অসম বিধানসভা নির্বাচন ২০২১: বিজেপি-র পক্ষে কী গেল?

পরভীন সুলতানা

 



সহকারী অধ্যাপক, পি বি কলেজ, গৌরীপুর, অসম

 

 

 

 

 

মোট ১২৬টি আসনের মধ্যে এনডিএ সহজেই ৬৪টি জিতে নেওয়ার পর বিজেপি দ্বিতীয়বার অসমে ক্ষমতা দখল করল। কংগ্রেসের নেতৃত্বে মহা মোর্চা অন্যদিকে পেল ৫০টি আসন। অসমে এবারের তিন পর্বের বিধানসভা নির্বাচনে বেশ কিছু কৌতূহলোদ্দীপক বিন্যাস-সমবায় লক্ষ করা গেছে। জোটের বিন্যাস পাল্টেছে, অ্যাজেন্ডাগুলিও নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত হয়েছে। বিজেপি ও এজিপি-র এনডিএ প্রাক্তন এবিএসইউ সভাপতি প্রমোদ বোডো প্রতিষ্ঠিত ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবেরাল (ইউপিপিএল) নামে নতুন এক আঞ্চলিক দলকে নিজেদের মধ্যে সামিল করেছে। সম্প্রতি আয়োজিত বোডোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল (বিটিসি) নির্বাচনে ৪০টি আসনের মধ্যে ১২টি জিতে ইউপিপিএল এখন বিজেপি-র সহযোগী হিসেবে বিটিসি-র ক্ষমতা ভোগ করছে।

এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে দুটি মোর্চার মোকাবিলা করতে হয়েছে। প্রথমটি কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মহাজোট, যার মধ্যে কংগ্রেস ছাড়াও অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ), সিপিআই, সিপিআই (এম), সিপিআই (এমএল) এবং সদ্যোগঠিত আঞ্চলিক গণ মোর্চা ছিল। বোডোল্যান্ড পিপল’স ফ্রন্ট (বিপিএফ)-ও শেষবেলায় এই মোর্চায় সামিল হয়। দ্বিতীয় যে জোটটি নির্বাচনের আঙিনায় প্রবেশ করেছিল সেটি দুটি আঞ্চলিক দলের জোট— প্রাক্তন অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (এএএসইউ বা আসু)-র নেতা লুরিনজ্যোতি গগই-এর অসম জাতীয় পরিষদ (এজেপি) এবং কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি (কেএমএসএস)-র জেলবন্দি নেতা অখিল গগই-এর রায়জোর দল (আরডি)। ২০১৯-২০ সালে সংশোধিত নাগরিক আইন অমান্য আন্দোলনে যখন অসম উত্তাল, তখন এই দুটি আঞ্চলিক দল গঠিত হয়। এদের দাবি ছিল রাজ্যের ভোটারদের জন্যে এরা একটি তৃতীয় বিকল্পের সন্ধান দিচ্ছে।

নির্বাচনের ফল থেকে বোঝা যাচ্ছে যে আপার অসমে নিজেদের দুর্গ সামলে রাখতে পেরেছে বিজেপি। এই অঞ্চলের ৪০টি আসন সরকার গঠনের ক্ষেত্রে নির্ধারক ভূমিকা নেয়। বিজেপি একই মোট ৬০টি আসন জিতেছে। জোটশরিক এজিপি এবং ইউপিপিএল জিতেছে যথাক্রমে ৯টি এবং ৬টি আসন। ফলে এনডিএ-র মোট আসনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫। অন্যদিকে কংগ্রেস ২৯টি এবং তাদের জোটসঙ্গী এআইইউডিএফ এবং বিপিএফ যথাক্রমে ১৬টি এবং ৪টি আসন জিততে সক্ষম হয়েছে। সোরভোগ-এর একটি আসনে জিতেছে সিপিএম। আর তৃতীয় জোটের রায়জোর দলের জেলবন্দি সভাপতি সমাজকর্মী অখিল গগই শিবসাগর থেকে জিতলেও লুরিনজ্যোতি গগই-এর এজেপি একটি আসনও পায়নি।

