![bishan](https://i1.wp.com/www.4numberplatform.com/wp-content/uploads/2020/01/bishan.jpg?resize=678%2C381&ssl=1)
বিষাণ বসু
ভয়। শব্দটা আপাতপরিসরে ছোট— ব্যাপ্তিতে নয়। দুর্বল-অপারগ সবলকে, সবলের ক্রোধকে ভয় পায়, জানা-ই কথা— কিন্তু, বিপরীতে? যার কিছু নেই, তার তো সেভাবে কিছু হারানোর ভয় থাকে না। কথায় বলে, ন্যাংটোর নেই বাটপারের ভয়। কিন্তু, যার কিছু আছে, তাকে যদি বোঝানো যায়, যে, এই থাকাটুকু হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম— মানে, যাদের কিছু নেই বলে তুমি ভাবছ, তাদের পরিস্থিতি মোটেই সেরকম নয়— উল্টে, তারা তোমার যেটুকু আছে, সেটুকু কেড়ে নেওয়ার জন্যে দল বেঁধে আসছে— তাহলে? বিশেষ করে, তেমন-পুরনো-নয় এমন অতীতে যদি বিশেষ পরিস্থিতিতে সব হারানোর অভিজ্ঞতা থাকে— তাহলে? ঘরপোড়া গরুকে সিঁদুরে মেঘ সব সময় দেখতে পেতেও হয় না— মওকা বুঝে, বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে, সেই সিঁদুরে মেঘের গল্পটুকু ফেঁদে বসতে পারলেই অনেকখানি ভয় পাওয়ানো, সম্ভবত, কঠিন নয় তেমন। অন্তত, সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা তেমনই বলছে।
আমরা তো ছোটবেলা থেকেই ছোট ছোট ভয় পেয়ে মানুষ— জুজুর ভয়, ভূতের ভয়, ইস্কুলের দিদিমণিকে ভয়, বাড়িতে বলে দেওয়ার ভয়। বাড়িতে বলে দিলে উত্তমমধ্যম পিঠে পড়বে, সেই ভয় বাস্তব— অন্তত, আগেকার দিনে, দিদিমণিকে বলে দিলেও তা—। কিন্তু, জুজু বা ভূত এলে ঠিক কী হতে পারে, সেই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা না থাকা সত্ত্বেও ভয় পেতে অসুবিধে হত না।
তা এই মহান রাষ্ট্রের কাছেও আমরা শিশুসম— অন্তত, আমাদের বেশ কিছু আচরণ শিশুসুলভ, সে বিষয়ে তেমন সংশয় না রাখাই ভালো— যেমন ধরুন, আমরা বিশ্বাস করতে ভালোবাসি, সকলের ভালো করার জন্যেই রাষ্ট্রব্যবস্থা রয়েছে— আমাদের মহান কর্তব্য রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি কারণে-অকারণে আনুগত্য জাহির করা। এতগুলো বছর, এতগুলো দশক অতিক্রম করার পরেও বৈষম্য ফুলেফেঁপে উঠছে— সেসব দেখার পরেও, আমরা বিশ্বাস করি, এইগুলো রাষ্ট্রব্যবস্থার কোনও গলদ নয়, এইগুলো স্রেফ প্রায়োগিক ত্রুটি— রাষ্ট্রব্যবস্থা ভারী ভালো ব্যাপার, রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ঠিকঠাক প্রয়োগ করলেই আমাদের সবার ভালো— অতএব, আমাদের দরকার, আরও, আরও জবরদস্ত রাষ্ট্রশক্তি।
অতএব, এই শিশু নাগরিকদের রাষ্ট্রও ভয় দেখায়, সরাসরি রাষ্ট্র না হলেও রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা তো দেখানই— কিছু ভয় সরাসরি— অবাধ্য শিশুকে লাঠির ভয়— একজনকে মেরে দৃষ্টান্ত খাড়া করলে বাকি অনেকেই সমঝে যান— সেসবের বিশদ উদাহরণ না দিলেও, আশা করি, চলবে।
কিন্তু, সেই প্রসঙ্গ থাক। আজ যে দিকটা নিয়ে আলোচনা করতে চাই, সেইটা রাষ্ট্রের দেখানো জুজুর ভয়— না, সামনাসামনি নয়, আড়াল-আবডাল থেকে— রাষ্ট্রের ঠিকাদারদের ছড়ানো গুজব বা অর্ধসত্য— ইঙ্গিতে, সোশাল মিডিয়ায়— বিভিন্ন আঙ্গিকে দেখিয়ে যাওয়া জুজুর ভয়।
শিশু নাগরিক হিসেবে, আমাদের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্কটি ভয়-ভক্তি-অভিমান-ভালোবাসার। ভয়ের জন্যে রাষ্ট্রের হাতে আছে পুলিশ, সময়ে সময়ে সেনা। ভক্তির জন্যে আছে সিনেমাহল— জাতীয় সঙ্গীতে উঠে দাঁড়ানো। ভালোবাসার জন্যে আছে মহান নেতা, ছাপ্পান্ন ইঞ্চি, ভারতমাতা, গোমাতা ইত্যকার বিষয়— যাদের একত্রে টোটেম বললেও ভুল হয় না বোধহয়। আর অভিমানের জন্যে আছে পরোক্ষভাবে চালিয়ে যাওয়া কিছু প্রচার— এত ভালোবেসেও রাষ্ট্রের মন পেলাম না!! শেষমেশ রাষ্ট্র ভালোবাসল “ওদের”!!!
