একটি তিরস্কারে প্রভু, একটি তিরস্কারে

প্রবুদ্ধ বাগচী

 

ভদ্রমহিলা মূলত টিউশনি করে সংসারকে কিছুটা সুরাহা দেওয়ার চেষ্টা করেন। আজকাল কলকাতা ও শহরতলিতে প্রচুর ইংরেজি মাধ্যমের বড় বড় স্কুল তৈরি হয়েছে। উচ্চবিত্ত তো বটেই মধ্যবিত্তদের বাড়ির ছেলেমেয়েরাও সেখানে ভিড় জমায়। অভ্রংলেহী টিউশন ফি ও নানান বিনোদনের জন্য মূল্য ধরে দিতে হলেও সেখানে ক্লাসে কী কতটা পড়াশোনা হয় তা নিয়ে জিজ্ঞাসা আছে। কারণ, প্রতিটি এরকম বিদ্যায়তনের আশেপাশে বাসা বেঁধেছে ডাউনস্ট্রিম টিউশনি বাজার। এবং তাঁর জাঁকজমকও দেখার মতো। আমাদের কিশোরবেলায় কলেজ স্ট্রিটের আশেপাশে ‘সত্যদার কোচিং’-এর বিজ্ঞাপন খুব চোখে পড়ত, সেখানে ভর্তি হলে গ্র্যাজুয়েশনে পাশ করা আটকায় কে? যদিও সেই ‘সত্য’কে আমরা কেউ চোখে দেখিনি— কে না জানে সত্য আসলে কল্পনার চেয়েও বিস্ময়কর। শিয়ালদহ থেকে কলেজ স্ট্রিট এলাকায় ছিল এমন অনেক কোচিং সেন্টার যারা এমএ পরীক্ষার নোট দিত ও তাদের সেন্টারে ভর্তি হলে মোটামুটি সেই পরীক্ষায় যেমন তেমনে উতরে যাওয়ার গ্যারান্টি ছিল। সেইসব কোচিং সেন্টারের অন্দরমহলের কাহিনি কিছুটা লিখে গেছেন সুধীর চক্রবর্তী তাঁর ‘লেখাপড়া করে যে’ সঙ্কলনে। সেগুলো বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকের গল্প, কিন্তু একুশ শতকের এইসব কোচিং-ধন্য গুরু বা গুরুমাদের কাটআউট দেখা যায় তাঁদের প্রচারে, দেওয়ালে ঝোলানো ফ্লেক্সে শ্রীমুখের ছবি তো মাস্ট। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরের কথা অনেক দূর— এইসব কোচিং শুরু হয় কিন্ডারগার্টেন বা তারও আগের প্রবেশিকা পরীক্ষায় চাঙ্গা করে বাবা-মায়েদের সবেধন নীলমণিদের প্রতিযোগিতার আখড়ায় পেশ করার জন্য। যে যুগের যে হাওয়া।

