তাতে কার লাভ হল
আমাদের চারপাশে আশ্রয়ের শূন্য গৃহস্থালি
যখন রক্তপলাশের বনে ক্ষীণ এক রক্তের রেখা
চলে গেছে বহুদূরে পূর্ণিমায় ভরন্ত নদীটির দিকে
সেখানে অবাক হরিণ আসে, আকণ্ঠ তৃষ্ণায় জলপান করে
তাতে আর কতটুকু ক্ষতি হল, আসলে লাভ হল কার
মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে শেষরাতে, জেগে ওঠে বৃহৎ বাজার
তবুও বিচার হবে
কাহারা বিচার চায় কার কাছে কে তাহা জানে
শাস্তি দেবে ভগবান, আততায়ী ভাবে গালে হাত দিয়ে
যারা বেঁচে আছে তারা ভাবে এই পাপে শাস্তি নিশ্চিত
না হলে স্বর্গ নরক বলে কোনও কিছু থাকবে না কোথাও কখনও
অদৃশ্য বিচারালয়ে ঘণ্টা বেজে চলে সেই কতকাল থেকে
অথচ সাক্ষী নেই, বাদী ও বিবাদী পক্ষ মিছিমিছি কূটতর্ক করে
প্রেম ও দ্রোহ
নশ্বর ইস্তাহারে লেখা ছিল কামনার রুধিরাক্ত স্রোত
ইস্তাহার দিয়ে যারা বইয়ের মলাট করতে থাকে
তারাই প্রকৃত দ্রোহ বুকে করে পৌঁছে দেয় আগামী সময়ে
শিশুদের পাঠ্যপুস্তক মোড়া হয় নদীটির খরস্রোতা জলে
শান্তি দুঃসহ আজি, যোদ্ধাদের হাতে কোনও কাজ নেই বলে
তারা শুধু প্রেম থেকে লালসাকে বেছে যায় বালি ও কাঁকড়ের মতো
কৌমসমাজ
আমি যে ভাষা জানি সেটা বুঝি রাক্ষসের ভাষা
আমার মাথায় আজ পিশাচেরা ভর করে
দুচোখে দানবছায়া আর স্কন্ধে দৈত্য চেপেছে
অতীতে হিরণ্য রাজাকে কারা গুপ্তহত্যা করেছিল
তার বোন হোলিকাকে কারা যেন ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে
কাল রাতে পুড়িয়েছে নরকের অভ্রান্ত আগুনে
শীতের মরা পাতা আর শুকনো ডালপালা
কৃষকেরা জড়ো করে জ্বালিয়েছে যজ্ঞের আগুন
নতুন শস্যের আর্তি মাঠে মাঠে বার্তা দিয়ে আসে
মধ্যবসন্তে এই উতরোল মলয়সমীরে
পরদিন ফুলের রেণু ওড়ে দিকে দিকে আবীরে গুলালে
কৌমসমাজ আজও রয়ে গেছে এইসব ভাঙনের কালে
বাংলাভাষা
কিন্তু একথা এখন বলা যাক
যখন পাদপ্রদীপের নিচে সমাহিত অন্ধকারগুলো
শ্রমিকেরা সবিনয়ে মুখ নিচু করে
মধ্যবিত্ত কর্মচারী হাতড়ে হাতড়ে ত্রস্ত সুখ খোঁজে
জলকল্লোলের শব্দ আপনি কি শুনেছেন কবি?
এ তাহলে উন্নয়ন যদিও নগদে পাওনা বাকি আছে
ফেরেশতাগণ আপনাদের দাবি আজ কার কাছে?
যদিও মজুরি সংগ্রাম দিকে দিকে
প্রিয় বাংলা ভাষা উলটো করে খুঁজি
নতজানু হতে গেলে
কতগুলো প্রতিশব্দ পার হতে হয়