গুচ্ছ কবিতা

মইনুল হক

 

চড়ুইভাতি

বকুলতলায় চাঁদ নেমে এলে
আমরা চড়ুইভাতির আয়োজন করি
কৃষ্ণর পিসি আমাদের সার্বজনীন সেফ
পরিবেশন করেন অদ্ভুত কৌশলে
কারোর ভাগে কম বেশি হয়না

তবুও টুকরো মেঘের ছায়ায়
ঢাকা পরে মাংসের বাটি
চিৎকার করে বলি
আমারটায় হাত দিবিনা
পিসির হাত থাকে বাটির উপরেই

এক্কা দোক্কা খেলতে খেলতে
পিসির হাতেই রয়ে গেছে খালি বাটি

পিসি তুমি কখন খাবে?

 

বৃষ্টি এলে

বৃষ্টি এলে গাছ থেকে ডেয়ো পিঁপড়েরা বেরিয়ে আসে
মুখে ডিম আর
আর কি থাকে তাতো দেখিনি

ডিমের ভিতরে লার্ভারা নড়াচড়া করে
কখনো কখনো ছাদ কার্নিশ বেয়ে গড়িয়ে পড়লে
কাঠ পিঁপড়েরা আসে

উড়ন্ত পাখিদের তখন উৎসব শুরু হয়

বৃষ্টি এলে গাছ থেকে ডেয়ো পিঁপড়েরা বেরিয়ে আসে

 

কৃত্তিবাসী রামায়ণ

কৃত্তিবাসী রামায়ণের পাতায় পাতায় ভক্তি

রাম অযোধ্যা থেকে লঙ্কায় গেলে ধুন্ধুমার বেধে যায়

সীতাকে দেখতে কেমন ছিল বলে মনে হয়?

বাব্বা! হরধুনুটার ওজন বলবে!

হনুমানের কি অসম্ভব প্রভুভক্তি

মারিচ কি অসম্ভব বুদ্ধিমান
দারুণ সাজানো পরিকল্পনা

পারলে রাড় বাংলায় একবার এসো
তোমায় ছউ নাচ দেখাবো

 

কোনও রাস্তা নেই

আমাদের গ্রামে পৌঁছানর তিনটে রাস্তা
কোন রাস্তা দিয়েই বাস ট্রেন চলে না
কেবল টোটো আর মোটর ভ্যানে
মানুষ গাদাগাদি করে যাতায়াত করে
শহর থেকে গ্রাম আর গ্রাম থেকে শহর

গুজরাট কি তামিলনাড়ু কতদুরে আমরা জানিনা
গনেশ বাবুলাল আর বসির জানতো
ফি বছর ওরা আসাযাওয়া করত

গ্রামে আসার সময় কোনোকিছুর পরোয়া করতো না
টোটো আর মোটর ভ্যানের থেকেও জোরে দৌড়ত

ওরা জানতো টোটো মোটর ভ্যান বাস ট্রেন
সবার নিজের নিজের রাস্তা আছে

তবুও ওরা জানতোনা ওদের কোন রাস্তা নেই

আমাদের গ্রামে পৌঁছানর এখনও তিনটে রাস্তা

 

মানত

বৈশাখ মাসের পয়লা থেকে পীরের মেলা
মখদুম শা পীর খুব জাগ্রত

পীর পুকুরে স্নান করে শুদ্ধ মনে মানত করে
কামনা পূর্ণ হলে পরের বছর মানত শোধ করে ভক্ত

মোরগ খাসী বা আতপ চাল
যে কোন কিছুতেই মানত রক্ষা হয়

রাত ভ’র কাওয়ালি আর ফকিরি গানে
মুগ্ধ শ্রোতা

চাকরি করা বরে বিয়ে হয়েছে মেয়ের
বছর ঘুরতেই ছেলে

গত তিনমাস চাকরি নেই জামাই-এর
মানত শুধবো কিসে

 

Be the first to comment

আপনার মতামত...