স্বপ্ন হলেও সত্যি

সোমনাথ মুখোপাধ্যায়

 

একদিন রাতে এক স্বপ্ন দেখিনু…

প্রতিদিনের মতো মাকে জড়িয়ে ধরে পরম নিশ্চিন্তে শুয়েছিল একনাথ— একনাথ অরবিন্দ শিভালকার। খানিক আগেই দেওয়ালে টাঙানো দেওয়ালঘড়ি টুংটাং শব্দের ঝঙ্কার তুলে জানিয়ে দিয়েছে— এখন দুটো বাজে। একনাথ তা টের না পেলেও অহল্যা, একনাথের মা, এই সুরেলা আওয়াজ টের পায়। গরমে গলাটা কেমন শুকিয়ে আসে। দু-ঢোক জল গলায় ঢালবার ইচ্ছে নিয়ে খুব সন্তর্পণে উঠে পড়ে সে। আলতো হাতে একনাথের হাতটা সরিয়ে মেঝেতে পা রাখে অহল্যা। ঘরের ভেতর জ্বলতে থাকা বাল্বের মৃদু আলোয় জলের বোতলটাকে দিব্যি নজরবন্দি করে ফেলে সে। ঢাকনি খুলে বেশ খানিকটা জল গলায় ঢালে ঢকঢকিয়ে। একবার বাথরুম ঘুরে এলে হয় না? এই ভেবেই পরবর্তী গন্তব্যের দিকে পা বাড়ায় অহল্যা।

আন্ধেরি ইস্ট-এর এই থ্রি-বিএইচকে ফ্ল্যাটটা বেশ বড়। অহল্যার ছোট সংসার। স্বামী অরবিন্দ, মেয়ে সোলাঙ্কি, ছেলে একনাথ আর নিজে। মাঝে মাঝে দেশ বারামতী থেকে শাশুড়ি মা আর শ্বশুরমশাই এসে থাকেন ওদের সঙ্গে। তখন যেন একনাথের খুশি আর ধরে না।

বাথরুমের আলো নিভিয়ে ঘরের দিকে পা বাড়াতেই অহল্যার কানে আসে ছেলে একনাথের আর্ত-চিৎকার—

–আই, মুম্বাই বুডত আহে… পাপা, মুম্বাই বুডত আহে…

তড়িঘড়ি শোওয়ার ঘরে ছুটে এসে আলো জ্বালে অহল্যা। ছেলের পাশে ঝুঁকে পড়ে জিজ্ঞাসা করে— কায় ঝালে? তু স্বপ্ন পাহত আহেস কা? একনাথ, কায় ঝালম বেটা? উঠুন বসা, আনি থোড়ে পানি পেয়া।

একনাথ মায়ের হাত থেকে গ্লাস নিয়ে জল খায়। একটু ধাতস্থ হয়েছে মনে করে অহল্যা খুব শান্ত কণ্ঠে আবারও প্রশ্ন করে—

–কায় ঝালে? তু স্বপ্ন পাহত আহেস কা?
–কুঠে! কাহিচ ঘড়লাম নাহি— না, কিছু হয়নি তো— একনাথের নির্লিপ্ত উত্তর। নিজের জায়গায় শুয়ে পড়ে ঘুমজড়ানো কণ্ঠে মাকে উদ্দেশ করে বলে— আই, ঝোপায়লা জা। রাত্র অজুনা বাকি আহে।

পায়ের কাছে ভাঁজ করে রাখা পাতলা চাদরটা গায়ে টেনে দিতে দিতে অহল্যা জবাব দেয়— হোয় বাবা, ঝোপায়লা জাত আহে। তু ঝোপ।

ছুটে চলা ঘড়ির কাঁটা আরও খানিকটা পথ পাড়ি দিয়ে ফেলে এই অবসরে।

 

