অতীত খুঁড়ে অস্মিতা

স্বপন ভট্টাচার্য

 



প্রাবন্ধিক, গদ্যকার, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক

 

 

 

অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্কে রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জাস্টিস রঞ্জন গগৈসহ পাঁচ বিচারকের বেঞ্চ। সে বেঞ্চ যা বলেছিল তা এক কথায় এইরকমঃ  এতদ্বারা নিশ্চিত করা যাইতেছে যে উক্ত রায় সমস্যাটির শান্তিপূর্ণ সমাধানের নিমিত্ত বিশেষ ব্যবস্থারূপে দেখাই বাঞ্ছনীয় এবং এই রায়  ১৯৯১-এর প্লেসেস অফ ওয়রশিপ (স্পেশাল প্রভিশন)  অ্যাক্ট-এর মূল প্রতিপাদ্যটির ব্যত্যয় ঘটাইতে চলিয়াছে – এমত অনুমান করিলে ভুল করা হইবেক। এই আইন, যা প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও-এর জমানায় পার্লামেন্টের স্বীকৃতি লাভ করেছিল, তার তথাকথিত মূল প্রতিপাদ্যখানা কী? এই আইনের চার নম্বর ধারায় বিধৃত রয়েছে এক বিশেষ সংস্থান- যার বলে দেশের কোথাও কোনও ধর্মস্থানের চরিত্র ১৯৪৭ এর ১৫ই আগস্টের পর থেকে অপরিবর্তনীয় বলে বিবেচিত হবে।  জানা দরকার, এই সংস্থান আইনে পরিণত হয়েছিল বাবরি ধ্বংসের পাক্কা এক বছর আগে। সাতচল্লিশের ওই ‘পবিত্র’ দিনের পরে কোনও ধর্মস্থানের পরিবর্তনও(conversion), বলাই বাহুল্য,  এই আইন বলে নিষিদ্ধ (prohibited) এবং ডেটলাইন যেহেতু সাতচল্লিশ, সেহেতু এই আইন প্রায়োগিক দৃষ্টিকোণ থেকে রেট্রোস্পেক্টিভ বা পূর্ববর্তী সময়কালের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলা একমাত্র ব্যতিক্রম কেন না এ মামলার বয়স স্বাধীনতার চেয়েও পুরনো। তবে, অতি মূর্খ ভারতবাসীরও বিশ্বাস করার কারণ ছিল না যে, এই আইনের তথা রায়ের যাকে বলে স্পিরিট তা অতঃপর পবিত্রতার সঙ্গে পালিত হবে এবং নতুন করে আর কোনও ধর্মস্থান নিয়ে অনুরূপ বিতর্ক মাথাচাড়া দেবার অবকাশ থাকবে না, কেন না মহামান্য আদালত তো তেমতি বলেই দিয়েছেন। মন্দির নির্মানের অনুকূলে রায় পেয়ে যাবার পরেই বিশ্বহিন্দু পরিষদের সেই বিখ্যাত স্লোগানের কাব্যখানিও প্রণিধানযোগ্য- ইয়ে তো সিরফ ঝাঁকি হ্যায়/ কাশী মথুরা বাকি হ্যায়। অন্য একটি স্লোগানও মিতবাক্যে আরও বড় সম্ভাবনাকে উসকে দিয়েছিল- তিন নেহি, তিন হাজার। মর্মার্থ গভীর- হিন্দু চেতনায় যে তিন দেবতার স্থান সবার উপরে – ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর – তাঁদের নামাঙ্কিত তিনটি মন্দিরসংলগ্ন মসজিদের ভাগ্য যে কেবল ১৯৯১ এর আইনের স্পিরিটের উপর তথা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অস্যার্থের উপর ছেড়ে দিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পান্ডারা ছেড়ে দেবেন না তা তখনই বোঝা যাচ্ছিল এবং বোঝা যাচ্ছিল কেবল কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরসংলগ্ন জ্ঞানবাপী মসজিদ বা মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দিরের নিকটস্থ শাহী ইদগাহ নয়, আরও নিদেনপক্ষে তিন হাজার মসজিদ এদের রাডারে আছে। এখন শোনা যাচ্ছে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নাকি চল্লিশ হাজার এরকম মসজিদের বা মুসলিম ধর্মস্থানের তালিকা তৈরি করেছে যেগুলি তাদের ভাষ্যে মন্দির দখল করে বা ভেঙে গড়ে উঠেছিল।  সুতরাং, অযোধ্যার জল যেখানে গড়ানোর কথা ছিল সেখানেই গড়াচ্ছে এবং  আরও কতদূর গড়াবে এ প্রশ্ন তোলাই অবান্তর কেন না— “অল্পেতে খুশি হবে দামোদর শেঠ কি?”

