আফ্রিকার গৃহযুদ্ধ ও পৃথিবীর উষ্ণতাবৃদ্ধি

নূপুর রায়চৌধুরী

 


গবেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, পৃথিবীর তাপমাত্রা যেভাবে বেড়ে চলেছে, তা চলতে থাকলে, আগামী কয়েক দশকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। ভবিষ্যৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতাগুলো, জলবায়ু মডেলের অনুমানগুলোর সঙ্গে মিলিত হলে, ২০৩০ সালের মধ্যে আফ্রিকায় সশস্ত্র সংঘাতের ঘটনার প্রায় ৫৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে; ভবিষ্যতের যুদ্ধগুলো সাম্প্রতিক যুদ্ধগুলোর মতো মারাত্মক হলে যুদ্ধে আরও ৩ লাখ ৯৩ হাজার মানুষ মৃত্যুর শিকার হবে। গৃহযুদ্ধের উপর বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে এইরকম ব্যাপক তত্ত্বতালাশ সম্ভবত এই প্রথম

 

একটু ভনিতা দিয়েই এই লেখাটা শুরু করতে হচ্ছে। আসলে বেশ কিছুদিন হল আমি আফ্রিকার গৃহযুদ্ধ নিয়ে লেখালেখিতে একটু উৎসাহিত হয়ে পড়েছি এবং সে-ব্যাপারে বইপত্র নাড়াঘাঁটা করতে করতেই ক-দিন আগে ‘ফরেন পলিসি’ ম্যাগাজিনে ছাপা কয়েক অনুচ্ছেদের ছোট্ট একটা লেখায় চোখ আটকে যায়। দেখি, সেখানে বলছে যে, বৈশ্বিক তাপমাত্রার বিপজ্জনক বৃদ্ধি পৃথিবীর বুকে যুদ্ধবিগ্রহ, সংঘর্ষ বিশেষত আফ্রিকার গৃহযুদ্ধ আরও বাড়িয়ে তুলবে। পড়ে চমকে উঠি। হ্যাঁ, অস্বীকার করব না, আপনাদের মতো আমিও প্রথমে দ্বিধান্বিত হয়েছিলাম এই ভেবে যে, এই দুইয়ের মধ্যে সত্যি কি কোনও সম্পর্ক রয়েছে? সুতরাং সেই থেকে শুরু হয় এ বিষয়ে অনুসন্ধান। যত পড়ি, তত আরও কৌতূহলী হয়ে উঠি, চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

কিন্তু এই বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করার আগে, আফ্রিকার যুদ্ধ-ইতিহাসের পাতায় এক ঝলক উঁকি মেরে গেলে কেমন হয়? ১৯৪৫ সাল থেকে শুরু হলেও মোটামুটি ১৯৬০ সালের মধ্যে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শাসকদের কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসন বা সম্পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল আফ্রিকা মহাদেশ। স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই আফ্রিকার দেশগুলো যেন গৃহযুদ্ধ এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘর্ষের জন্য পাল্লা দিয়ে বাজি ধরেছিল। হাড়-হিম করা ভয়াবহ সব সংঘর্ষ: চাদ (১৯৬৫-৮৫), অ্যাঙ্গোলা (১৯৭৪ সাল থেকে), লাইবেরিয়া (১৯৮০-২০০৩), নাইজেরিয়ান সিভিল ওয়ার (১৯৬৭), উগান্ডার দা লর্ড’স রেসিসটেন্স আর্মি ইন্সার্জেন্স (এলআরএ) (১৯৮৭), লাইবেরিয়া সিভিল ওয়ার (১৯৮৯), সোমালি সিভিল ওয়ার (১৯৯১), সিয়েরা লিওন সিভিল ওয়ার (১৯৯১), রুয়ান্ডান জেনোসাইড (১৯৯৪), রিপাবলিক অফ দা কঙ্গো সিভিল ওয়ার (১৯৯৭-১৯৯৯), এরিট্রিয়ান-ইথিওপিয়ান ওয়ার (১৯৯৮)… আর কত নাম নেব? গৃহযুদ্ধের যেন এক ঢল নেমেছিল। আর এই এখন, আপনারা এই লেখাটা পড়ছেন, গৃহযুদ্ধের ঠেলা সামলাতে নাভিশ্বাস উঠেছে আফ্রিকার উত্তর-পূর্বের দেশ সুদানের। সুদানিস আর্মড ফোর্সেস (SAF) এবং র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF) নামে পরিচিত একটি শক্তিশালী আধাসামরিক গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে ক্ষমতার তুমুল  লড়াই বেঁধেছে, রাজধানী শহর খার্তুম এবং দারফুর অঞ্চলের চারপাশে কেন্দ্রীভূত এই সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল, ২০২৩-এর এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখে, আর কবে যে তা শেষ হবে, কে জানে! আর সোমালিয়া? ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে রাষ্ট্রপতি সিয়াদ বারের সরকার পতনের সময় থেকে যে চলমান সংঘাত শুরু হয়েছিল, আজও তা অব্যাহত।