খোঁজখবর…

বাড়ির কাছেই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ পাতিলের চেম্বার। ছেলের হাত ধরে সন্ধেবেলায় পৌঁছে যায় কর্তা-গিন্নি। আগে থেকেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া ছিল। ডাক পেতে সময় লাগে না। একনাথ এখন একদম স্বাভাবিক। গতকাল রাতের ঘটনা বিন্দুমাত্র স্মরণে নেই তার। অহল্যাই সব খুলে বলে ডাক্তারকে। বেশ খানিকক্ষণ ধরে একনাথকে পরীক্ষা করেন তিনি, নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেন। কিন্তু না, কোথাও কোনও অসঙ্গতি নেই। তাহলে?…

–শিভালকার সাহেব, একনাথ মধ্যে বিসঙ্গতি নাহি। একদম ঠিকঠাক। তবে ওর স্বপ্নটা বিচিত্র বটে। আইআইটি মুম্বাইতে আমার এক বন্ধু আছে, প্রফেসর দেশমুখ। আমি তাকে বিষয়টা জানাচ্ছি…

ডাঃ পাতিলের কথায় অনেকটাই স্বস্তি বোধ করে শিভালকার দম্পতি। একনাথের হাত ধরে আন্ধেরির কোলাহলময় রাজপথে নেমে আসে তারা। এবার?

 

ওভার টু প্রফেসর দেশমুখ…

মুম্বাই আইআইটির ভিড়ে ঠাসা কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রফেসর দেশমুখ বেশ উদ্বেগভরা কণ্ঠে বলেন—

আপনারা সবাই হয়তো শুনে খানিকটা অবাক হবেন যে আমাদের সকলের প্রিয় মুম্বাই শহর একটু একটু করে ডুবছে। না, না, আমি কোনও নৈতিক আদর্শের স্খলনসূত্রে ‘মুম্বাই বুডত আহে’ কথা কটি বলছি না। আক্ষরিকভাবেই প্রতি বছর ২ মিলিমিটার হারে বসে যাচ্ছে মুম্বাই মহানগর। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না যে খুব সম্প্রতি আইআইটি মুম্বাইয়ের একদল গবেষক এই বিষয়ে গবেষণা করে এমন সিদ্ধান্তে এসেছেন। আমরা আমাদের গবেষণাপত্রটি জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার জার্নালে প্রকাশ করেছি। আপনারা প্রয়োজন মনে করলে সেই গবেষণাপত্রটির ফটোকপি জোগাড় করে নিতে পারেন।…

এই বসে যাওয়া বা ডুবে যাওয়ার বিষয়টি যে একান্তভাবেই মুম্বাইয়ের সমস্যা তা কিন্তু নয়। পৃথিবীর প্রায় ১০০টি দেশের বিজ্ঞানীরা এমন গবেষণার কাজ পরিচালনা করেছেন, সংগৃহীত তথ্যরাশিকে অনুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেছেন এবং তারপরই অতীব গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টিকে সুনির্দিষ্ট তথ্যের আকারে প্রকাশ করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে চিনের উপকূলবর্তী শহর তিয়ানজিন বছরপিছু ৫.২২ সেন্টিমিটার হারে বসে যাচ্ছে। বলা বাহুল্য, গোটা পৃথিবীর নিরিখে এই হার সর্বাধিক। জার্নালে প্রকাশিত একটি তালিকা থেকে জানা যাচ্ছে যে এমন অবনমন হারের বিচারে পৃথিবীর প্রথম দশটি উপকূলীয় শহর হল:

  1. তিয়ানজিন— ৫.২২ সেমি (চিন)
  2. সেমারাং— ৩.৯৬ সেমি (ইন্দোনেশিয়া)
  3. জাকার্তা— ৩.৪৪ সেমি (ইন্দোনেশিয়া)
  4. সাংহাই— ২.৯৪ সেমি (চিন)
  5. হো চি মিন সিটি— ২.৮১ সেমি (ভিয়েতনাম)
  6. হ্যানয়— ২.৪৪ সেমি (ভিয়েতনাম)
  7. চট্টগ্রাম— ২.৩৫ সেমি (বাংলাদেশ)
  8. কোবে— ২.২৬ সেমি (জাপান)
  9. কোচি— ১.৯৬ সেমি (ভারত)
  10. হাউস্টন— ১.৯৫ সেমি (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)

সভাঘরে উপস্থিত মানুষজন পরস্পরের মুখ-চাওয়াচাওয়ি করতে থাকে।

 

কেন এই অবনমন?

