Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

একসঙ্গে বাঁচবই

একসঙ্গে বাঁচবই -- প্রবুদ্ধ বাগচী

প্রবুদ্ধ বাগচী

 

কথা হচ্ছিল একজন প্রবীণ কবির সঙ্গে। প্রায় সত্তর ছুঁই ছুঁই বয়স। ইদানিং এই গৃহবন্দি পর্যায়ে একটানা বাড়িতে বসে। নয়তো শনিবার শনিবার একটা আড্ডার জায়গা ছিল কলেজ স্ট্রিটের বসন্তকেবিনে। এছাড়া এখানে-ওখানে সান্ধ্য অনুষ্ঠানে কবিতা-পড়া বা আলোচনায় হাজির থাকতেন তিনি। অবসর জীবন কেটে যেত এইভাবেই। আপাতত তিনি হাওড়ার বাড়ি থেকে আর বেরোতে পারছেন না। তেমন লেখালিখিও করতে পারছেন না। পরিচিত কেউ কেউ কখনও অনুরোধ করছেন, মোবাইলে কিছু কবিতা পড়ে রেকর্ড করে পাঠাতে। সেইসব রেকর্ডিং প্রচারিত হচ্ছে কোথাও কোথাও। তবু সৌভাগ্য এঁর একটি স্মার্ট ফোন আছে, তার কিছু কিছু ব্যবহার তিনি ইতিমধ্যে জেনে ফেলেছেন। আরেকজনের অবস্থা আরও খারাপ। তিনি বয়সে আরেকটু প্রবীণ, পঁচাত্তর পেরিয়েছেন। কবিতার পাশাপাশি কবিতা-বিষয়ক আলোচনা নিবন্ধে তিনি সুখ্যাত। কিন্তু এই বয়সেও সমান আড্ডাপ্রিয়। শনিবারের আড্ডায় প্রায় তিনিই মধ্যমণি। তার আকর্ষণে ছুটে আসত, লিটল ম্যাগাজিনের অনেক উৎসাহী তরুণ। তার থেকে সিগারেট নিয়ে একসঙ্গে খাওয়া, চা-টোস্ট সহযোগে নির্ভেজাল আড্ডা। শনিবারের রাত নটায় ভাঙত সেই আসর। বইপত্র আদানপ্রদান, পরস্পরের লেখা পড়া, মত দেওয়া— আপাতত সেইসব গভীর অনিশ্চয়তায়। অথচ প্রবীণ এই কবি সব দিক দিয়েই প্রযুক্তিছুট। এই সেদিন অবধি তিনি ব্যবহার করতেন বাড়ির একমাত্র ল্যান্ডফোন। কিছুদিন হল একটি সাধারণ মোবাইল ব্যবহার করেন। হোয়াটসআপ বা ফেসবুকের ঠিকানা তাঁর নাগালের বাইরে, ইউটিউবের হদিশ তাঁর অজানা। কার্যত, প্রযুক্তির দুনিয়ায় তিনি একেবারে আনপড়। ফলে আজকে দাঁড়িয়ে তাঁর সঙ্কট তীব্রতর। তিনি রোগের আশঙ্কায় একেবারে ফ্ল্যাটের চার দেওয়ালে বন্দি, খানিকটা অবসাদে আচ্ছন্ন।

অথচ, এই ক্রান্তিকালে এসে মুদ্রণ শিল্পের ও প্রকাশনার হাল প্রায় বিধ্বস্ত। লকডাউন ও আমফান ঝড় বাংলার প্রকাশনা ব্যবসাকে এক গভীর জিজ্ঞাসার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কবে কতদিনে এই শিল্পের হাল ফিরবে সেই বিষয়ে কারওই কোনও ধারণা নেই। লিটল ম্যাগাজিনগুলির একটা বড় অংশ প্রকাশ হয় মফস্বল থেকে, দীর্ঘ দিন শহরতলির ট্রেন বন্ধ থাকায় তাঁদের উদ্যোগ প্রায় স্তিমিত, অন্তত প্রকাশিত পত্রিকার কথা এখন কেউ আর ভাবতেই পারছেন না। শারদ উৎসব উপলক্ষে যে বিপুল মুদ্রিত পত্রিকা প্রতি বছর প্রকাশ হয়ে আসছিল এবার তার অধিকাংশ প্রকাশ হতে পারবে না বলেই মনে হয়। শহরে মফস্বলে সমস্ত প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ, কবে খুলবে কেউ জানে না, ফলে ছোটখাটো আলোচনা কবিতাপড়া ফিল্ম-দেখানো সবই ধূসর অতীত। সমবেত অনুষ্ঠানের ধারণাটিই আজ এক প্রশ্নের মুখে ঝুলে আছে।