কিন্তু যে ভদ্রমহিলার কথা তুললাম, তাঁর অভিজ্ঞতা কিঞ্চিৎ আলাদা। অবশ্য, আলাদা কিনা জানি না এটাই হয়তো দস্তুর। বিপুলা এ-বিশ্বের কতটুকু জানি! কোনও এক নামী শিল্পগোষ্ঠী পরিচালিত স্কুলের নিচু ক্লাসের একটা ছেলেমেয়েদের গ্রুপে কোচিং দেন এই শিক্ষয়িত্রী। মুলত তারা হিন্দিভাষী। সামনে পুজো থাকায় তাদের আন্টিদিদি ব্যক্তিগত দু-একটা কাজে তাদের কোচিং-এ খানিক অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলেন। পুজোর পরেই নাকি ওইসব পড়ুয়াদের পরীক্ষা। এসব ক্ষেত্রে যা হয়ে থাকে, সচরাচর পরিবারের অভিভাবকরা এরকম ‘অনিয়ম’ বুঝলে নিজেরা একটু অপেক্ষা করেন, খেয়াল রাখেন সত্যিই শিক্ষক/শিক্ষিকা এই বিষয়ে কী ভাবছেন বা কী করছেন। আমাদের পুরনো অভিজ্ঞতায় আমরাও দেখেছি উচ্চমাধ্যমিক স্তরে কোনও প্রাইভেট টিউটরের কাছে হয়তো নিয়ম করে যাচ্ছি, কিন্তু তিনি ঠিক যত্ন করে পড়াচ্ছেন না— যেন একটু এলেমেলো। এসব ক্ষেত্রে দুটো প্রতিক্রিয়া। প্রথমত, প্রাইভেট পড়তে এসে বন্ধু-বান্ধবীদের যে নরক গুলজার, মাস্টারমশাই না পড়ালে তাতে আরও ইন্ধন বাড়ে। আর খুব সিরিয়াস পড়ুয়া হলে একটু বাধোবাধো— বড়জোর বাড়িতে বাবা-মায়ের কাছে মৃদু অনুযোগ। অবশ্যই তার জন্য অভিভাবকরা মাস্টারমশায়ের বাড়ি বয়ে এসে তাঁকে চেপে ধরার মতো ধৃষ্টতা দেখাবেন না, এটা জেনে নিয়েই। কিন্তু আমাদের এই কাহিনির ধরন আলাদা। শিক্ষিকা ভদ্রমহিলার বয়ান অনুযায়ী তাঁর ওই ‘স্নেহাস্পদ’ ছাত্রছাত্রীরা দিদিমণির ‘বেচাল’ দেখে নিজেরাই বিশুদ্ধ হিন্দি ও অশুদ্ধ ইংরিজিতে তাঁকে বলা যায় একরকম কড়কেই দিলেন। মোটামুটি চলনসই বাংলায় তার ভাবানুবাদ করলে দাঁড়ায়, তোমার যেসব ব্যক্তিগত কাজ আছে সব দ্রুত সেরে নাও, পুজোর পরে কোনওভাবেই পড়ানো কামাই করা যাবে না, তেমন হলে আমরা খুব ‘পরেশানি’তে পড়ব (এবং তুমিও)! মনে রাখতে হবে, সংসারকে ঠেকা দেওয়ার জন্যই ইনি প্রাইভেট কোচিং করেন। বাড়তি ‘পরেশানি’তে জড়িয়ে পড়ে তার কোনও সুরাহা হবে এমন নয়। সুতরাং…

অনুগ্রহ করে, ধরণী দ্বিধা হও-টও জাতীয় কোনও কথা বলবেন না!

কারণ, পাড়ার দোকানদার আপনাকে পচা পাউরুটি গছিয়ে দিলে আপনি তার মুখের ওপর সেই রুটি ছুড়ে দিয়ে হয় টাটকা রুটি আদায় করেন নয় টাকা ফেরত নেন। এমনকি পাশের দোকান থেকেই পরের দিন রুটি বা বিস্কুট কিনবেন, আচমকাই এই সিদ্ধান্তের দিকে হেলে পড়েন। নগদ পয়সায় কেনা কিছু গুণেমানে খারাপ হলে আপনার ‘পরেশানি’কে আপনি বেবাক হজম করে নেবেন যুগের হাওয়া এমন কোনও মাথার দিব্যি আপনাকে দেয়নি। সুতরাং আমাদের আখ্যানের দিদিমণির ছাত্রছাত্রীদের হাতে এই বেইজ্জতি নিয়ে খুব বেশি যে অবাক হওয়ার আছে এমন বোধহয় নয়। সেই কোনকালে দাদাঠাকুর বলেছিলেন, তিনি শীতকালে ট্যাঁকে একটি পয়সা গুঁজে রাখেন— পয়সার গরমেই তাঁর শীত কমে যায়! এও একরকমের সেই টাকার গরম। শুনেছি, বেসরকারি সব দামি স্কুলে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সামনে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নাকি র‍্যাপিড ফায়ারের মুখে পড়তে হয়— তাঁরা কড়ায়গণ্ডায় হিসেব বুঝে নেন। আর বাবা-মা যদি এই সুযোগ পান তবে তাঁদের সন্তান-সন্ততিরাও সেই প্রিভিলেজ নেবেন না কেন?