যে বিষয়গুলি নিয়ে এবারে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে, অসমের রাজনীতিতে সেগুলি বরাবরই ছিল— ব্যক্তিপরিচিতি সংক্রান্ত এবং নাগরিকত্বের সমস্যাগুলি। তবে এবারে কিছু নতুন ঘটনাও প্রত্যক্ষ করা গেল। যেমন, এআইইউডিএফ-কে কংগ্রেস জোটসঙ্গী মেনে নেওয়ার ফলে এআইইউডিএফ-এর পতিত অবস্থার যেমন পরিসমাপ্তি ঘটল তেমনি বিজেপি আবার এটাকেই হাতিয়ার করে আপার অসমে মেরুকরণ ঘটাল। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঠিকই করে নিয়েছিলেন এআইইউডিএফ-কে জোটসঙ্গী করবার জন্যেই কংগ্রেসকে মূলত আক্রমণ শানাবেন। অসমের নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষায় বিপজ্জনক সঙ্কেত হিসেবেই আজমল এবং এআইইউডিএফ-কে তুলে ধরা হল।

অন্যদিকে, নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলিকে নিজেদের পক্ষে ধরে রাখতে পেরেছে বিজেপি। ইউপিপিএল ভালো ফল করে বিজেপি-র সামগ্রিক ফলাফলকে আরেকটু ভালো জায়গায় পৌঁছাতে সাহায্য করেছে। প্রমীলা রানি ব্রহ্ম এবং চন্দন ব্রহ্মদের মতো প্রাক্তন মন্ত্রীদের হার নিশ্চিত করে বিপিএফ। মজার ব্যাপার, এআইইউডিএফ কিন্তু এবারে আসন বাড়িয়ে নিল। কংগ্রেসের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সমরে দলগাঁও, চেঙ্গা এবং কাটলিচেড়া এই তিনটি আসন জিতে তারা গতবারের ১৩টি আসন থেকে ১৬টি আসনে পৌঁছে গেছে।

এআইইউডিএফ-কে জোটসঙ্গী করবার জন্যে কংগ্রেসকে বারবার সাফাই গাইতে হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারগুলিতে বদরুদ্দিন আজমলের বিতর্কিত মন্তব্য এবং মেরুকরণের প্রচেষ্টার ফলে বিভিন্ন সভায় কংগ্রেসকে বাধ্য হয়ে সাফাই দিতে হত যে এআইইউডিএফ সাম্প্রদায়িক দল নয়। আজমলকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বলাও হয়েছে। অন্যদিকে, দুটি দলই কিছু ত্যাগস্বীকার করে আসন সমঝোতা করলেও এআইইউডিএফ ১৯টি আসনের মধ্যে ৬টি আসন (জলেশ্বর, জরুখেত্রি, দলগাঁও, চেঙ্গা, বাঘবর এবং কাটলিচেড়া)-এ কংগ্রেসের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়। এআইইউডিএফ-এর সভাপতি বদরুদ্দিন আজমল বিবৃতি দেন যে এই ছয়টি আসনে এআইইউডিএফ-ই জিতবে।

আবার, ২০১৬ সালে বিজেপি-র সাফল্যের একটি অন্যতম কারণ ছিল আদি জনগোষ্ঠীগুলির প্রতিনিধিত্বকারী ছোট ছোট দলগুলিকে সমঝোতায় আনতে পারা। তারা ইতিমধ্যেই মোরান, মোটুক এবং কোচ রাজবংশীদের জন্য স্বয়ংশাসিত কাউন্সিল বানিয়ে দিয়েছে। ফলে সেই দলগুলির সমর্থন আরও পোক্ত করে এবারের নির্বাচনেও গোষ্ঠীগুলিকে নিজেদের দিকেই রেখে দিতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি।

বিরোধী মহাজোট এবারের নির্বাচন লড়েছিল মূলত জাতিসত্তার প্রশ্নের ভিত্তিতে। তার একমাত্র কারণ সংশোধিত নাগরিকত্বকে জড়িয়ে যে আবেগের বিস্ফোরণ দেখেছিল অসম এবং সেই প্রেক্ষিতে নাগরিকত্ব বিষয়ে রাজ্যের অবস্থানকেই তারা মূল নির্বাচনী ইস্যু করে তুলতে চেয়েছিল। অন্যদিকে, উন্নয়নের দাবি এবং প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির অবসানের ডাক দিয়ে জনগণের কাছে যায় বিজেপি।

ভোটের কয়েক মাস আগেই এনডিএ সরকার বেশ কয়েকটি জনমুখী প্রকল্প চালু করে। ছাত্রদের— বিশেষ করে ছাত্রীদের— নানারকম সুযোগসুবিধা দেওয়া তো আছেই, তার সঙ্গে সরকার তাদের বহু-বিজ্ঞাপিত অরুণোদয় স্কিমটিও এই সময়ে চালু করে। এই স্কিমে মহিলাদের প্রতি মাসে ৮৫০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হচ্ছে। প্রায় ১৮ লক্ষ পরিবার এই স্কিমের ফলে উপকৃত হয়েছে। টাকার পরিমাণ বাড়ানোর চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে। ফলে, এ বিষয়ে কোনও সন্দেহই নেই যে এই উপকৃত পরিবারগুলি বিজেপি-র একটা রাজনৈতিক পুঁজি হিসেবে কাজ করেছে এবং তাদের ভোট শতাংশ বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে।