কিন্তু লকডাউনের গোড়ার দিকে যেমন সবাই একটা স্থবিরতার মধ্যে আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল, ঠিক কী করবে না-করবে বুঝতে পারছিল না— আজ আর পরিস্থিতি সেই জায়গায় নেই। সমস্ত স্তরেই ডিজিটাল মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে একটা কিছু বিকল্প করার ভাবনাগুলো এখন বাস্তব। এর শুরুটা হয়েছিল স্কুলের পড়াশোনা দিয়ে, পরে সর্বস্তরে এই অনলাইন ক্লাস চালু হয়ে যায়। এখন গোটা দেশেই পড়াশোনা যেটুকু যা হচ্ছে তা ওই ডিজিটাল মাধ্যমে। তাতে কারা কতটুকু অংশ নিতে পারছে সেটা আলাদা বিবেচনার বিষয় হতেই পারে। একইভাবে মুদ্রণ ও প্রকাশনার একটা অংশ আস্তে আস্তে চলে আসছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। অনেক পত্রিকা ইতিমধ্যে তাঁদের সাধ্যমতো ওয়েব এডিশনে পরিবর্তিত হয়ে গেছে, অনেকে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন, বাকিরাও হয়তো অচিরেই ভাবতে বাধ্য হবেন এই বিষয়ে। বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান এখন নিয়মিত দেখা যাচ্ছে ফেসবুক লাইভ বা গুগল মিট বা জুমের মাধ্যমে। প্রচুর পত্র-পত্রিকা এইসব বিনা শুল্কের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নানারকম মননশীল অনুষ্ঠান করছেন। কেউ আয়োজন করছেন কবিতাপাঠ, কেউ বিতর্কসভা কেউ বা নিয়মিত নানা আলোচনায় ভরিয়ে তুলছেন এইসব মঞ্চগুলো। নাই বা থাকল বাংলা আকাডেমি সভাঘর বা জীবনানন্দ মঞ্চ কিংবা মহাবোধি সোসাইটির হলঘর, সব ধরনের সমস্ত অনুষ্ঠান হচ্ছে হয়ে চলেছে এইসব ছাড়াই। খবর পাচ্ছি, বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় তাঁদের উদ্যোগে আয়োজন করছেন জাতীয় স্তরের আলোচনাসভা। দেশের নানা প্রান্তের মানুষ যোগ দিচ্ছেন সেইসব ভারচুয়াল সভায় যার এখনকার নাম ওয়েবিনার। সম্প্রতি কলকাতার কিছু উদ্যোগী যুব তৈরি করেছেন ইন্টারনেটের নতুন বিকল্প রেডিও স্টেশন ‘রেডিও কোয়ারান্টাইন’। তাতে নিয়মিত প্রচার হয়ে চলেছে নানা মননধর্মী অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ অবাণিজ্যিক আয়োজনে। গোড়ার দিকে যেমন মনে হয়েছিল করোনা আমাদের সব শেষ করে দিল, হয়তো কোথাও কোনও আলো নেই, আজ তার বিপরীত। সেই আগের মতোই অনেক উদ্যোগ চলছে, ইচ্ছে করলে কেউ কেউ পারেন নিজের মতো বাড়তি সময়কে নানা কাজে ডুবিয়ে রাখতে। শোনা যাচ্ছে, পেশাদার কণ্ঠশিল্পীরাও নাকি এবারে, বিনিময় মূল্যের হিসেবে ডিজিটাল পরিসরে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছেন। নতুন তৈরি ফিল্ম ইতিমধ্যেই চলে এসেছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। যারা ফিল্ম বানান তারাও এবার ভাবছেন প্রচলিত প্রেক্ষাগৃহের বাইরে কীভাবে ডিজিটাল জগতে তারা তাঁদের ফিল্ম নিয়ে প্রবেশ করতে পারেন। সবদিকেই চলছে একটা বিকল্প পথের সন্ধান এবং তা বেরিয়েও যাচ্ছে নানাভাবে।

