মূর্খ বড় সামাজিক নয়

বিহঙ্গ দূত

 



শিক্ষক, গবেষক

 

 

 

গত দেড়বছরে অনলাইনে শিক্ষাবিপ্লব হয়েছে। শিখন-শিক্ষণের সাড়ে-পঞ্চান্নরকম নীতি ও পঁয়ষট্টি রকমের পদ্ধতি গুলে ঘেঁটে আরও বিবিধ নিয়মকানুন তৈরি হয়েছে। কারও কাছে শিক্ষা অতীব সহজ হয়ে উঠেছে। কারও কাছে মাত্রাতিরিক্ত জটিল।

আরও জটিল চিন্তায় পড়েছেন যাঁরা চোখের সামনে কাউকে শিক্ষিত হতে দেখছেন। মনে মনে তাঁরা যা ছকে নিয়েছিলেন তার মিলছে না কিছুই। হাত ফসকে সন্তানের রাশ বেরিয়ে যাওয়ার থেকে বিষম বালাই বাবা মা তথা শিক্ষকদের কাছে কিছুই নেই। অথচ এ ঘটনাই যুগে যুগে হয়ে এসেছে। ফলে শুরু হয়েছে অন্তবিহীন তর্কাতর্কি।

কেউ সামগ্রিক পরিস্থিতি ঘেঁটে নিদান দেন— এক্ষুনি পুরনো ধারায় ফেরত চলো।
কেউ তাদের মুখে কোভিডের ডেটাশিট ছুঁড়ে মেরে জানায়— বিপদ এখনও কাটেনি।
কেউ সবদিক বিচার করে জানায়— পরিবর্তন দরকার। তবে তা বিলম্বিত লয়ে। ধীরে সুস্থে। সবদিক বাঁচিয়ে।

এই অপরিমিত তর্কের পরিসর ছেঁকে দুটো প্রশ্ন তুলে আনব। এবং এই ক্ষুদ্র পরিসরে তাই নিয়েই আলোচনা করার চেষ্টা করব।

প্রশ্ন ১: যারা অনলাইন পঠনপাঠনের সুযোগ পাচ্ছেন তাদের অভিভাবকগণ তথা শিক্ষকরা এত চিন্তিত কেন?
প্রশ্ন ২: যারা অনলাইন পঠনপাঠনের সুযোগ পাচ্ছন না, তাদের বক্তব্য কী?

প্রথম প্রশ্নের আলোচনা স্কুলস্তরেই সীমাবদ্ধ রাখব। এ রাজ্যে শুধু বেসরকারি স্কুলেই আন্তর্জালিক পঠনপাঠন হচ্ছে এটা ভাবলে ভুল হবে। বিভিন্ন সরকারি স্কুলে বেশ কয়েকমাস আন্তর্জালিক পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। এই পঠনপাঠনের রকমফের আছে। মূলত তিনভাবে শিক্ষাদান চলতে পারে।

  1. জুম বা গুগল মিটে অনলাইন ক্লাস প্রস্তুত করা। ছেলেমেয়েদের সেই ক্লাসে ভিডিও অন করে পড়ানো। পড়াবার সময় প্রয়োজনে স্ক্রিনশেয়ার করে বিবিধ বিষয় বুঝিয়ে দেওয়া ও পড়াবার শেষে নোটস দিয়ে দেওয়া।
  2. হোয়াটসঅ্যাপ বা মেইলের মাধ্যমে যে বিষয় পড়ানো হচ্ছে তার সম্পর্কে অডিও ফাইল পাঠিয়ে দেওয়া। একাধারে নোটসও। এক্ষেত্রে ওয়ান ওয়ে কমিউনিকেশন হচ্ছে।
  3. কোনও ইউটিউব চ্যানেল খোলা যা আজকাল বহু সংস্থাই করছে। সেই চ্যানেলের মাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিও আপলোড করা এবং কমেন্ট সেকশনে আসা প্রশ্নের সাধ্যমত নিরসন করা।

আপাতদৃষ্টিতে এই মাধ্যমগুলি ব্যবহার করার ক্ষমতা যার কাছে আছে তার জন্য পড়াশুনা করা এমন কিছু কঠিন নয়। স্কুলে বসে ক্লাস করায় অনেক হ্যাপা পোহাতে হত। তাছাড়া জটিল ক্লাস বারবার শোনার উপায়ও ছিল না। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পদ্ধতিতে তো বটেই প্রথম পদ্ধতিতেও অনেক সংস্থা ক্লাসটির রেকর্ডেড ভার্সন ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে দিচ্ছেন।