এই অভিমান বড় জটিল। কেননা, যেমন বললাম, পরোক্ষ প্রচার দিয়ে কিছু কিছু কথা আমাদের মনের মধ্যে জিইয়ে রাখা গেছে। অপরিচয়ের সুবাদে কিছু কিছু মিথ্যে আমাদের মনে গেঁড়ে বসিয়ে দেওয়া গেছে। গভীরে যাওয়ার অনভ্যাসের সুবাদে অর্ধসত্য ও মিথ্যে মেশানো কিছু “তথ্য” দিয়ে আমাদের মধ্যে গুঁজে দেওয়া হয়েছে পারস্পরিক অবিশ্বাস— এক অবিশ্বাস ঘৃণা থেকে আমরা রাষ্ট্রের প্রতি অভিমান-মেশানো আনুগত্যের মধ্যে দিয়ে টিকিয়ে রাখছি বিভাজন— রাষ্ট্রের সুবিধে হচ্ছে অবশ্যই, কিন্তু এই দেশের??
আমরা যখন স্বাধীন হলাম, তার কয়েকবছর আগেই জার্মানিতে চমৎকার কিছু তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক গবেষণা হচ্ছিল। আমাদের রাষ্ট্রশক্তির বর্তমান চালকদের গুরুস্থানীয়রা সেই গবেষণার প্রতি তাঁদের প্রগাঢ় শ্রদ্ধার কথা কখনওই গোপন করেননি। সেই গবেষণার প্রধান মাথা গোয়েবলস সাহেব অসামান্য কয়েকটি তত্ত্ব বিধৃত করেছিলেন— হাতেকলমে প্রয়োগ করেও দেখিয়েছিলেন। যার মধ্যে দুখানি মাথায় রাখা যায়—
১. একটি মিথ্যেকে বারবার যদি বলে যাওয়া যায়, বিভিন্নভাবে ও বিভিন্নমাধ্যমে, তাহলে সাধারণ মানুষ সেইটা সত্যি বলে বিশ্বাস করেন।
২. সাধারণ মানুষ ঝুটঝামেলা চান না— যুদ্ধটুদ্ধ তো একেবারেই নয়। কিন্তু, যুদ্ধ করতে গেলে তাঁদের সমর্থন জরুরি। তাহলে কী করা যায়? ঘাবড়াবেন না, পথ রয়েছে। পরিকল্পনামাফিক প্রচারের মাধ্যমে সংখ্যাগুরুর মধ্যে একটা আতঙ্ক তৈরি করা যায়, যে, তাঁরা বিপদের মধ্যে পড়তে চলেছেন। তাঁদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা যায়, যে, তাঁরা আক্রান্ত হতে চলেছেন। লাগাতার প্রচারের পাশাপাশি, এই আতঙ্কের বিরুদ্ধে যাঁরা কথা বলবেন, তাঁদেরকে দেশদ্রোহী বা বিদেশের চর হিসেবে দাগিয়ে দিতে হবে— তার জন্যে প্রথম পয়েন্ট তো আছেই— আস্তে আস্তে আমজনতা বিশ্বাস করবেন, যে, তাঁরা আক্রমণের মুখে পড়তে পারেন। তখন যুদ্ধ বা খুনোখুনি, সবই গ্রহণযোগ্য।
এদেশেও, আপাতত, সেই পদ্ধতির প্রয়োগ চলছে। সংখ্যাগুরু বিশ্বাস করে বসছেন, তাঁরা আক্রান্ত হতে পারেন যে কোনও মুহূর্তে সংখ্যালঘুর হাতে। তৎকালীন জার্মানির অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অনিশ্চয়তাকে ব্যবহার করতে যেমন সুবিধে হয়েছিল হিটলার বা গোয়েবলসের— বর্তমান ভারতবর্ষের আর্থিক বা পেশাগত অনিশ্চয়তাও ঠিক তেমন করেই এই তত্ত্বের পক্ষে উর্বর জমি প্রস্তুত করেছে। আমাদের যে আর্থিক অনিশ্চয়তা, দেশের যে ভরাডুবির পরিস্থিতি, আমরা বুঝে গেছি, এসবের মূলে ওই “ওরা”— ওদেরকে টাইট দিলেই আমরা আবার জগতসভায় শ্রেষ্ঠ আসনের দাবিদার হয়ে উঠতে পারি।