কিন্তু ভাবনার কথা হল, পড়াশোনার মতোই এই ডিজিটাল সাংস্কৃতিক ভুবনে ব্রাত্য হয়ে পড়ছেন প্রবীণরা। যারা এখনও স্মার্ট ফোন বা ইন্টারনেট জগতে তেমন পোক্ত নন, এই সংখ্যাটা বড় কম নয়। আর এঁদের সামনে একটা বাড়তি সঙ্কট। যারা কিছুটা দায়ে পড়ে যোগ দিতে চেষ্টা করছেন এইসব প্ল্যাটফর্মে তাঁদের মধ্যে একটা জড়তা লক্ষ করছি আমরা অনেকেই। কয়েক সপ্তাহ আগে ওয়েবিনারে যোগ দেওয়া এক প্রবীণ অধ্যাপক দেখলাম কথা বলার জন্য সাহায্য নিচ্ছেন তার বাড়ির তুলনায় নবীন সদস্যের। কিন্তু এটা একটা বাধ্যতার ক্ষেত্রে সম্ভব হতে পারে, নিয়মিতভাবে ঘটা সম্ভব নয়। একজন অর্থনীতির অধ্যাপক চমৎকার আলোচনা করছিলেন সেদিন কিন্তু মাঝে মাঝেই নেট মাধ্যমে সড়গড় না থাকার কারণে তার সম্প্রচার বিঘ্নিত হয়ে পড়ছিল। আর শুধু ওয়েবিনার-এর কথা ধরলেই বা হবে কেন, ভাবতে হবে তার পাঠপদ্ধতির কথাও। ইতিমধ্যেই অনেক পত্রিকা তাঁদের ওয়েব ভার্সন প্রকাশ করতে আরম্ভ করেছেন । সেগুলি পাঠ করতে গেলে হয় স্মার্ট ফোন নয়তো ইন্টারনেট কানেকশনসহ ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ দরকার। জানা দরকার কীভাবে সেগুলির ওয়েব ঠিকানায় গিয়ে সঠিক ভাবে পড়া সম্ভব, কীভাবে পাঠ প্রতিক্রিয়ায় নিজের মত জানানো সম্ভব। খুব কঠিন বিষয় এগুলো নয়, কিন্তু এর জন্য এই নতুন দুনিয়াটায় সব কিছু বুঝে শুনে নেওয়া দরকার। সেটার জন্য প্রথমত দরকার একটা জড়তা ভেঙে বেরিয়ে আসা আর দুনম্বর হল বিষয়গুলোতে সম্পৃক্ত হওয়ার একটা মানসিক উদ্যোগ। বয়স্কদের মধ্যে এই দুটো ফ্যাক্টর খুব প্রবল।

অধিকাংশ প্রবীণ প্রবীণারা পুরো আধুনিক ব্যবস্থাটাকে একটু সন্দেহের চোখে দেখেন। কলকব্জার ব্যাপার, না জানি কী সব গোলমাল হয়ে যাবে— এমন একটা ধারণা এঁদের মধ্যে খুবই কাজ করে। অথচ ব্যবহার না করেই এরা ভাবেন এগুলো ব্যবহার করা বোধহয় কারখানার যন্ত্রচালনার মতো ঝুঁকির— একটু নাড়াচাড়া করলেই বুঝতেন কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোন দুটি অপরিহার্য যন্ত্র আপাদমস্তক ব্যবহারকারীর স্বার্থ বজায় রেখেই পরিকল্পিত যাকে পরিভাষায় বলে ইউজার ফ্রেন্ডলি। সামান্য কিছু বিষয় জেনে নিতে পারলেই যে কেউ একে ব্যবহার করতে পারেন, কিন্তু সেই এগিয়ে আসার কাজটা ব্যবহারকারীকেই করতে হবে। মানছি, ইন্টারনেট বা সামাজিক মাধ্যমের সুযোগ নিয়ে নানা দুষ্টচক্র কাজ করে, সংবাদপত্রে সেই সবের খবর প্রকাশিত হয়। একটু বয়স্ক মানুষরা এতে একটু ঘাবড়ে যান, কিন্তু ভেবে দেখলে যে কোনও বিষয়ের মধ্যেই কিছু নেতিবাচক দিক থাকে। সুরক্ষিত ট্রেন যাত্রাতেও দুর্ঘটনা ঘটে, আরও অনেক বেশি সুনিয়ন্ত্রিত বিমানেও কখনও কখনও বিমান-ছিনতাই হয়ে যায়— সেই সম্ভাবনাতে এই পরিষেবা ব্যবহার না করার কথা আমরা ভাবি না।

আরেকটা বিষয় হল, বয়স্ক মানুষদের মধ্যে কাজ করে এক ধরনের মানসিক প্রতিরোধ। অর্থাৎ, আমরা তো এতকাল শিলনোড়া দিয়েই মশলা বাটতাম এখন আর বৈদ্যুতিক গ্রাইন্ডারের কী দরকার, আজীবন আমরা ব্যাঙ্কে গিয়ে চেক দিয়ে টাকা তুললাম এখন আর ডেবিট কার্ডের কী প্রয়োজন ইত্যাদি ইত্যাদি। এই দলটা আধুনিক ডিজিটাল ব্যবস্থাকে মন থেকে মেনে নিতে পারেন না কিন্তু মনে মনে তার সুবিধেগুলোকে অস্বীকার করতেও পারেন না। ফলে তারা এই ব্যবস্থার শরিক হতে চান না, আর চান না বলেই পারেন না। আজকের দিনে এই রুদ্ধতা কার্যত পেছনের দিকে হাঁটা। কিন্তু তাঁদের ঘা মেরে উজ্জীবিত করার কাজটা খুব সহজ নয়।