তবু এই শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে বেশ কতগুলো খামতির জায়গা উঠে এসেছে। সেই নিয়ে দু কথা আলোচনা করা দরকারি।

প্রথমত, শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রত্যক্ষ যোগাযোগের অনস্বীকার্য আবেদন।
দ্বিতীয়ত, ছেলেমেয়েরা অতিরিক্ত যন্ত্রনির্ভর হয়ে উঠছে।
তৃতীয়ত, এই পঠনপাঠনে ছাত্রছাত্রীর ওপর ঠিক নজর রাখা যায় না।

অনলাইন ক্লাসের সুবিধা অসুবিধার গরুর রচনা এই নিয়ে পঁচিশ হাজারবার আলোচিত হয়েছে হয়ত। আমাদের কাজ এখানে শেষ না। এই সমস্যা বা সুবিধাগুলির ভিতরে লুকিয়ে থাকা আরেকটি সাধারণ বিষয় উল্লেখ করা জরুরি। অনলাইন শিক্ষা যন্ত্রকে অত্যধিক পরিচিত করছে। এর উল্টোদিকে না বলা কথাটি হল— অনলাইন শিক্ষা যন্ত্র ব্যতিরেকে আর বাকি সবকিছুকে অপরিচিত করছে। এই অপরিচিতকরণের সমস্যা সর্বাত্মক। ক্লাসে শিক্ষক পড়ায় না, পড়ায় একটি টু-ডি স্ক্রিন। সেই স্ক্রিনের কাছ থেকে নির্দেশ আসে। সেখান থেকেই তথ্য পাওয়া যায়। ভুল তথ্য এলে সেই স্ক্রিনের ভিতরে থাকা আর একটি মাধ্যম (প্রধানত গুগল) ঘেঁটে তাকে ঠিক করে নেওয়া যায়। গুগল থেকে ভুল তথ্য এলে তাকে স্বীকার করতে কষ্ট হয়। কেননা অনলাইন প্রজন্মের অভিধান গুগল। এ ক্ষেত্রে সরাসরি অভিভাবকদের হাল করুণ। বাচ্চাদের কাছে একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য বিষয় হল স্ক্রিনটি। সামনে থাকা মানুষটি নয়। শিক্ষকের মন্তব্য তো তবু স্ক্রিনের ভিতর থেকে আসে। কিন্তু বেচারা অভিভাবক? এক অভিভাবক ইতিমধ্যে হতাশ হয়ে লাখ কথার এক কথা বলে দিয়েছেন। “আমি যদি ওকে সামনে থেকে না পড়িয়ে পাশের ঘরে গিয়ে ভিডিও কল করে বোঝাই তাহলে হয়ত আমার কথা শুনবে।”

পরিস্থিতি জটিল এই কারণেই। এই যুগে আজ নয় কাল লোকে যন্ত্রনির্ভর হবেই। কিন্তু যন্ত্রকে নিষ্প্রশ্ন মান্যতা দেওয়ার প্রবণতা বড় ভয়াবহ। সেখানে মহার্ঘ্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সিয়া নামক পদার্থটি ঢুকে বসে আছে। বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আছে। ক্রমাগত ব্রেইন ম্যাপিং চলছে। নিক্তিতে মেপে চার আনা বিটিএস, পাঁচ আনা ব্র্যান্ডেড মেটেরিয়ালসের শোকেস, দু আনা কমিউনালিজম, দেড় আনা ফেমিনিজম, দেড় আনা স্বপ্নসন্ধান এমনকি এক আনা মার্ক্সিজমের (স-ব বিক্রি আছে) অপরূপ খিচুড়ি সাজিয়ে গরমাগরম পরিবেশিত হচ্ছে।

বিনোদন ক্ষণিকের। বিনোদনের ‘এন’ সংখ্যক অপশন। এ ছিল নিও-লিবারাল অর্থনীতির প্রথম যুগের দান। আজ তার পরিপক্ব দশা। এই থিওরি সে প্রয়োগ করেছে শিক্ষাক্ষেত্রেও। ছাত্রদের কাছে আজ ইন্টারনেটওয়ালা মোবাইল স্ক্রিনটি ‘এন’ সংখ্যক ইনফরমেশনের ভাণ্ডার। সেই ইনফরমেশনকে বেছে নেওয়ার অধিকার তার আছে। অধিকার আছে নিজের মত কেটেছেঁটে নেওয়ার। সেই ইনফরমেশনকে কোন মাপে কাটবে তার হাজারো প্রলোভন আছে। এই যুগ সেই প্রলোভনের দাসমাত্র।