 

দুই.

সমস্ত বেহিসেবি অভ্যাসের পেছনেই একটা গড়ে ওঠা ছক থাকে। প্রাইভেট শিক্ষিকার ওপর ‘খবরদারি’ সাধারণ ঘটনা না ব্যতিক্রমী সেই সমীক্ষা করার কোনও পরিসর আমাদের সামনে নেই। কিন্তু গত পাঁচ/সাত বছরে শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ও সম্প্রচারিত বিজ্ঞাপনগুলি যদি একটু খেয়াল করে দেখা যায় তাহলে দেখা যাবে এক গুরুত্বপূর্ণ বদল। একটা সময় প্রচারমাধ্যমে মূল বিজ্ঞাপনদাতা ছিলেন প্রধানত পোশাক, অলঙ্কার বা ভোগ্যপণ্যের নানারকম বিক্রেতারা। শাড়ি গয়না জুতো ইলেক্ট্রনিক পণ্য প্রসাধনী সাবান শ্যাম্পু ইত্যাদির পাতাজোড়া বিজ্ঞাপনে ভরে উঠত সংবাদপত্রের পাতা এবং সংবাদ বা বিনোদন চ্যানেলের প্রাইমটাইম। ক্রেতার চোখজুড়োনো সেই রঙিন হাতছানিতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই সে এক পোয়াবারো অবস্থা। দিন বদলিয়েছে। একটু নজর রাখলেই দেখা যায়, এই বড় বড় বিজ্ঞাপনদাতার তালিকায় ঢুকে পড়েছে নামজাদা কোচিং সেন্টার, বৃত্তিমুখী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বিশালাকার কর্পোরেট স্কুল, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ইত্যাদি ইত্যাদি। সকালের কাগজ হাতে নিয়ে হেডলাইন অবধি পৌঁছাতে গেলেই টপকে আসতে হয় পাতাজোড়া এমন সব রঙিন আলপনা। আর ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে যখন ‘ব্রেকিং নিউজ’ আছড়ে পড়ে এলইডি পর্দায় তখন শাড়ি বা অলঙ্কার বিপণির চেয়েও তেজে পর্দার আশেপাশে উছলে ওঠে বেসরকারি স্কুল বা নার্সিং কলেজের কিংবা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় গ্যরান্টি দেওয়া সাফল্যের প্রতিষ্ঠানের চড়া আলো। কী মজার কথা, সংবাদ পরিবেশক যখন কণ্ঠস্বর তুঙ্গে তুলে কোনও বেসরকারি হাসপাতালের রোগী হয়রানি নিয়ে খবর দিচ্ছেন সেই প্রতিবেদনটিই স্পনসর করছেন ভিন্ন একটি বেসরকারি হাসপাতাল, পর্দার তলায় গড়িয়ে যাচ্ছে তাদের লোগো! এই যে ডাক্তারি পড়ুয়াদের প্রবেশিকা পরীক্ষায় জালিয়াতি নিয়ে রগরগে খবর যার পেছনে প্রাইভেট কোচিং কেন্দ্রগুলির প্রত্যক্ষ কলকাঠি নাড়া— চ্যানেলে চ্যানেলে এই সংবাদ নিয়ে যখন কাটাছেঁড়া হয় তার বিজ্ঞাপনদাতা ওইরকমই কোনও অতিকায় শিক্ষণকেন্দ্র! এইসব ছুটকো মজা ছেড়ে যে কেন আমরা মাল্টিপ্লেক্সে ভুট্টাভাজা খেতে খেতে ‘বই’ দেখতে যাই!