প্রথমেই বলি এমন অবনমন খুব অস্বাভাবিক ঘটনা, তেমনটা কিন্তু নয়। প্রকৃতি পরিবর্তনশীল, ফলে নানা প্রাকৃতিক ঘটনা যেমন ভূকম্প, প্রাকৃতিক শক্তিসমূহের দ্বারা ভূপৃষ্ঠের ক্ষয়সাধন, মাটিকণার সংবদ্ধকরণ, চুনাপাথর দ্বারা গঠিত অঞ্চলে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শিলাস্তরের বিয়োজন, উল্লম্ব ভূ-আলোড়ন, এসবের ফলে ভূপৃষ্ঠের কোনও বিশেষ অঞ্চল বসে যেতে পারে। মরুভূমি অঞ্চলে বায়ুর ক্ষয়কাজের ফলে বালুকারাশির অপসারণ হলেও এমন বসে যাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে। এমনই সব প্রাকৃতিক কারণে ভূপৃষ্ঠের কোনও বিশেষ সংবেদনশীল অংশের অবনমন ঘটতে পারে। তবে এমন সব প্রাকৃতিক কারণে মুম্বাই সহ বিশ্বের বেশ কিছু সমৃদ্ধশালী জনপদের অবনমন হচ্ছে এমন মনে করছেন না বিজ্ঞানীরা। তাঁরা এই বিষয়ে আঙুল তুলেছেন সম্পূর্ণভাবে মনুষ্যকৃত কারণগুলির দিকে। তাঁদের মতে মানুষের অবুঝ, অনিয়ন্ত্রিত কার্যকলাপের ফলেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। কী সেই সম্ভাব্য কারণগুলি? একনজরে দেখে নেওয়া যাক।

মনুষ্যকৃত কারণগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল অপরিকল্পিতভাবে ভূগর্ভস্থ জল বা ভৌমজলের উত্তোলন। এ-কথা আমাদের সকলেরই জানা যে, নীলগ্রহ পৃথিবীতে জলের জোগান অফুরন্ত— কিন্তু যে-জল আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহারে লাগে তার প্রায় সবটাই হল ভৌমজল।

কলকাতা, মুম্বাই, বৃহত্তর দিল্লির মতো জনবহুল মহানগরে জনসংখ্যার বিপুল চাপ রয়েছে। এর ফলে মহানগরের পরিসর ক্রমশ বাড়ছে। আজ নগর-সংলগ্ন শহরতলিগুলিও বিলকুল ঢুকে পড়েছে মহানগরের ছত্রচ্ছায়ায়। মুম্বাই আইআইটি তাদের গবেষণায় লক্ষ করেছে যে, মূল মুম্বাইয়ের কেন্দ্রক অঞ্চলের সঙ্গে সঙ্গে অবনমনের সমস্যা বাড়ছে চার্চগেট, কোলাবা, বাইকুল্লা, কলবা দেবী, কুর্লা, পূর্ব আন্ধেরি, মুলুন্দ, দাদার, পূর্ব নাহুর, ওয়াদালা সহ তারদেও, ট্রম্বে, ভানডুপ এবং গোবান্দির মতো প্রথাগতভাবে চিহ্নিত শহরতলি অঞ্চলগুলিতেও। প্রায় সব ক্ষেত্রেই এমন অবনমনের মাত্রা ১-২ মিলিমিটারের মধ্যে। আসলে এমন ঘটনা অনেকগুলি বিষয়ের পারস্পরিক কার্যকারণ সম্পর্কের ফল।

একবার বৃহত্তর মুম্বাই মহানগরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতিচিত্রের দিকে তাকানো যাক:

সাল জনসংখ্যা
১৯৫০ ৩,০৮৯,০০০
১৯৬০ ৪,৪১৫,০০০
১৯৭০ ৬,৪১৩,০০০
১৯৮০ ৯,২০০,০০০
১৯৯০ ১২,৩৫৫,০০০
২০০০ ১৬,১৪৭,০০০
২০১০ ১৮,২৫৭,০০০
২০২০ ২০,৪১১,০০০
২০২২ ২০,৯৬১,০০০

