![pulak](https://i0.wp.com/www.4numberplatform.com/wp-content/uploads/2021/03/pulak.jpg?resize=678%2C381&ssl=1)
পুলক রায়চৌধুরী
শিক্ষক, লেখক, সমাজকর্মী
গত ১১ মার্চ কোলকাতা শহরের একটি নামকরা পাঁচতারা হোটেলে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে বেছে বেছে কিছু প্রধানশিক্ষক-শিক্ষিকাদের ডাকা হয়েছিল শিক্ষা সেমিনারের নাম করে। যেহেতু এই ডাকটি সরাসরি ‘ওপর থেকে’ এসেছিল, বিদ্যালয়ের প্রধানগণ তাকে উপেক্ষা করতে পারেননি। ফলে, সেখানে বিদ্যালয় প্রধানদের উপস্থিতির হার ছিল ১০০ ভাগ!
খোদ জেলা শিক্ষাদপ্তরকে এই সেমিনারের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করায় একটাই উত্তর মিলেছিল, “আমরাও এর বেশি কিছু জানি না। ওপর থেকে ফোনে আপনাদের সেমিনারে থাকতে বলা হয়েছে। ব্যস, এটুকুই! আর কিছু জানা নেই!”
এখন এই ‘ওপর থেকে’ ব্যাপারটা চিরকালই খুব গোলমেলে! ওপরে মানে, ঠিক কত ওপরে? কারা কারা থাকেন এই ওপরে? সরকার? নাকি, সরকারের সমান্তরালে সরকারি ব্যবস্থার ভেতরে গজিয়ে ওঠা আরেকটা বিশেষ প্রভাবশালী শ্রেণি? এঁরাই কি শিক্ষার আনুষঙ্গিক বিষয়গুলি দেখভাল করেন? যদিও তাঁদের ‘আনুষঙ্গিক’-এর লিস্টিটা বেশ লম্বা! সরকারকে অগোচরে রেখে হয়ত এঁরাই শিক্ষার নামে লাভজনক নানা অপ্রাসঙ্গিকের মৌরসিপাট্টা নিয়ে বসে থাকেন বছরভর। পাঁচতারা হোটেলের এই সেমিনার ব্যাপারটাও হয়ত সেরকমই একটা কিছু— বেশ বোঝা যাচ্ছিল! স্বভাবতই, এই ওপরে থাকা অত্যন্ত প্রভাবশালীদের কাছে সেমিনার কেন— এই জাতীয় প্রশ্নের কোনও সদুত্তর থাকে না। কানের ছিদ্রটা যতই ক্ষুদ্র হোক না এঁদের, দৃষ্টিশক্তি যতই ক্ষীণ, হাত কিন্তু এনাদের বেশ লম্বা! বেশি প্রশ্নকে এনারা একেবারেই সুনজরে দেখেন না। লক্ষণগুলো সেই একেবারে সনাতন!
অতএব, ওই সেমিনারের দিন, পাঁচতারা হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েট হলে, ঝলমলে আলো আর উচ্চকিত শব্দে, প্রাথমিকভাবে আমন্ত্রিত প্রধানশিক্ষকদের চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়ার যাবতীয় কর্পোরেট প্রচেষ্টা তৈরি হয়েছিল সেমিনারের নাম করে। সেমিনার শেষে, বিদ্যালয় প্রধানদের জন্য উপহারের একটা দামী প্যাকেট গিফট কুপনের ভেতর মুড়ে দেওয়ার ব্যবস্থাও ছিল সেদিন!
সবাই জানি, রাজ্যের সরকার-পোষিত বিদ্যালয়গুলি করোনাজনিত কারণে প্রায় একটা বছর বন্ধ ছিল। শুধু পঠনপাঠন নয়, সামাজিক, পৌষ্টিক, সাংস্কৃতিক নানাবিধ বিকাশে অনেক বড় ছেদ পড়ে গেল এই একটি বছরের দীর্ঘ সময়ে যা আদৌ নিরাময় হবে কিনা, কারও জানা নেই! বহু ছাত্রছাত্রী তো হারিয়ে গেছে স্কুল থেকে। বহু নাবালিকা ছাত্রীদের জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে এই সময়ে। স্কুলগুলো খোলা থাকলে, শিক্ষকদের পাশাপাশি সহপাঠীরাও প্রশাসনকে খবর দিয়ে এই নাবালিকা বিয়ে কিছুটা আটকাতে পারত। সেসবেরও সুযোগ ছিল না! হোয়াটসঅ্যাপ, জুম, গুগল মিট ইত্যাদি মাধ্যমে অনলাইনে কিছুটা পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা কিছু কিছু বিদ্যালয় বা কিছু কিছু শিক্ষকের স্বতঃপ্রণোদিত প্রচেষ্টাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। সার্বিক কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি কোথাও।
ফলে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য স্কুলের দরজাগুলো খুলে গেলেও, পড়ুয়াদের অধিকাংশ বেঞ্চ অনেকটাই ফাঁকা পড়ে আছে। সরকার-পোষিত স্কুলের সঙ্গে যাদের ন্যূনতম যোগ আছে, তাঁরা কেউ এই সত্যকে অস্বীকার করতে পারবেন না! অবশ্য, এর কারণ নিয়ে চর্চা করার আগেই বেজে গেছে ভোটের দামামা! স্কুলের কথা, ছাত্রছাত্রীদের কথা, শিক্ষাব্যবস্থার কথা ভাবার সময় মেলেনি কারও! বা, শিক্ষার প্রতি যাবতীয় ভাবনাকে আড়াল করে দেওয়াটার ভেতর অন্য কিছুর অন্তর্ভুক্তি খুব পরিকল্পিতভাবে ছকা হচ্ছিল!
