও ট্রাম্প যে ভাষায় একের পর এক হুমকি দিয়ে যাচ্ছে তাতে সেই মানুষখেকো বর্বরতারই প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে না কি? এই ঘটনা প্রমাণ করে যে অস্তিত্ব সঙ্কটে মানুষ এমনই পশুত্ব দেখায়। কারণ বর্বর মানুষের সংস্কৃতি আমাদের কালেকটিভ আনকনশাসে প্রোথিত। সেই কারণেই আমরা ক্ষমতাহীন মজুরদের কীটনাশক দিয়ে স্নান করাই কিংবা করোনার সময় ডাক্তার বা নার্সদের বাড়ি থেকে উৎখাত করি অথবা পরিচারিকার জ্বর হলে তাকে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে যেতে বাধ্য করি। মেনে নিতে কষ্ট হলেও এটাই বাস্তবতা যে মৃত্যুভয় যত গাঢ় হবে, এই ধরনের বর্বরতা ততই চেপে বসবে সমাজের হাড়ে ও মজ্জায়।

রাষ্ট্র এই অতিমারির থেকে বাঁচার পথ খুঁজতে গিয়ে প্রথমেই ব্যক্তির উপর যে দুটো অনুশাসন চাপিয়েছে তার একটা সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং আর একটা লকডাউন। এই দুই অনুশাসন চাপাতে গিয়ে সে ব্যবহার করেছে বিজ্ঞানকে। বৈজ্ঞানিক তথ্যের অবতারণা করে সে মানুষকে বুঝিয়েছে মানুষের ভালোর জন্যেই এখন মানুষের থেকে দূরে থাকতে হবে। মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে আর অন্যকে বাঁচাতে ঘরে থাকতে হবে মানুষকে। ব্যক্তি কি রাষ্ট্রের এই খবরদারি মেনে নিতে বাধ্য? রাষ্ট্র যে তথ্যটা লুকিয়েছে সেটা হল লকডাউনের দরকারই হত না যদি রাষ্ট্রের হাতে টেস্ট করার মতো কিট যথেষ্ট থাকত। তাহলে এই কিট নেই কেন? সহজ উত্তর হল সে এতদিন এই অতিমারির মতো বিপদকে পাত্তাই দেয়নি। সে মানুষকে রকেট চড়ার ইউটোপিয়া দেখাতে চেয়েছে আর ডিসটোপিয়া তৈরি করার জন্য ওই রকেটকেই ব্যবহার করে দেখিয়েছে ইটিদের আক্রমণের গল্প কিংবা ডাইনোসোরের জেগে ওঠার গল্প। অথচ যারা প্রকৃতির প্রতিশোধের কথা বলছিল, রাষ্ট্র এতদিন তাদের অপর বলে চিহ্নিত করে হেটেরোটোপিক দুনিয়ায় ঠেলে দিয়েছে। সাধারণ মানুষকে বুঝিয়েছে এরা সব আঁতেল। তাই আজ এই কঠিন সময়ে দাঁড়িয়েও গরিষ্ঠ সংখ্যক মানুষ কবি-সাহিত্যিক-ঐতিহাসিক-তাত্ত্বিক-সৃজনশীল শিল্পীদের আঁতেল বলে অপর দুনিয়ায় ঠেলে রাখে। তাদের রাষ্ট্র ভাবিয়েছে প্রযুক্তিই একমাত্র আরাধ্য আর আরাধ্য দেশ। দেশ মানে সলিডারিটি নয়। দেশ মানে সে শিখিয়েছে অন্যকে হিংসা, অন্যকে গ্রাস করতে চাওয়া। ধর্ম, অর্থ, কাম দিয়ে কেবলই নব্যবর্বরতা শিখিয়েছে রাষ্ট্র। ফলে ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রশাসক তার দেশরক্ষার জিগির তুলে বিপুল পরিমাণ অর্থ সেনাবাহিনীর জন্য খরচ করেছে। যে পরিমাণ অর্থ এই খাতে খরচ করা হয়েছে তার কয়েক শতাংশমাত্র স্বাস্থ্যখাতে এবং ডিসাস্টার ম্যানেজমেন্টে বরাদ্দ করেছে শাসক। সেই ভুলের ফল আজ এই অসময়ে ভোগ করতে হচ্ছে আমাদের। এক্ষেত্রে সাধারণের মনে হতেই পারে দেশরক্ষার ব্যাপকতর প্রয়োজন আছে। কিন্তু একটু ভেবে দেখলেই তারা বুঝবে যে বর্বরতা ছেড়ে যদি মানুষ বিশ্বমানবিকতার দিকে তাকায় তবে দেশপ্রেমের বাড়াবাড়ি শেষপর্যন্ত পারস্পরিক যুদ্ধ আর প্রতিযোগিতার মানসিকতারই প্রতিফলন। রোগ যেমন দেশের সীমা দেখে থেমে থাকে না তেমনই মানুষের বেসিক সমস্যাগুলো সবদেশেই একইভাবে কাজ করে। তাই মহামারি থেকে বেঁচে উঠতে যদি পারে এই পৃথিবী তবে এই দেশোদ্ধার নামক উন্মত্ততাকে প্রশ্ন করার যথেষ্ট দরকার আজ প্রমাণিত। সুতরাং যারা বলছিল কম্যুনিস্ট ইন্টারন্যাশনালের ধারণার মৃত্যু ঘটেছে তাদের বিশদে নাড়িয়ে দিচ্ছে এই করোনার প্রাদুর্ভাব। শিল্পসাহিত্যের পৃষ্ঠপোষণা কম করে যেদিন থেকে বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তির জয়গান শুরু হল সেদিন থেকেই নির্বিচার প্রকৃতিধ্বংস আর সৃজনীভাবনার ক্ষয় শুরু হল। এরই ফলে আজ এই চরম দুর্দিনে ইনোভেটিভ আইডিয়ার বিরাট ঘাটতি পালটে যাওয়া পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াইতে পিছিয়ে দিচ্ছে গোটা মানুষজাতিকে। আজ কিন্তু নতুন পরিসরে পুরনো ভুলগুলোকে সারিয়ে নেওয়ার অবসর এনেছে সময়। এরপরেও আমরা শুধু রোবট আর রকেট নিয়ে মেতে থাকব কিনা তাও ভেবে দেখতে হবে। করোনার মোকাবিলার রাষ্ট্রীয় টাস্কফোর্সে এখনও কেবল বিজ্ঞানবিদদের দেখা যাচ্ছে, তারা এখনও বুঝছে না নতুনতর ধারণার জন্য সৃজনীক্ষমতাসম্পন্ন ইন্টেলেকচুয়ালদের পরামর্শ ঠিক কতখানি জরুরি। ফলে রাস্তা ঠিক কোনদিকে বাঁক নেবে সেটা দেখিয়ে দেওয়ার জন্য স্ল্যাভো জিজেক বা নোয়াম চমস্কির মতো যে ক্রান্তদর্শী দার্শনিকদের দরকার ছিল তাদের স্বরগুলো আমাদের মতো কতিপয় লোক শুনতে পেলেও রাষ্ট্র অদ্ভুত নীরবতায় বহুদিন ধরে করে আসা ভুলের পুনরাবৃত্তি করেই চলেছে।