এই “ওদের” ভয়, থুড়ি জুজুর ভয়, দেখানোর জন্যে সযত্নে নির্মিত হয়েছে জুজুটি— এদেশের সংখ্যালঘু সমাজ— না, ঠিক সব সংখ্যালঘু নন, এক এবং একমাত্র মুসলমান সমাজ, আপাতত তাঁরাই জুজু— না, ঠিক মুসলমান সমাজও নয়, জুজু হিসেবে দেখানো হচ্ছে সেই সমাজের একটি নির্মিত রূপ— আর জুজুর নির্মাণের দায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে ইতিহাসের উপর, যে ইতিহাসও, প্রয়োজনমত বিকৃত।
অতএব, কিছু কিছু শব্দবন্ধ আমাদের কাছে প্রায় স্বতঃসিদ্ধ। হ্যাঁ, শব্দগুলো বহুব্যবহারে ক্লিশে হয়েও খুব টাটকা, প্রাসঙ্গিক— কেননা, সেইসব শব্দবন্ধকে বিনাবাক্যব্যয়ে মেনে নিয়ে আমরা নিজেদের মতো করে যুক্তি সাজাই। আমাদের কথাবার্তা শুরুই হয় সেই শব্দবন্ধকে শাশ্বত সত্যি মেনে। রাষ্ট্রের নির্মিত জুজু আমাদের কাছে একান্ত নিজস্ব ও ব্যক্তিগত ভয় পাওয়ার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
তা এই জুজুর নির্মাণ, বা জুজুটির বিশ্বাসযোগ্যতার তো কিছু পর্যায় রয়েছে। একদিনে তো আমরা সংখ্যালঘুদের ভয় পেতে শিখিনি। সংখ্যালঘুরা নাকি এত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছেন, যে আমরা প্রায় নিজভূমে পরবাসী হয়ে গেছি, বা যেতে চলেছি— সে হল কেমন করে?? এই বিশ্বাসযোগ্যতার নির্মাণপ্রক্রিয়ার একটি শব্দবন্ধ নিয়ে আজ আলোচনা করা যাক— সংখ্যালঘু তোষণ।
জুজুর নির্মাণপ্রক্রিয়ার একটা বড় বৈশিষ্ট্য— নির্মাতাদের সুবিধের বিষয়ও এটা— একবার জুজুর গল্প যুৎসই করে বাজারে ছেড়ে দিতে পারলে তা আপনাআপনিই বাড়তে থাকে। আমি আর আপনি মিলেই জুজুটিকে বাড়িয়ে যেতে থাকি। বড়দারা শুধু মাঝেমধ্যে টুকরো কথা জুড়ে দিলেই ব্যাপারটা জমে ক্ষীর।
অতএব, আমরা মানি, কেননা আমরা জানি, স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি রাজনৈতিক দল মুসলমানদের তোয়াজ করে চলেছে। মুসলমান তাদের কাছে প্রায় সুয়োরানি। ভারতের সমস্যাগুলোর অন্যতম মূল কারণ এই ‘সংখ্যালঘু তোষণ’। মনুষ্যেতর প্রাণীদের খামোখা দুষে লাভ নেই, লাই পেলে সবাই-ই মাথায় ওঠে। ওদের এত ‘বাড়’-এর কারণ সেইটাই।
তবে, সেসব এখন অতীত। স্বাধীন ভারতবর্ষের ইতিহাসে এই প্রথম একটা সরকার এসেছে, যারা সত্যিটাকে চাঁছাছোলা ভাষায় সত্যি করে বলতে পারে। যাদের কাছে ‘দেশ’-এর আগে কিছু নেই। চাট্টি ভোটের লোভে যারা কোনও শালার তোষামোদ করতে যায় না।
তা বেশ। শুনেছি অনেকবার, আপাতত মেনে নিচ্ছি আপনার কথা। তাহলে, আপনার কথার সূত্র ধরেই, এই এত বছর ধরে লাগাতার জামাই-আদর পেয়ে, দেখে নেওয়া যাক, মুসলমানরা আছেন কেমন?