এর পাশাপাশি, এআইইউডিএফ-এর সঙ্গে আঁতাত করার জন্য কংগ্রেসকে লাগাতার আক্রমণ শানিয়ে গেছে বিজেপি। প্রশ্ন তুলেছে— এই দুটি দলকেই আর আদৌ অসাম্প্রদায়িক বলা যায় কি না। জনসভাগুলিতে অসমের স্বাস্থ্য ও শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সরাসরি এআইইউডিএফ-এর সভাপতি বদরুদ্দিন আজমলকে আক্রমণ শানিয়ে বলেন ক্ষমতার অলিন্দে এই ব্যক্তির প্রবেশ অসমের জন্যে দুঃসংবাদ ছাড়া আর কিছু বয়ে আনবে না। এই ধরনের মেরুকরণের মধ্যে আজমল স্পষ্ট জানিয়ে দেন মহাজোট নির্বাচনে জিতে সরকার বানালে, মুখ্যমন্ত্রী পদ তিনি দাবি করবেন না।

২০১৬ সালে মুসলিম ভোট খণ্ডীকরণের সুবিধা তোলে বিজেপি। সত্যি কথা বলতে পূর্ব বিলাসীপাড়া, সোনাই, বরখেত্রী, সিপাঝর, সোরভোগ-এর মতো নির্বাচনী ক্ষেত্রগুলিতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তারা মুসলমানদের খেপিয়েও তোলে। সোনাই থেকে বিজেপির একমাত্র মুসলিম বিধায়ক হন আমিনুল হক লস্কর। ২০২১-এ কিন্তু বিজেপির একজন মুসলমান প্রার্থীও জিততে পারেনি। মুসলমান ভোটকে একত্রিত করে মহাজোট লোয়ার অসমে কিছুটা ভালো ফল করলেও, আপার অসমে কংগ্রেসের ভোট-শতাংশ নামমাত্র বাড়া ছাড়া আর কিছুই হয়নি।

বিরোধীরা বিশ্বাস করেছিল নাগরিক সংশোধনী আইনটি এইবারে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী ইস্যু হবে। এবং তা ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে যাবে। উলটোদিকে, বিজেপির অঙ্ক ছিল এক তো ক্লান্তি আর অন্যদিকে সারা দেশে লকডাউন-জনিত নানা বিধিনিষেধের কারণে নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের উৎসাহ অনেকটাই থিতিয়ে গেছে। তার সঙ্গে, শহরের কিছু নির্দিষ্ট পকেট বাদ দিয়ে বিষয়টি নিয়ে গ্রামীণ ভোটারদের খুব একটা মাথাব্যথা নেই। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নাগরিক সংশোধনী আইন ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত এলাকাগুলিতে লাগু করা হবে না। ফলে আদি নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীগুলিও এই আন্দোলনে সামিল হয়নি। এতে আন্দোলনের ধার আরও কমে। নিজেদের এই দাবির পক্ষে বিজেপি ২০১৯-এর সংসদীয় নির্বাচনের কথা বলেছিল, যেখানে তারা ১৪টি আসনের মধ্যে ৯টিতেই জয়লাভ করতে পেরেছিল।

এবারের নির্বাচনে সদ্যগঠিত দুটি আঞ্চলিক দল— রায়জোর দল এবং অসম জাতীয় পরিষদের (এজেপি) অংশগ্রহণও দেখা গেল। শক্তিশালী ছাত্র সংগঠন আসু এবং এজেওয়াইসিপি-র সমর্থনে এজেপি তৈরি হয়। অন্যদিকে ৭০টি সংগঠনকে একত্রিত করে রায়জোর দল। এই সদ্যোগঠিত দল দুটি নিজেদের মধ্যে আসন সমঝোতা করেছিল, মহাজোটের অংশ হতে রাজি হয়নি। এই আঞ্চলিক দলগুলি কেন্দ্রানুগ জাতীয় দল বা এআইইউডিএফ-এর মতো ‘সাম্প্রদায়িক’ দলের শরিক হতে চায়নি। দুটি দলেরই বিশ্বাস যে রাজ্যের সমস্যাগুলিকে সঠিকভাবে বোঝা এবং সমাধানের জন্য উপ-জাতীয়তাবাদী এবং আঞ্চলিক দলগুলিই যথাযোগ্য।

