স্মৃতিপরব: পর্ব ৮

নীহারকান্তি হাজরা

 

সানুদেশের দিন

পর্ব ১পর্ব ২পর্ব ৩পর্ব ৪পর্ব ৫পর্ব ৬পর্ব ৭

বাইশস্কোপ

আগের পর্বে যে গান্ধিবাদী জয়চাঁদ দত্তের কথা বলেছিলাম, তিনি পরে আমাদের ভূগোলের শিক্ষক হয়ে এসেছিলেন— আমি তখন বড় ইস্কুলে। তখন শুনেছি উনি বিএ পাশ ছিলেন। সেই বয়সে আমাকে ‘স্বাধীনতা’, ‘বন্দে মাতরম’ আর ‘জনগণমন’ দেওয়া জয়চাঁদ দত্ত মহাশয়, আমাদের আর একটা জিনিস দান করেছিলেন: বাইশস্কোপ (বায়োস্কোপ)। ম্যালেরিয়াভুক্ত জনগণের উদ্ধারের জন্য যেমন তিনি তাঁর দলবল নিয়ে ঝোপ-ঝাড় উদ্ধার আর পুকুরের পানা পরিষ্কারে মন দিয়েছিলেন, তেমনই প্রচারে নেমেছিলেন ম্যালেরিয়া কেন হয়, এটার প্রচারে। রবিবার করে মাঝেমধ্যেই লম্বামুখো একটা ভ্যান আসত। এটার মধ্যে ছিল একটা ভটভটি। এটা শব্দ তুললেই দু-তিনটে আলো জ্বলত। এর মধ্যে কয়েকটা লোক ভ্যানের গায়ে সেঁটে দিয়েছে একটা সাদা কাপড়। সেটার থেকে একটু দূরে তিনটে পায়ের উপর বসানো একটা যন্ত্র। এর উপরে একটা গোল থেকে একটা ফিতে বের হয়ে তলার একটা গোল বাক্সে ঢুকে যায়। এটার থেকে আলো বেরোলেই সাদা কাপড়টার উপরে মশাগুলো জামাকাপড় পরে হাজির হয়ে যেত। মশাদের মানুষমারার অভিযান— বার বার দেখলেও আমাদের কাছে পুরনো হত না। এর প্রেরণাতেই বদ্দিপাড়ার আমার দুই বন্ধু, যমজ ভাই কালো এবং সুন্দরের সঙ্গে আর এক ধরনের বায়োস্কোপ আবিষ্কার করেছিলাম। টিনের মগের ভিতরে একটা কুপি জ্বেলে মগের হাতলটা ধরলেই আলোটা সামনে এগিয়ে যেত। কাগজের উপর বাঘ-সিংহ এঁকে তার রেখাগুলো ব্লেড দিয়ে কেটে রাখা হত। আর সেই সঙ্গে শিকারির বন্দুক থেকে গুলি বেরিয়ে যাচ্ছে সেই ছবি। মায়ের সাদা শাড়ির এক টুকরো দুটো কাঠি পুঁতে টান করে বেঁধে দিতুম। পিছনে বসে কাগজগুলোর উপর মগের আলো ফেললেই বাঘ শিকার বা অন্য ঘটনা সামনে দেখা যেত। জঙ্গল তৈরির জন্য কতগুলো গাছের ডালই যথেষ্ট ছিল। তবে গুলির শব্দটা মুখে করা ছাড়া উপায় ছিল না। এসব দেখার জন্য লোক ডাকতে হত। তবে ছোটরা মজা পেত অবশ্যই।

 

