Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

সেকেন্ড সেক্স এবং…

অনির্বাণ ভট্টাচার্য

 

কেরলের আরাট্টাপুজার এস শঙ্করী। নারকেল ছোবড়ার শিল্প আর চলছে না। জানেন না কী করে তাঁর সংসার চলবে।

উত্তরপ্রদেশের চিত্রকূটের ভুরি কাল্লু। বৃদ্ধা। ঘরে জল ঢুকে সব ভাসায় প্রায়ই। সরকারি নির্মল অভিযানে টয়লেট শুরু হয়েছিল, তিনধারে দেয়াল, ওইটুকুই। আর কিছু বসেনি। বৃদ্ধা ওখানে রুটি আর মটরডাল রান্নার জন্য উনুন বসিয়েছেন। বিক্রি করে যা হয়। কিছু তো কাজে দিচ্ছে…

গুজরাটের জুনাগড়। হীরাবেন পারমার। আরও কয়েকজন বান্ধবী মিলে তৈরি করলেন ‘ন্যায় সমিতি’– মালিয়া মহিলা মঞ্চ। আইন পড়লেন একটু আধটু। মদ খেয়ে বৌ পেটানো, মহাজনি কারবার– কেউ পার পায় না এই মহিলাদের কাছে। দৃষ্টান্ত…

হরিয়ানা। যেখানে ফিমেল ইনফ্যান্টিসাইড সাংঘাতিক। গ্রামের নাম সাদিকপুর। মঞ্জু সিং। ছোটবেলায় বাবা মেয়ে হয়েছে শুনে স্ত্রীর আম্বিলিকাল কর্ড কাটতে গেছিল। কোনওরকমে বাধা দেয় ঠাকুমা। ঐ গ্রামে সিং পরিবারে মেয়ে হলে বাঁচতে দেওয়া হয় না। মঞ্জু বেঁচেছে। এখন গ্রাম ঘুরে ঘুরে নারী শিক্ষার প্রচার চালান। মেয়ে ইস্কুলে পড়ে…

আসোয়ারপুর। আবার হরিয়ানা। গ্রামের মেয়েদের ক্লাস টু-এর বেশি পড়া মানা। গ্রামের মহিলা নিশা অহলাধিয়ার লড়াই করে মেয়ে কাশিশকে ক্লাশ ফাইভ অব্দি পড়াচ্ছেন। স্বপ্ন আছে ডাক্তার বানাবেন…

ছত্তিসগড়ের অবুঝমাঠ উপজাতি। মহিলারা ৭০ কিমি দূরে ওরচা বাজারে গোটা একদিন হেঁটে কোশা শাড়ীর জন্য কাঁচামাল পতঙ্গের কোকুন স্থানীয় জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করে বিক্রি করে। গ্রামে নিয়মিত ম্যালেরিয়া, ডায়েরিয়া। ফিরে বাচ্চাগুলোকে দেখতে পাবে তো?

ওড়িশার গোবিন্দপুর। গুজ্জরি মোহান্তি। ৭০ বছর। পোস্কো কোম্পানির রক্তচক্ষু সামলে নিজের পানের বরজকে আগলে আছেন। জানেন না কদিন পারবেন…

গোয়ার ভাদেল পরিবারের রিতা কামেরা। ৭০ পেরিয়েছে বয়স। জাতিতে কুনবি নামের আদিবাসী। মহিলারা সবাই মধ্যবয়সী। পেশা? মারগাও বাজারে কুলিবৃত্তি। ভারী আলমারি তোলা। ৫০ কেজির মূল্য ২০ টাকা। রিতা বাকিদের সঙ্গে ভাগ করে নেন…

রাজস্থানের উদয়পুর। চামনিবাই মীনা। বৃদ্ধা। ঘরে মাটির সুরক্ষিত পাত্রে দেশী বীজ সংরক্ষণ করে আসছেন বছরের পর বছর। ঘরের যা খুশি হোক, ভাসুক, ভাঙ্গুক, তবু, বীজগুলো যেন ভালো থাকে…