শিক্ষাব্যবস্থার ভেতর সময়ের সঙ্গে সমানুপাতিকভাবে জমতে থাকা এই সমূহ উদাসীনতায়, বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়াদের জন্য, ডিজিটাল লার্নিং অ্যাপ চালুর প্রস্তাব যখন ওই সেমিনারে একটি বেসরকারি সংস্থা দিলেন, বিদ্যালয়ের প্রধানগণ তার বিরোধিতা করেননি। বরং, “শিক্ষার একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন” করার জন্য সাধুবাদই জানালেন। প্রযুক্তির দুনিয়ায়, শিক্ষাকে প্রযুক্তির সঙ্গে জুড়ে নেওয়াই তো সময়ের দাবি এবং বর্তমান শিক্ষার জন্য প্রাসঙ্গিকও! কিন্তু, লার্নিং অ্যাপ চালু করার জন্য একটি বিশেষ নামকরা প্রাইভেট কোম্পানির সঙ্গেই গাঁটছড়া বেঁধে নামতে হবে কেন? পাঁচতারা হোটেলেই বা কেন এই আয়োজন? কেন প্রধানশিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষাদপ্তরের সরকারি আধিকারিকগণ নেই এই মহতী উদ্যোগের মঞ্চে? বারবার এত ‘ওপরতলার নির্দেশে’ বলার পর, ওপরতলারাই কেন অনুপস্থিত এই আলোচনাচক্রে?— এইসব প্রশ্ন তখন জোর পাক দিতে শুরু করেছে বিদ্যালয় প্রধানদের মাথায়!
রাজ্যের বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়াদের কথা ভেবে ‘ডিজিটাল লার্নিং অ্যাপ’-টি যে সংস্থা বানিয়েছে তার কর্ণধার তার পটভূমিকা প্রসঙ্গে প্রথমেই বুক ঠুকে বলেন— “(অমুক) শিক্ষকটা পড়াতে পারেননি বলেই ছোটবেলায় অঙ্কে ১৬ পেয়েছিলাম,” “আম্ফান-লকডাউনের সময় যখন শিক্ষকগুলো খাটের তলায় লুকিয়েছিল, আমরাই কাজ করেছিলাম,” “ফাঁকিবাজ শিক্ষকগুলোর জন্য এই হাল”। বারংবার এইসব শব্দোচ্চারণে আমন্ত্রিত বিদ্যালয় প্রধানদের প্রতি যত না অপমান ছিল, গোটা শিক্ষক-সমাজের প্রতি এক নিদারুণ অবজ্ঞা ছিটকে বেরোচ্ছিল প্রাইভেট কোম্পানির ডিরেক্টরের ভাষায়! হয়ত, এই উদ্ধত উচ্চারণে, এক ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত পাঁচতারার আলো ছাপিয়ে বেরিয়ে পড়ছিল বেলাগাম হয়ে! আর সেটা সম্ভবত— ভরা সভায় সরকারি শিক্ষাব্যবস্থাকে খারিজ করে, বেসরকারি উদ্যোগকে প্রতিষ্ঠা দেওয়া। শিক্ষা-সেমিনারে ‘আমন্ত্রিত’ প্রধানশিক্ষকদের প্রতি, সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি, বারংবার উচ্চারিত এই অপ-শব্দগুলো নিয়ে যতবার প্রধানশিক্ষকগণ মুখ খুলতে গেলেন, ততবারই তাঁদের কণ্ঠস্বরকে ধামাচাপা দেওয়া হল কর্পোরেট কায়দায়। শিক্ষায় প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেডের আগ্রাসনকে বুঝতে আর অসুবিধা হচ্ছিল না!
সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা আর শিক্ষকের মান অপমানের পর্বটি সেই পাঁচতারা হোটেলেই থেমে যেতে পারত। আমিও কোথাও এটা নিয়ে লেখার প্রয়োজন বোধ করতাম না। প্যান্ডেমিক পরিস্থিতি কাটিয়ে রাজ্যের পড়ুয়াদের কল্যাণের কথা ভেবে, বিভিন্ন স্কুলগুলো থেকে ডিজিটাল লার্নিং অ্যাপ চালুর দাবিটা তো গতবছর এপ্রিল মাস থেকে আমরাই তুলে আসছিলাম ক্রমাগত! গত এক বছরে কেন শোনা হল না প্রধানশিক্ষকদের কথা? শিক্ষক, অভিভাবকদের কথা? কেন একটা গোটা শিক্ষাবর্ষ স্কুল বন্ধ-র সময়ে এই “বেছে বেছে নেওয়া” বিদ্যালয় প্রধানদের নিয়ে ডিজিটাল মাধ্যমের বা আরও কোনও উন্নত মাধ্যমের মাধ্যমে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা হল না? কেন দিনের পর দিন, রেশন দোকানের মতো শুধু মাথা গুনে মিড ডে মিলটাই চালু থাকল বিদ্যালয়গুলোতে? কেন একটি বেসরকারি নিউজ চ্যানেলের নানা সহায়িকা-র বিজ্ঞাপন-ভূষিত জায়গাকেই বেছে নিতে হল একঘন্টার লাইভ ক্লাসে? কেন অধিকাংশ শিক্ষকদের কাজের মানসিকতা থাকা সত্তেও, তাঁদের “অকেজো”, “অকর্মণ্য” করে রেখে “মাসের পর মাস বাড়িতে বসিয়ে বেতন দিয়ে” সমাজের চোখে অপদস্থ করা হল? কেন একটা প্রাইভেট কোম্পানির তৈরি করা লার্নিং অ্যাপ-কে বাজারে ছাড়ার জন্য প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরকেই ‘ব্যবহার’ করতে হল? প্রশ্নগুলো যতই আলাদা বাক্যে লেখে হোক, একটা সুতোতেই যে গাঁথা আছে বুঝতে কি অসুবিধা হয় কারও?
এরপরেও সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক যখন ওই পাঁচতারা হোটেলেই, ঐ ওপরতলার মদতপুষ্ট প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি সদর্পে ঘোষণা করলেন যে এই ‘ডিজিটাল লার্নিং অ্যাপ” ন্যায্য মূল্যে তারা এবছরই বাজারে আনতে চলেছেন! এবং সেই ন্যায্য মূল্যটি ধার্য হয়েছে— ৫ হাজার টাকা! অবশ্য এববছরে যারা মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে (সে পরীক্ষার আর দুমাস বাকি যেখানে) তাদের জন্য ‘অ্যাপ’ বিনামূল্যে!
সরকারি বিদ্যালয়গুলি এইভাবে প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেডের ‘বাজার’ হয়ে ওঠায়, ব্যবসায়িক প্রমোশানে প্রধানশিক্ষকদেরকে ডেকে সেই ব্যবসায় বৈধতা তৈরির সুচতুর ছকটি, শুধু আপত্তিজনক নয়, ভয়ঙ্কর একটা ইঙ্গিতবাহী!
২০০৯ সালের বিনামূল্যে শিশুদের শিক্ষার সাংবিধানিক অধিকারকে এইভাবে নস্যাৎ করে, রাজ্যে প্রায় এক কোটি সরকারি স্কুলের পড়ুয়াকে “টার্গেট কাস্টমার” করার যে নিঁখুত লাভের রসায়ন ঐ প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেড দেখতে শুরু করেছে, তাকে এইবেলা ঠেকাতে না পারলে শিক্ষার অধিকার ভূলুণ্ঠিত হবে! এবং এই বেসরকারি ধারালো চোয়ালের নিচে আমাদের সরকারি শিক্ষাকে সঁপে দেওয়া, তাকে সরকারি বৈধতাদানের ভেতর “ওপরতলার” লোভ এবং দীনতা যুগপৎ প্রকট করে তুলেছে!
যে লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ারা ভর্তির জন্য নির্ধারিত বার্ষিক এককালীন ২৪০ টাকাটাও জোগাড় করতে অক্ষম, তাদের জন্য ৫০০০ টাকা মূল্যের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ কোন যুক্তিতে “শিক্ষায় বিপ্লব” আনবে আমাদের কারও মাথাতেই ঢুকছে না!