শর থেকে উইলসন

একটু আগে কুইনাইন বড়ি-প্যালুড্রিনের কথা হল। এই বড়িটা চাইলেই পাওয়া যেত বলে আমরা সংগ্রহ করে রাখতুম। আমার বন্ধু সুধা দেখিয়েছিল সাধারণ কালির মধ্যে বড়িটা ফেলে দিলেই সবুজ কালি হয়ে যায়। এ সময় কালি-কলমের চেহারাটা মাঝেমধ্যেই বদলে যেত। সর্বক্ষণের সঙ্গী স্লেট-পেনসিল ছেড়ে যখন কাগজে লিখতে শিখেছি, লেখার শুরু শরের কলমে। শর সংগ্রহ করা অনায়াস ছিল। ছোট-বাঁধ, বড়বাঁধের শরের ঝোপ ছাড়াও বাবার পিয়নেরা শর এনে দিত। এটা ‘পাব’ (গ্রন্থি) ধরে কেটে মুখটা ঢালু করতে হত। আগাটা সরু। এতে লেখা তেমন ভালো হত না। এর পর এল একটা ছোট পালিশকরা কাঠের টুকরোর ডগায় একটা নিব বসানো। সে-সময় JBD লেখা নিব খুব ভালো ছিল। আর JBD লেখা কালির বড়ি। কালির দোয়াত কিনতে পাওয়া যেত। এর মধ্যে জল দিয়ে রাত্রে বড়িটা ফেলে রাখলে‌ই কালি হয়ে যেত। নীল কালি। নিবটা ক্রমাগত ভিজিয়ে লিখে যেতে হত। মুখে দড়ি দিয়ে বেঁধে দোয়াতটা নিয়ে যেতে হত পরীক্ষার সময়। বার বার ডোবানোর অসুবিধাটা দূর হল নিবের নিচে একটা পাতলা জিব বসিয়ে দিতেই। আবার হরিতকি দিয়েও কালি তৈরি হত। হরিতকির সম্ভার ছিল লেদি পাহাড়ের নীচে। বিশালকায় গাছের নীচে এগুলি পড়ে থাকত বিছিয়ে। এটা দুরকম ছিল। বড় আর ছোট। ছোটটার নাম ছিল জাঙ্গি হরিতকি। এতে কষটা বেশি থাকত। অল্প জলে ভেজানোর পর এর মধ্যে দিতে হত প্রদীপের শিখার ভুষো। আরও ভালো করতে চাইলে দিতে হত বাবলাগাছের আঠা। উজ্বল কালো রঙের কালি হয়ে যেত। পরে শুনেছি আগেকার পুঁথিগুলি এই কালিতেই লেখা। এ-সময় পোস্ট অফিসের জানালায়, অফিসে-আদালতে ব্যবহার হত বাবলাগাছের আঠা। এর আর এক নাম ছিল— গঁদের আঠা। ধূসর বর্ণের তীক্ষ্ণ দীর্ঘ কাঁটাওলা আর মাঝখানে একটি ছোট শিরা রেখে দুপাশে মিহি গাঢ় সবুজ ঝিরিঝিরি সূক্ষ্ম পাতার এ-গাছটি বহুসাধক ছিল। পুকুরের পাড়ে, আলের ধারে, রাস্তার পাশে যে-কোনও শুকনো জায়গায় এর অবস্থান। গরুর গাড়ির চাকা তৈরিতে এ-গাছটির কোনও বিকল্প ছিল না। জলে-কাদায় এটি অব্যয়। আবার আফিংখোরদের কাছে এর আলাদা কদর ছিল। সে-বিষয়টি পরে। মুদির দোকানে এই আঠা পাওয়া যেত। তবে গাছের দেহ থেকে এটি সংগ্রহ করায় আমাদের বেশি আগ্রহ ছিল। গাছের ত্বক একটু ফেটে গেলে সেখানে স্বচ্ছ গাঢ় আঠা জমে থাকত। ছুরি দিয়ে সহজেই তুলে আনা যেত। কাচের ছোট দোয়াতে ভিজিয়ে রেখে এর মধ্যে ব্যবহারের ব্রাশ দেওয়া হত। ব্রাশ তৈরি হত খেজুরগাছের ডালের পাতা ছাড়ানো ডাঁটা দিয়ে— ছোট করে কেটে নিয়ে একটা প্রান্ত ছেঁচে দিলেই হল।