ভাবছেন, সবই তো বোঝা গেল, কিন্তু পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে আফ্রিকার যুদ্ধবিগ্রহের সম্পর্কটা কোথায়, কীভাবে? আছে, আছে, সেটাই তো খুঁজেপেতে পেয়ে গিয়েছিলাম ২০০৯ সালে প্রকাশিত অসাধারণ এক নিবন্ধে। অর্থনীতিবিদ মার্শাল বার্ক এবং তার সহ-গবেষকদের লেখা এই নিবন্ধটি ছাপা হয় অত্যন্ত নামকরা বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র PNSA-তে। ১৯৮১ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে সাব-সাহারান আফ্রিকায় সশস্ত্র সংঘাতের ঘটনাগুলোর সঙ্গে তাপমাত্রার তারতম্যের তুলনা করেছেন গবেষকরা এবং এই দুইয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ এক ঐতিহাসিক যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা, উষ্ণ বছরের সঙ্গে যুদ্ধের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। জলবায়ু মডেল ব্যবহার করে তাঁরা দেখিয়েছেন যে বৈশ্বিক তাপমাত্রার মাত্র এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি করা হলে, আফ্রিকায় গৃহযুদ্ধের ৪৯ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গবেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, পৃথিবীর তাপমাত্রা যেভাবে বেড়ে চলেছে, তা চলতে থাকলে, আগামী কয়েক দশকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। ভবিষ্যৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতাগুলো, জলবায়ু মডেলের অনুমানগুলোর সঙ্গে মিলিত হলে, ২০৩০ সালের মধ্যে আফ্রিকায় সশস্ত্র সংঘাতের ঘটনার প্রায় ৫৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে; ভবিষ্যতের যুদ্ধগুলো সাম্প্রতিক যুদ্ধগুলোর মতো মারাত্মক হলে যুদ্ধে আরও ৩ লাখ ৯৩ হাজার মানুষ মৃত্যুর শিকার হবে। গৃহযুদ্ধের উপর বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে এইরকম ব্যাপক তত্ত্বতালাশ সম্ভবত এই প্রথম। বার্ক-দের অধ্যয়নের ফলাফলগুলো ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য আফ্রিকান সরকার এবং বিদেশি সাহায্যদাতাদের পরিবেশ-নীতির সংস্কারের জরুরি প্রয়োজনের পরামর্শ দেয়।

শুধুমাত্র তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য নির্দিষ্ট দ্বন্দ্বকে সরাসরি দায়ী করা কিছুটা বাড়িয়ে বলা হলেও, জলবায়ু পরিবর্তন বিদ্যমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং কৃষিজ-সম্পদের ঘাটতি, অর্থনৈতিক উত্পাদনশীলতা হ্রাস, স্থানচ্যুতি এবং জমি ও জলের জন্য প্রতিযোগিতার মতো সংঘর্ষের ইন্ধন জোগাতে পারে, বিশেষ করে সেইসব অঞ্চলে যেখানে জনসংখ্যা ইতিমধ্যেই বিচ্ছিন্নতাবাদের শিকার। আফ্রিকাতে, এমন উদাহরণ রয়েছে যেখানে জলবায়ু-সম্পর্কিত কারণগুলি দ্বন্দ্বের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, যদিও তারা প্রায়শই রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক গতিশীলতার সঙ্গে জড়িত। এরকম একটি উদাহরণ হল সুদানের দারফুর সংঘাত। এটি ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিক থেকে ধূমায়িত হলেও, যুদ্ধের সবচেয়ে তীব্র পর্যায়টি ২০০৩ সাল থেকে লক্ষিত হয়। ২০০৭ সালে দারফুর সংঘাতকে কিছু পর্যবেক্ষক “প্রথম জলবায়ু পরিবর্তনের যুদ্ধ” হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন, জাতিসঙ্ঘের তৎকালীন মহাসচিব বান কি-মুন বলেছিলেন: “বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণ থাকলেও, এই যুদ্ধ কিন্তু শুরু হয়েছিল একটা পরিবেশগত সঙ্কট হিসাবে, অন্তত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অংশত তার উদ্ভব হয়েছিল।’’

