দিল্লিতে এই মুহূর্তে যা ঘটছে, তা রূপকথার চেয়ে কম নয়

প্রশান্ত ভট্টাচার্য

 



কবি, সাংবাদিক ও প্রবন্ধকার

 

 

 

‘ইয়ে ইনকিলাব হ্যায়, ইয়ে রেভলিউশন হ্যায়’— টিভি ক্যামেরার লেন্সে চোখ রেখে যখন এক পঞ্জাবি যুবক এই উচ্চারণ করছিলেন, তখন তাঁর প্রতিটি শব্দে প্রত্যয় ঠিকরে বেরোচ্ছিল। কীরকম এক রোমাঞ্চ লাগছিল। অথচ এই যুবক আমার চিরচেনা কৃষকভাই নন। না চেহারায়, না প্রত্যয়ে। আমাদের উপেন, গফুর, রামা কৈবর্ত, হাসেম শেখ বা ভুবন মণ্ডলকে দিয়ে এই পঞ্চনদীর তীরের যুবককে বোঝা যাবে না। বোঝা যাবে না এই আন্দোলনের চরিত্রও।

বলতে দ্বিধা নেই, দিল্লির কৃষক বিক্ষোভের চরিত্রটাই আমরা ধরতে পারছি না। আমাদের বামপন্থী নেতারাও ধরতে পারছেন না। যাঁদের ইতিহাসচেতনায় আছে তেভাগা, আছে নকশালবাড়ি কৃষকবিদ্রোহ, আছে অপারেশন বর্গা। শ্রেণিচরিত্রে এই চেহারার কৃষকবিক্ষোভকে ঠিক কী বলবেন, আমাদের রাজ্যের বাম নেতারা তা-ও বুঝে উঠতে পারেননি। কেন না, তাঁদের রণনীতি ও রণকৌশলে বড় চাষিরা তো জনগণতান্ত্রিক বিপ্লবের মিত্র শ্রেণি নন। মার্কসবাদ-লেনিনবাদ আর মাওবাদের টেক্স্‌টবুক থেকে তো সব আন্দোলনের গতিধারা বোঝা যায় না। তাই আজ থেকে আড়াই মাস আগে, সেপ্টেম্বরে নয়া কৃষি বিল সংসদে পাশ হওয়ার সময় থেকে যখন পঞ্জাবের কৃষকরা ক্ষেপে উঠতে শুরু করছিলেন, তখন আমরা গা করিনি।

অবশেষে বোধহয়, সারা ভারত কৃষকসভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা যখন বিষয়টা নিয়ে হইচই শুরু করলেন, তখন সিপিএম নেতাদের টনক নড়ল। তাঁরা বুঝলেন, এই ‘কুলাক’-দের লড়াই আজকের শ্রেণিসংগ্রামেরই একটি উন্নত স্তর। তখন হামলে পড়লেন বামনেতারা। হয়তো, আমাদের অনেকের মতোই, এটা হতে পারে ওঁদেরও বোঝার অক্ষমতা। বোঝাপড়ার অভাব। তবু আমার প্রশ্ন, বিশেষ করে ৮ ডিসেম্বরের সর্বভারতীয় ধর্মঘটের পরেও, এই বিক্ষোভে কি শামিল সারা দেশের কৃষক? বাস্তব ছবিটা কিন্তু দেখাচ্ছে, শীতার্ত দিল্লির রাজপথে সারা দেশের কৃষকরা নেই। আছেন মূলত পঞ্জাব, হরিয়ানা ও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কৃষকরা। তাঁরা ট্রাক্টর চেপে চলে এসেছেন রাজধানীতে।

এখন রাজধানী দিল্লিতে প্রায় ১২ লাখ কৃষক অবস্থান করছেন। এঁদের মধ্যে প্রায় এক লাখ মাহিলা। প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষ যোগ দিচ্ছেন বিক্ষোভে। পঞ্জাব, হরিয়ানার বিভিন্ন পেশার মানুষ সলিডারিটি জানাচ্ছেন কৃষকদের। অনেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রীয় সম্মান। কৃষকদের সমর্থনে সুর চড়িয়েছেন ‘‌দ্য গ্রেট খালি’। ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও বার্তায় দিলীপ সিং রানা ওরফে খালি বলেন, “কৃষকদের দাবিদাওয়া সমর্থন করুন।” সরকার ভুল লোকদের সঙ্গে ‘‌পাঙ্গা’‌ নিয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। পেশাদার কুস্তিগিরের বক্তব্য, “‌ওরা ২ টাকায় ফসল কিনে ২০০ টাকায় বেচবে। এইসব আইনে দিনমজুর, রাস্তার পাশের দোকানদারদেরও ক্ষতি হবে, ভুগবেন সাধারণ মানুষও। আমি সবাইকে বলব, কৃষকদের দাবিগুলি যাতে কেন্দ্র মানতে বাধ্য হয়, সেজন্য তাঁদের পাশে থাকুন। হরিয়ানা, পঞ্জাবের কৃষকদের সামলানো কেন্দ্রের পক্ষে কঠিন হবে।”