লেখার জন্য ছিল দু-ধরনের কাগজ। একটা প্রায় গোলাপি রঙের ‘বালি’ কাগজ, আর সাদা কাগজ। দু-পাতার একটি কাগজ এক ‘তা’। চব্বিশ তা-তে এক দিস্তা। চব্বিশ দিস্তায় এক রিম। বালি কাগজের দাম একটু কম ছিল। এগুলি কিনে সেলাই করে নিতে হত। আমাদের গোটা স্কুলজীবনই এইসব কাজকর্ম দাবি করে এসেছে। অনেক পরে এল রুল দেওয়া কাগজ। আরও পরে স্কুলজীবন শেষের মুখে আমাদের হাতে এল ফাউন্টেন পেন। নানারঙের কালি। মনে আছে কিনেছিলাম একটা উইলসন পেন। এর ক্লিপটা ছিল তির। পরে দেখা পার্কার কলমের মতো। কলমটার নিব-সহ মুখটা খুললেই এর পিছনে ছিল একটা টিউব। এটা চাপ দিয়ে বায়ুশূন্য করে কালির বোতলে দিলেই উঠে আসত কালি।

 

তা হলে কী করে জুতো পরি বল?

আমাদের কারও জুতো পরার অভ্যেস ছিল না। আমার পাঠশালার বন্ধুরাও কেউ জুতো পরত না। পরে স্কুলের বন্ধুরাও না। অবশ্য আমার পিতৃদেব, সদর থেকে একজোড়া কালো ‘নটিবয় শ্যু’ এনেছিলেন। বাটা কোম্পানির। আমার পা বাড়ন্ত বলে চার নম্বরের বদলে সাত এনেছিলেন। সেটা কয়েকদিন পরেছিলাম ভেতরে কাপড়ের পুঁটুলি গুঁজে। এটা ওইভাবে পরে কাকতাড়ুয়ার মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হতে। এরপর আমার পায়ের মাপ নিয়ে রতন মুচি একজোড়া শ্যু তৈরি করে দিয়েছিল। সেটাও সফল হয়নি। পায়ের গোড়ালির ক্ষত দীর্ঘকাল ছিল। আর কখনও জুতো পরার ইচ্ছে হয়নি। বাবা নিউকাট জুতো পরতেন। অফিসে-আদালতে তখন সাহেব আসার ব্যাপার ঘটত। সে-সময় বাবা মাকে বলতেন কোট বের করে দেওয়ার জন্য। এটা একটা সাদা জিন্সের কোট। ধুতির উপরে পরে অফিসে যেতেন। এ-সময় জুতোর উপর পালিশ পড়ত। সাহেব দেশি বা বিদেশি আমার জানা হয়নি। কিন্তু এভাবেই তাঁর মর্যাদা রক্ষা পেত।

