তথাগতের চরণচিহ্ন: হিউ এন সাং-এর শিক্ষায়তনে

অম্লান চক্রবর্ত্তী

 

১৮৭২ সাল। “আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া”র ডিরেক্টর স্যার আলেকজান্ডার কানিংহ্যাম-এর অনুসন্ধিৎসায় মাটি খুঁড়ে পুনর্জন্ম ঘটছে ভারতবর্ষের প্রাচীন ইতিহাসের। তাঁর স্নেহের ছোঁয়ায় জোরকদমে চলছে সৌধগুলির রক্ষনাবেক্ষণ এবং নথিকরণ। সারা দেশে এক সাজো সাজো রব। কিন্তু বৃদ্ধ কানিংহ্যাম উদ্বিগ্ন। চঞ্চল হয়ে বারবার পাইপ খাচ্ছেন। কিছুতেই ভুলতে পারছেন না চিনা পরিব্রাজক হিউ এন সাং-এর সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। গোটা বিশ্বের ছাত্রগণের বিশাল পাঠশালা কোথায় হারিয়ে গেল? অস্থির হয়ে পড়ছেন ঠান্ডা মাথার গবেষক। মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন বারবার। এক বন্ধুর (রেললাইন পাতার ঠিকাদার) তাঁবুতে আজ তাঁর নিমন্ত্রণ। যেতে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু না গেলেও নয়। উপায়ান্তর না দেখে অবশেষে আলেকজান্ডার কনিংহ্যাম পৌঁছলেন বন্ধুর ডেরায়। এক প্রস্থ কফি খাওয়ার পর বন্ধু বললেন, “চলো তোমাকে এক মজার জিনিস দেখাই। ইট আনতে যে নেটিভ দালাল ধরেছিলাম, সে কি অদ্ভুত সব পুরোনো ইট এনেছে দেখো।” বন্ধু দেখালেন। একটি ইট হাতে নিয়েই চমকে উঠলেন জহুরি কনিংহ্যাম। “এক্ষুনি নিয়ে চলো সেই নেটিভ দালালের কাছে।” বন্ধু অবাক। শেষমেশ ঘোড়ায় চড়ে যাওয়া হল। ইটের দালাল সব শুনে, সন্ত্রস্ত হয়ে দুই সাহেবকে নিয়ে চললেন নালের জঙ্গলে। দু-চারটে ইট ব্যতীত কিছুই পাওয়া গেল না। বিফলমনোরথ আলেকজান্ডার ফেরার পথে হঠাৎ লক্ষ করলেন পাথরের একটি ছোট্ট বুদ্ধ মূর্তি পরে আছে। হাতে নিয়ে, কাজ ও বয়স থেকে অনুমান করলেন মূর্তির বয়স প্রায় ১২০০ বছর। খুঁজে পাওয়া গেল আরও দু-তিনটি মূর্তি। কানিংহ্যাম তৎক্ষণাৎ নির্দেশনামা পাঠিয়ে দিলেন জঙ্গলে খনন কার্যের। অবশেষে কিছুদিনের মধ্যেই মাটি খুঁড়ে প্রকাশিত হল যে বিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা হিউ এন সাং লিখেছিলেন তার ধ্বংসাবশেষ। এর নাম নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত নালন্দা সারা পৃথিবীর কাছে আজও এক বিস্ময়।

রাজগির থেকে আমি চলেছি নালন্দার পথে। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসাবশেষ এবং চারপাশের কিছু গ্রামকে একত্রে নালন্দা বলা হয়।

তথাগতর আমলে এই অঞ্চলে নাল নামে একটি গ্রাম ছিল। এবং তথাগতর পায়ের ধুলো পড়েছিল সেই গ্রামে। যদিও ব্যুৎপত্তিগত ব্যাখ্যায় পালি ভাষায় “নালন” শব্দের অর্থ জ্ঞান, এবং “দা” শব্দের অর্থ প্রদান করা। অর্থাৎ নালন্দা শব্দের অর্থ “জ্ঞান প্রদান করা”। সংস্কৃতে নালন্দা শব্দের অর্থ “ন অলম দা” অর্থাৎ “দানের বিধিনিষেধ নেই”, এক্ষেত্রে জ্ঞানদানের বিধিনিষেধ না থাকার কথাই বোঝানো হয়েছে।