পাশাপাশি প্রয়োজনের তাগিদে বা নিজেদের অগ্রগণ্য মানসিকতায় এমন অনেক প্রৌঢ় প্রৌঢ়া আছেন যারা যুগের হাওয়াকে দিব্যি মেনে নিয়েছেন। অনেক বয়স্ক মানুষ আছেন যাঁদের সন্তান-সন্ততি রা দূর প্রবাসে থাকেন। সপ্তাহান্তে আগে তারা স্কাইপে ভিডিও কল করে প্রিয়জনদের মুখ দেখতেন, ইদানিং মোবাইল ফোনের ভিডিও কলিং অ্যাপলিকেশন ব্যবহার করে তারা তাঁদের প্রয়োজন মেটাচ্ছেন। অনেক একাকী সিনিয়র সিটিজেন রীতিমতো ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসআপের ভক্ত হয়ে উঠেছেন, এতে তাঁদের অনেক অবসর সময় কেটে যাচ্ছে। এই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন, আবার প্রিয়জনকে মেসেজ লিখলেন হোয়াটসআপে, উত্তরের জন্য উন্মুখ রইলেন, আবার ইউটিউবে গিয়ে একটু পুরনো দিনের গান শুনে নিলেন— নিজেদের এই দুনিয়ায় ব্যস্ত রাখার উপায়গুলো তারা চিনে ফেলেছেন। কিন্তু সমস্যা এঁদের নিয়ে নয়।

মানুন বা নাই মানুন, কোভিড পরিস্থিতি আমাদের যাবতীয় অভ্যাস ও জীবনযাপনের মাত্রাকে গত কয়েক মাসে একেবারে আচমকা বদলে দিয়েছে। যদি কোভিড না থাকত তাহলে হয়তো এই অবস্থায় এসে পৌঁছাতে আমাদের আরও কয়েক বছর লাগত, সেই মাঝের বছরগুলো আমরা লাফ দিয়ে পার হয়ে এসেছি। আজকের অবস্থার নাম ‘নিউ নর্মাল’ দিই বা না-ই দিই, অবস্থা যে বদলে গেছে এ নিয়ে কারও কোনও দ্বিমত নেই, কারণ সকলেই নিজের অভিজ্ঞতায় তা টের পেয়ে যাচ্ছেন। এখন এই অবস্থার মধ্যে তো আমাদের সকলকে নিয়েই চলতে হবে। বয়স্ক মানুষরা তার ব্যতিক্রম হতে পারেন না। আমাদের গড় আয়ু বাড়ছে, সমাজে প্রবীণ নাগরিকদের সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের জীবনযাপন আমাদের বেঁচে থাকা, আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি-অর্থনীতি-রাজনীতি কোনওটাই তাঁদের বাদ দিয়ে নয়। তাঁদের সঙ্গে নিয়েই আমরা এগোতে চাইব, তাঁরাও নিশ্চয়ই তেমন চান। কিন্তু উদ্যোগটা উভয় পক্ষের দরকার।

শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল ডিভাইডের কথা আলোচনা হচ্ছে বেশি, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ— কিন্তু সেই ক্ষেত্রে সমস্যাটা ডিজিটালের নাগাল পাওয়ার। অন্যপক্ষে এই ক্ষেত্রে নাগাল পাওয়ার সমস্যাটা বড় অন্তরায় নয়, সমস্যা হল তাকে জড়িয়ে নিতে পারা। দীর্ঘদিনের গৃহবন্দিত্বের কারণে সব থেকে অবসাদগ্রস্ত অংশটা হল প্রবীণরা। কারণ রোগের প্রকোপের দিক থেকে তাঁরা বিপজ্জনক অবস্থায় থাকায় ইচ্ছে থাকলেও বেরোতে পারছেন না। অথচ তাঁরা জানেন না বা জানলেও অংশগ্রহণ করতে পারছেন না সেই ব্যবস্থায় যেটি ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে বসেই খোলা জানলার মুক্ত হাওয়া নিয়ে আসতে পারছে। বড় জোর তাঁদের দৌড় প্রতিদিনের খবরের কাগজ আর টিভি চ্যানেল— কিন্তু এর বাইরে যে বিরাট জগত আজ প্রতিনিয়ত নিজেকে মেলে ধরছে প্রতিদিন নতুন নতুনতর মাত্রায় তার খোলা হাওয়া যদি তাঁদের দরজাতেও কড়া নাড়তে পারত তবে তো তাঁরাও নতুন আনন্দে হাঁফ ছেড়ে বাঁচতেন! তাঁদের সেই আনন্দের শরিক করতে আমাদের কি নতুন পথ চলা শুরু হতে পারে না!