এখানে বলে রাখা ভাল যে জাতিসঙ্ঘের পরিবেশ সংস্থা সুদানকে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে একটা বলে সনাক্ত করেছে। সুদানের অত্যন্ত পরিবর্তনশীল জলবায়ুর কারণে, কয়েক দশকের খরা, জলের উৎস হ্রাস এবং বিস্তৃত মরুকরণের চাপে দেশটা জেরবার হয়ে গেছে। একনাগাড়ে হয়ে চলা বন্যা ব্যাহত করেছে শস্য রোপণের মরসুমকে, ফসলের গোলা শূন্য, মারাত্মকভাবে ক্ষুধার্ত মানুষ মরিয়া হয়ে হাতে তুলে নিয়েছে অস্ত্র। এই সঙ্কটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মা ও শিশুরা। ৪০ লাখেরও বেশি ছোট শিশু, গর্ভবতী এবং স্তন্যদাত্রী মায়েরা সেখানে তীব্রভাবে অপুষ্টির শিকার।

এখন প্রশ্ন আসে বিশ্ব কি এই সমস্যা নিয়ে কোনোরকম ভাবনাচিন্তা করছে? হ্যাঁ, অবশ্যই। এই তো ক-দিন আগেই, আরব এমিরেটস-এর দুবাইতে জোরকদমে হয়ে গেল জাতিসঙ্ঘের ২৮-তম জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন ওরফে COP28 (Conference of the Parties)। ২০২৩-এর নভেম্বরের ৩০ থেকে ডিসেম্বরের ১২ তারিখ পর্যন্ত চলেছিল এই সমাবেশ। সেখানে জড়ো হয়েছিলেন ৭০,০০০-এরও বেশি প্রতিনিধি। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসঙ্ঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের (ইউএনএফসিসিসি) সদস্য রাষ্ট্র বা দলগুলোর তাবড় তাবড় সব বিশ্বনেতা, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, জলবায়ুবিজ্ঞানী, আদিবাসী, তরুণ-তরুণী, সাংবাদিক, অন্যান্য বিশেষজ্ঞ, স্টেকহোল্ডার— বলতে গেলে কেউই বাদ যায়নি। নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে কী এমন সেই বৈঠক? ব্যাপারটা তাহলে একটু খুলেই বলি।

১৯৯২ সালে, ইউএনএফসিসিসি-র অধীনস্থ প্রতিটি দেশ বিপজ্জনক জলবায়ু পরিবর্তন এড়াতে এবং বিশ্বব্যাপী একটি ন্যায়সঙ্গত উপায়ে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর উপায় খুঁজে বের করতে চুক্তিবদ্ধ হয়। সেই শুরু, আর তখন থেকে আজ অবধি, তিন দশক ধরে, জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ে জরুরি পরিস্থিতি-ভিত্তিক মোকাবিলায়, বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া তৈরি করার জন্য, প্রায় প্রতি বছর বসছে এই অধিবেশন।

তর্কের খাতিরে কেউ বলে উঠতেই পারেন, পরিবেশ দূষণ তো দিনকে দিন রমরমিয়ে বেড়েই চলেছে, এসব মিটিংটিটিং করে তবে হচ্ছেটা কী?

না, না, সে-কথা ঠিক নয়। বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু সম্মেলন হল এই COP। সেখানে যাঁরা অংশগ্রহণ করেন, তাঁরা কিন্তু নিছক মজা করতে যান না, ধুরন্ধর ডিটেক্টিভের মতো পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তের জলবায়ু পরিবর্তনের গতিপ্রকৃতি, রীতিমতো অঙ্ক কষে, পরিসংখ্যান-সহ সংগ্রহ করে আনেন।