নাড়া পড়েছে বিদেশেও। লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্ক, টরন্টো থেকে সানফ্রান্সিসকো, বার্লিন থেকে অকল্যান্ড— বিশ্বের বিভিন্ন শহরে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে শিখরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, আন্দোলনকারী কৃষকদের সমর্থনে গাড়ির মিছিল পর্যন্ত বের করছেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ইতোমধ্যেই এই কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করে একাধিক বিবৃতি দিয়েছেন, ব্রিটেন, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের শিখ রাজনীতিবিদরাও প্রকাশ্যেই তাঁদের সংহতি জানাচ্ছেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৩৮ সদস্যের সলিডারিটি প্রকাশের পর, কৃষকবিক্ষোভের খবর পৌঁছে গিয়েছে রাষ্ট্রসংঘের দরবারেও। রাষ্ট্রসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফান জুরারিক জানান, “মানুষের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদের অধিকার আছে। তা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে প্রশাসনকে।” কৃষকবিক্ষোভ নিয়ে একটি প্রশ্নের জবাবে জুরারিক বলেন, “ভারত-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে আমি সেই কথাই বলব, যা অন্যরাও সেই বিষয়গুলি উত্থাপন করার সময় আমি বলে থাকি। তা হল যে, মানুষের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদের অধিকার আছে। আর তাঁদের সেটা করতে দেওয়া উচিত প্রশাসনের।” আপাতভাবে নিরীহ ও রুটিন এই মন্তব্যের জেরে কিছুটা হলেও আন্তর্জাতিক মহলে অস্বস্তিতে পড়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। যদিও বিভিন্ন বিদেশি নেতাদের মন্তব্য নিয়ে ভারত সরকারের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, এগুলো সম্পূর্ণ ‘অযাচিত’, কেননা,  এটি ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়’। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “ভারতের কৃষক-সংক্রান্ত বিষয়ে আমরা কয়েকটি অজ্ঞাত মন্তব্য দেখতে পেয়েছি। সেই মন্তব্যগুলি অযাচিত, বিশেষত তা গণতান্ত্রিক দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।”

তবুও মানতেই হবে, কৃষকবিক্ষোভ নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে মোদি সরকার। দেশের ভিতরেও বিজেপি কৃষকবিক্ষোভের পিছনে দ্বিতীয় শাহিনবাগ খুঁজে পেয়েছে। বিজেপির ডাকাবুকো সাংসদ মনোজ তিওয়ারি ফের সামনে নিয়ে এসেছেন ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’-এর তত্ত্ব। উত্তর দিল্লির বিজেপি সাংসদের তোপ, “টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং কৃষক আন্দোলনকে দ্বিতীয় শাহিনবাগ বানাতে চাইছেন।” তাঁর সংযোজন, “এই টুকড়ে টুকড়ে গ্যাংয়ের আসল উদ্দেশ্য আন্দোলনকারী প্রকৃত কৃষকরা অবশ্যই বুঝতে পারবেন।” তারও আগে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর কৃষকদের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’, ‘খালিস্তানপন্থী’ বলে দেগেছিলেন। এই অভিনেতা-রাজনীতিক বা খট্টর যাই বলুন, বিজেপির ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বররা কিন্তু চিন্তিত। গত সাড়ে ছ বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনও আন্দোলনকে কেন্দ্রীয় সরকার হাজার চেষ্টা করেও এখনও দেশবিরোধী তকমা দিতে পারেনি। কৃষকদের সমস্যাকে ছোট জনগোষ্ঠীর আঞ্চলিক সমস্যাও বলা যাচ্ছে না। এই আন্দোলনই প্রথম মোদি সরকারকে বাধ্য করল সরকারবিরোধীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে। সাড়ে ছ বছরের মধ্যে এমন সঙ্কটে পড়েনি সরকার। সংসদে জনপ্রতিনিধিদের উপেক্ষা করার মূল্য দিতে হচ্ছে সরাসরি জনতার সঙ্গে কথা বলতে বাধ্য হয়ে। দেশের লবেজান গণতন্ত্রকে যেন অক্সিজেন জোগাচ্ছে কৃষক আন্দোলন। এককথায় অনমনীয় এমন কৃষক আন্দোলন অভূতপূর্ব, ঐতিহাসিক। গর্ববোধ করছি করোনা-কালপর্বেও এমন এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সাক্ষী থাকার জন্য। আমি জানি না, বাংলার রাজনৈতিক দলগুলো স্রেফ ক্রেডিট নেওয়ার জন্য দিল্লির কৃষক বিদ্রোহে সমর্থন জানাচ্ছে কিনা। নাকি তাদেরও ক্যাচ লাইন, ‘লড়াইয়ে থাকতে হয় নইলে পিছিয়ে পড়তে হয়।’