তথাগতের পদচিহ্ন সমৃদ্ধ এই মাটিতে মঠ, মন্দির, বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ যদিও আরও অনেক পরে। মৌর্য সম্রাট অশোক খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে একটি মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। সম্ভবত এটিই মূল মন্দির (অর্থাৎ মন্দির ক্রমিক-৩)। চিনা ভ্রমণকারী হিউ এন সাং এবং প্রজনবর্মণের মতে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়টি গুপ্ত সম্রাট কুমারগুপ্তের সময়ে খ্রিস্টীয় ৫ম শতকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ফা হিয়েন যিনি খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতাব্দীতে এসেছিলেন, তাঁর রচনায় নালন্দায় বিশাল স্থাপনার কোনও উল্লেখ নেই। তবে হর্ষবর্ধনের শাসনকালে হিউ এন সাং (৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত সফর করেছিলেন) যে মহান বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা লিখেছিলেন, তাই নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বশেষে, বিশ্ববিদ্যালয়টি পাল রাজবংশ দ্বারা সমর্থিত ছিল। ততদিনে  বিশ্ববিদ্যালয়টি বিভিন্ন দেশের রাজার অর্থানুকূল্য লাভ করেছিল।

নালন্দার কাঠামো ছিল সব কল্পনার বাইরে। ১১ জন ছাত্রাবাসে ১০,০০০ শিক্ষার্থী থাকার ব্যবস্থা ছিল; অধ্যাপকদের জন্য ৩,০০০ আবাসিক কক্ষ। সবার জন্য বিতর্ক ঘর, মন্দির, মঠ, গ্রন্থাগার, ধ্যানকক্ষ স্থাপন করা হয়েছিল।

বৌদ্ধ ধর্মকে কেন্দ্র করে এক সময় নালন্দা, বিক্রমশীলা এবং তক্ষশীলা সমস্ত বিশ্বের জ্ঞানসাধনার কেন্দ্র হয়ে ওঠে এবং এই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ছাত্র, এবং পুঁথি আদানপ্রদানের প্রথা ছিল।

তবে এর মধ্যে নালন্দা ছিল আয়তন, মেধা এবং পুঁথির প্রেক্ষিতে চিন্তা করলে উৎকর্ষতার কেন্দ্র। চিন, তিব্বত, সিরিয়া, পার্সিয়া, কোরিয়া, সিংহল, জাভা, সুমাত্রা, গ্রিস থেকে ছাত্রগণ জ্ঞান অর্জন করতে নালন্দায় এসেছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কঠোর এবং কাঠামোগত ভর্তি প্রক্রিয়া ছিল। আগত ছাত্রদের পরীক্ষা দিতে হত দ্বাররক্ষীদের কাছে। অর্থাৎ ভাবলে দেখা যায়, দ্বাররক্ষীদের পাণ্ডিত্য কি অপরিসীম থাকলে তাঁরা হিউ এন সাং-এর মতো জ্ঞানীর পরীক্ষা নিতে পারেন। অবশ্য হিউ এন সাং সর্বাধিক নম্বর লাভ করেন। তাই, অধ্যক্ষের নির্দেশে, রথে করে তাঁকে নগর পরিক্রমা করানো হয়।

শুরুতেই এত কথা বলার কারণ বৌদ্ধ ধর্মের হাত ধরে যে বিশাল জ্ঞানচর্চা শুরু হয় নালন্দায় তা নিয়ে একটি ধারণা দেওয়া। নালন্দায় “আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া”র প্রবেশদ্বার পার হয়েই আসলে ভাবছিলাম, কী বিশালতার সামনে দাঁড়িয়ে আছি।

এ পর্যন্ত ১১টি মঠ এবং ৪টি মন্দির খনন করা হয়েছে। কিছু অঞ্চল অদূর ভবিষ্যতে খনন করার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে বেশিরভাগ অঞ্চলটি ধানের জমি ও গ্রামের নিচে হওয়ায় খনন করা যায় না। খননকার্যের ফলে গ্রামবাসীদের বিশাল ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব সরকার নিতে ইচ্ছুক নন।