রাষ্ট্রের সামনে এখন যে সঙ্কট চরম হয়ে দেখা দিয়েছে সেগুলো ঠিক কী?

১) জনস্বাস্থ্য ভেঙে পড়ছে।
২) অর্থনীতির হাল অত্যন্ত খারাপ।
৩) রাজনীতির ভূমিকা প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়েছে।
৪) সমাজনীতির পুনর্বিন্যাস জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে।

এক্ষেত্রে মানুষকে উপরোক্ত চারটি বিষয় নিয়েই নতুন করে ভাবতে হবে। জনস্বাস্থ্য নিয়ে পূর্বকৃত ভুল এবার ভোলার সময় এসেছে। স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে ভবিষ্যতে রাজস্বের বৃহত্তম অংশ স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বরাদ্দ করার প্রয়োজন। স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে যে বিপর্যয় আসতে পারে তার জন্য আগে থেকে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য অবশ্যই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ পারদর্শী টাস্কফোর্স তৈরি করা দরকার। আর দরকার ক্ষমতার উৎপাতহীন একটি স্বয়ংক্রিয় সংস্থা যে তার অর্জিত জ্ঞানকে রাষ্ট্রক্ষমতার কাছে বিকিয়ে না দিয়ে বৃহত্তর মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে। বিভিন্ন সূত্র থেকে এখনও পর্যন্ত জানা যাচ্ছে যে দুনিয়াজোড়া আর্থিক মন্দা নাকি চূড়ায় উঠতে চলেছে। প্রায় ৪০ কোটি মানুষের চাকরি যেতে পারে। এসব শুনতে শুনতে মনে হয় ক্ষুধার্ত মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের সময় এগিয়ে আসছে। এই করোনাকাতর সময়ে তাই মানুষের চাহিদার থেকে দূরে সরে গেলে চলবে না। মানুষই আমাদের একমাত্র আরাধ্য। এই অতিমারির দুঃসময় আমরা পেরিয়ে যাব একদিন। সেদিনই আমরা পড়ব আরও এক অতিক্ষুধার দুঃসময়ে। সেই সময় কিন্তু মানুষের কষ্ট আর অনাহারের কাতর আর্তিতে নিয়ে গিয়ে ফেলবে আমাদের। মানুষ বুঝতে পারবে এইসময়ের হার্ড বা সফট কোনও ক্যাপিটালিজমই আর কাজ করছে না। তখনই স্পষ্ট হবে যে বামপন্থার মৃত্যু হয় না। তাই চন্দ্রগুপ্ত বা রবার্ট ব্রুসের মতো ফিরে আসতে হবে আমাদের। এই গৃহবন্দি গোপনচারিতা আসলে সেই সময়ের জন্য তৈরি হওয়ার অবসর। মানুষের মুক্তির বিপুল সম্ভাবনাকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার জন্য এখন সব ধরনের ধর্মীয় গোঁড়ামি থেকে দূরে থেকে পিছড়েবর্গের কণ্ঠকে কান পেতে শোনার সময়। আর্তনাদকে শুনতে না পেলে আর্তি থেকে বেরিয়ে আসার পথ দেখাতে পারব না আমরা। সময় কিন্তু খুব কাছে এসে গেছে। বন্ধুরা প্রস্তুত থাকুন, সংগ্রামের চরম মুহূর্তটির জন্য। বিপ্লবের পটভূমিকা প্রস্তুত হচ্ছে। আমরা সেই বিপ্লবের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি কি?