চোখ বন্ধ করে দেখছি সেকালে আমার পরিসরের লোকেদের জুতো পরার সংখ্যাটি এতই ক্ষুদ্র যে শতাংশের হিসেবেও আসবে না। বহু, বহু যুগ পরে উনিশশো সাতষট্টি সালের শীতের এক দুপুরের ঘটনা— বিষ্ণুপুর মহকুমার পুরসভার এক অফিসের বারান্দায় আমি দাঁড়িয়ে। আমার সামনে দাঁড়িয়ে ইতিহাসের এক চরিত্র এবং পুরসভার এক সামান্য কর্মচারী। খালি পা। খাটো ধুতির কোঁচাটা বাঁ কাঁধের উপর দিয়ে ঘুরিয়ে ডান কাঁধে। তলায় একটা মার্কিনের ফতুয়া। বীরেন্দ্রনাথ সিংহদেব। বিষ্ণুপুর মল্লরাজ বংশের একমাত্র উত্তরাধিকারী হওয়া সত্ত্বেও রাজ-পদ পরিত্যাগ করেছেন বহুকাল। এককালে তাঁর কাছেই এসে উঠেছিলেন ব্রিটিশের নজরবন্দি ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত। রাজবাড়ি মহলের দক্ষিণের একটি ঘরে থাকতেন। যাই হোক সেই বীরেনদা আমায় বললেন, “তুই রাস্তার দিকে তাকিয়ে গোন, কতজন জুতো পরে হাঁটছে।” একশোতে দু-জন, গুনেছিলাম। “তাহলে কী করে জুতো পরি বল?” তাঁরই পাড়া থেকে তিনজন দীর্ঘকাল ছিলেন আন্দামানের সেলুলার জেলে— বিমল সরকার, মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুধাংশু দাশগুপ্ত। বিমলদাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হয়ে মানুষকে সরকারের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলার অভিযোগে। বাঁকুড়ার কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম যুগের সদস্য মৃত্যুঞ্জয়দা সারা জেলা ঘুরে বেড়াতেন সাইকেলে চড়ে, পার্টির অ্যাজেন্ডা প্রচারে। সুধাংশু দাশগুপ্তকে আমরা চিনতাম ঠকা-দা নামে। অনুশীলন সমিতি করতেন। একদিন ধরা পড়ে গেলেন রিভলভার-সহ। যদ্দূর মনে আছে, এগারো বছর সেলুলার জেলে ছিলেন। সেখানেই তিনিও কমিউনিস্ট আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে পার্টিতে যোগ দেন। রাজা বীরেন্দ্রনাথও ছিলেন এই দলেরই সদস্য। আমৃত্যু তাঁকে আমি দেখে এসেছি ওই বেশেই— খালি পা। গলায় জড়ানো স্বল্প ধুতির কোঁচা।

 

গেরাম গেরস্থি

মশক পাহাড়ের উল্টোদিকে যে গ্রামগুলি ছিল তার একটির নাম পাঁপড়া অন্যটির নাম নাগরাশোল। পাঁপড়া থেকে আশু নাপিত এসে আমাদের চুল ছাঁটত। জনপদের প্রত্যেক বাড়িতেই তাই হত। নাপিতের বন্দোবস্ত থাকতে। বড় জনপদেও সে-সময় কোনও সেলুন ছিল না। এখানে ওরা পয়সার বিনিময়ে চুল ছাঁটত। কিন্তু গ্রামে ব্যাপারটা ছিল অন্যরকম। শীতে ধান ওঠার পর ধান দেওয়ার চুক্তি থাকত। তবে পালা-পার্বণে ওদের একটা পাওনা হত। সে-সময় ‘কামানো’-র ব্যাপার থাকত। আশুর স্ত্রী বা পরিবারের কেউ মহিলাদের নখ কেটে আলতা পরিয়ে যেত। পুরুষদের দাড়ি-চুল কাটত আশু। কর্মকারদেরও তাই ছিলে। কৃষির সবগুলি হাতিয়ার কোদাল-কুড়ুল-গাঁইতি-পাশুনি-শাবল-কাস্তে-দা-হাঁসুয়া এই সব এরা তৈরি করত এবং পর্যায়ক্রমে শান দেওয়া, পাজানো বা কাস্তের পুড়ি কেটে দিত বছরভর। এর জন্য শীতের ধান উঠলে পাই মাপে তারা এককালীন মজুরি পেত। এছাড়া কর্মকারদের কাজ ছিল গরুর গাড়ির চাকার লোহার পটি লাগানো, চাকার ভিতরের দণ্ড তৈরি করা, গরুর খুরের নীচে লোহার পাত বসানো এই সব আর তার সঙ্গে ঘর-গৃহস্থের, পাচকদের, ময়রার, বাস্তুর জনমজুরদের যাবতীয় সরঞ্জাম তৈরি। তালা-চাবি তৈরিও এরাই করত। আলিগড়ি তালা বা মরিস-বাজাজ এসেছে অনেক পরে।