প্রথম প্রধান ফটকটি অতিক্রম করে আমি প্রথমে বামদিক বরাবর চলা শুরু করলাম। আসলে এই জাতীয় মনুমেন্টে প্রবেশ করার পরেই একটি দিক ঠিক করে সেই বরাবর চলে সম্পূর্ণ ভ্রমণ করা আমার অভ্যাস। পুরো এক বর্গকিলোমিটার জুড়ে থাকা স্থাপত্যটির মাঝবরাবর চলে গেছে একটি রাস্তা। রাস্তার পশ্চিম পারে মন্দির, এবং পূর্বদিকে মঠ।

রাস্তাবরাবর বামদিকে প্রথমেই পৌঁছলাম মঠ-১, মঠ-১এ, এবং মঠ-১বি। এই তিনটি মঠের গলি দিয়ে হেঁটে প্রথমেই ছাত্র হোস্টেল চোখে পড়ল। প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিজস্ব স্বতন্ত্র কক্ষ ছিল। কিছু কক্ষের ভিতর একটি বড় পাথরের বেদি দেখে মনে হয়, এটি ছিল খাট। এছাড়াও পোশাক এবং ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রাখার দেরাজ, আলমারি এবং একটি পড়ার টেবিল ছিল। আমি ফিরে যাচ্ছিলাম আজ থেকে প্রায় ১০০০ বছর পিছনে। হয়তো এর মধ্যেই কোনও ঘরে কেটেছিল হিউ এন সাং, শীলভদ্রের প্রথম যৌবন। দেশবিদেশের বহু ছাত্রছাত্রী গল্পগুজব করতেন নিজেদের মধ্যে। কোনও গ্রিক যুবক হয়ত বলছেন সেই দেশে পার্থেননের কথা, আবার চৈনিক ছাত্র জানাচ্ছেন, মিং যুগের অনবদ্য ভাস্কর্যের কথা। তাঁদের ছেড়ে আসা বাড়ি, পরিবার, প্রেয়সীর কথা। এর মধ্যেই উঠছে রাজনীতির কথা। আদানপ্রদান ঘটছে দর্শন, শাস্ত্র, বিজ্ঞানের কথা। বৌদ্ধধর্ম তো বরাবরই গল্পের ছলে জ্ঞান আহরণকে প্রাধান্য দিয়েছে।

৩ নং মন্দির, নালন্দা

মঠ-১ থেকে বেরিয়ে চোখে পড়ল মন্দির-৩। এটিই নালন্দার মূল মন্দির। ইংরিজিতে যাকে বলে, “আইকনিক মনুমেন্ট” সেটিই হল মন্দির-৩। প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন যে মন্দিরটি দুবার বা তিনবার নির্মিত হয়েছিল। খননকালে, মনে হয় যে পূর্বের মন্দিরটি আকারে ছোট ছিল। পরে এর উপরে সাতটি মন্দির নির্মিত হয়েছিল। বর্তমান মন্দিরটি আকারে অনেক বড়। প্রাচীন উৎসর্গটি খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে নির্মিত।

মন্দিরের বাইরের দেয়ালের কুলুঙ্গিগুলিতে মন ভরানো পঙ্খের কাজ। ইচ্ছে ছিল, আরও কাছে গিয়ে প্রত্যেকটি প্যানেল দেখব, কিন্তু অনুমতি নেই। আসলে “গাইড” ছবিতে ওয়াহিদা রহমানের একটি নাচের দৃশ্য ছিল এই মন্দিরের উপর। তারপর বহু মানুষ অতিরিক্ত উৎসাহে সেটির নকল করতে গিয়ে একবার ভেঙে ফেলেন একটি অংশ। তারপর থেকে মন্দিরের কাছে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সাধারণ মানুষের অবিমৃষ্যকারিতার মূল্য চোকাতে হয় জনগণকেই।

৩ নম্বর মন্দিরটির পর ১৩ এবং ১৪ নম্বর মন্দির। মন্দির দুটি সুন্দর। কিন্তু সত্যিই ৩ নম্বর মন্দির দেখার পর অতটাও চোখে লাগল না। বরং এই দুই মন্দিরের মাঝে বৌদ্ধ ভোটিভ স্তূপগুলি বেশ সুন্দর।

১২ নং মন্দিরে ভোটিভ স্তূপ

 

১২ নং মঠ

১৪ নম্বর মন্দিরটি দেখার পরে, মাঝের রাস্তাটি অতিক্রম করে মঠ-১১তে পৌঁছলাম। এই মঠটি প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে একটি আকর্ষণীয় জিনিস হল মঠটির অভ্যন্তরে কমপক্ষে ২৫টি পাথরের স্তম্ভ পাওয়া গিয়েছিল। তাদের মধ্যে কিছু এখনও আছে।