ফলে বুনিয়াদি শিক্ষা নামক শব্দবন্ধটিই প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে গেছে। আমি সাই-ফাই যুগে দাঁড়িয়ে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ পড়ব কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে পাতা ভরিয়ে দেওয়া সহজ। কিন্তু প্রশ্ন যদি আরও মৌলিক স্তর থেকে আসে যে আমি পড়ব কেন? তার উত্তর খুঁজতে বেগ পেতে হয়। এই যুগের বেসিক প্রশ্ন স্কুল নামক প্রতিষ্ঠানটির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে। কেননা তাদের কোনও স্কুলিং নেই। থাকা সম্ভব নয়। বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বসে জিগ শ পাজলের খোপ মেলাবার চেষ্টা অনর্থক। শিক্ষক নিজেও লক্ষ করবেন স্ক্রিনে বসা ছাত্রটির পেছনে কখনও থাকে মনোরম এয়ার কন্ডিশনার, কখনও বা ঝুল পড়া কড়িবর্গা। এই দ্বিবিধ সিলিং-কে এক ছাদের তলায় আনার নাম স্কুলিং। তাতে পঠনপাঠন থাকে ২০ শতাংশ, বাকিটুকু জুড়ে থাকে বন্ধু, ক্লাস বাঙ্ক, যাত্রাপথ, দপ্তরি কাকু, ফুচকা, ঝালমুড়ি, ঝগড়া, ক্রমান্বয়ে প্রেমে পড়া ও কেটে যাওয়া… ব্লা, ব্লা, ব্লা।

এই সকল কিছুর বিনিময়ে একটি মানুষ সামাজিকতার স্কুলিং পায়। প্রতিটা স্কুল আসলে জেনে বা না জেনে সামাজিকতার নির্মাণ করে। তাতে ইউনিফর্মাল কোড থাকে না। কেননা স্কুল নিদান দেয় না। প্রস্তাব দেয়। সে প্রস্তাব প্রকৃত প্রস্তাবেই পরবর্তীতে নাকচ হতে পারে কিন্তু অনুরণনটুকু থেকে যায়।

যন্ত্রর দায় নেই প্রস্তাব দেওয়ার। সে সুযোগ দেয়। সকাল ১১টার অঙ্ক ক্লাস নির্দিষ্ট জগতে বসা ছাত্রটির প্রেক্ষিতে একটি সুযোগ। বেচারিকে আগে থেকে যন্ত্র বুঝিয়ে ছেড়েছে এই কোর্সের প্রসপেক্ট। সে অনুযায়ী সে মিলিয়ে নিল। মিল খেল তো ছাত্র খুশি। না খেলে শিক্ষকের কপালে হরিমটর।

এই অযুত সুযোগে কী সুন্দর এক ধাঁচার ছাত্রছাত্রী তৈরি হচ্ছে এইটে ভাবলে গা শিরশির করে। শিক্ষক তো এদের এক ধাঁচায় গড়বেন বলে বসেননি। তিনি থেকে থেকে উদাহরণ দেন। প্রতিটা উদাহরণে এক-একটি ছাত্রকে ছোঁয়ার চেষ্টা করেন। এর বাইরে আরও এক ভিন্নগোত্রের উদাহরণের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে তারা। সেই উদাহরণ তৈরি করছে কে? এই উৎকৃষ্ট মাধ্যমটি। অনলাইন এডুকেশন পলিসির গোপন শিক্ষকটিকে চিনে ফেলা আজকে এসেও যদি সম্ভব না হয় তা হলে বড্ড দেরি হয়ে যাবে। ওই গোপন শিক্ষকটির ভিউয়ারশিপের খেলায় ছাত্রছাত্রীরা ক্রমশ অভিভাবক তথা শিক্ষকদের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। মাধ্যমটিকে উপড়ে ফেলা আজকে এসে আর সম্ভব না। দরকার ওই মাধ্যমটির পাশে মানুষ শিক্ষকের জলজ্যান্ত উপস্থিতি। এক ছাদের তলায় থাকা পাঁচটা কিম্ভূতদর্শন (প্রথম সাক্ষাতে তাই মনে হবে) বন্ধুর উপস্থিতি। চাই যন্ত্র ও মানুষের মধ্যে একটা জোরদার লড়াই। বাকিটা সাক্ষাতে যুঝে নেওয়া যাবে।