হেঁশেলে কাঠ ব্যবহার কয়লা আসার পরেও বন্ধ হয়নি। কয়লা এসেছে অনেক পরে। কিন্তু তখনও বালতির তোলা উনুন তৈরি করত কামারেরা। রান্নার কাজে ব্যবহৃত মাটির হাঁড়ি কড়াইয়ের স্থান যখন নিলে অ্যালুমিনিয়ম, তখন দীর্ঘ ব্যবহারে এগুলি ফুটো হয়ে গেলে তার জন্যও কামারদের প্রয়োজন পড়ত। দেবতাদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল পিতলের বাসনপত্র। গামলা, বালতি, ভোগের থালা আর ভোগরান্নার সমূহ বাসন। আরতির জন্য পিতলের নানা সংখ্যার প্রদীপ, ঘন্টা, ঝাঁঝ— এই সব। কেবলমাত্র কোশা-কুশি তামার। এগুলি তৈরির এবং মেরামতের জন্য ছিল এক আলাদা থাকের কর্মকার। কোনও কোনও জায়গার কর্মকারদের প্রসিদ্ধি ছিল লোহার কাজের নৈপুণ্যে। আবার একটা অবিশ্বাস্য কাজেও তারা হাত লাগিয়েছিল— চোখের ছানি অপারেশন। আমি দেখিনি। যারা করত তাদের দেখেছি। রোগীকে চিৎপাত করে শ্যাওড়াগাছের পাতার উল্টোদিক দিয়ে নাকি চোখের ছানি ঘসে তোলা হত। জানি না শতকরা কতজন অন্ধ হয়ে যেত।

কামারশালায় ব্যবহার হত কাঠকয়লা। এখনও হয়। আর হয় স্যাঁকরার দোকানে। এই বিপুল পরিমাণ কাঠকয়লার জোগান দিত বনভূমির অন্ত্যস্থ লোকেরা। কিন্তু সাঁওতালেরা কখনও নয়। আর নাগরাশোল বলে যে গ্রামটি ছিল সেখানে সকলে মুসলমান— কৃষিজীবী এবং ফলচাষি। বিশেষ করে নানাধরনের আমের চাষে এরা দক্ষ ছিল। একটি লোকের নাম এবং চেহারা আমার আজও স্পষ্ট মনে আছে: সেকেন্দর। টুকটুকে ফরসা। সবুজ রঙের কাপড়ের গেঞ্জি পরত। মাথায় সাদা টুপি। সম্ভবত আমাদের বাড়িতে দু-টাকায় একঝুড়ি আম দিয়ে যেত।

মশক পাহড়ের উপরে একটা গুহা আছে। ঢোকার মুখটা যতদূর মনে আছে চৌকো। খুব উঁচু। দরোজার ভিতরে ডানদিকে গুহাটা এগিয়ে গেছে। অসংখ্য চামচিকে আর তাদের আবহমান বর্জ্যের দমবন্ধ করা দাপট। খুব বেশি ভেতরে যাইনি। এটা একেবারে পাহাড়ের মাথায়। তার অনেকটা নীচে একটা আধুনিক শিবমন্দির। আর এখানেই দেখেছি চৈত্রসংক্রান্তিতে একটা অদ্ভুত এবং ভয়ানক দৃশ্য— বাগদি সম্প্রদায়ের জনা কুড়ি লোক শিবের মন্দিরের চাতালে নেচে চলেছে। একটি লাইন ধরে। তাদের প্রত্যেকের বামবাহু একটা দড়িতে গাঁথা। মাংস ভেদ করে যেখানে দড়িটা গলানো হয়েছে সেখানে সিঁদুর লাগানো। দেহের নড়াচড়ার সঙ্গে দড়িটা ওই কাঁচা অংশের মধ্যে যাতায়াত করছে। তাদের নাচের ছন্দটা ছিল এক জায়গায় দাঁড়িয়ে কেবল পায়ের আগুপিছু। কিন্তু ওই চৈত্রসংক্রান্তি বা ছাতু সংক্রান্তি ধরে ওই জনপদে দণ্ড হাতে শিবের ভক্ত হয়েছে এমন কারও দেখা পাইনি।

 

 

[ক্রমশ]

 

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 5088 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...