যুদ্ধের সবচেয়ে বড় বলি নারী ও শিশুরা

শ্রীরূপা বন্দ্যোপাধ্যায়

 


যুদ্ধ শুরু হলে শুধু স্বাভাবিক জীবনযাত্রার বিপর্যয় নয়— পরপর ঘনিষ্ঠজনের মৃত্যু, পঙ্গুত্ব, নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি দুর্বিষহ যন্ত্রণার পাশাপাশি, প্রথম বলি হয় নারীর মানবাধিকার। শত্রুদেশের সেনা, এমনকি কখনও কখনও নিজের দেশের সেনাদের হাতেও বলাৎকারের শিকার হন মহিলারা। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে প্রায়শই এটাই নারীদের নিয়তি হয়ে ওঠে

 

সদ্য একটি যুদ্ধপরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছি আমরা। এখনও চারদিকে যেন তার রেশ রয়ে গেছে। সীমান্তঘেঁষা গ্রামগুলিতে মানুষ হয়তো আজও সতর্ক ও সন্ত্রস্ত। রাত নামলেই দুঃস্বপ্নে জেগে উঠে এখনও হয়তো মা বুকে জড়িয়ে নিচ্ছেন শিশুসন্তানকে। মিলিটারির বুটের শব্দে কেঁপে উঠছে কিশোরীর বুক।

যুদ্ধ বিধ্বস্ত করে দেয় সাধারণ মানুষের জীবন। রুজি-রোজগার নষ্ট হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চূড়ান্তভাবে বিপর্যস্ত হয়। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন নারী ও শিশুরা। পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার কারণে এমনিতেই মেয়েরা বৈষম্যের শিকার; যুদ্ধপরিস্থিতি তাঁদের ওপর আরও বহুরকম নিপীড়ন বাড়িয়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে সেই বৈষম্যের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তোলে। একদিকে যেমন স্বাভাবিক জীবন ধ্বংস হয়, তেমনি পরিজনের মৃত্যু, পঙ্গুত্ব, নিখোঁজ হয়ে যাওয়া কিংবা যে-কোনও মুহূর্তে ধর্ষণের আশঙ্কা তাঁদের জীবনকে অসহনীয় করে তোলে।

শিশুরাও যুদ্ধের ভয়াবহতার হাত থেকে রেহাই পায় না। যারা কোনওভাবে প্রাণে বেঁচে যায় বা পঙ্গুত্ব এড়িয়ে যেতে পারে, তাদের মধ্যেও জন্ম নেয় গভীর মানসিক জটিলতা। আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তার মধ্যে বড় হয়ে ওঠা এইসব শিশুদের পক্ষে আর কোনওদিনও সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না— এমনকি যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলেও না।

গোটা দুনিয়াজুড়েই আজ রক্তাক্ত সংঘর্ষ ও হানাহানির বিরাম নেই। ভারত-পাক সাম্প্রতিক সংঘর্ষে সেই উত্তাপের সামান্য আঁচ আমরাও টের পেয়েছি। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৬০ কোটি নারী ও শিশুকন্যা যুদ্ধের কারণে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। গত দশ বছরে এই সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে।[1]

যুদ্ধ শুরু হলে শুধু স্বাভাবিক জীবনযাত্রার বিপর্যয় নয়— পরপর ঘনিষ্ঠজনের মৃত্যু, পঙ্গুত্ব, নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি দুর্বিষহ যন্ত্রণার পাশাপাশি, প্রথম বলি হয় নারীর মানবাধিকার। শত্রুদেশের সেনা, এমনকি কখনও কখনও নিজের দেশের সেনাদের হাতেও বলাৎকারের শিকার হন মহিলারা। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে প্রায়শই এটাই নারীদের নিয়তি হয়ে ওঠে।

ঘরবাড়ি, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীদের ছেড়ে শরণার্থী শিবিরে মাথা গুঁজে বেঁচে থাকার লড়াই শুরু হয়। সেখানে শৌচব্যবস্থা-সহ প্রয়োজনীয় ন্যূনতম পরিকাঠামোর চরম অভাব তাঁদের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তোলে। এর মধ্যে তাঁদের ওপর নির্ভরশীল নাবালক সন্তানদের রক্ষা করার প্রবল উদ্বেগ প্রতিটি মুহূর্তে মানসিকভাবে ছিন্নভিন্ন করে দেয় যুদ্ধবিধ্বস্ত নারীদের।

যুদ্ধ শেষ হলেও নারীদের মনে যে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়, তা সহজে মোছে না। অনেকেই আর কোনওদিনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন না।

 