পুনের ভামাবাই মাস্তুর। স্বামী অন্য মহিলার সঙ্গে অনেককাল হল চলে গেছেন। টিমটিম দোকানঘরে বসে জুতো সেলাই করেন। বাক্সে ঠাকুরের ছবি। ভামাবাই বলেন-– ‘আমার ঠাকুর’। দুই সন্তান পেটেই মারা গেছিল। ভামাবাই এখন ৭০ পেরিয়েছেন।

মহারাষ্ট্রের ওয়ার্ধা। উজ্জলা পেথকর। স্বামী তুলোচাষী। ছিলেন। আত্মঘাতী। উজ্জলা ডাল চাষ করেন। প্রচণ্ড গরমে। ছেলেগুলোর পড়াশুনো। শোকের সময় কোথায়?

সুন্দরবন। গীতা মৃধা। ২০১৭র ভ্যালেন্টাইন ডে। বাঘ টেনে নিয়ে গেল স্বামীকে। অথবা আলাপী মণ্ডল। বরাত একই। তবে দিনটা অন্য আরেক দিন। এমন একটা সমাজ, যেখানে এই টাইগার উইডোদের ‘স্বামী খেকো’ তকমা জোটে। ফিসফাস। একঘরে হয়ে যাওয়ার ভয়ে শোক আনতেই দেন না এঁরা। চিংড়ি বা কাছাকাছি খাঁড়িতে বিভিন্ন রকম সারভাইভাল ফারমিং করে জীবন কাটাচ্ছেন। জল বাড়ছে সমুদ্রের। জনসংখ্যাও। ছেলেমেয়েরা যেন এই কাজে না আসে। খেতে পায়। পড়তে পায়। আলাপী, গীতারা ক্রমশ মাছ ধরতে জঙ্গলের দিকে যাচ্ছেন। যেখানে ওঁদের স্বামীরা হঠাৎ একদিন…

ওড়িশার কোরাপুট। লক্ষ্মী পাণ্ডা। ফ্রিডম ফাইটার। নেতাজী আইএনএতে থাকাকালীন তাঁকে ‘ইন্দিরা’ বলে ডাকতেন। লক্ষ্মী সেহগাল, গৌরী, লেফটেন্যান্ট জানকীদের সঙ্গে বর্মায় গেলেন। সেই ইন্দিরা। এখন বৃদ্ধা। রাজ্যের প্রজাতন্ত্র দিবসে তাঁকে ‘কার পাস’ দিয়ে ইনভাইটেশন কার্ড দেওয়া হয়েছিল। কার পাস? বীভৎস মজা। লক্ষ্মীর গাড়ি নেই। স্বামী ড্রাইভার ছিল। গাড়ি চালাত। তাও প্রায় চার দশক আগে। ওড়িশা রাজ্য সরকার থেকে এই ন্যূনতম স্বীকৃতি পেলেও কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামী তকমা হারিয়েছেন। তাঁর ‘অপরাধ’, তিনি কোনওদিন জেলে যাননি। আই এন এ-র জীবিত বেশ কয়েকজন তুমুল আপত্তি জানাল। অবশ্য তাতে সরকারের কিচ্ছু যায় আসে না। আসেওনি। লক্ষীর পেনশন ১০০০ টাকা, মাসে। স্থানীয় স্কুলে পতাকা তুলতে যাবেন। কী করে? সবকটা শাড়ী শতচ্ছিন্ন। ছেলে মদ্যপ। অসুস্থ নাতি নাতনী। তবু, লক্ষী ফাইটার …। পায়ে পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। কদম কদম বাড়ায়ে…