তোষণের শেষে আমাদের ভয়পাওয়ানো জুজুটিকে দেখে নিতে হলে, আপাতত, ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভে অফিসের লেবার ফোর্স সার্ভেটি তো আছেই। চোখ বোলানো যাক একবার।
দেখুন, এত তোষণের শেষে, এদেশে, প্রতি হাজার মুসলমান পুরুষের মধ্যে, মাত্র ২৮৮ জন নিয়মিত আয়ের কাজ করে থাকেন— মহিলাদের মধ্যে, সংখ্যাটা ২৪৯। হিন্দুদের মধ্যে এই সংখ্যা ৪৬৩ ও ৪৩৯ (পুরুষ ও মহিলা), খ্রিস্টানদের মধ্যে আরও কিছুটা বেশি। অর্থাৎ, অধিকাংশ মুসলমানের হাতে নিয়মিত আয় জোটানোর মতো কাজ নেই।
অবশ্য কাজকম্মো পাবেনই বা কী করে? এত তোষণের ঠেলায় শিক্ষার হার তো তাঁদের মধ্যে চমকপ্রদ। না, প্লিজ, এমন দাবি করে বসবেন না, যে, “ওরা” তো ইস্কুলে না পড়িয়ে মাদ্রাসায় পাঠায়। মাদ্রাসায় আধুনিক বিজ্ঞানটিজ্ঞান না শেখালেও, অন্তত অক্ষরজ্ঞানটুকু তো হয়। মাদ্রাসাই হোক, বা প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থা, প্রতি হাজার মুসলমানের মধ্যে নিরক্ষর ১৯০ জন (হিন্দুদের মধ্যে এই হার, হাজারে ৮৪, খ্রিস্টানদের মধ্যে হাজারে ৫৭)।
প্রাথমিক ও তদপরবর্তী শিক্ষাদীক্ষার হারও তদনুরূপ— বেশি তথ্য আর সংখ্যা লিখে আপনাকে আর বিরক্ত করছি না। কিন্তু, মোটের ওপর, এদেশের মুসলমান জনগোষ্ঠী এক বিপজ্জনক দারিদ্র্যচক্রে জড়িয়ে পড়ছেন— শিক্ষা নেই, তাই কাজ নেই, তাই আয় নেই। আর আয় যেহেতু নেই, এমনকি যাঁরা প্রাথমিক শিক্ষাটুকু পর্যন্ত যেতে পারছেন, প্রাথমিকোত্তর শিক্ষার যেটুকু আনুষঙ্গিক খরচ রয়েছে, সেইটুকুও বড় চাপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, লেখাপড়া এগোচ্ছে না, আয়ের সুযোগ থেমে যাচ্ছে— না না, আমার কথা নয়, সরকারি রিপোর্ট বলছে, আর রিপোর্টের ওপর ভর করে কিছু বেয়াড়া বিশেষজ্ঞ বলছেন।
যাক সেসব কথা, আপনি তো জানেন, মোদ্দা কথাটা বোঝাই যাচ্ছে, ২০০৯ সালের আগে পর্যন্ত, স্বাধীনতার পরের সেই বাষট্টি বছরে জুড়ে, ঢালাও তোষণের ঠেলায়, মুসলমানরা বেজায় খুশিতে আছেন— হাসিখেলায় মেতে ছিলেন অন্তত এই সেদিন পর্যন্ত, দেশের খেতেন-পরতেন আর দেশের পেছনে কাঠি করার সুযোগ খুঁজতেন, তাই না? সত্যিই ভয় পাওয়ার মতো জুজু, দেখাই যাচ্ছে।
অবশ্য, লেখাপড়া আর শিখবে কোত্থেকে!!! একজনের দশটা বাচ্চা থাকলে, লেখাপড়া শেখানোর সময় কোথায়?
বাঃ!! দারুণ অবজার্ভেশন!!! শিক্ষা বা আর্থসামাজিক কাঠামো নয়— ধর্ম, স্রেফ ধর্মই তাহলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ!! মহিলাপিছু সন্তানসংখ্যার একটা আন্দাজ পাওয়া যায় টোটাল ফার্টিলিটি রেট থেকে— অর্থাৎ, একজন মহিলা তাঁর জীবনের সন্তানধারণক্ষম বছরগুলি যদি সমসময়ের সমাজের চলতি হারে সন্তানের জন্ম দিতে থাকেন, তাহলে তিনি মোট কটি সন্তানের জন্ম দেবেন, সেই হিসেবটা। উত্তরপ্রদেশে মুসলমানদের টোটাল ফার্টিলিটি রেট ৩.১০, কেরলে ওই একই ধর্মের লোকেদের ১.৮৬— এটা তাহলে এমনি এমনিই, কী বলেন? না, বিচ্ছিন্নভাবে এই দুটো অঙ্গরাজ্যের কথা বলছি একারণেই, কেননা, একটিতে রামরাজ্য স্থাপিত হয়েছে— অন্যটিতে, লাগু রয়েছে সেকুমাকুদের মাথাদের বা দেশদ্রোহী অমর্ত্য সেনের পছন্দের শিক্ষা-স্বাস্থ্য-উন্নয়নের মডেল। বাই দ্য ওয়ে, উত্তরপ্রদেশে, যোগিজির রামরাজ্যে হিন্দুদের টোটাল ফার্টিলিটি রেট ২.৬৭— কেরলের মুসলমানদের লজ্জায় ফেলতে পারে। শিক্ষা বা আর্থসামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে জনবৃদ্ধির হারের সম্পর্কটি এর থেকে আন্দাজ করা গেলেও, আপনি মানবেন কি?