উদাহরণ হিসেবে প্যালেস্তাইনের গাজা ভূখণ্ডের দিকে তাকানো যেতে পারে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মদতপুষ্ট ইজরায়েলের একটানা হানাদারিতে সেখানকার আরব-অধিবাসীদের জীবন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। লাগাতার বোমাবর্ষণ, আজীবনের বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ হয়ে আশ্রয়ের খোঁজে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটে চলা, এবং বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, খাদ্য ও পানীয় জলের মতো ন্যূনতম প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব— এসব মিলিয়ে গাজার মানুষের জীবন আজ এক নির্মম, অমানুষিক বাস্তবতায় বন্দি।

সর্বক্ষণ আক্রান্ত হওয়ার ভয়, স্বজন হারানোর আতঙ্ক— এইসবের মধ্যে বেঁচে থাকতে থাকতে গাজার অধিকাংশ নারী আজ মারাত্মক মানসিক সমস্যার শিকার। রাষ্ট্রসঙ্ঘের পরিসংখ্যান বলছে, সেখানকার প্রায় ৭৫ শতাংশ নারী চরম অবসাদগ্রস্ত। ৬২ শতাংশ রাতের ঘুম হারিয়েছেন, আর ৬৫ শতাংশ নারী যদি বা চোখের পাতা এক করতে পারেন, দুঃস্বপ্ন ও উৎকণ্ঠার তাড়নায় সেই সামান্য স্বস্তিও টিকতে পারে না।

নিজের প্রাণ বাঁচানোর চিন্তার চেয়েও বড় হয়ে ওঠে একটিই প্রশ্ন— এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও কিভাবে নিজের শিশুসন্তানকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে।[2]

 

একই পরিস্থিতি ইউক্রেনেও বিরাজমান। সেখানেও বছরের পর বছর ধরে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানকার মহিলাদের উপর নিপীড়ন প্রায় ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যে-কোনও মুহূর্তে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা, সন্তান-পরিজন হারানোর ভয়, জীবনযাত্রার বিপন্নতা, হামলা থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি ছেড়ে ক্রমাগত গ্রাম কিংবা নিরাপদ স্থানের খোঁজে পলায়ন— এসব কারণে সেখানকার নারীসমাজ নানা ধরনের মানসিক অস্থিরতার শিকার হচ্ছে।

যুদ্ধের আগের সময় যাঁরা অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর ছিলেন, যুদ্ধ তাঁদের ঘরের চার দেওয়ালে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছে। এর ফলে শুধু আর্থিক দুরবস্থা নয়, মানসিক স্বাস্থ্যেও গভীর অবনতি লক্ষ করা যাচ্ছে।[3]

 

সন্ত্রাসবাদ ধ্বংসের নামে বছরের পর বছর হামলা চালিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ ইউরোপের কয়েকটি সাম্রাজ্যবাদী দেশ আফগানিস্তানকে ধূলিসাৎ করেছে। অথচ, দুঃখের বিষয়, এত সত্ত্বেও সন্ত্রাসবাদ রোখা গেল না। বরং আফগানিস্তানের শাসনভার এখন ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তি তালিবানদের হাতে চলে গেছে। ফলে সেখানে নারীসমাজের অগ্রগতি সম্পূর্ণরূপে থেমে গিয়েছে। নারী অধিকারের কণামাত্র অবশিষ্ট নেই। উপার্জন করে স্বনির্ভরশীল হওয়া তো দূরের কথা, আফগানিস্তানে এখন মেয়েদের পড়াশোনা করাই সঙ্গীন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই করুণ বাস্তবতার মধ্যে, রাষ্ট্রসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তানের প্রায় ৭০ শতাংশ মহিলা মানসিকভাবে গভীর বিপর্যস্ত। তাঁদের সব স্বপ্ন আজ ধূলিসাৎ হয়ে গেছে।[4]

 

ফলে সাম্প্রতিক ভারত-পাক যুদ্ধ প্রসঙ্গে প্রাক্তন সেনাপ্রধান শ্রী মনোজ নরবনে যে বলেছেন— যুদ্ধ কোনও রোমান্টিক বিষয় নয়, এটি বলিউডের সিনেমাও নয়”— তা সর্বাংশে সত্য। আবেগঘন ভাষায় তিনি দেখিয়েছেন, যুদ্ধের প্রভাব বিশেষ করে শিশুদের উপর কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। যুদ্ধ কেমনভাবে তাদের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত করে, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে।[5]

বাস্তবিকই, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলিতে যুদ্ধ এক অভিশাপ— যার সবচেয়ে বড় বলি বোধহয় নারী ও শিশুরাই।