দ্বিতীয় প্রশ্নে আসতে খানিক লজ্জা লাগে। বাকতেল্লা দেওয়ার জন্য অধিকারের প্রয়োজন হয় না। মুখপত্র হতে গেলে অধিকার লাগে। এই লেখায় ‘তাহাদের কথা’ বলার অধিকার অর্জন করতে পেরেছি বলে তো বোধ হয় না। তাদের জন্যও সরকারি ব্যবস্থা আছে। মাসে একবার করে বিশেষজ্ঞ নির্মিত ওয়ার্কশিট ও স্টাডি মেটেরিয়াল পাঠানো হয়। সর্বশিক্ষা অভিযানের ফলশ্রুতিতে যা যা দিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সেইসকল প্যাকেজ তাদের কাছে পৌঁছে যায়। তারা শিক্ষিত হয় অন্য এক স্কুলিং-এ। তাদের শিক্ষক বৃহত্তর সমাজ। সে শেখায় স্কুল থেকে চালডাল আয় হয়। কন্যাশ্রীর টাকা আয় হয়। এই টাকা জরুরি। রূপশ্রী বিবাহের প্রয়োজনে লাগে। তুমি তা গ্রহণ করো। কড়ায় গণ্ডায় বুঝে নাও। তারপর স্কুল ছাড়ো। একটা গোটা প্রজন্মের কাছে স্কুল খালি দেওয়ানেওয়ার মাধ্যম হয়ে যাচ্ছে। করোনার প্রথম তরঙ্গ চলাকালীন এক শিক্ষক গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তিনি বিধিভঙ্গ করে ছাত্রদের নিয়ে পড়াতে বসে গিয়েছিলেন স্কুলসংলগ্ন চত্বরে। তাঁকে নিয়মমাফিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। রাষ্ট্র ভুল করেনি। বাচ্চাদের জীবন বিপন্ন করা অপরাধ। বাচ্চাদের ক্রমাগত জল-অচল বিভাজনের শরিক করে তোলা বোধহয় তার থেকে কম অপরাধ নয়। সবথেকে যন্ত্রণার বিষয় এই বিভাজনকে বুঝতে দেওয়া হচ্ছে না। বাড়িতে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, অনার্স, মার্স্টার্স কোর্সের গ্রেডশোভিত সার্টিফিকেট হাজির হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তারা সেই ডিগ্রি দ্বারা শিক্ষিত নয়। হওয়ার চেষ্টা যে ভীষণরকমের বাতুলতা সে বোধ তাদের আছে। ওই ডিগ্রিকে একপাশে রেখে তারা ভিন্নতর আয়ের পথ দেখে। যে ডিগ্রি আয়ের পথ দেখাতে পারে না আর কোনও সুযোগসুবিধাও দেয় না সেই ডিগ্রির দরকার নেই। ফলশ্রুতি— স্নাতক বা স্নাতকোত্তরে ভয়াবহ হারে ড্রপ আউট। সকলে সরকারি চাকরি করবে না। সকলে চাকরি করবে না। কোনও কাজই ছোট নয়। এই তিনটে কথা সার্বিক সত্য ধরেই এগোব কিন্তু রাষ্ট্রের কোন অধিকারটি আছে প্রত্যন্ত গ্রাম মফস্বলের নিম্নবিত্ত ছেলেমেয়েটির এই ভবিষ্যদ্বাণী দাগিয়ে দেওয়ার যে শিক্ষকতা তোমার পেশা নয়? ডাক্তারি তোমার পেশা নয়? বিসিএস, ইউপিএসসি, ব্যাঙ্ক, রেল তোমার পেশা নয়? কেননা তুমি স্কুল পাওনি, কলেজ পাওনি, ইউনিভার্সিটি পাওনি। তুমি খালি ডিগ্রি পেয়েছ।

একদল শিক্ষা পাচ্ছে। সমাজকে পাচ্ছে না।
একদল রগরগে, কঠোর, কঠিন সমাজকে পাচ্ছে কিন্তু শিক্ষা পাচ্ছে না, স্কুলিং তো নয়ই।

কোনও এক মিলনক্ষেত্রে এই দুই জড়িয়ে জাপ্টে থাকা বিষয়ের মিলমিশ হওয়া জরুরি ছিল। বলা ভালো সেটাই স্বাভাবিক। শিক্ষার চশমায় সমাজকে দেখা আর সমাজের বাস্তবতায় শিক্ষার বিষয়গুলোকে পরখ করার নামই স্কুলিং। আধখানা পেলে লাভের থেকে ক্ষতি বেশি। মূর্খামির জন্ম হয়। আর পৃথিবীর যে কোনও দেশে, যে কোনও কালে, যে কোনও পরিস্থিতিতেই “মূর্খ বড় সামাজিক নয়”।

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4593 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...