রাম জন্মভূমি রায় আসার পরেই লখনৌস্থ ‘বিশ্ব ভদ্র পূজারী মহাসঙ্ঘ’ নামের একটি ট্রাস্ট সুপ্রিম কোর্টে আইনের সংস্থানটিকেই চ্যালেঞ্জ করে বসে এই মর্মে যে, ১৯৯১ এর আইনের চতুর্থ উপধারার কোনও ভিত্তিই নেই কেন না এটির সময়সীমা রেট্রোস্পেকটিভ হবার দরুন পূর্ববর্তী কোনও সময়ে অন্যায়ভাবে দখলদারদের দ্বারা অধিকৃত হিন্দু মন্দিরের অথবা উপাসনাস্থলের অধিকার এবং পুনঃসংশোধনের  সুযোগ থেকে সম্প্রদায়বিশেষকে বঞ্চিত রাখার সুযোগ এই আইনে থেকে গিয়েছে যা তাদের মতে অনায্য। তাদের পিটিশনে আরও বলা হল, ১৯৯১-এর এই দেবস্থান (বিশেষ সংস্থান) আইনের চার নম্বর উপধারা প্রযুক্ত হলে হিন্দু ভক্তেরা পুজো-আচ্চার অধিকার চেয়ে ফৌজদারি মামলাও করতে পারবে না যা সংবিধানের ২২৬ ধারা তথা স্বাভাবিক বিচার পাবার অধিকারকে লঙ্ঘন করছে বিশেষত, মন্দির বা মঠ যাই হোক না কেন, তার পবিত্রতা যদি ১৯৪৭ এর ১৫ আগস্টের আগে দুর্বৃত্তদের (hoodlums) দ্বারা লুণ্ঠিত হয়ে থাকে। এখানে পুনরায় উল্লেখিত থাক, অযোধ্যা মামলার রায় দিতে গিয়ে মহামান্য আদালত এও বলেছিলেন যে “The law is hence a legislative instrument designed to protect the secular features of the Indian polity, which is one of the basic features of the Constitution” – এই আইন একটি নির্ণায়ক অধ্যাদেশ যার বলে ভারতীয় রাজনৈতিকতার ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র, যা ভারতীয় সংবিধানের একটি অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য, তা বজায় থাকে। অথচ, কেউ যদি স্বতন্ত্রভাবে অযোধ্যা রায়ের মূল অধ্যাদেশটিকে বোঝার চেষ্টা করে তা হলে মনে হতে পারে, যাক, এ তবু মন্দের ভালো, এটুকু স্বার্থত্যাগ দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বার্থে যাকে বলে ‘গ্রেট লীপ ফরওয়ার্ড’ – এতো চমৎকার কথার মোড়কে তা আচ্ছাদিত। কেন বলছি এই কথা? অযোধ্যা রায়ে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বলেছিল “Parliament has mandated in no uncertain terms that history and its wrongs will not be used to oppress the present or the future”- সংসদ অবিসম্বাদিত বার্তা দিয়েছে ইতিহাস এবং ঐতিহাসিক ভুলগুলোকে বর্তমান বা ভবিষ্যতের পীড়ন উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। তদুপরি, কোর্ট দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে দিয়েছিল পার্লামেণ্ট যদি ভবিষ্যতে এই আইনকে বদলে দিতে চায় বা মুছে দিতে চায় তাহলে সুপ্রিম কোর্টের অযোধ্যা রায় বাধা হয়ে দাঁড়াবে কেন না এই আইনের ভিত্তি হল ‘স্পিরিট অফ নন- রেট্রোগ্রেশন’- পিছনে না ফেরার প্রাগুক্ততা – যা ভারতের সেকুলার সংবিধানের ভিত্তিস্বরূপ। শুধু তাই নয়, এই রায় দেশের সব রাজনৈতিক দলের কাছে, সব সম্প্রদায়ের কাছে, সব সরকারের কাছে এবং সর্বোপরি জাতির কাছে পিছনের দিকে না তাকিয়ে এগিয়ে চলার বার্তা বলে বিবেচনা করার আহ্বান হিসাবে দেখার সুযোগ বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছিল। এই যখন শাঁস, তখন আপনি ভারতবাসী হিসেবে লেটার এন্ড স্পিরিটে ধর্মনিরপেক্ষ হলে কিছুটা হলেও আহ্লাদ করতে পারেন এই ভেবে যে অযোধ্যা তো ১৯৪৭ পুর্ব ইস্যু, সুতরাং এই একটি ব্যতিক্রমের সুযোগ ছিল বলেই ঘটেছে, তবে এই শেষ- অতঃপর শান্তিকল্যাণ। দু’বছরও কাটে নি, লোহা গরম ছিল বলেই পেটাই করার সুযোগ এসেছে যাদের কাছে, তারা ওইটুকু লখিন্দরছিদ্রেই অজগর ঢোকাতে মরিয়া হয়ে আসরে নেমে পড়েছে।