পঞ্জাবের কৃষকের সঙ্গে দেশের অন্যান্য রাজ্যের, বিশেষ করে বাংলা-বিহার-ওডিশা-ঝাড়খণ্ড-অসম-মধ্যপ্রদেশ-ছত্তিশগড়ের কৃষকের চরিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। সেটা বুঝতে আমরা বরং একটু কৃষিপাঠশালা থেকে ঘুরে আসি। আমাদের বাংলায় ১২ বিঘে জমিকে এক জোত বলা হয়। সেই নিরিখে, আমাদের রাজ্যে ১২ বিঘে জমি থাকলে জোতদার। আর পঞ্জাবে? সেখানে ছোট কৃষকের জমিরই আয়তন কমপক্ষে ৩০-৩৫ বিঘে। এঁরা কেউ বড়চাষি নন। সাধারণত ৭০-৮০ বিঘে জমিতে চাষ করেন যাঁরা, তাঁদের সম্পন্ন কৃষক বলে বিবেচনা করা হয়। এঁদের প্রত্যেকের ট্রাক্টর আছে। ওখানে চাষির বাড়িতে মার্সেডিজ়, অডি গাড়ি দেখতে পাওয়া যায়। তাঁদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে পড়াশোনা করে। ব্যবসা করে। পঞ্জাবের মাঠে চাষ হয় মেশিনে। গবাদি পশু চাষের কাজে ব্যবহার হয় না। তাই খেতে বিচুলি পড়ে থাকে, মেশিনের সাহায্যে খেতেই ধানঝাড়াই করে খামারে চলে আসে। ওঁদের গোটা পরিবার ট্রাক্টরে বা মার্সেডিজে চেপে শহরে গিয়ে মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দ্যাখে, নানান মুখরোচক খাবার খায়। ফিরে এসে আগুন জ্বালিয়ে সাঁঝা চুলহা-তে রোটি বানায়, ৩৬ বা ৪২ ইঞ্চি ফ্ল্যাট টিভিতে সিরিয়াল দ্যাখে। হরিয়ানা বা পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ছবিতে ওই শহরের সংস্কৃতিটা নেই, ওরা আরও সামন্ততান্ত্রিক ও রক্ষণশীল। বাকিটা একই রকমের। মানে এঁরা বড় চাষি, সম্পন্ন কৃষক। যাঁরা দিল্লিকে ঘিরেছেন ট্রাক্টর-ছন্দে, ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকে পড়েছেন, তাঁরা সম্পন্ন চাষি। তাঁরা কৃষি আইনের বিরোধিতা করছেন। সদ্য বিহারের ভোটে বামদের উল্লেখযোগ্য জয় এল, কই সেখান থেকে তো চাষিরা দিল্লি গেলেন না? ওখানকার চাষিরা অবর্ণনীয়ভাবে গরিব। বাংলার সংগ্রমী কৃষকরা দলে-দলে গেলেন না কেন? তাঁরা কি কৃষি আইনকে সমর্থন করছেন? এসব প্রশ্নগুলো অনেককেই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। তবে কি গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরার স্বপ্ন তামাদি হয়ে গেল? অথচ হাজার-হাজার ট্রাক্টর দিল্লির পথে-পথে। লাখো-লাখো কৃষক দিল্লির রাজপথে আস্তানা গেড়েছেন। পঞ্জাব থেকে রাজধানীতে আসার পথে ট্রাক্টরের সঙ্গে ট্রেলার লাগিয়ে নিয়েছেন। তাতে খাবার আছে, ঘুম পেলে শোওয়ার ব্যবস্থা আছে, জল রাখার ব্যবস্থা আছে। তাঁরা জানেন, এ লড়াই চলবে, অতএব তাঁরা সেইভাবেই তৈরি হয়ে এসেছেন। নিয়ে এসেছেন খাদ্যসামগ্রী। তিন মাসের রসদ। এই যে দীর্ঘস্থায়ী উদ্যোগ, এটাই কৃষকদের মনোবলের পরিচয় দিচ্ছে।

