চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রতি মাসের শুরুতে ছাড়া মেল ট্রেনের রিজার্ভড বগি বা মূল ভাবনা। ষষ্ঠ বর্ষ, মে ২০২২-এপ্রিল ২০২৩। এই বছর আমাদের রিজার্ভড বগি-তে এসেছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলির অন্তর্দ্বন্দ্ব, মানসিক অসুস্থতা, পরিবেশ সঙ্কট…
লিখেছেন অনন্যা রায়, অশোক মুখোপাধ্যায়, অংশুমান দাশ, আত্রেয়ী কর, পার্থঙ্কর চৌধুরী, প্রসেনজিৎ বসু, শঙ্কর রায়, শুভাশিস ঘোষাল, শুভাশিস মৈত্র, সীমন্তিনী ঘোষ, সৌম্য দত্ত…
অনুবাদ করে প্রকাশ করা হয়েছে জর্জ মঁবিও এবং সুনীতা নারায়ণ-এর দুটি নিবন্ধ…
সূচি
পরিবেশ ও পুঁজিতন্ত্র
…এতটুকু ভণিতা পার হয়ে এসে পাঠক নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন, চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম আবার, আরও একবার নিজেদের প্রচ্ছদকাহিনির নিশানা করতে চলেছে— দেশ ও বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তন ও আসন্ন পরিবেশ ধ্বংসের বিষয়টিকে। সম্ভবত, এই নিয়ে চতুর্থবার ‘পরিবেশ’ আমাদের পত্রিকার আলোচনার প্রধান বিষয় হিসেবে গণ্য হল। এছাড়াও বিগত বেশ কয়েকবছর ধরেই পরিবেশ সংক্রান্ত প্রবন্ধ আমাদের প্রতিটি সংখ্যায় নিয়মিত বিভাগ ‘সবুজ স্লিপার’-এ প্রকাশ পাচ্ছে। এইভাবে নিরন্তর ফাটা রেকর্ডের মতো পরিবেশকে কেন্দ্রে রেখে চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম-এর নাছোড় ও নিরন্তর চর্চার কারণ একটিই। আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, বর্তমান পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে কোনও সংস্কৃতিচর্চা, অথবা বৃহত্তর সমাজ বা রাজনীতি নিয়ে যেকোনও আলোচনা— আর পরিবেশকে বাদ সম্ভব নয় (প্রসঙ্গক্রমে, একটি দুর্ভাগ্যজনক তথ্য উল্লেখ করা যেতে পারে, বিগত কুড়ি বছরে আমাদের দেশে সংসদে যত প্রশ্ন ও বিতর্ক উত্থাপিত হয়েছে, সেই সমস্ত আলোচনাসমষ্টির মাত্র ০.০৩ শতাংশ ‘জলবায়ু সঙ্কট’ বিষয়ের জন্য ব্যয় করা হয়েছে।)। এই সহজ অথচ গুরুতর কথাটা আমরা বারবার, ন্যূনতম সুযোগে, নানাভাবে স্মরণ করে নিতে চাই, এবং একইসঙ্গে আমাদের প্রিয় পাঠকদেরও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।…
পুঁজিবাদ পৃথিবীকে ধ্বংস করছে: এই আত্মধ্বংসী যজ্ঞ থেকে নিজেদের বিরত রাখার সময় এসেছে — জর্জ মঁবিও
বাছাই করা সিঙ্গল-ইউজ প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করায় দেখনদারি বেশি, কার্যকারিতা কম — সৌম্য দত্ত
‘অমৃতের সন্ধানে’, শিলচরে, বন্যার জলে… — পার্থঙ্কর চৌধুরী
কণ্টকময় এক অবস্থান — সুনীতা নারায়ণ
শেভ্রন বনাম স্টিভেন ডনজিগার: বৃষ্টি-অরণ্যের জন্য অসম লড়াই — শুভাশিস ঘোষাল
কোথায় তোমার দেশ — অংশুমান দাশ
ষষ্ঠ বর্ষ, তৃতীয় যাত্রা, আগস্ট, ২০২২
মানসিক অসুস্থতা: এক নীরব অতিমারি
…পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানো মানুষকে উন্মত্ত করে দেয়। নিজের ওপরেই নিজের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই, শুধু তা-ই নয়, এই অসহায়তা, এই যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে অবিরত। নিজের ছায়াই নিজেকে ধাওয়া করে বেড়াচ্ছে। নিজের খোলসটুকু, যা কিনা প্রতিটি মানুষের সবচাইতে কমফোর্ট জোন, সেটাই পরিণত হয়ে যাচ্ছে একটি রীতিমতো ওয়ার জোন-এ।
নিজের মাথার মধ্যে, নিজের বিরুদ্ধে নিজের এ এক অন্তহীন লড়াই। বিশ্বাস করুন, এইরকম একটা পরিস্থিতিতে আপনি এক মুহূর্তের জন্যেও থাকতে চাইবেন না।
এর মধ্যেই অসংখ্য মানুষ ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি, পার্সোনালিটি ডিজর্ডার, সাইকোটিক ডিজর্ডার, ইটিং ডিজর্ডার, ইমপালস কন্ট্রোল অ্যান্ড অ্যাডিকশন ডিজর্ডার, অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজর্ডার, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজর্ডার আদি নানাবিধ মানসিক সমস্যার সঙ্গে নিয়ত যুঝে চলেছেন। আমাদের জুন মাসের মেল ট্রেনের রিজার্ভড বগিটি নিবেদিত হল সেই সব মানুষদেরই উদ্দেশে।…
এক জটিল বিজ্ঞান এবং এক ভয়াবহ ইতিহাস — সীমন্তিনী ঘোষ
ভাল থাকা কোনও বিশেষ মানসিক অবস্থা নয়, একটা প্রক্রিয়া — অনন্যা রায়
আমি জানি আমি সেরে উঠছি, কারণ এখন আমি সাহায্য চাইতে পারি — আত্রেয়ী কর
অতিমারি: মানসিক অবসাদের এক তীব্র ট্রিগার — নিউজ রিলিজ, WHO
ষষ্ঠ বর্ষ, দ্বিতীয় যাত্রা, জুন, ২০২২
মুষল পর্ব
…কিন্তু এই সংখ্যার প্রচ্ছদ-বিষয় হিসেবে আমরা, আনন্দ নয়, অন্ধকারকেই বাছিয়া লইতে বাধ্য হইয়াছি। বিষয়-ভাবনার নামের মধ্যে মহাভারতের এক অতীব অন্ধকারময় কাহিনিখণ্ডের স্মৃতি রহিয়াছে। মুষলপর্ব মহাভারতের সেই সময়কে সূচিত করে, যখন ক্লেদ ও কলুষের ভাণ্ড পূর্ণ হইয়া উপচীয়মান; অন্তর্দ্বন্দ্ব ও ভ্রাতৃহত্যার পাপে মানব স্বীয় গরিমাকে বিসর্জন দিয়াছে; ব্যক্তিস্বার্থ যেখানে গোষ্ঠীস্বার্থের ঊর্ধ্বে— “সকলেই আড়চোখে সকলকে দেখে”। পশ্চিমবঙ্গ নামক ভারতের পূর্বপ্রান্তের ক্ষুদ্র রাজ্যটির দিকে তাকাইলেই সে দুর্দৈব সাদা চক্ষে প্রতীয়মান হয়— তাহার জন্য সমাজবিদ হইবার প্রয়োজন হয় না। বস্তুত, সমাজটিকে সানুপুঙ্খ দেখিবারও দরকার হয় না— দলীয় রাজনীতির একটি-দুটি চাল টিপিলেই হাঁড়ির পুরা হাল সম্পর্কে ওয়াকিফহাল হওয়া সম্ভবপর হয়। … এমত পরিস্থিতিতে কাণ্ডজ্ঞান আমাদিগকে পরামর্শ দিয়াছে— ব্যাধি যতই দুরারোগ্য হউক, লুকাইয়া রাখিলে তাহার নিরসন হয় না; বরঞ্চ লুক্কায়িত গরলকে প্রকাশ্যে আনিতে পারিলেই রুগির ‘কাথারসিস’ ঘটে— অসুস্থতার অবসান হয়।
সেই কাণ্ডজ্ঞান হেতুই আমাদিগের এই সংখ্যার বিষয়ভাবনার কেন্দ্রে ‘মুষল পর্ব’।…
রাজ্য শাসক দলের সঙ্কট– গণতন্ত্রেরও নাভিশ্বাস — অশোক মুখোপাধ্যায়
সব বিরোধী দলই বিজেপি-বিরোধিতায় প্রায় নিষ্ক্রিয়, শক্ত হচ্ছে ইলেক্টেড অটোক্র্যাসির ভিত — শুভাশিস মৈত্র
সঙ্কটারূঢ় কংগ্রেস: অবনমনের প্রেক্ষাপট — শঙ্কর রায়
দেউচা পাচামির আন্দোলন এবং বামপন্থীদের ঐক্য-সম্ভাবনা প্রসঙ্গে — প্রসেনজিৎ বসু
ষষ্ঠ বর্ষ, প্রথম যাত্রা, মে, ২০২২