Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

দোয়াত জীবন সম্বন্ধে জানতে চায়

ফেলিক্স দাভিদোভিচ ক্রিভিন

 

মূল রুশ থেকে ভাষান্তর: লীলা সরকার

ফেলিক্স দাভিদোভিচ ক্রিভিন (১৯২৮-২০১৬) সোভিয়েত রাশিয়ার লেখক। ১৯৫১-তে কিয়েভ থেকে স্নাতক হন। প্রথম জীবনে প্রকৌশলী হিসেবে দানিয়ুব জাহাজ তৈরির সংস্থায় কাজে যোগ দেন। ছয়ের দশক থেকে শুরু করে পঁচিশটির বেশি গ্রন্থের প্রণেতা। ২০১৮ সালে প্রথমবার তাঁর গল্প ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়। ১৯৯৮ থেকে জীবনের শেষ বছরগুলি তিনি ইজরায়েলে কাটান এবং সেখানেই মারা যান। বর্তমান গল্পগুলি সরাসরি রাশিয়ান ভাষা থেকে অনূদিত।

 

একটা দোয়াত একদিন কী করে যেন রান্নাঘরে ঢুকে পড়ল। এ তো সকলেরই জানা যে দোয়াতের মাথায় কোনও বুদ্ধি নেই, আছে কেবল কালি। কিন্তু সে নিজেকে নিয়ে খুব অহঙ্কার করত।

—আমি একজন লেখিকা— রান্নাঘরে যারা কাজ করছিল তাদের কাছে জাঁক করে সে বলল— আমি তোমাদের জীবন সম্বন্ধে জানতে এসেছি।

শুনে প্রাইমাস স্টোভ শ্রদ্ধাভরে একটু কাশল। চায়ের কেটলি কিন্তু রাগে ফুটে উঠল:

—আমাদের সম্বন্ধে জানবার কিছু নেই!
—আহা রাগ কোরো না— রেফ্রিজারেটর তাকে শান্ত করল— রাগ করা মহাপাপ। বরং ভাল হয় দোয়াত মহাশয়া যদি বুঝিয়ে বলেন, আমাদের কাছে তিনি ঠিক কী জানতে চান।

বুদ্ধিমান রেফ্রিজারেটরের কথা রান্নাঘরের সকলেরই ভাল লাগল। তখন সকলেই চুপ করল।

—আমি চাই তোমরা প্রত্যেকে নিজের সম্বন্ধে অথবা তোমাদের পরিচিতদের সম্বন্ধে কিছু বল। আমি সেগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা করে একটা বই লিখব।

আমরা তো সকলেই জানি দোয়াতের মাথায় বুদ্ধি নেই, আছে শুধু কালি; কিন্তু রান্নাঘরের সদস্যরা তো এ-বিষয়ে কিছুই জানত না। তাই দোয়াতের জ্ঞানগর্ভ বাণী শুনে তারা সকলেই বিশ্বাস করল যে সে তাদের নিয়ে একটা বই লিখবে।

বেশ, তবে তাই হোক! প্রত্যেকেই একটা করে বেশ মজার গল্প বলার জন্য তৈরি হল।

 

তরকারি-কুরুনির গল্প: জ্বলন্ত মোমবাতির শেষ টুকরো

—এক সময়ে জ্বলন্ত মোমবাতির একটা শেষ টুকরো ছিল— তরকারি-কুরুনি তার নিজের গল্প শুরু করল— সে বেশ উজ্জ্বলভাবেই জ্বলছিল। সে-জন্য সকলেই তার কাছে গেল, কারণ অন্ধকারের চেয়ে সবাই আলোকেই পছন্দ করে বেশি। মোমবাতির শেষ জ্বলন্ত টুকরোটার বেশ ভাল লাগল যে সকলেই তার দিকে আসছে। এতে তার শিখা আরও উজ্জ্বল হয়ে জ্বলতে লাগল।