সারা দেশের খবর দেখলে, দেশজুড়ে মুসলমান জনগোষ্ঠীর মধ্যে টোটাল ফার্টিলিটি রেট ২.৬, হিন্দুদের মধ্যে ২.১। মুসলমানদের সন্তান-উৎপাদনের হার হিন্দুদের তুলনায় কিছু বেশি হলেও, আপনি যেমন ভাবেন, তত বেশি নয়। আর, মুসলমানদের মধ্যে এই হার ক্রমশ কমে আসছে, কমছে হিন্দুদের চাইতে বেশি দ্রুত। কাজেই, হিন্দু-মুসলমানের টোটাল ফার্টিলিটি রেটের যে ব্যবধান, সেটা কমে আসছে প্রতিবারের হিসেবেই।
তাহলে আপনি যেরকম বলেন, যে, মুসলমান সংখ্যায় বাড়ছে, বেড়েই চলেছে— এমন বাড়ছে, যে, শিগগিরই, এদেশে, হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে দাঁড়াবে, তেমন কোনও সম্ভাবনা থাকছে কি? জুজুরা সংখ্যায় বাড়ছে, সংখ্যায় ও ক্ষমতায় দানবের আকার নিচ্ছে— না, জুজুর ভয় আপনি পেয়ে চলুন— কিন্তু, আপনার পছন্দের সরকার তেমন তথ্য জানাচ্ছেন না, অন্তত প্রকাশ্যত, হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটির কথা আলাদা।
দেশের জনসংখ্যার মধ্যে একটি জনগোষ্ঠীর ভাগ বাড়তে হলে, সেইটা বাড়তে পারে কীভাবে?
জন্মহার বেশি থাকলেও, তাঁদের স্বাস্থ্যের হার ভালো না হলে, মোট সংখ্যায় তাঁদের বাড়ার সম্ভাবনা কম। একটি জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের হদিশ পেতে হলে, তা যাচাই করে দেখার উপায়, সেই জনগোষ্ঠীর মধ্যে, মোট জনসংখ্যায় ষাটোর্ধ্ব মানুষের অনুপাত— দীর্ঘায়ু সুস্থসবল জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে এই অনুপাত, স্বাভাবিকভাবেই, বেশি। সেই অনুপাতের হিসেব কষতে গেলে, এদেশে মুসলমানদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব মানুষ ৬%, হিন্দুদের মধ্যে ৯%। কাজেই, অনেক তোষণের শেষেও, জুজুদের মোট জনসংখ্যার মধ্যে দীর্ঘায়ুর অনুপাত কম।
আগেই বললাম, এই যে জনগোষ্ঠীর ঠিক কত শতাংশ বয়স্ক, সেই তথ্যের থেকে আন্দাজ পাওয়া যায়, যে, সে জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক পরিস্থিতি ও স্বাস্থ্যপরিকাঠামোর হাল— কাজেই, ওপরের এই ছোট্ট তথ্য থেকে মুসলমানদের সার্বিক হালহকিকত, মানে তাদের স্বাস্থ্য ও আর্থসামাজিক পরিস্থিতির একটা আঁচ পাওয়াই যায়, তাই না? অবশ্য, আমাদের রাজ্যের প্রেক্ষিতে, প্রতীচী ট্রাস্ট, আগেই জানিয়েছিল, সংখ্যালঘুদের স্বাস্থ্যের হাল ভয়াবহ। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায়, তুলনামূলকভাবে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা কম, থাকলেও পরিকাঠামোর অবস্থা খুব খারাপ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বেডের সংখ্যা, চিকিৎসকের সংখ্যা খুব কম। কিন্তু, সেসব কথা না বলাই ভালো— প্রতীচী ট্রাস্ট কার জানেন তো— অমর্ত্য সেনের কটা বিয়ে, বউ কোন দেশের, সব মাথায় আছে তো!!