মহাজোট প্রথম দিকে সদ্যোগঠিত এই দুই দলকে নিজেদের মধ্যে সামিল করতে চেয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতাসীন সরকার এদেরকে আদৌ বিপজ্জনক মনে করেনি। এখন দুটি দলকে এই অভিযোগ সামলাতে হচ্ছে যে মহাজোটের ভোট কেটে তারা বিজেপি-কে সাহায্য করছে। অন্যদিকে, দলগুলির বক্তব্য যে তারা অত্যন্ত কম সংখ্যক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তার মধ্যে টেওক নামে একটি মাত্র নির্বাচনী ক্ষেত্রে হয়তো রায়জোর দল ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে, কারণ সেখানে মহাজোট প্রার্থী অতি অল্প মার্জিনে হেরেছেন। এজেপি ৫ থেকে ৭টি আসনে যথেষ্ট সংখ্যক ভোট পেয়েছে। কংগ্রেসের দাবি, এজেপি কংগ্রেসেরই ভোট কেটেছে, কিন্তু তাদের বক্তব্য তারা সেই মানুষদেরই ভোট পেয়েছে যারা ২০১৬ সালে বিজেপি-কে ভোট দিয়েছিলেন।

এবারের নির্বাচনে বেশ কিছু বিষয়ই উঠে এসেছে। জাতিসত্তার প্রশ্ন থেকে শুরু করে আদিম জনগোষ্ঠীদের নিরাপত্তার আশ্বাস, নির্বাচনী অঙ্ক মাথায় রেখে অসম চুক্তির ৬ নম্বর ধারা কার্যায়িত করা। ক্ষমতাসীন বিজেপি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ (অ্যান্টি ইনকামবেনসি) ছিল না। আগের কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগগুলি ভোটারদের স্মৃতিতে এখনও টাটকা। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগই-এর মৃত্যুর পর সেই শূন্যতা এখনও পূরণ হয়নি।

বিজেপি সফল হয়েছে বহুমুখী কৌশলে— ধর্মীয় মেরুকরণের পাশাপাশি নানা জনমুখী প্রকল্প। আদিম নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলিকে শান্ত রাখা, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন অমান্য আন্দোলনের অভিঘাত হালকা করবার জন্যে কৌশলগত নীরবতা বজায় রাখা এবং বদরুদ্দিন আজমলের বিরুদ্ধে আক্রমণ মারফত মেরুকরণের আখ্যানটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া— এই সবই তাদের পক্ষে গিয়েছে। অন্যদিকে, নেতৃত্বের সঙ্কটে থাকা বিরোধীরা সম্মিলিত একটি ফ্রন্ট গড়ে তুলতেই ব্যর্থ হয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং তথাকথিত বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা মহাজোটের বেমিলগুলিকেই সামনে নিয়ে এসেছে।

যে মেরুকরণ অসমে দেখা যাচ্ছে এবারের নির্বাচন তাকে আরও বৈধতা দিল। যদিও এআইইউডিএফ-এর আসন সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু সারা রাজ্যে দলটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে। অন্যদিকে, দলটিকে অসমের সংস্কৃতির পক্ষে বিপজ্জনক হিসেবে তুলে ধরতে পেরেছে বিজেপি। এমনকি এআইইউডিএফ-কে পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের পার্টি বলেও চিত্রিত করা হয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন জনজাতীয় পরিচিতিকে একটা সুরক্ষা দেয়, ভোটাররা তাই মহাজোট এবং এআইইউডিএফ-কে ততটা গ্রহণযোগ্য মনে করেননি। আবার ওদিকে, লকডাউনের পর অর্থনৈতিক শ্লথগতির কারণে জনকল্যাণকারী প্রকল্পগুলিতে উপকৃতের সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে গেছে। এই সবের সঙ্গে সুদক্ষ নির্বাচন পরিচালনা এবং জোট নির্মাণ বিজেপি-র স্বপক্ষে গেছে। নিজেদের এলোমেলো ঘর নিয়ে বিরোধীদের ফলত রাজ্যে বিজেপি-কে দ্বিতীয়দফা শাসনের জন্য ফিরে আসতে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না।


*লেখাটি মূল ইংরাজি থেকে বাংলায় তর্জমা করেছেন সত্যব্রত ঘোষ

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4650 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...