জ্ঞানবাপী মসজিদ সংক্রান্ত মামলা জাস্টিস চন্দ্রুচূড়ের বেঞ্চে এলে তিনি সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারটিকে সামনে রেখে আশায় বুক বাঁধছিলেন যারা, তাদের অবাক করে দিয়ে নিরীক্ষণ রাখলেন “ Ascertaining of religious character of place of worship not barred under 1991 law”- কোনও ধর্মস্থানের ধর্মীয় চরিত্র নির্ধারণে ১৯৯১ এর আইন বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না! জ্ঞানবাপী মামলা চলছে বারানসীর জেলা আদালতে। এই ২০২২ এর মে মাসেই এলাহাবাদ হাইকোর্ট মসজিদে ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষনকে দিয়ে একটি সমীক্ষা করার এবং তা ভিডিওগ্রাফি করার নিদান দিয়ে বসে। খবর চাউর করা হয় এই মর্মে যে, মসজিদের অন্দরে একটি জলসত্রে, যেখানে নমাজিরা প্রার্থনার আগে ওজু সেরে নেন, সেখানে নাকি একটি শিবলিঙ্গ মিলেছে। মসজিদ পক্ষের আইনজীবীরা হিন্দু পিটিশনারদের আবেদনের সারবেত্তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন কারণ ১৯৯১ এর প্লেসেস অফ ওয়রশিপ অ্যাক্ট তাতে লঙ্ঘিত হচ্ছে, তদুপরি, শিবলিঙ্গ বলে যেটি দর্শানো হচ্ছে সেটি বস্তুত একটি ফোয়ারা বই কিছু নয়। মামলা সুপ্রিম কোর্টেও নিয়ে যাবার চেষ্টা হয়েছিল কিন্তু উচ্চতম আদালত সেটিকে জেলা আদালতেই ফেরত পাঠিয়েছে এবং নমাজীদের সেখানে প্রার্থনা চালানোরও অনুমতি দিয়ে রেখেছে। এমতাবস্থায় জাস্টিস চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য অপর একটি  সম্ভাবনাকে উসকে দিতে পেরেছে ।  নিরীক্ষণের ভিত্তি হিসাবে ১৯৯১ এর আইনের এবং রাম-জন্মভূমি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের অধ্যাদেশের কথা তিনি মনে করাতে চাননি। বরং তাঁর নিরীক্ষণ দেশের যে কোনও মসজিদের ধর্মীয় চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ রেখে দিল। এ ব্যাপারে পরবর্তী শুনানির দিন ৩০ মে ধার্য করা আছে। আমাদের ঔৎসুক্য রইল কোন ফয়সালা কোর্ট শোনায় অথবা আরও কতদিন এই ইস্যু দেশবাসীর নজর কেড়ে রাখে তার ওপর।

জ্ঞানবাপীর গায়ে গায়েই চলে আসে মথুরা কোর্টে ওঠা শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি-শাহী ইদগাহ মসজিদ বিতর্কের কথা। একই কোর্টে জনৈক মহেন্দ্র প্রতাপ সিং এর নেতৃত্বে একদল ‘ধর্মপ্রাণ’ হিন্দু অভিযোগ আনেন মুঘল সম্রাট ঔরংজেব মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি ধ্বংস করে দেবদেবীর মূর্তিসকল আগ্রা ফোর্টের সিঁড়ির গাঁথনির তলায় পুঁতে দিয়েছিল, ফলে প্রতিদিন সেই তেত্রিশ কোটি পদদলিত হয়ে চলেছেন। সুতরাং, আগ্রা ফোর্টের চত্বরে যে বেগম কি মসজিদে যে শত শত নমাজী রোজ পা রাখেন, সেখানে নমাজ নিষিদ্ধ ঘোষিত হোক। কোর্ট অবশ্য এই অভিযোগে এখনও সারবত্তা পায়নি এবং বাদীপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে এ এস আই সহ অন্যান্য সরকারি সংস্থাকে নোটিশ দিয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে, কিন্তু তাতেও কি ১৯৯১ এর আইনের এবং রাম জন্মভুমি রায়ের মূল ভাবনা লঙ্ঘিত হচ্ছে না? সঙ্ঘীরা এর সঙ্গেই দাবি রেখেছে লখনৌ-এর ঐতিহাসিক ওয়ালি মসজিদ আসলে ‘লক্ষ্মণ টিলা’ এবং এটিও ফিরে পাবার দাবি উঠতে শুরু করেছে। দাবি উঠেছে আজমের শরিফকে নিয়ে, কুতুব মিনারকে নিয়ে এবং তাজ মহলকে নিয়েও। যদি রাম জন্মভূমি রায়ের সামান্য ইজ্জতও থেকে থাকে, তাহলে এসব মামলার ইন্তেকাল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টেই হয়ে যাওয়া উচিৎ। উচ্চতর আদালতে যে কোনও বিচারক, যে কোনও দিন, এইসব আবেদন যাকে বলে ‘সামারিলি ডিসমিস’ করে দিতে পারে, যদি রাম জন্মভূমি রায়ের ‘স্পিরিট অফ নন রেট্রোগ্রেশন” বা পিছনে না তাকানোর ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থানটিকে মর্যাদা দেওয়া হয়। দুর্ভাগ্য এই যে, ওই একই রায় হিন্দুত্ববাদীদের সোনার ডিম পাড়া হাঁসে পর্যবসিত হয়েছে আপাতত এবং চল্লিশ হাজার মসজিদের ভাগ্যকে নাকি তারা লেত্তির মত পেঁচিয়ে রেখেছেন সহাবস্থান নামক লাট্টুখানির গায়ে।