তেলেঙ্গানা। জাংতি লাচ্ছাভভা। দলিত। এখন ৮৬। তবে ওইসময় ষোড়শী ছিলেন। ওইসময় মানে ১৯৪৮। নিজামদের কর দিতে অস্বীকার করলে বাইরানপল্লী গ্রাম আক্রমণ করল নিজামের রাজাকারেরা। লুঠ। খুন। আরও তিনজন বান্ধবীর সঙ্গে জঙ্গলে, আগাছার মধ্যে মাসতিনেক লুকিয়ে কাটালেন। ধরাও পড়লেন। সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করে গ্রামের মধ্যে ঘোরানো হল। তেলেঙ্গানা রাজাকারদের হাত থেকে বেরিয়ে এসেছে অনেকদিন। ১৭ই সেপ্টেম্বর সেই তেলেঙ্গানা লিবারেশন ডে। কিন্তু জাংতি তাঁর নারীত্বের সম্মান হারিয়েছেন। ছেলে কৃষক। তার সঙ্গেই থাকেন। গ্রামের বুর্জ ওয়াচটাওয়ারের কাছে ঘটা করে স্বাধীনতার ষাট-সত্তর হয়। স্থানীয় অনেকেই ২৫০০০ টাকা ‘ফ্রিডম ফাইটার’ মাসোহারা পান। জাংতির ভাগ্যে জোটেনি। জোটে না। না তকমা। না টাকা।

কিরণমালা বা অর্পিতা রায়চৌধুরী। আসল নামটা বদলাতে হয়েছে বেঁচে থাকার তাগিদে। বাংলাদেশী নারী। নবযুগ ব্লগিং সাইটে যোগদান। সংখ্যালঘু, নারী ও শিশুদের ওপর অবিচার নিয়ে অজস্র লেখালেখি। ব্যাস, আর সহ্য হয়? খুন, লুঠ, গ্যাংরেপের থ্রেট। রাস্তায় প্রকাশ্যে যৌনকাতর টিটকিরি, বাদ যায়নি ছোট বোনও। অবশ্য কিরণের গল্পটা অনেকটা আগে থেকেই শুরু। এইচএসসির পর কম্পিউটার ট্রেনিং কোর্সে ঢুকলেন কিরণ। সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে রাষ্ট্রীয় নীতি অনুযায়ী সংখ্যাগুরুসুলভ দায়িত্ব অর্থাৎ মেন্টাল এবং ফিজিক্যাল সাপ্রেশন। কিরণ বেশিদিন কাপ করে থাকলেন না। একটি ছেলেকে সবার সামনে থাপ্পড়। আর কী, এরপরে দায়িত্বটা নিয়ে নিল মব। কিরণকে ওদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে, এমন একটা আবদারে ঘর লুঠ, কিছু পড়শির সাহায্যে বেঁচে যাওয়া। তারপর ধর্মীয় বিচারসভায় আন-লেডিলাইক ব্যবহারের জন্য অপরাধীর তকমা পাওয়া। আর পরের ইতিহাসটা শুরুতেই বলেছি…

লড়াকু। সেকেন্ড সেক্স। সাইমোন বিভয়ার এঁদের দেখে যেতে পারেননি। মেয়েদের, স্বপ্নকণ্ঠদের হারানো যায় না, পুরনো ক্লিশে। ওই যেমন বিপ্লবীর মৃত্যু হয়, আইডিয়া অমর, বিপ্লব অমর। ঠিক এই প্রসঙ্গে পরে আসছি।