কিন্তু একদিন এক গুবরে পোকা ওই আগুনের দিকে উড়ে এল। সে আগুনের এত কাছে উড়ে এল যে তার ডানা পুড়ে গেল। তাতে সে ভীষণ রেগে গেল।

সে মোমবাতির টুকরোকে অভিশাপ দিল— তুই নিজেই পুড়ে যা! তোর পুড়ে শেষ হতে আর বেশিক্ষণ নেই।

এই বলে গুবরে পোকা উড়ে চলে গেল।

আর মোমবাতির টুকরো গুবরে পোকার কথা নিয়ে ভাবল। তারপরে সে ঠিক করল, সত্যিই তো। আমি এখন আলো দিতেই পারি। কিন্তু কীসের জন্য? কেনই বা দেব?

তারপরই সে নিভে গেল।

অবশ্য যে-সুখ পাওয়ার জন্য মোমবাতির টুকরো নিভে গেল, সে-সুখ সে পেল না। ওর জায়গায় আর একটা উজ্জ্বল বড় মোমবাতি বসানো হল, আর ছোট মোমবাতির টুকরোটাকে কাবার্ডের পিছনে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হল। এতে ওর খুব কষ্ট হল, কারণ ও তো সবসময়ই যশের কাঙাল! কাবার্ডের পিছনে পড়ে থেকে ওর গৌরব কোথায়?

তরকারি-কুরুনির গল্প সকলেরই খুব ভাল লাগল। দোয়াত তাকে আরও কতগুলো প্রশ্ন করল। তারপর নতুন গল্প শোনার জন্য প্রস্তুত হল। এবার জলের কলকে বলা হল গল্প বলতে।

 

জলের কলের গল্প: নোংরা জলের কলসি কীভাবে শিক্ষা পেল

জলের কল শুরু করল— ওই কোণটায় যেখানে এখন নোংরা জল বেরোনোর বিশেষ নর্দমা আছে, সেখানে একটা নোংরাজল-ভর্তি কলসি ছিল। কলসিটাতে সবরকমের নোংরা জল ঢালা হত, তারপর কোথাও সেটা ফেলে আসা হত।

এটা সত্যি, আমাদের সকলের চেয়ে সে বাইরের অনেক বেশি কিছু দেখতে পেত, কারণ প্রতিদিন সে রান্নাঘরের বাইরে যেতে পারত। হয়ত এই কারণেই সে বেশ অহঙ্কার করত। কল্পনা করতে ভালবাসত, পৃথিবীতে অতি প্রয়োজনীয় এবং মহামূল্যবান কোনও বস্তুর আধার সে।

কাজেই অযথা ওরা আমাকে নিয়ে আদিখ্যেতা করে না!— বেশ গর্ব নিয়ে কলসি ভাবল।

একদিন অন্যদিনের মতো বাইরে থেকে ফিরে এসে কলসি বলল— ওঃ! আমি যে কী দেখলাম! উঠোনে কতগুলো ফুলের টব নিয়ে আসা হয়েছে। ওরা আমার চাইতেও ছোট আর তলায় ছোট ছোট ছিদ্র। শুনলাম ঐ টবগুলোতে ফুলের চারা লাগিয়ে ঘরে রাখা হবে।

কলসির কথায় কেউই তেমন আগ্রহ দেখাল না। কিন্তু সে বলেই চলল— আমি ওই সাজানোগোছানো বসার ঘরের ভেতরে থাকতে চাই। তোমাদের এই রান্নাঘরে থাকতে আমার বিরক্ত লাগছে।

এখন কথা হল, নোংরা জলের সঙ্গে একটা পেরেক কলসির মধ্যে পড়েছিল। কলসি ওকে অনুরোধ করল ওর নিচে একটা ছিদ্র করে দেবার জন্য। পেরেক আনন্দের সঙ্গে ছিদ্র করে দিল।

—এখন আমি সত্যি সত্যিই ফুলের টব হয়েছি— বলে উঠল কলসি— এবার বিদায় রান্নাঘর!