ইতিহাস এক ডবল হেডেড কয়েন। এতে যেমন ঐতিহাসিক ভুলগুলোকে চোখে পড়ে তেমনই সে ভুলকে শুদ্ধিকরণের চেষ্টায় বিপর্যয়ও চোখে পড়ে। ইতিহাস বহুলাংশে রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত এও ঠিক, কিন্তু জাতির ভবিষ্যৎ ইতিহাসের ভুল ঠিকের নিরিখে নির্ধারণ করতে যাওয়া আরও ভয়ঙ্কর ভুল-এ শিক্ষাও ইতিহাসের। শুধু মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসের দিকে তাকালে, শুধু জেরুজালেমের ইতিহাসে নজর রাখলে দেখা যাবে কীভাবে মানুষ ও রাষ্ট্র এর মাশুল দিয়েছে। টম ফ্রিডম্যান তাঁর ২০০৫ এর বই দি ওয়ার্ল্ড ইজ ফ্ল্যাট -এ লিখছেন “In societies that have more memories than dreams, too many people are spending too much time looking backward. They see dignity and self-worth not by mining the present but chewing on the past…and that is usually not a real past but an imagined and adorned past…they cling to it, rather than imagining a better future and acting on that.” – যে সমাজ স্বপ্নের চেয়ে স্মৃতিকে বেশি গুরুত্ব দেয়, সেখানে বিপুল জনগোষ্ঠী কেবল পিছনে তাকানোতেই প্রচুর সময় ব্যয় করে থাকে। তারা আত্মসম্মান ও নিজগুরুত্ব নির্ধারণ করে বর্তমান নয়,  অতীতের দিকে তাকিয়ে…এবং প্রায়শই তা কল্পিত অতীত, অলঙ্কৃত বটে অতীত,  তবে সর্বদা সত্য নয়… তাকে আঁকড়ে ধরেই তারা সোনালী ভবিষ্যতের জন্য পথনির্দেশ খোঁজে।

আমাদের শাসকেরা অবশ্য বর্তমানে চোখ না রেখেই অতীত খুঁড়তে বসেছেন-তা নয়। সমস্ত মানদণ্ডে সংখ্যাগুরু দেশবাসীর প্রাণ দিন দিন ওষ্ঠাগত। বেকারি, দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি এবং নোটবন্দির হারাকিরি, কোনওকিছুই  তথাকথিত হিন্দু অস্মিতার থেকে বড় যে নয় তা মার্জারের গোঁফেই প্রতীয়মান। এই এক আফিম যার মৌতাতে অন্য সব জরুরি প্রশ্নগুলো চাপা পড়ে যদি প্রয়োজনমত তোরঙ্গ থেকে বার করা যায়। এতে শাসক এবং তথাকথিত বিরোধী-সকলের লাভ ভোটের মানদণ্ডে পরীক্ষিত হয়েছে। ফলে চল্লিশ হাজারের গল্পকে আর নিছক গল্প ভাবা যাচ্ছে না। আদালত চালু আছে- যদিও রাম-জন্মভূমি বিতর্কের অবসানে এসব বিতর্ক চিরকালের জন্য ঘুমিয়ে পড়বে বলে এখনও কেউ কেউ আশা করে থাকবেন।

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4647 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...