যেটা নিয়ে কথা হচ্ছিল। এসবের মাঝে গৌরী লঙ্কেশের অবস্থানটা কোথায়। ডিসেন্ট। মোটামুটি এই ট্যাগমার্ক পেয়ে গেছিলেন নাগপুরের লাঠিওলাদের কাছ থেকে। অবশ্য, নাগপুরেই সীমাবদ্ধ থাকলে ব্যাপারটা অন্য হত। ফ্রিজের মধ্যে মাংসের ভেতর ঢুকে গিয়েই সমস্যা হল। রবীন্দ্রনাথ জাতীয়তাবাদ বিরোধী। এসবের ভেতরেও ঢুকে যাওয়া। দীননাথ বাত্রা এবং আরও অনেক বশংবদ নিরোর অতিথি। এসব এক অন্য গল্প। তো, এসবের মাঝে কেন গৌরী লঙ্কেশের বেঁচে থাকা সমস্যার ছিল? কেন তাঁর খুন একটা আচমকা উৎসবের জায়গা করে দিল? যেমন ইউ আর অনন্তমূর্তির মৃত্যুর পর পটকা ফাটানোর জাজ্বল্যমান প্রমাণ এখনও হাতের কাছে খুঁজলেই পাওয়া যাবে। লঙ্কেশ পত্রিকা কোনও সরকারি বা বেসরকারি বিজ্ঞাপনে চলত না। পি লঙ্কেশ বলতেন, পরিবারের এবং শুভানুধ্যায়ী মানুষদের অর্থসাহায্যেই চলবে। যতদিন চালাতে পারি, চালাব। –এত সত্যি কথা লেখেন, ভয় হয় না? –ওরা আমায় কিছু করবে না। সাহস নেই। ঠিক, ওদের টার্গেটটা মানুষটার কন্যার দিকে স্থির ছিল। গৌরী শুরুতে এখানেই লিখতেন, কাজ করতেন। পরে একজন তথাকথিত বিতর্কিত রাজনৈতিক নেতার সাক্ষাৎকার নেওয়াকে কেন্দ্র করে মতভেদ।  গৌরী সরে গিয়ে বের করলেন ‘গৌরী লঙ্কেশ পত্রিকা’। মেয়েদের নিজেদের কিছু নেই। গাড়ি, বাড়ি সব স্বামী সন্তানদের নামে। একমাত্র সোনাই মেয়েদের। না, বিজ্ঞাপনটা ঠিক সোনার হয়ে নয়। পণপ্রথার হয়ে, পৌরুষের হয়ে একধরনের মার্কেটিং-এর মতো শোনাচ্ছে না? মেয়ে পড়াও। মেয়ে বাঁচাও। যাতে ছোট থেকেই তার বিয়ের জন্য জমানো শুরু করা যায়। শাবাশ…। তো, গৌরী নিজেকে স্থির রাখেননি। বলেছেন, শাসক, আমি সোনার ওপর নির্ভর করি না। আমার নিজস্ব নারীত্ব আছে, আমায় এভাবে অপমানের ভার তোমাদের দেওয়া হয়নি। অনেকটা এরকমই ছিল গৌরীর কথাগুলো। কিংবা, এস এল ভাইরাপ্পা। তথাকথিত উচ্চবর্ণের লেখক। মহাভারতের আদলে তৈরী ‘পর্ব’ উপন্যাসে বংশবৃদ্ধির জন্য বিবাহ-বহির্ভূত ‘নিয়োগা’ রিচুয়ালিস্টিক সঙ্গমের কথা লিখলেন। যাতে নায়ক উচ্চবর্ণের হিন্দুরা। ঠিক উল্টোদিকে পেরুমল মুরুগান। নিম্নবর্ণের লেখক, এখানেও সেই তথাকথিত। একইরকম সেক্স প্র্যাকটিসের কথা তুললেন লেখায়। ব্যাস, চেপে বসল উচ্চবর্ণের হিন্দুত্বের দাঁত। অথচ ভাইরাপ্পার বেলায় তাঁরা টুঁ শব্দটিও করেননি। গৌরী প্রকাশ্যে এই ডবল ডিলিং দেখে প্রতিবাদ করলেন। বললেন, ‘আমি দুই লেখকের কাজকেই অকুন্ঠ প্রশংসা করি, কিন্তু এক দল আছে, যারা দুমুখো নীতি নিচ্ছেন।’ স্থানীয় ব্রাহ্মণ সমিতি এফআইআর দায়ের করল থানায়, স্বাভাবিকভাবেই। সেই গৌরী। কখনও লড়তে লড়তে একটু হতাশা, একটু পাশে থাকার মানুষের অভাব কোথাও না কোথাও টের পেতেন। ব্যাঙ্গালোরের রাজরাজেশ্বরীনগরের ঘরে গুলিবৃষ্টির আগে শেষ টুইট করলেন, যার সারমর্ম করলে দাঁড়ায়–  ‘আমরা নিজের সঙ্গে নিজেরাই যুদ্ধ করছি না তো? আমাদের কমন গ্রেটার এনিমি কে বা কারা আমরা জানি। প্লিজ, ফোকাস হারাবেন না।’