তাহলে, লাগাতার সংখ্যালঘু তোষণ করে, শালাদের লাই দিয়ে মাথায় চড়িয়ে— তাদের মধ্যে শিক্ষা নেই, স্বাস্থ্যের ব্যবস্থা নেই, চাকরিবাকরি নেই— এরকমভাবে “তোষণ” করার চেয়ে উপযুক্ত আর ঠিক কী ব্যবস্থা কল্পনা করতে পারেন বলুন তো, যা দিয়ে একটি জনগোষ্ঠীকে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া যায়? কিন্তু, ওই যে বললাম, ওরা তো জুজু— সংখ্যাতত্ত্বের হিসেব দিয়ে জুজুর ভয় কাটানো যায় না।
সে আপনি যা-ই বলুন, “ওরা” অন্য জায়গায় চাকরিবাকরি না পেলেও, সরকার তো মাথায় তুলে রেখেছে, অন্তত এই রাজ্যের সরকার, সেইটা মানেন তো, নাকি??
বেশ, সরকার নিশ্চয়ই ঢালাও সুযোগসুবিধে দিচ্ছে বেছে বেছে মুসলমানদের। সরকারি চাকরিতে নিশ্চয়ই বেছে বেছে মুসলমানদের নিয়োগ করা হচ্ছে। তাই না? এই রাজ্যের কথাই দেখুন। জনসংখ্যার সাতাশ শতাংশ মুসলমান হলেও, সরকারি চাকরিতে তাঁরা মাত্র ৫.৭৩%! সুযোগসুবিধার পরাকাষ্ঠা!!
না না, ওসব চাকরি “ওরা” পাবে কোত্থেকে? মাদ্রাসায় গিয়ে আরবি-ফার্সি-কোরান-হাদিস শিখে গভর্নমেন্ট জব পাওয়ার আশা!!! একটু জানিয়ে রাখি, প্রথমত, মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা থেকে প্রাপ্ত স্কুল সার্টিফিকেটের দাম, অন্তত সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে, আলাদাভাবে কম নয়। দ্বিতীয়ত, যে লেভেলের চাকরির ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেই গ্রুপ সি বা গ্রুপ ডি চাকরির ক্ষেত্রে মুসলমানদের অনুপাত আরও কম— তিন শতাংশের আশেপাশে। তাহলে?
না হয় চাকরির কথা বাদ দিলাম। ব্যবসাবাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই মুসলমানরা ফুলেফেঁপে উঠছেন— মানে, প্রত্যক্ষ সরকারি আনুকূল্যেই মুসলমানদের ব্যবসার বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে। এই ব্যাপারে রাজ্যের তথ্য সেরকমভাবে পাইনি। দেশের কথা বললে, জনসংখ্যার সাড়ে চোদ্দ শতাংশ মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে যাঁরা ঋণ পেয়ে থাকেন, তাঁদের মাত্র দুই শতাংশ মুসলমান। এই রাজ্যেও এমন হারের বিশেষ ইতরবিশেষ হয়েছে বলে জানা নেই। কাজেই, সরকার মুসলমানদের কথা নিশ্চয়ই আলাদাভাবে ভাবছেন— শুধু সরকারি চাকরিই বলুন, বা ব্যবসার ক্ষেত্রে সরকারি সহযোগিতা, কোনওটিতেই সেই বিশেষ ভাবনার ছাপ পাওয়া যাচ্ছে না— জবরদস্ত তোষণ কিন্তু!!
তাহলে, এই এত তথ্যের শেষে একটু হাঁফ ছেড়ে নেওয়া যাক। দেখা গেল যা, তা ভারী চমৎকার— স্বাধীনতার পরে, এই এতগুলো বছরের ঢালাও তোষণের শেষে— না, অবশ্যই, আয়রনম্যান মোদিজির সমদৃষ্টির সুশাসনের বছরগুলো ছেড়ে দিন— এত তোষণ আর ঢালাও সরকারি সুযোগসুবিধা বিলির পরে— মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার নেই, কাজের সুযোগ নেই, স্বাস্থ্যের হাল খারাপ, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া— চাকরিও নেই, ব্যবসা করে খেতে গেলে ব্যাঙ্কের লোনটুকুও নেই। তাহলে, জুজুর ভয় কেন?
হ্যাঁ হ্যাঁ, আপনার কথা শুনতে পেয়েছি। কেন দাদা, কিছুই কি দেখতে পান না? ওরা খুনখারাপি গুণ্ডাগর্দি করলেও, পুলিশ ওদের ধরে না— সেসব কিছুই চোখে পড়ে না!! চোখ থাকতেও অন্ধ?
