গুচ্ছ কবিতা
দেবতার ধারণা
আলোর দেবতা ও আঁধার দেবতার সঙ্গে দেখা
অশ্বত্থ গাছের নিচে,
অন্ধকার দেবতাকে আলোয় আর
আলোর দেবতাকে অন্ধকারে দেখা যায়
রূপনারায়ণ কাঁসাই গাঙুরের তীরে
দেবতার ধারণা রয়ে যাবে বলে
অন্ধকার এবং আলো কোনওদিন একসঙ্গে ফোটেনি!
অনিমিখ
দেবীস্তনে মাথা রাখি
যেটুকু মাংস খুবলানো খালের জলে,
যেটুকু আগুনের মাটি গেছে ভেসে প্রদীপের মত,
হে প্রোজ্জ্বল, বলি তাকে, কাঁদাও আমাকে,
ঘাস লতাপাতা গ্লানি
মোহ-মুদগর, শব-শালবল্লার ভিড়ে
ধীরে ডুবে যায় দেহহীন দেবী,
জলজ নক্ষত্রের বনে ধোয়া চোখ
অনিমিখ তার চেয়ে থাকাখানি
আবহমান
অমৃত শরীর থেকে
খসেছে যে অঙ্গের ধুল,
মৃদু পদচিহ্নের পাশে
তুমি সে অনঙ্গলতার মনে-পড়া শ্লোক,
দেবীর অঞ্জনা গাথা
তুমি তার অবিনশ্বর অযোনিসম্ভূত ফুল
মুদ্রা
কাঠঠোকরার প্রোথিত ব্ল্যাকহোলের নীচে স্থবির
মূর্তি, ঠাকুরের ভাঙা কাঁধ থেকে
বটঝুরি ধরে পিঁপড়ের দল চলেছে বনসূর্যের দিকে,
কালের লাগাম ধরে উড়ছে বাতাসবাহিত ঘোড়া
শূন্যে আঁকা অভয়-মুদ্রিত হাত,
অস্ত্র-শঙ্খহীন মুদ্রা, দেবীর
ঋত
যে আজ জীবিত সেও ছিল গতকাল মৃত,
তৃতীয় নয়ন ছুঁয়ে
শ্মশান-পুকুরে ভেসে যায়
অব্যবহিত কলসীর ঋত
বিসর্জন
দেহের আঘাতে কেঁপে ওঠে জল
দেবতার ছায়া জলে যায় নাকো
পাতালের অসূয়া, সে
করতলগত মর্ত্যের সাঁকো