পাশাপাশি আরও একটি বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দেওয়ার কথা বলব। সেটা হল, মুম্বাই মহানগরে স্কাইস্ক্র্যাপার ও বহুতল আবাসনের সংখ্যাবৃদ্ধির পরিসংখ্যান। সাম্প্রতিক এক তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, মুম্বাই শহর ও শহরতলিতে আকাশচুম্বি অতিকায় আবাসনের সংখ্যা ২০০টি এবং নির্মীয়মান বহুতলের সংখ্যা ১২০০০+। এমন বাড়ির সংখ্যার নিরিখে মুম্বাই এখন পৃথিবীর তৃতীয় স্কাইস্ক্র্যাপার নগর।

এই দুটি পরিসংখ্যান থেকে মুম্বাই মহানগরের ক্রম-অবনমন প্রবণতা বিষয়ে একটা স্পষ্ট আভাস পাওয়া যাচ্ছে। একটু খোলসা করে বলি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বাড়ছে জমির ওপর চাপ, নাগরিক আবাসনের জন্য বাড়ছে নগর-পরিসীমা, বাড়ছে উল্লম্ব নগরায়ণ প্রক্রিয়া, বাড়ছে পরিসরের কংক্রিটিকরণ, কমছে ভৌমজলের সঞ্চয়, বাড়ছে জলের চাহিদা, বাড়ছে ভৌমজলের অপরিকল্পিত উত্তোলন, নামছে ভৌমজলস্তর, কমছে ভূ-অভ্যন্তরস্থ ভারসাম্য, বাড়ছে নগর-অবনমনের আশঙ্কা। এ হল এক সহজ সরল হিসেব। একেই সমুদ্র-প্রান্তিক অবস্থানের কারণে অদূর ভবিষ্যতে মুম্বাই, কলকাতা সহ উপকূলীয় ভারতের একটা বড় অংশের ভূমিভাগ সমুদ্রজলের আগ্রাসী প্লাবনে নিমজ্জিত হবে বলে মনে করছেন তথ্যাভিজ্ঞ বিজ্ঞানীদের একাংশ; পাশাপাশি ভৌমজলের অপরিকল্পিত উত্তোলনের ফলে মুম্বাই মহানগরের অবনমন মুম্বাইয়ের অস্তিত্বের সঙ্কটকে যেন ক্রমশই ঘনীভূত করছে। ভূগর্ভস্থ ভৌমজল পৃষ্ঠীয় স্তরের ঔদস্থিতিক ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা নেয়। ভৌমজল উত্তোলনের ফলে সেই স্থিতাবস্থার সাম্য নষ্ট হলে ভূমিভাগ একটু একটু করে বসে যেতে থাকে। মুম্বাই সহ অন্যান্য বড় বড় শহরের এই কারণেই সম্ভবত অবনমন ঘটছে।

এর পাশাপাশি ভূ-অবনমনের অন্যান্য মনুষ্যকৃত কারণগুলি হল, ভূগর্ভ থেকে খনিজ দ্রব্য উত্তোলন, প্রাকৃতিক জলাভূমির পুনরুদ্ধার, নিজেদের স্বার্থে বাস্তুতান্ত্রিক পরিবেশের পরিবর্তন এবং উন্নয়নের নামে পরিকাঠামোর নির্মাণকাজ প্রভৃতি। এইসব কারণের মধ্যে খনিজ সম্পদ আহরণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রানিগঞ্জ, আসানসোলের মতো কয়লাখনি অধ্যুষিত অঞ্চলে এমন অবনমনের ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে।

পরিবেশবিদরা এই অবনমনের বিষয়টিকে এক নীরব বিপর্যয় হিসেবে অভিহিত করেছেন। যেহেতু অবনমনের বিষয়টি সেই অর্থে দৃষ্টিগ্রাহ্য নয়, সেহেতু বিষয়টিকে উপেক্ষা করার একটা প্রবণতা রয়েছে। ফলে বড় রকমের বিপর্যয় ঘটার আগেই সতর্কতা প্রয়োজন।

 

কলকাতা, কেমন আছ তুমি?