আচ্ছা। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো জানাচ্ছেন, এই রাজ্যে জনসংখ্যার সাতাশ শতাংশ মুসলমান হলেও, জেলে বন্দিদের সাতচল্লিশ শতাংশ কিন্তু “ওরা”। তাহলে, পুলিশ ধরে না? আরও আকর্ষণীয় একটা তথ্য দেখুন— জেলে আটক রয়েছেন যে মুসলমান বন্দিরা, তাঁদের মধ্যে বিচারাধীন বন্দি ও দোষীসাব্যস্ত বন্দির মধ্যের অনুপাত (কনভিক্ট-ননকনভিক্ট রেশিও) দেখলেও, সেইখানেও মুসলমানরা, তুলনামূলকভাবে, হিন্দুদের চেয়ে এগিয়ে। বিনাবিচারে আটক বন্দিদের অনুপাতেও। জামিন না পাওয়ার হিসেবেও। না, শেষের এই তথ্য থেকে কখনওই এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় না, যে, দেশের আইন-আদালত-বিচারব্যবস্থা সবই মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত— কিন্তু, হিন্দু অপরাধীদের তুলনায়, মুসলমান অপরাধীরা বেশিদিন বিনাবিচারে ও দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগে জেলে থাকেন, টাটা ইন্সটিটিউটের একটি রিপোর্ট তেমনই জানাচ্ছে— যদিও এর কারণ ধর্মপরিচয়ের সঙ্গে সম্পর্কহীন ও সম্পূর্ণ ভিন্ন হতেই পারে, তেমনটাই হওয়ার সম্ভাবনা— কেননা, আগেই দেখেছি, এদেশে মুসলমান জনগোষ্ঠী আর্থসামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া— এবং, এইদেশে, মুখে যা-ই বলা হোক, গরীব আর বড়লোকের একই বিচার, সবসময়, হয় না।
আরে দাদা, ভাট বকা থামান!! আর কতদিন চোখে ঠুলি বেঁধে থাকবেন? মুসলিম এরিয়ায় আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু আছে? পার্ক সার্কাস-খিদিরপুর-মেটিয়াবুরুজে গেছেন কখনও? বাইকচালকের মাথায় হেলমেট দেখেছেন? ওয়ানওয়ে মানে কেউ? পুলিশ অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে। ভাঙচুর তো ছাড়ুন, ওইসব বেল্টে দিনেদুপুরে লাশ নামিয়ে দিলেও পুলিশের সাধ্য নেই কাউকে ধরে। আর এই যে হজে যাওয়ার জন্যে সরকার টাকা দিচ্ছে, এই যে ইমামভাতা— বলুন, এইবার বলুন, তোষণ হচ্ছে না!!!!
নাঃ!! যুক্তিতর্কের কথা অনেক হল। অনেক হয়েছে তথ্য সংখ্যা ইত্যকার ধানাইপানাই। জুজু একটা বিশ্বাস, তথ্য দিয়ে সেই ভয় কাটানো মুশকিল। প্লাস, শুরুতেই বলেছি, জুজুর নির্মাণপ্রক্রিয়ার অন্যতম উপকরণ হল অর্ধসত্য বা অসম্পূর্ণ ও মিথ্যে ‘তথ্য’— কাজেই, সোশাল মিডিয়ায় প্রাপ্ত ‘তথ্য’ দিয়ে আপনি তর্ক জারি রাখবেন— আর সেই তথ্যের ভুল প্রমাণ করতে করতে আমার সারাদিন কেটে গেলেও আপনাকে শেষমেশ বুঝিয়ে উঠতে পারব না।
কাজেই, শেষমেশ না হয় আপনার কথা মেনেই নিলাম। মেনে নিলাম জুজুর অস্তিত্বের কথা, আর রাষ্ট্রব্যবস্থা ঠিক কেমন করে তোষণ করে জুজুদের লাই দিয়ে বাড়িয়েছে, আপনার সেইসব যুক্তিও মেনে নিলাম। তবে, আপনি যেমন করে লাই দেওয়ার কথা বলছেন, যদি সেগুলো সত্যি হয়, তারপরেও, আমার কথাগুলোও ভেবে দেখুন একটু, প্লিজ।
আপনার কথামতো, সংখ্যালঘু তোষণ করতে গিয়ে, আইন ভাঙলে পুলিশ যদি না ধরে, তাহলে আইন ভাঙায় প্রশ্রয় দেওয়া হয়। আজ যে ছোট স্কেলে আইন ভাঙছে, সে পরে বড় স্কেলে ভাঙার কথা ভাববে। অপরাধীদের না ধরলে (যদিও, আগেই তথ্য দেওয়া আছে, মুসলমান হলে অপরাধীদের ধরা হয় না, এই ধারণার পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি নেই, তবুও আপনার কথা মেনে নিয়েই, আপাতত, কথা বলছি), যারা আশকারা পায়, তারা সমাজবিরোধী।