হ্যাঁ, রান্নাঘর থেকে তাকে সত্যিই বিদায় নিতে হল। বাড়ির গিন্নি রান্নাঘরে এসে দেখলেন সমস্ত ঘর নোংরা জলে থইথই করছে।

—কলসি থেকে জল গড়াচ্ছে— গিন্নি বললেন— এটাকে ফেলে দেওয়া দরকার।

নোংরা জলের কলসি দুঃখে কাঁদতে লাগল। ঘরের ভেতর ঢুকবার স্বপ্ন তার আর পূর্ণ হল না। সে এখন রান্নাঘরে থেকেই আবর্জনা নিতে চাইল। কিন্তু তার সে ইচ্ছাও আর পূরণ হল না।

গিন্নি তাকে বাইরে ফেলে দিলেন।

এবার বাটি বলল— তোমরা যদি আপত্তি না করো, তোমাদের আমি দেশলাইকাঠির গল্প শোনাতে পারি। কেউ কোনও আপত্তি না করাতে বাটি বলতে শুরু করল।

 

বাটির গল্প: দেশলাইকাঠি ও তার বাক্স

রান্নাঘরে একটা ছোট্ট দেশলাইকাঠি ছিল, অন্য সব দেশলাইকাঠির মতো ওরও থাকার জন্য একটা বাক্স ছিল। কিন্তু আমাদের এই দেশলাইকাঠির দৃষ্টিভঙ্গি অন্য সকলের মতো ছিল না।

সে ভাবল, আমার জন্ম হয়েছে পৃথিবীতে আগুন আনবার জন্য। এই অন্ধকার বাক্সোর মধ্যে শুয়ে থাকবার জন্য আমার জন্ম হয়নি। এখানে তো অনেক দেশলাইকাঠি আছে। আমি সরে গেলে কেউ লক্ষ করবে না। আমাকে যেতেই হবে আর থাকবার একটা জায়গা খুঁজে বার করতে হবে।

কেউ একজন বাক্সটা খুলতেই তার অগোচরে কাঠিটা নিচে পড়ে গেল। অন্ধকার নেমে এলে ও পথ চলতে লাগল।

দেশলাইকাঠিটা অনেকক্ষণ চলল। ওর মনে হল রান্নাঘরটা একটা বিশাল দেশ। অবশেষে যখন সে নিজের শক্তি একেবারে হারিয়ে ফেলেছে, তখন অতিকষ্টে রান্নাঘরের কাবার্ড পর্যন্ত পৌঁছল।

—কেমন আছেন? এত রাত করে কোথায় যাচ্ছেন? হঠাৎ কাঠিটা এক অপরিচিত কণ্ঠস্বর শুনতে পেল।

এ হচ্ছে চায়ের চামচ।

—আরে! এটা কোন্‌ জায়গা? প্রশ্নের উত্তরে কাঠিটা প্রশ্ন করল।
—এই এলাকাটা রান্নাঘরের কাবার্ড অঞ্চলের দ্বিতীয় শেলফ, চামচ বুঝিয়ে বলল, আর মনে হচ্ছে আপনি আমাদের কাছে এই প্রথম এসেছেন…
—হ্যাঁ প্রথম, বলল দেশলাইকাঠি, আমি কখনও এই জায়গাটার নামই শুনিনি! কীরকমের মানুষজন এখানে বাস করে?
—গ্লাস, কাপ, ছুরি, কাঁটা, চামচ…
—বেশ, এঁদের সঙ্গে আমি মানিয়ে চলতে পারব, কাঠিটা বলল, আমি আপনাদের সঙ্গে থাকব।

সেই সময়েই চারিদিক থেকে নানা প্রতিবাদ উঠল— দেশলাইকাঠির কথা তোমরা কি সকলে শুনেছ?