বিজ্ঞাপন আসলে বিনিয়োগের প্রত্যঙ্গ। মোটামুটিভাবে এদের মধ্যে একটা সমানুপাতিক সম্পর্ক আছে। আর বিজ্ঞাপনের দাপট এমনই যে সে আমাদের মধ্যে প্রবল চাহিদার আগুন জ্বেলে দেয় আর সেই আগুনকেই ‘ভাই’ ভেবে আমরা তার ‘জয়গান গাই’— সহজ হিসেব। কিন্তু এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল। আর এইটুকু দিয়েই ওই আগের কাহিনিটাকে মান্যতা দেওয়া চলে না। কথাটা হল পণ্য শব্দের একটা সম্প্রসারণ ঘটেছে ইদানিং। মানছি, শঙ্খ ঘোষ অনেক আগেই লিখেছিলেন ‘নিয়ন আলোয় পণ্য হল যা কিছু আজ ব্যক্তিগত’— সে তো অন্তত চল্লিশ বছর আগে (মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে: প্রথম প্রকাশ ১৯৮৪)। কিন্তু শঙ্খবাবুর লেখায় আসলে ভোগ্যপণ্যের দিকেই ইশারা ছিল বেশি। পরিষেবা বিষয়টাই আলাদা করে পণ্যের চেহারা নেওয়া মূলত বিশ্বায়ন-পরবর্তী দুনিয়ার অবদান। জামা কাপড় জুতো সাবান খাবার এসব একরকম, কিন্তু পড়াশোনা বা চিকিৎসা বা কোচিং এগুলো যে সরাসরি ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্কের উঠোনে পেয়াদা হয়ে দাঁড়িয়ে যায় ও যেতেই পারে এই অভিজ্ঞতার আস্বাদ আমরা অন্তত বিগত দেড় দশকে খুব তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছি। খবর নিলে তাজ্জব হয়ে যাওয়ার মতোই কথা, প্রতিটি ওজনদার বেসরকারি স্কুলে নাকি সেশন শুরু হওয়ার প্রায় সাত-আটমাস আগেই তাদের মার্কেটিং ও বুকিং শুরু হয়ে যায়। পুজোয় বেড়াতে যাওয়ার হোটেল ও রেল বুকিঙের থেকেও যা রোমাঞ্চকর। চলে বিভিন্ন ‘রিবেট’ ও ‘অফার’ যা কিনা বাই ওয়ান গেট ওয়ানের চেয়েও ‘আকর্ষণীয়’। শুধু এখানেই শেষ নয়। এরই পাশাপাশে যেসব প্রাইভেট গুরু বা গুরুমা-র কোচিঙের দাক্ষিণ্য ছাড়া স্কুলের সিলেবাস বা পরীক্ষার পারাপার সম্ভব নয় তারাও সমান্তরালে ঘুঁটি সাজান। বুকিং থেকে অ্যাডভান্স এইসব শব্দগুলো সেখানেও নড়াচড়া করে অনায়াসে। সব মিলিয়ে একটা নরক গুলজার। আর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে এই যে কোচিং সেন্টার, সম্প্রতি এর একটা বিরাট বাজার খুলে গেছে মূলত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলির দিকে চোখ রেখে। সাধারণভাবে সরকারি চাকরির সুযোগ ক্রমশ কমে আসছে অথচ তার চাহিদা তুঙ্গে— অর্থনীতির এই বুনিয়াদি প্রবণতায় কোচিং সেন্টারগুলির রমরমা।