তোষণের নামে ইমাম-মোয়াজ্জেমদের ভাতা দিলে প্রশ্রয় পায় প্রকাশ্য ধর্মাচরণ— তোষণের নামে একটি বিশেষ জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে রাষ্ট্র যদি সবসময়ই বাছেন সেই সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু বা ধর্মাচরণের পুরোধাদের, তাহলে প্রশ্রয় পায় সেই সমাজের গোঁড়া ধর্মভীরু— না, ধর্মভীরু অংশের চেয়েও বেশি করে রক্ষণশীল ও ধর্মান্ধ অংশ।
পিছিয়ে পড়া একটি সমাজের একজনকে আর্থিক সাহায্য করতে চাইলে, সরকার পারেন তাঁর সন্তানের লেখাপড়ার যাবতীয় ব্যয় বহন করতে, বিশেষ স্কলারশিপ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে— অথবা পারেন, তাঁর তীর্থযাত্রার ব্যয় বহন করতে (হজের পাশাপাশি অমরনাথ বা কৈলাশ-মানস সরোবর যাত্রার আয়োজন করতে সরকারের ঠিক কেমন খরচ হয়, সেইটাও মাথায় রাখুন— এবং এই প্রতিটা খরচই অযৌক্তিক)। চয়েস সরকারের। দুই পদক্ষেপের ফল দুরকম।
আপনার দেওয়া যুক্তি যদি মেনেও নিই, তাহলে আপনার কথামত এই ‘সংখ্যালঘু তোষণে’ প্রশ্রয় পেলেন যাঁরা, তাঁরা সেই জনগোষ্ঠীর অশিক্ষিত, গোঁড়া, সমাজবিরোধী, রক্ষণশীল অংশ।
অর্থাৎ, দেশের কুড়ি কোটি মুসলমান জনসংখ্যার একটা বড় অংশের অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা-স্বাস্থ্য-কর্মসংস্থানের দায় সরকার নেননি, নিতে চানওনি, উল্টে, সেই সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে একটি রক্ষণশীল-প্রতিক্রিয়াশীল ও সুবিধেলোভী অংশকে।
একটু ভেবে বলুন তো, যাকে আপনি ‘সংখ্যালঘু তোষণ’ বলছেন— সার্বিকভাবে একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর পশ্চাদ্দেশে এত চমৎকার হুড়কো দেওয়ার প্ল্যান স্বয়ং মোদিজি বা অমিতজিও করে উঠতে পারতেন কি?
অবশ্য, এতকিছুর পরেও, এত আলাপ-আলোচনার শেষেও, জুজুর ভয় আপনি পাবেন, পাবেনই। আর, আপনার সেই ভয়কে হাতিয়ার করে, জুজুদের দেশছাড়া করে দেওয়ার প্ল্যানখানা— দেশের কুড়ি কোটি নাগরিককে রাষ্ট্রহীন করে দেওয়া হতে পারে, এই আতঙ্কে ফেলে দেওয়াটা সম্পূর্ণ অন্য স্কেলের ব্যাপার— মানতেই হচ্ছে, বস!!
আপনার জুজুর ভয়, বনাম তাঁদের রাষ্ট্রহীন পরিচয়হীন হয়ে যাওয়ার ভয়। চয়েস আপনার। যতদিন আপনি ভয় পাচ্ছেন— ভারী খুশি এই পুতুলনাচের পেছনে সুতো নাড়ানোর মানুষগুলো।
আর যেদিন আপনি আর ভয় পাবেন না? সেইদিন?? দেখুনই না, এই কদিনের প্রতিবাদেই তাঁদের কপালে কেমন দুশ্চিন্তার ভাঁজ!! ওই যে, সিনেমার ডায়লগটা মনে আছে তো… টেনশন লেনে কা নহিঁ, দেনে কা…
কিছু তথ্যসূত্র:
- https://timesofindia.indiatimes.com/blogs/toi-edit-page/what-the-data-tells-us-are-muslims-responsible-for-indias-population-explosion-not-quite/
- https://m.timesofindia.com/india/Muslims-have-largest-share-of-young-but-also-die-early/articleshow/50554763.cms
- https://www.thehindu.com/opinion/op-ed/no-respite-from-poverty-for-muslims/article25429598.ece
- https://indianexpress.com/article/explained/muslims-daliots-undertrials-in-prison-ncrb-3734362/