—না, বুঝতে পারিনি। চামচ সরল মনে স্বীকার করল।
—ওঃ কী অন্ধকার এখানে! কাঠিটা রেগে গেল। আপনারা কি এখানে আগুন ছাড়াই বাস করেন?
—আমাদের কোনও আলোর দরকার নেই।
—আমি এখানে আপনাদের সঙ্গে থাকলে আপনারা বুঝতে পারবেন আলো কত প্রয়োজনীয়। কাঠি উত্তর দিল।

এবং দেশলাইকাঠি সেখানে বাস করতে লাগল।

দেশলাইকাঠি আসাতে কাবার্ডের অধিবাসীরা প্রথমে একটু আশ্চর্য হয়ে গেলেও পরে অভ্যস্ত হয়ে গেল। এমন কি কেউ কেউ ওকে শ্রদ্ধাও করতে লাগল।

—আমরা দেশলাইকাঠির সমকক্ষ নই। দেশলাই আমাদের আগুন দিতে পারবে।

সময় গড়িয়ে চলল। কিন্তু দেশলাইকাঠির কাছে যা আশা করা গিয়েছিল তা পাওয়া গেল না।

—আমি আগুন দেব…! আমি আগুন দেব…! কিন্তু দিতে সে কিছুই পারল না।

আগুন দিতে পারল না, তার কারণ তখন ও ওর জন্মস্থান দেশলাইয়ের বাক্স থেকে অনেক দূরে সরে এসেছে। ও জানে না, সেই বাক্স ছাড়া ও কখনও আগুন জ্বালাতে পারবে না।

 

বাসনের গল্প: ঘড়ি

রান্নাঘরের একটা বাসন বলল— আপনারা নিশ্চয়ই জানেন ভাল ইঞ্জিনে সবসময় ঘড়ি থাকে। ইঞ্জিন চললে ঘড়িও চলে। ইঞ্জিন থেমে থাকলেও ঘড়ি কিন্তু চলতেই থাকে। এইরকম একটা ঘড়ি একটা প্যাসেঞ্জার গাড়িতেও ছিল।

প্যাসেঞ্জার গাড়ির ইঞ্জিনটা ছিল ভারি আশ্চর্যের, খুব দ্রুতগামী। একারণে সকলেই ওর খুব প্রশংসা করত।

কিন্তু ঘড়ি কাউকেই প্রশংসা করত না।

এটা পরিষ্কার বোঝা যেত যে ঘড়ি ইঞ্জিনকে ঈর্ষা করে। সেও যে তাড়াতাড়ি চলতে পারে এটা সে দেখাবে বলে ঠিক করল। এবং প্রায় এক ঘণ্টা বেশি গতিতে সে সময় দেখাল।

কিন্তু কেউ ওকে সেজন্য প্রশংসা করল না। বরং তিরষ্কার করে ওকে দোকানে সারাতে দিয়ে দিল।

ঘড়ি বেশ আশ্চর্য হয়ে গেল, সে তো ইঞ্জিনের মতোই দ্রুতগতিতে চলেছে! তাহলে সবাই ওর প্রতি অসন্তুষ্ট হচ্ছে কেন?

যাই হোক, দোকানে গিয়ে ও সবকিছু বুঝতে পারল। তারপর তাড়াতাড়ি ওর নিজের জায়গায় ফিরে এল। এবার ঘড়ির জ্ঞানোদয় হল যে, সব কাজেই তাড়াতাড়ি চলার দরকার নেই, বিশেষ করে ঘড়ির পক্ষে সেটা একেবারেই উচিত নয়।

***

 

—মনে হচ্ছে আপনি পড়ার ঘর থেকে এসেছেন? ঝাঁটা জিজ্ঞেস করল দোয়াতকে।
—হ্যাঁ, আমি সেখানে থাকি আর কাজ করি। স্বীকার করল দোয়াত।
—তাহলে তো আপনার জানা উচিত কীভাবে সেখানে পর্দা টাঙানো উচিত?
—না, আমার মনে পড়ছে না।
—মনে পড়ছে না? তাহলে শুনুন।

 