[1] এই তথ্য জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, সশস্ত্র সংঘাত ও সহিংসতার রেকর্ড মাত্রার মধ্যে, নারীদের অধিকার ও সমতা অর্জনের জন্য দশকের পর দশক ধরে অর্জিত অগ্রগতি হুমকির মুখে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, “নারীদের নেতৃত্ব ও শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণের রূপান্তরমূলক সম্ভাবনা ক্ষুণ্ন হচ্ছে।”

এই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ৬১২ মিলিয়ন নারী ও শিশুকন্যা “ভাবছে যে বিশ্ব তাদের ভুলে গেছে, এবং তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এজেন্ডা থেকে বাদ পড়েছে।”

আগ্রহী পাঠক পড়ে দেখতে পারেন: Lederer, Edith M. War affects over 600 million women and girls, UN says. AP News. Oct 26, 2024.

এছাড়াও, UN Women-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে “Women, peace, and security” শীর্ষক পাতাতেও এই বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে।

[2] গাজায় নারী ও শিশুদের ভয়াবহ অবস্থা: এক নজরে

  • মানসিক স্বাস্থ্য সংকট: গাজায় প্রায় ১০ লাখ শিশু মানসিক স্বাস্থ্য ও মনোসামাজিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার মুখোমুখি হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই বিষণ্নতা, উদ্বেগ এবং আত্মহত্যার চিন্তায় ভুগছে।
  • পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যসেবা সংকট: ২০২৫ সালের মে থেকে ২০২৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত, পাঁচ বছরের নিচে প্রায় ৭১,০০০ শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার হতে পারে, যার মধ্যে প্রায় ১৪,১০০ শিশু চরম তীব্র অপুষ্টিতে ভুগবে।
  • নারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি: গাজায় প্রায় ৫০,০০০ গর্ভবতী নারী এবং নবজাতকরা স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টিকর খাদ্য, নিরাপদ জল এবং স্যানিটেশন সুবিধার অভাবে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
  • শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ: গাজায় চলমান সংঘর্ষের ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়েছে, যার ফলে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষা ব্যাহত হয়েছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

আগ্রহী পাঠক পড়ে দেখতে পারেন:

[3] ইউক্রেনের নারী ও শিশুদের যুদ্ধজনিত মানসিক স্বাস্থ্য সংকট

নারীদের অবস্থা:

  • বাড়ছে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা: UNFPA-এর “Voices from Ukraine” রিপোর্ট অনুযায়ী, যুদ্ধ চলাকালীন নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা তাদের নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
  • আর্থিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ: যুদ্ধের ফলে অনেক নারী তাদের চাকরি হারিয়েছেন, যা আর্থিক অনিশ্চয়তা ও মানসিক চাপ বৃদ্ধি করেছে।

শিশুদের অবস্থা:

  • মানসিক স্বাস্থ্য সংকট: UNICEF-এর মতে, প্রায় ১.৫ মিলিয়ন শিশু বিষণ্ণতা, উদ্বেগ, এবং PTSD-র ঝুঁকিতে রয়েছে, যা তাদের দীর্ঘমেয়াদি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় বিঘ্ন: যুদ্ধের কারণে ৮০০-রও বেশি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং বহু শিশু টিকাদান ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
  • আবাসন সংকট ও উদ্বাস্তু জীবন: যুদ্ধের ফলে প্রায় ৫.৯ মিলিয়ন মানুষ, যাদের ৮৮ শতাংশ নারী ও শিশু, ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়ে গেছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে বড় উদ্বাস্তু সংকট।

আগ্রহী পাঠক পড়ে দেখতে পারেন:

[4] জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তানে নারীদের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। UN Women-এর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আফগান নারীদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে “খারাপ” বা “অত্যন্ত খারাপ” বলে বর্ণনা করেছেন। এছাড়া, ৮ শতাংশ নারী জানিয়েছেন যে তারা এমন কাউকে চেনেন, যিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এই পরিস্থিতির পেছনে রয়েছে তালিবান শাসনের অধীনে নারীদের উপর আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধ, যা তাদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সামাজিক জীবনে অংশগ্রহণের সুযোগ সীমিত করেছে।

অন্যদিকে, PBS-এর একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ আফগান নারী উদ্বেগ, একাকিত্ব এবং বিষণ্ণতার অনুভূতির বৃদ্ধি অনুভব করেছেন, যা পূর্ববর্তী ৫৭ শতাংশ থেকে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।

আগ্রহী পাঠক পড়ে দেখতে পারেন:

[5] War is not romantic, Bollywood movie, says ex-Army chief Naravane. Economic Times. May 12, 2025.

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 5088 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...