![mithi](https://i2.wp.com/www.4numberplatform.com/wp-content/uploads/2019/07/mithi.jpg?resize=678%2C381&ssl=1)
চার নম্বর নিউজডেস্ক
পাকিস্তান। যেকোনও শহর, গ্রাম, জেলা, ফর এক্স্যাম্পল করাচি ধরতে পারেন। মুসলিমপ্রধান শহরের অধিকাংশ হিন্দু মন্দির সঙ্কটে। ৩৬০টি মন্দিরের বারোটা এখনও বেঁচে। দরজায় পুলিশি সতর্কতা। বন্দুক। দেশের সংখ্যাগুরুর দাপট। সংখ্যালঘু হিন্দুদের সঙ্কট। মাস-এক্সোডাস। ম্যাসাকার, বিক্ষিপ্ত থেকে বড়সড় হত্যা— নতুন কিছু নয়।
অন্যদিকে সীমান্ত। শত্রু দেশ। রাজস্থান। বালির পর বালি। দারিদ্র। রুক্ষতা। বেঁচে থাকার লড়াই।
তার মাঝে মিঠি। পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের থারপারকার জেলার গ্রাম। স্বতন্ত্র। কেন?
দেশের সামান্য কয়েকটি হিন্দু প্রধান গ্রামের একটি। ৬০০০০ জনসংখ্যার আশি শতাংশই হিন্দু। সম্ভবত ভারত থেকেই একদল গোষ্ঠী ওদেশে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। অবশ্য এদেশ ওদেশ বলাই অসমীচীন। এই টার্মিনোলজি, হিংসার পরম্পরা, ভাগাভাগির পরম্পরা আধুনিক রাজনীতির উপসর্গ। তখন তো সবাই এক …। রুক্ষতার কথা। কৃষিকাজ সম্ভব না। কীভাবে বাঁচবেন? কেন, শুধুই ভালোবাসা দিয়ে। যে ভালোবাসা এখনও চলছে…
ডিটেলিং। সম্প্রীতির গল্প। রমজান মাস। হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ প্রকাশ্যে খান না। বিয়ের সম্বন্ধ ঠিক হলে রমজান মাসে আটকে রাখেন। আগে পেরোক, তারপর। শ্রীকৃষ্ণ মন্দির। দরজায় কোথাও বন্দুকধারী রক্ষী নেই। যে কেউ অবাধে প্রবেশ করতে পারেন। মসজিদে আজানের সময়ে শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে ঘণ্টাধ্বনি হয় না। মন্দিরের পুজোর সময়ে আজানের লাউড স্পিকার নিষিদ্ধ। গবাদি পশু। খোলা হাওয়ায় ঘুরে বেড়ায়। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ এই গ্রামে গো-হত্যা করেন না। সুফিজম। শিক্ষা। পরম্পরা। অব্যাহত মিঠিতে।
মহরমের শোভাযাত্রা। দেখার মতো। বর্ণাঢ্য। স্বতন্ত্র কোথায়? হিন্দুদের অংশগ্রহণ। তাঁদের দায়িত্ব নিয়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণ। অনেক সময়ে শোভাযাত্রার সামনের সারিতে হিন্দুরা। এবং আনুষ্ঠানিকতায় অংশগ্রহণে মুসলিম বন্ধুরা। হোলি উৎসব। রং। তুমুল উল্লাস। ধর্মের অবান্তরতা রঙের ঝরনায় ধুয়ে যাওয়ার গল্প। যেন অপূর্ব এক নদী প্রবহমান। মরুভূমির শুকনো মাটিতে যেন অন্তঃসলিলা। কোথায় শুরু, কোথায় শেষ, জানা নেই।
অপরাধের হার দুই শতাংশ। আজ পর্যন্ত কোনও সাম্প্রদায়িক সমস্যা হয়নি। বাপ-ঠাকুর্দা থেকে চলে আসা ভ্রাতৃত্ব। আজও ধরে রাখা।
আশার কথা। তাহলে আশঙ্কা? আছে কি? মিঠি তো দ্বীপ না। দেশের ভেতরের এক ব্যতিক্রমী অংশ। কতদিন থাকবে? সমস্যা শুরু হচ্ছে। এখনও আঁকড়ে ধরে আছেন দুই ধর্মের বন্ধুরা। বহিরাগত ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন থেকে চাপ। উসকানি। এই সম্প্রীতিকেই চিরকাল ভয় মৌলবাদের। সে যে রঙেরই হোক। যে ধর্মেরই হোক। মৌলবাদ হাত ধরে চলাকে ভয় পায়, ঈর্ষা করে। তাই ভেতর থেকে খেলা শুরু করে। ব্রেইনওয়াশ। ঐক্য ভাঙার পুরনো ছল, কৌশল, খেলা।
সেই ঐক্য, যা এখনও ধরে রেখেছে মিঠির ষাট হাজার মানুষ। হাতগুলো যেন আলগা না হয় …