কৃষক সংগঠনগুলোর এই দুর্মর মনোভাবে আমাদের এখানকার বামপন্থীরা বেশ পুলকিত। কিন্তু দিল্লি গিয়ে দেখুন,  ইতিউতি কিছু লাল ঝান্ডা থাকলেও, এই লং মার্চের নেতৃত্ব ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের হাতে, যে সংগঠনটি গড়ে তুলেছিলেন চৌধুরি চরণ সিং। যদিও প্রকাশ্যে কোনও দল এই সংগঠনের মাথায় আপাতত নেই। ৫০০-র বেশি কৃষক সংগঠন, কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ‘দিল্লি চলো’-য় যোগ দিয়েছে। এই মহামিলনে বিজেপি বাদ দিয়ে প্রত্যেক দলের কৃষক সংগঠন আছে। যদিও শাসকের কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়া মিডিয়ারা এমন ঐতিহাসিক সমাবেশ নিয়ে চুপ মেরে আছেন। তবে আশার কথা, বৃহত্তর মিডিয়ায় জায়গা না-মিললেও কৃষক আন্দোলনের কিচ্ছুটি এসে যায়নি। বরং দিন-দিন আন্দোলন তীব্রতর হচ্ছে। অন্যদিকে, যে পুলিশের লাঠির ঘায়ে কৃষকরা দিনে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছেন, দিনের শেষে সেই পুলিশদেরই রান্না করে পাত পেড়ে খাওয়াচ্ছেন। এ যদি ঐতিহাসিক অধ্যায় না হয় তবে কোনটা ঐতিহাসিক?

প্রতি ১২ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে এই দেশের কোনও না কোনও প্রান্তে একজন কৃষক আত্মঘাতী হন জীবনযুদ্ধে হেরে গিয়ে। আর এখানে সেই কৃষকরাই লড়াইয়ের পথ বেছে নিয়েছেন। শীতের রাজধানীতে বিপ্লবের অকালবসন্ত নামবে কি না, তা সময় বলবে। কিন্তু দিল্লিতে এই মুহূর্তে যা ঘটছে, তা রূপকথার চেয়ে কম নয় মোটেই। দীর্ঘদিন পর এমন জমাট লড়াই দেখছে এ দেশ। তা-ও কৃষকদের নেতৃত্বে, ঋণের ফাঁসে আত্মহত্যাই যাঁদের নিয়তি বলে মেনে নিয়েছিল সরকার থেকে আমজনতা। সেই কৃষকরা আজ রুখে দাঁড়িয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির কৃষকবিদ্রোহে বাঙালি কৃষকদের তেমন হেলদোল না-থাকলেও, বাঙালি কেরানি রক্তে প্রচণ্ড দোলা, দারুণ উত্তেজনা। পাঠক মনে রাখবেন, বাঙালি কেরানি স্বভাবত বাম। তাই তাঁরা দোলা নিয়ে থাকুন। শুধু মনে রাখুন, দেশজুড়ে সরকার-বিরোধী যে কৃষক-আন্দোলন চলছে, সেখানে বামপন্থীদের ভূমিকা অতি নগণ্য। সর্বভারতীয় স্তরে কৃষক সংগঠনে তার অস্তিত্বই বা কতটুকু? অতএব পঞ্জাবপুত্তরদের লড়াকু মেজাজ দেখে দূর থেকে হাততালিই যথেষ্ট।

কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে নাস্তিকতাই আমার ধর্ম, তাই এই স্মার্টফোনের কল্যাণে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে এমন কৃষক-আন্দোলন অনেকের মনে বিপুল আশা জাগালেও, আমি দেখি ইভিএমে সব ফক্কা। সেখানে তলে-তলে অন্য খেলা! ২০১৮ সালে আমরা দেখলাম রক্তাক্ত পায়ে সুবিপুল কৃষক মিছিল, লং মার্চ, যাকে বলা হল ঐতিহাসিক মিছিল, আমাদের সংগ্রামী মনে বেজে উঠল, এই মিছিল সবহারার, সব পাওয়ার এই মিছিল। কিন্তু কয়েক মাস পরে লোকসভা ভোটের ফলে কী হয়েছিল? আসলে, ‘আশায় বাঁচে চাষা’। আর ভোট মিটলে মোদি-শাহরা থাকেন খাসা।

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4656 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...