অথবা সাবিন মাহমুদ। নারী। ভয় জিনিসটা ঠিক কী? সাবিন সংজ্ঞা দিলেন– ‘ভয় ব্রেনের ভেতর একটা রেখা মাত্র, ডিসিশনটা তোমার, তুমি ওই রেখার কোনদিকে থাকবে।’ সাবিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ওই রেখা থেকে অনেকটা দূরে তাঁর বসবাস। সাদ আজিজ অথবা সাদকে যারা রিক্রুট করেছিল তাদের কারবার অবশ্য ছিল ঐ রেখার আশেপাশেই। এতটাই ভয়। ২৪ এপ্রিল। ২০১৫। বালুচিস্তান সমস্যা নিয়ে ডিবেট করালেন সাবিন। সাথে মামা কাদির। বিতর্কিত এক্টিভিস্ট। ভেনিউ করাচীর টি টু এফ ক্যাফে, যার আরেক নাম সেকেন্ড ফ্লোর। মুক্তকণ্ঠ সোচ্চার করে ঘোষণা করার জন্য সাবিনের স্বপ্নের প্ল্যাটফর্ম। ওই সেমিনার থেকে ফেরার রাস্তায় টি টু এফের ৫০০ মিটার উত্তরে একটি রেড লাইট ট্রাফিক সিগনালে দাঁড়াল তাঁর সুজুকি সুইফট। পাশে একটা বাইকে থামল টনি, সাদ। পিস্তল। আসলে স্বপ্নকন্ঠদের আটকাতে গেলে মার্সিনারিদের কোথাও না কোথাও থামতে হয়, স্বপ্নকন্ঠরা থামে না। ৯ মিলিমিটার পিস্তলে ৫ থেকে সাতবার গুলি চলল। গাড়ির পেছনের সিটে মা মেহনাজ। আহত। পাঁচটা গুলি গুনে গুনে সাবিনের মাথার ভেতর, বাকি একটা মাথা ফুঁড়ে বাইরে। শেষমেষ, সাবিনের দেহজ অস্তিত্বের চলে যাওয়া। তবু, কোথাও থেকে যাওয়া সাবিনের কথা, কথামালারা– ‘চমস্কি পড়ো, আমাদের চারপাশে বীভৎস বিপজ্জনক এক সময় ওঁৎ পেতে আছে, তবু ভয় যেন আমাদের গ্রাস না করে, অনেক কাজ বাকি পড়ে আছে যে…..’

সব মিলিয়ে, মেয়েদের গল্পগুলো অনেকটা এরকমই। এ লেখা তাঁদের জন্যই যারা মালালার বাইরের পৃথিবীর গল্পগুলো অতটা জানেন না। জানেন না যে, লড়াইটা, লড়াইয়ের ইচ্ছেটা প্রোথিত আছে খোদ দেবীজন্মের মধ্যেই। রক্তে, অপমানে শুদ্ধ হতে হতে এই দেবীজন্মের এগিয়ে যাওয়া। লক্ষ্য বলতে কখনও ফ্রি স্পিচ বা কখনও জাস্ট টিকে থাকার লড়াই। সীমান্তের এদিকে ওদিকে তফাৎ ঠেকে না কোনও। এর মধ্যে শেষমেষ বেঁচে থাকা বা না থাকাটা তো এক অন্য গল্প। মেয়েরা আসলে তো একটা সমষ্টিগত অস্তিত্বরক্ষার লড়াইয়ের নাম, এখানে ব্যক্তিগত সার্ভাইভাল বোধহয় সবসময় সঠিক স্ট্যাটিস্টিক্সটা দেয় না।  আর তাই, এই লড়াই থামার অপেক্ষাতেও থাকে না….