পাঁচটি কবিতা
প্রস্তুতি
অন্ধ না হলে কি কেউ ছায়া দেয়? ঐ যে তরুণী
আমাকে আড়াল ভেবে শিহরণ-দৃশ্য রেখে গেল
সেই থেকে, শুচি নেই
ঈর্ষার উপর কোনো পতঙ্গ বসে না
নিঃসূর্য ব্যাধের মন্ত্রে বিঁধে ওঠে বসন্তগুটি ও খররোদ
সায়াহ্নে উদাস লাগে
চোখ খুবলে ঢাকি বজ্রপাত
জ্বলে উঠবার আগে আমিও নিষ্প্রভ এক কাঠ
কথা
১
কেউ বাক্য লুকোচ্ছে না। সেসব কথার কথা খাঁচা এঁটে রাখি। যেন খাদ। যেন নরম দাঁতের কোনো বাঘ
বন্ধুদের খেয়ে ফেলতে পারে
২
কথা নিয়ে নুইয়ে পড়ছ, কথাকলি
কথা নাও, কথা দাও, কথার বন্ধক
ছাই চাপা। ফুঁঃ ওড়াও। সোনা নয়, কেউটে ফলেছে
অপত্য কবিটি ছিল? সেখানে ছিল না
সব কথা ক্ষয়ে যাচ্ছে মৃতদের মগজ ধোলাইয়ে
৩
এতদূর জল
এতদূর কথা
জলে থাকে মাছ
কথা সন্ত্রাসে
জলে সন্ন্যাস
কথা সঙ্গম
বিধর্ম নাড়ির থেকে ধু ধু শ্বেতমন্ত্র ধেয়ে আসে
অভাবের ঘরে ধারাপাত
এক-এ সঙ্গ, দুই-এ দুঃখ
তিন-এ তছনছ দিন
খিদে, অভ্যেসে উড্ডীন
চার-এ চারখান, পাঁচ-এ পাতলাম
ছয়-এ ছিদ্র হাত
ভাত, জানি দুঃসংবাদ
জল নামছে, ভুলে যাচ্ছে
বিগত উচ্ছ্বাস
রোজ হায়না হয়ে গুনি দীর্ঘশ্বাস
দশ-এ দিক, তাও অন্ধ লোকটাও
চোখে বিঁধছে সুচ
পিঠে অভাব আমার বংশগত কুঁজ
কৌতূহল
সহজেই কাটা পড়ে যাচ্ছি
এই ঘটনায় কারও হাত নেই
হস্তক্ষেপ ছুঁয়েছে গহীন
পা নেই। অথচ ভুল পদক্ষেপে
যথেষ্ট ঋতুর আঁচ
ডুবে যাচ্ছে নেশা ও নৃশংসে
রহস্য এমনই। কেবল ছুতো না পেলে
সমান মানুষগুলো অসামান্যে ফাঁস হয়ে পড়ে
শব্দাতঙ্ক
কী আতঙ্ক ধরেছে, উদ্বায়ী!
দিনরাত শব্দের ঘেউ ঘেউ
এই তো যথেষ্ট ছক
ভেঙে যাচ্ছে
তার লেজ সোজা করতে গিয়ে
বরং ধনুক নম্র। শোনো
আমার ভোগের ঘোরে
কবিতা লেলিয়ে দিলে
বলে দিচ্ছি — লিখে যাব
তোমাকেই নগ্ন চাঁদ করে