আবার আজ যারা নির্দিষ্ট প্রাইভেট নিউজ চ্যানেলের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অ্যাপ বিক্রিতে মদত দিচ্ছেন, কাল তারা ফোন বিক্রির তাগাদা দেবেন— এটাও জলের মত পরিষ্কার! ‘ওপরতলা’-র কর্পোরেট আঁতাতে এভাবেই ধাপে ধাপে আমাদের “স্কুলগুলো”কে, “মাস্টারগুলো”কে অকেজো অপবাদে বিক্রি করে, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির কাছে নিলামে তুলে দিয়ে লাখো-লাখো অভিভাবকদের সন্তানের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে নিক্ষেপ করার গভীর ষড়যন্ত্র প্রত্যক্ষ করতে চলেছি হয়ত আমরা! স্বাস্থ্যের মতো শিক্ষাকে হয় কেনো, না হলে পিছিয়ে পড়ো— এই হুঙ্কারধ্বনি শুনতে পাচ্ছি!
সেই পাঁচতারা হোটেলের এহেন “পরিকল্পিত সেমিনারে”, কয়েকজন প্রধানশিক্ষক-শিক্ষিকাগণ এই নিয়ে যখনই কিছু বলতে গেলেন তখন ‘মাইক্রোফোন বন্ধ করে, তড়িঘড়ি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টেনে, শিক্ষকদের “উপহার” বাবদ হাতে ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হল একটি দামি প্যাকেট এবং পাঁচতারা-র আপ্যায়ন! প্রধানশিক্ষকদের শান্ত করার জন্য এই প্যাকেট বিলির ভেতর যে যথেচ্ছ অপমান ছিল, আমাদের শিশুদের শিক্ষাকে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেবার যে গভীর চক্রান্ত আঁকা হচ্ছে, নোটবই কোম্পানিগুলোকে রাতারাতি ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বড় করা চলছে— তার তীব্র নিন্দা না করে পারছি না। ব্যবসার সঙ্গে শিক্ষার যোগ ছিন্ন করার জন্য, শুধু শিক্ষক অভিভাবক সমাজ নয়, সকলকে এগিয়ে আসার বিনীত আবেদন রাখছি!
শিশু মনস্তত্ত্বকে মাথায় রেখে যদি কোনও লার্নিং অ্যাপ বা তার থেকেও উন্নত, গ্রহণযোগ্য কোনও প্রযুক্তিকে আমাদের সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষার সঙ্গে জুড়ে নেওয়া যায়, তবে তা সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থায় হোক। আমাদের পড়ুয়াদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তৈরি হোক। স্কুল ছুটির পরেও আমরা, শিক্ষকসমাজ, অতিরিক্ত সময় দেব কথা দিচ্ছি। প্রয়োজনে রাত জাগব! এজন্য আমাদের কোনওরকম পারিশ্রমিক লাগবে না। শিক্ষায় প্রযুক্তিকে জুড়ে দেওয়ার জন্য অন্যান্য ক্ষেত্রের বহু কৃতী মানুষ এগিয়ে আসবেন নিঃস্বার্থভাবে— এটাও হলফ করে বলতে পারি। শুধু, আমাদের শিশুদের শিক্ষার অধিকার, প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেডের কাছে কিছুতেই বিক্রি হতে দেব না আমরা!
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গ্রিক উপকথা অনুসারে, ট্রয় নগরী ধ্বংসের অন্যতম কারণ ছিল একটি কাঠের ঘোড়া। ট্রয়বাসী যাকে গ্রিক পরিত্যক্ত ভেবে রাজ্যপুরে তুলে এনে নিজেদের সর্বনাশ নিজেরাই ডেকে এনেছিলেন। এখন প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেডের বানানো কাঠের ঘোড়াটি বা ‘লার্নিং অ্যাপ’ সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার ভেতরে এনে কর্পোরেটদের হাতে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের রাস্তা পোক্ত করা সমার্থক বইকি! ভেবে দেখবেন..
মনে হতে পারে শিক্ষায় বেসরকারিকরণ কেবল প্রাইভেট ইস্কুল কলেজ স্থাপনের মধ্য দিয়েই হওয়া সম্ভব। ডিজিটাল স্পেসের সঙ্গে তার তুলনাই চলে না। খেলা থেকে খবর সব জায়গায় তার আগ্রাসন। সরকার তাতে সামিল হয়েছে অনেক আগেই এবং নীতিগতভাবেই। তারা যে মাস্টারদের থোড়াই কেয়ার করবে জানা কথা, কিন্তু অসম্মান করলে সেটা সেখানেই ফিরিয়ে দেওয়া দরকার। সেটা ব্যাড বিজনেসও বটে। এই পাষণ্ডদের হাতে পড়ছে আমাদের বাচ্চারা।