ঝাঁটার গল্প: পর্দা কীভাবে টাঙানো হল

সকলেই খুব বিচলিত হয়ে পড়ল, কীভাবে পর্দাকে টাঙানো যায়। পুরনো জীর্ণ স্যুটকেস আর ঘরে পরার ছেঁড়াখোঁড়া জুতো অনেকক্ষণ ধরে এই নতুন বিষয়ে আলোচনা করল।

—আমি ব্যক্তিগতভাবে পর্দার সঙ্গে পরিচিত নই, জুতো বলল, কিন্তু অন্যদের কাছে শুনেছি যে সে খুব সুন্দর, আর কখনও কাউকে ঈর্ষা করে না।
—এইরকম ভাল জিনিস যদি টাঙানো যায় তাহলে আমাদের পক্ষে এর চাইতে ভাল কিছু আর হতে পারে না। স্যুটকেস সম্মত হল।

স্যুটকেসের কথায় ছেঁড়া জুতো খুব ভয় পেয়ে গেল। তাকেও যদি ঝুলিয়ে দেয়? সে তো ভীষণ ব্যাপার হবে! জুতো নিজে তো কখনও ঝুলে থাকেনি। আর অন্যদের কাছেও শুনেছে— সেটা খুবই ভয়ের ব্যাপার।

ঘর মোছার ন্যাতা এগিয়ে এল। দেখেই বোঝা গেল চোখের জলে তার সারা শরীর ভেজা।

—সত্যি কথা বলতে কি, আমি অসুখী থাকতেই ভালবাসি। আর ও তো আমার আত্মীয়া! ও তো আশ্চর্য হয়ে যাবে যদি আমাকে ঝুলিয়ে রাখা হয়। ঘর মোছার ন্যাতা এইসব বলে দুঃখ করতে লাগল।

কতক্ষণ যে এইসব কথাবার্তা চলেছিল, বলা সম্ভব নয়। অবশেষে ক্যালেন্ডার ওদের কথায় বাধা দিল। সে দেওয়ালে ঝুলতে ঝুলতে সবই শুনেছে।

—আঃ! আপনারা সক্কলে বড্ডো গেঁতো আর বুড়ো, ক্যালেন্ডার বলল, পর্দাকে টাঙানো মানে ওকে ফাঁসি দেওয়া নয়, বরং এতে ওকে ওর যোগ্য কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে। আর আপনারাও ভয় পাবেন না। আপনাদের বরং বাইরে ছুড়ে ফেলে দিতে পারে, কিন্তু ঝুলিয়ে কখনও রাখবে না। এই বলে ক্যালেন্ডার তার কথা শেষ করল।

ক্যালেন্ডারের শেষ কথায় ঘর মোছার ন্যাতা আহত বোধ করল। সে তো পর্দার আত্মীয়া, তাহলে তাকে ফেলে দেওয়া হবে কেন?

স্যুটকেস তো বুড়ো হয়ে গিয়েছে কাজেই এসব কোনও কথাই সে শুনতে পেল না। জুতো সব কথাই শুনল, কিন্তু কিছুই বুঝল না।

পর্দা খুব সুন্দরভাবেই টাঙানো হল। জানলার উপরের সমস্ত ফুলের টবগুলি পর্দাকে অভিনন্দন জানিয়ে ফুল উপহার দিল।

***

 

এবার সকলে দোয়াতকে অনুরোধ করল একটা গল্প বলার জন্য। কিন্তু দেখা গেল দোয়াত বই বা নোটস কিছুই নিয়ে আসেনি। আর সেগুলো ছাড়া কিছু বলা তো তার পক্ষে একেবারেই সম্ভব নয়।

কাজেই সে তক্ষুনি বিদায় নিয়ে চলে গেল। যাওয়ার সময় প্রতিজ্ঞা করে গেল, যা সে শুনল তা নিয়ে অবশ্যই একটা বই লিখবে।

বই সে লিখল বটে, কিন্তু সবই উল্টোপাল্টা। মাথায় তো তার কালি ছাড়া আর কিছুই নেই!

সুখের কথা, সে বই কেউ পড়লই না।