কলকাতার দরজায় টোকা মারতেই সেই অবিস্মরণীয় গানের কথা কটি ভেসে এল আমার প্রিয় শহরের অন্দরমহল থেকে—

আমার শহরে, শুকিয়ে যাচ্ছে জল,
আস্তে আস্তে, লুকিয়ে যাচ্ছে জল।
…অন্য কোথাও চল।

ইংরেজ আমলের ‘সিটি অফ প্যালেস’ আজ শ্রীহীন, একঠায় দাঁড়িয়ে থাকা বহুতল হর্ম্যমালার ভিড়ে ক্রমশই ভিড়াক্রান্ত। ফলে মুম্বাই মহানগরের অবনমন সমস্যার অভিঘাত আমাদের শহরেও এসে লেগেছে। কিছুকাল আগে সেন্ট্রাল গ্রাউন্ডওয়াটার বোর্ড এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ রিমোট সেন্সিং-এর উদ্যোগে এক সমীক্ষা চালানো হয়। এই সমীক্ষা থেকে জানা যায় যে কলকাতাও অবনমন সমস্যায় আক্রান্ত। মানুষের প্রয়োজনের কথাকে ঢাল করে যথেচ্ছভাবে তোলা হচ্ছে মাটির নিচের জল, যার ফলে বছরে গড়ে প্রায় ১৫.৫৩ মিলিমিটার হারে আমাদের কলকাতা শহর বসে যাচ্ছে। এই অবনমনের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা গেছে দক্ষিণ কলকাতার কসবা, গড়িয়াহাট এবং ঢাকুরিয়া অঞ্চলে। মাঝেমাঝেই সংবাদপত্রে বহুতল হেলে যাওয়ার ঘটনা ছাপা হয়। এমন ঘটনা ভৌমজলস্তরের অবক্ষয়ের ফলেই ঘটছে। গবেষক বিজ্ঞানীদের মতে নবীন পলিগঠিত কলকাতার মাটির ওপর কংক্রিটের ভার ক্রমশই বাড়ছে, যা খুব ইতিবাচক প্রবণতা নয়। তাঁদের মতে মাটির তলা থেকে এক মিটার পরিমিত ভৌমজলস্তরের অবনমনের ফলে পৃষ্ঠভাগ প্রায় ৩.২৮ মিলিমিটার হারে বসে যায়। ২০১৩ সালের এক পূর্ববর্তী সমীক্ষার সূত্রে জানা যায় যে পূর্ব কলকাতার উল্টোডাঙা অঞ্চল ভৌমজলের ব্যাপক আরোহণের ফলে (৯ মিটার) বার্ষিক ১৮.২৩ মিলিমিটার হারে বসে যাচ্ছে। এই তথ্য থেকে একটা বিষয় খুব স্পষ্ট হয় যে, অবনমনের সমস্যা আজ প্রায় কমবেশি সমস্ত শহর তথা মহানগরের স্থিতির বিষয়টিকে এক বড় প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এখন সময় সতর্ক হওয়ার। নাহলে গায়ক উপলের সঙ্গে গলা মিলিয়ে আমাদেরও গাইতে হবে— চল, অন্য কোথাও চল…

 

একনাথ, তোমাকে…

একনাথ, এখন কেমন আছ? তোমার স্বপ্নের সূত্র ধরে আজ অনেক অনেক কথা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিলাম। আমাদের বাংলায় বলে ‘ভোরের স্বপ্ন’ না কি সত্যি হয়! কিন্তু তোমার মাঝরাতে দেখা স্বপ্নও যে এভাবে সত্যি হয়ে উঠবে তা আগে কখনও ভাবিনি। শহর বাড়ছে। আর তার সঙ্গে বাড়ছে ইট-পাথর-বালি-সিমেন্টের মোড়কে সব কিছুকে মুড়ে ফেলার প্রবণতা। এই লেখাটা তোমার বন্ধুদের মধ্যে ছড়িয়ে দিও— হা লেখ তুমচ্চা মিত্রাসহ শেয়ার করা। চাঙ্গলে রাহা। আবারও কথা হবে— পুন্থা বোলনারা…

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4660 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...