Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

প্রীতম বসাক

যেভাবে জীবনের দিকে ঝুঁকে থাকি

 

১.

তখন খুব সামান্য জেগে থাকে। ক্ষুধা ব্যতীত সব পাঠ্যের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে বলে মনে হয়। কোথাও চাল থেকে কুয়াশা বাছছে কেউ। দূরে অপেক্ষা করছে জামরুলগাছের মুখখানি। গুটিকয় হাঁস নিয়ে চলে গেল স্নিগ্ধ-কিশোর। আর রোদ ছড়িয়ে উড়ে গেল একটি দুটি শিমুলবীজ। তুমি কিন্তু জীবন নামক ফলটির নিকট ঠাঁই হয়ে আছ। তার পেকে ওঠার অপেক্ষায়। একটি কাঠবিড়ালি তোমাকে দেখে ভুলে যাচ্ছে বাদামের কায়ারূপ!

 

২.

তুমি আমার দূরের আনন্দ। ভাবি একদিন ওই গ্রামে প্রাচীন পুথির খোঁজ করতে যাব। একটি গহন কুয়োর কথা মনে হয়। জলকলমির নুয়ে থাকা। আমি কি নিষেধের নিকটে ফিরে আসব? নিসর্গ খুঁজব? এই যে শহরের কারুকাজ, তারও তো কিছু দাবি আছে। যত কূট হোক আমি একটি ছায়া পুষে রাখি। তার দুঃখের সমবয়সী হই। তুমি হে দূরের আনন্দ। তোমার কাছে যাওয়ার মতো সত্যে পৌঁছাতে পারিনি আজও।

 

৩.

পিপাসা পূর্ণ করি। নমস্কার রেখে আসি উদ্ভিদে। একটি পান্থশালা দেখে নিজের ভেতর টোকা মারি। সে রাজি তো রাতটুকু ভাগ করে নিতে! দেখি মসজিদের পাশেই কে ছায়া বেঁধে রেখে গেছে। খুব ঢোলা পোশাক গায়ে। আমি তার কাছে সুফি-গানের পাঠ নিব। অসীমে অনুগত হব। জল একটা প্রতীক। সময় ও শূন্যের মাঝে টলটল করে। তুমি হাত-মুখ ধুয়ে মানুষে পা রেখো। পান কোরো তার হয়ে ওঠাটুকু।

 

৪.

তারপর দুঃখগুলো স্পষ্ট হয়। তারা ভেজা চুল শুকোতে রোদে এসে বসে। এতদূর পৌঁছে বেঁচে থাকা সম্পর্কে একটা গল্প-সঙ্কলন করার কথা ভাবা যেতে পারে। হাসি আর অশ্রুর সূত্রগুলি লিখে রাখা যায়। ভাত খুব সহজ উচ্চারণ— যে বলে তার কাছে আগুনের বেগ বিষয়ে শুনে নিও। জেনো আমি নিজের ভিতর কোনও নায়ক রাখিনি। সাদা দিয়ে বানিয়েছিলাম শিল্পরূপ। এখন দুঃখ মায়ের মতো মনে হয়। দাঁত নেই। হাসিটুকু আছে।