মঠ-৯ এবং মঠ-৮এর মধ্যে তেমন আকর্ষণীয় কিছু না থাকলেও এই দুটি মঠের মধ্য দিয়ে পৌঁছলাম মন্দির-২এর সামনে।

মন্দির-২ একটি অনবদ্য স্থাপত্য। মন্দিরের আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল, পাথর দ্বারা সজ্জিত সুন্দর বেস ছাঁচগুলির ওপরে দুটি শতাধিক এবং এগারোটি ভাস্কর্যযুক্ত প্যানেলের প্রতিসমভাবে সাজানো সারি। প্রবেশপথের দু পাশের ওপরে বিশটি প্যানেল এবং বাকি তিনটি পক্ষের প্রত্যেকটিতে পঁঞ্চান্নটি প্যানেল রয়েছে। দেবদেবী, জাতক, গল্প, প্রতিদিনের জীবন, মানবব্যক্তিত্ব, পাখি, প্রাণী, জ্যামিতিক মোটিফ ইত্যাদির চিত্রগুলিকে সেখানে দুর্দান্তভাবে চিত্রিত করা হয়েছে। স্থাপত্য দৃষ্টিকোণ থেকে মনে হল মন্দিরটি সপ্তম শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল।

২ নং মন্দিরের গায়ে প্যানেল

মন্দির-২ থেকে আমি পৌঁছলাম মঠ-৬এর সামনে। মঠটির উপরের উঠোনে দুটি সেট দুটি ডাবল ওভেন দেখে মনে হল এটি হয়তো রান্নাঘর ছিল।

বেলা পড়ে আসছিল। নালন্দা দেখা শেষ হলেও কোনও অদৃশ্য টানে আমি আবার চললাম ৩ নম্বর মন্দিরের সামনে। পড়ন্ত বিকেলের আলো এসে পড়েছে মন্দিরের উপর। মনে হল, সান্ধ্য প্রার্থনা শেষে ওই আসবেন হিউ এন সাং। বসবেন মন্দিরের চাতালে। উপবিষ্ট শীলভদ্রের সামনে। জমে উঠবে গল্প-বিতর্ক-শিক্ষাদান। শিক্ষা-সংস্কৃতির কোন উৎকর্ষতায় যে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় পৌঁছেছিল তা ভাবনারও অতীত।

দিন ঢলছে পশ্চিমে। আকাশে আগুনের রং। চোখের সামনে মনে হল, শীলভদ্রের মৃত্যুর পর কেটে গেছে  আরও কয়েকশো বছর। বৌদ্ধধর্মের জনপ্রিয়তায় ক্ষুব্ধ হিন্দু রাজাগণ, বিশেষত বল্লাল সেন ষড়যন্ত্র করছেন। ভয়ঙ্কর এক অবিমৃশ্যতার খেসারত দিতে তৈরি হচ্ছে তথাগতের চরণচিহ্ন-ধন্য এই অঞ্চলের মাটি। আগুয়ান বখতিয়ার খিলজি। বল্লাল সেনের কূটকচালিতে আঘাত হানলেন বখতিয়ার। নিরস্ত্র অসংখ্য বৌদ্ধ ভিক্ষু কুটোর মতো উড়ে গেলেন বখতিয়ার খিলজির বাহিনির সামনে। সেদিন আকাশ লাল হয়ে এল বৌদ্ধদের রক্তধারায়। প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে কোনও সন্ন্যাসী হয়তো ছুটলেন লাইব্রেরির পুঁথিগুলি বাঁচাতে। নয়তলা গ্রন্থাগারে কয়েক হাজারের উপর পুঁথি। কিন্তু রক্ষা করা সম্ভব হল না। অগ্নিসংযোগ হল। গোটা গ্রন্থাগারটি পুড়তে সময় লেগেছিল ছয় মাস। আর খলখল করে শয়তানের অট্টহাসি হাসছেন বল্লাল সেন। বখতিয়ার খিলজির মুখেও কুটিল হাসি।

কবি জন মিলটনের ভাষায় “প্যারাডাইস লস্ট”। এক স্বর্গের ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে গোধূলির আলোয় মনে হচ্ছিল— ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডিটি আমার সামনে অভিনীত হল।

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4593 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...