সদস্যদের মধ্যে তারপর সেইসব মাপজোক নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ, তর্কবিতর্ক চলে; সব তথ্যপ্রমাণাদির ভিত্তিতেই তারপর ভবিষ্যতের সংশোধনী কার্যকাণ্ডের নিয়মপন্থা নির্ধারণ করা হয়। এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে থাকেন বিশ্বজোড়া সুধীগণের দল যাঁরা এই স্বপ্নিল নীল গ্রহটাকে নিয়ে নিরন্তর চিন্তাভাবনা করেন।

কী ভাবছেন বেশি বেশি বলছি? মোটেই তা নয়, এই ধরুন না, ২০১৫ সালে সংঘটিত COP২১-এর প্যারিস চুক্তি— পরিবেশ চুক্তিগুলির মধ্যে এতদ্পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকর হিসেবে এটাকে মান্যতা দেওয়া হয়। এই আন্তর্জাতিক জলবায়ু চুক্তি অনুসারে, পৃথিবীর প্রতিটি স্বাক্ষরকারী দেশ বৈশ্বিক উষ্ণতাকে প্রাক-শিল্প স্তরের তুলনায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে এবং বিশেষত ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখার শপথ নেয়। আইনত বাধ্যতামূলক এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা এবং তা বাস্তবে রূপায়িত করার অঙ্গীকারে বিশ্বকে সম্মত করার গুরুভার বহন করেছে যে COP তার জন্য এর চেয়ে বড় জয় আর কী হতে পারে?

ভাবছেন, ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এই দুইয়ের মধ্যে কী এমন আহামরি তফাত? হ্যাঁ, আপাতদৃষ্টিতে সেরকমটাই মনে হলেও, তাপমাত্রার এই ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি কিন্তু জমা হওয়া মোট তাপের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটাতে সক্ষম। যদি বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে প্রাক-শিল্প স্তরের চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অবধি পৌঁছে যায়, তাহলে বিশ্বব্যাপী মানুষ এক সঙ্গে একাধিক জলবায়ু পরিবর্তনের সাংঘাতিক প্রভাবের মুখোমুখি হতে পারে। আর সেই সম্ভাবনা কিন্তু একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই যে ঘন ঘন তীব্র তাপপ্রবাহ, খরা, দাবানল, বন্যা, হারিকেন এবং অন্যান্য চরম প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটে চলেছে, সেটাই কি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় না যে, ইতিমধ্যেই আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রবণতা ঘনীভূত হয়েছে? বেশিদিন আগের কথা নয়, ২০২২ সালের জুলাই-আগস্ট, আকস্মিক লাগাতার বৃষ্টির ফলে আমাদের পাশের দেশ পাকিস্তানের সিন্ধু নদীর অববাহিকায় ব্যাপক ভূমিধস হয়, দেশটার এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল বন্যায় ভেসে যায়— এরকম তীব্র মৌসুমী বৃষ্টিপাত আগে কখনও কেউ প্রত্যক্ষ করেনি, অস্বাভাবিক আবহাওয়ার এত বড় নজির, এত কাছ থেকে দেখেও আমরা নিশ্চিন্ত হই কী করে?

আপনারা এখন জানতে কৌতূহলী হতেই পারেন যে, বৈশ্বিক উষ্ণতাকে আমরা আমাদের আকাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রায় বেঁধে রাখতে পেরেছি কিনা। নাহ, এবং এটা প্রায় নিশ্চিত যে আগামী পাঁচ বছরে পৃথিবী নতুন রেকর্ড তাপমাত্রার সম্মুখীন হতে পারে, এবং বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, সেই তাপমাত্রা  প্রাক-শিল্প স্তরের চেয়ে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়তে পারে।

পরিসংহারে একথাই বলা যেতে পারে যে, যদিও COP আলোচনা একা একা আফ্রিকার গৃহযুদ্ধ বন্ধ করতে পারে না, কিন্তু তারা সংঘাতের অন্তর্নিহিত কারণগুলোর মোকাবিলা করতে এবং এই অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং স্থিতিস্থাপকতা উন্নীত করার বৃহত্তর প্রচেষ্টায় অবদান রাখতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন, সংঘাত এবং উন্নয়নের আন্তঃসম্পর্কিত প্রকৃতিকে চিনতে এবং এই জটিল চ্যালেঞ্জগুলিকে ব্যাপকভাবে মোকাবিলা করে এমন সমন্বিত পন্থাগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া COP আলোচনার জন্য অপরিহার্য।

 

তথ্যসূত্র:

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4874 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...