বুঝতে অসুবিধে নেই যেখানে এত বিপুল বিনিয়োগ সেখানে চাকরিপ্রার্থী উপভোক্তাদের স্বার্থ দেখার দায় কোথাও না কোথাও থেকেই যায়। ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তির জন্য যারা কোচিঙের পেছনে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢালছেন তাঁরাও কোথাও একটা বিনিয়োগ ফেরত পেতে চাইবেন। এই চাওয়াপাওয়ার দ্বন্দ্ব থেকেই ধূসর এলাকার বিকীর্ণ অন্ধকার। প্রতিযোগিতার প্রবল চাপে বেড়ে উঠছে আত্মঘাতের পরিসংখ্যান আর একইভাবে দুর্নীতির ছায়া এসে ঢেকে নিচ্ছে প্রত্যেকটি প্রতিযোগিতার আসর। এটা কাঁচা পয়সার দস্তুর। আমাদের ছেলেবেলায় এই বাড়তি পয়সা কবুল করে আমরা ফিল্মের টিকিট ব্ল্যাকারদের থেকে কিনতাম না? এখন তার থেকে কয়েক হাজার গুণ বেশি মাসুল দিয়ে একটা ডাক্তারি পড়ার সিট বা চাকরির পরীক্ষার প্রশ্ন বা ফাঁকা উত্তরপত্রের বিনিময়ে ইন্টারভিউ লেটার কিনতে আমরা রাজি আছি। কিনছিও, প্রকাশ্যেই। কারণ আমাদের পকেটে রেস্ত আছে, আমাদের টাকা খরচের হক আছে, আমাদের ‘কানেকশন’ আছে, আমাদের মাথায় অনেকের ‘হাত’ আছে। ‘আমাদের ভয় কাহারে?’

 

তিন.

সঙ্কোচের বিহ্বলতা আসলে নিজেদের অপমান বলেই আমরা সবার ওপরে কাঁচা পয়সাকে সত্য বলে মেনে নেব। আর মেনে নেব বলেই আমাদের কচি প্রজন্মকে আমরা সাধ্যাতীত খরচ করে সেরা প্রতিষ্ঠানে পড়াব, সেরা কোচিঙের উপকূলে স্থাপনা করব। আর নিজেদের যারা শ্রেষ্ঠত্বের রিলে রেসে ঘাম না ঝরাতে দেখবে তারা তো ভাবতেই পারে, শ্রেষ্ঠত্বের অর্জনের বদলে তা কিনে নেওয়াই আমাদের জন্মগত ও পারিবারিক অধিকার। আমরা রীতিমতো গাঁটের কড়ি খরচ করে শিক্ষা কিনছি, কোচিং কিনছি, স্বাস্থ্য পরিষেবা কিনছি— হ্যাঁ, নোট গুনে গুনে খরিদ করছি। সুতরাং আমাদের শিক্ষিকা, আমাদের কোচিঙের স্যার বা আন্টিরা আমাদের কেনা গোলাম বা বাঁদি— অসুবিধে কোথায়?

তাই নগদ মূল্যে কেনা আমাদের পণ্যে সামান্য খুঁত পেলেই আমরা তাদের মান-সম্মানের মুখে নুড়ো জ্বেলে দেব। আমাদের মা-বাবা অবধি যাওয়ার আগেই আমরা নিজেদের মাল নিজেদের দায়িত্বে বুঝে নেব। ‘চাঁদির জোর’ তো এভাবেই বধির করে দিতে পারে আমাদের সংবেদন। কিন্তু তাতে কী? এই ব্যবস্থার নাগরদোলায় যাঁরা ঘুরপাক খাচ্ছেন এখনও তাঁদের তো দুটি শ্রবণেন্দ্রিয় আছে— হয় তাঁরা সে-দুটি কর্তন করে ফেলুন, নয়তো এসব জ্বালাযন্ত্রণা একদিক দিয়ে ঢুকিয়ে অন্যদিক দিয়ে বার করে দিন।

‘খেতে তো হবেই বাবা, না খেয়ে মরব নাকি!’

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4998 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...