‘অ্যাপল’-এর সতর্কবার্তা: কাকতালীয় বলে উড়িয়ে দেওয়ার উপায় নেই

অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়

 


প্রযুক্তিগতভাবে এই সতর্কতামূলক বার্তাগুলি পাওয়ার ক্ষেত্রে যে-বিন্যাস বা ‘প্যাটার্ন’ দেখা গিয়েছে, তাও কিন্তু বিশেষ এক রাজনৈতিক অঙ্কের দিকেই ইঙ্গিত করেছে। যে-কয়জন রাজনীতিকের তরফে এই বার্তা পাওয়ার বিষয়টিকে সামনে আনা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই বিজেপি-বিরোধী কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত— এবং, এহ বাহ্য, একমাত্র আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ব্যতীত, প্রত্যেকেই নব-গঠিত বিরোধী-জোট ‘ইন্ডিয়া’র সদস্যও বটে

 

দেওয়ালেরও কান আছে! এই আপ্তবাক্যে গলদ নেই কোথাও। বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃত্বের উপর রাষ্ট্রের গোপন নজরদারির ইতিহাস নতুন নয়। ১৯৭২-এর নিক্সন-জমানার ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে আজ অবধি সেই ট্র্যাডিশন অব্যাহত থেকেছে। ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৮ সাল— টানা পাঁচ বছর, বলতে গেলে মৃত্যুর দিন অবধি কৃষ্ণাঙ্গ সমাজকর্মী মার্টিন লুথার কিং (জুনিয়র)-এর ওপর মার্কিন প্রশাসন তথা এফবিআই-এর তরফে নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শোনা যায়, শেষ জীবনে কম্যুনিজমের প্রতি তিনি সহানুভূতিশীল— এই অভিযোগের ভিত্তিতে জগদ্বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক ও চিন্তক অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের উপরেও নাকি সরকারি নজরদারি চলত। কাজেই রাষ্ট্রের এই অভ্যাস সম্পর্কে আমরা অনেকদিন ধরেই ওয়াকিবহাল। তবুও গণতন্ত্রের প্রয়োজনে, নিরাপত্তার প্রয়োজনে, নীতি ও আইনের প্রয়োজনে, এমন একেকটি ঘটনা যখন প্রকাশ্যে এসে পড়ে— দলমতনির্বিশেষে তার প্রতিবাদ করা উচিত। তদুপরি সংশ্লিষ্ট সরকারেরও উচিত অবিলম্বে সেই বিতর্ক-নিরসনে যথাযথ তদন্ত শুরু করা ও অপরাধী যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। কিন্তু এসবই আদর্শ সংসদীয় পরিবেশে ঘটে থাকে। যে রাষ্ট্রে আজ সংবিধানেরই অস্তিত্ব বিপন্ন, তেমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে এ-ধরনের অভিযোগ উঠলে, কেবল এই অভিযোগের বিষয়টি জনতার আদালতে তুলে আনা ভিন্ন, আইনের পথে বড় একটা কিছু করার অবকাশ থাকে না। বিরোধীকণ্ঠ রোধ, ও যেনতেনপ্রকারেণ সদ্য গড়ে ওঠা বিরোধী ঐক্যের অভ্যন্তরে ফাটল তৈরির চেষ্টা করা, তাই বোধহয় আমাদের দেশের বর্তমান শাসকের একমাত্র কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তালিকাটা দীর্ঘ। তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্র থেকে জাতীয় কংগ্রেসের শশী থারুর, আপ-নেতা রাঘব চাড্ডা থেকে শুরু করে শিবসেনা (উদ্ধব)-নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদি, এমনকি এআইএমএম-সুপ্রিমো আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, এঁদের প্রত্যেকেরই তরফে গত মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৩— অভিযোগ করা হয়, তাঁদের ব্যক্তিগত স্মার্টফোন বা অন্যান্য অ্যাপল-ডিভাইসে সংশ্লিষ্ট সংস্থার তরফে একাধিক সতর্কতামূলক মেইল বা মেসেজ এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, “অ্যাপল মনে করছে, রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট কোনও সংস্থার তরফে আপনাদের ডিভাইসে নজরদারি চালানো হয়েছে বা চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে।” এই ঘটনার কথা সামনে আসতে স্বভাবতই রাষ্ট্র-রাজনীতির অঙ্গনে হইচই পড়ে গিয়েছে। কমবেশি ১২ জন বিরোধী নেতানেত্রীর তরফে এমন মেসেজ বা অ্যালার্ট আসার কথা জানানো হয়েছে। ঘটনার পরেপরেই বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধি একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে এই বিষয়ে তাঁর আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব পালটা আরেকটি সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান সরকারি তরফে এমন কোনও নজরদারি করা হয়নি। তিনি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং সরাসরি অ্যাপলকেও সেই তদন্তের অংশীদার হতে আহ্বান জানিয়েছেন।

এই বিষয়টিকে নিয়ে বলতে গেলে, আলাদা দুটো দিক থেকে আলোচনা জরুরি। প্রথম দিকটি হল একেবারেই প্রযুক্তিগত। আদৌ এ-ধরনের ‘অ্যালার্ট’ বা সতর্কতার বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া প্রয়োজন কিনা? নাকি, বিজেপির তরফে যেমনটা ইঙ্গিত করা হচ্ছে, এগুলি একেবারেই রুটিন বিষয়। কোনও নির্দিষ্ট ভিত্তি ছাড়াই সংশ্লিষ্ট সংস্থার তরফে এ-ধরনের সতর্কতা পাঠানো হয়েছে। এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার, সংশ্লিষ্ট সংস্থা অ্যাপলের তরফেও সরকারিভাবে জানানো হয়েছে কোনও ‘নির্দিষ্ট রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট সংস্থা’র দিকে তারা অভিযোগের আঙুল তোলেনি। বা এই বিষয়ে প্রকাশ্যে আরও কোনও তথ্য জানাতেও তারা অপারগ। এমনকি অ্যাপলের নিজস্ব ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এ-ও দেখা যাচ্ছে, এ-ধরনের সতর্কতা কোনও কোনও সময়ে ‘ফলস অ্যালার্ম’ হিসেবেও পাঠানো হয়ে থাকতে পারে। অ্যাপল কেবল তাদের নির্দিষ্ট কিছু অ্যালগরিদমের মাধ্যমে সম্ভাব্য এমন কোনও নজরদারির বিষয়ে নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীকে সতর্ক করে দিতে চেষ্টা করে। অ্যাপল এও জানাচ্ছে, নির্দিষ্ট কোনও রাষ্ট্রীয় সংস্থার দিকে তারা যেমন আঙুল তুলবে না, তেমনই— ঠিক কী কারণে বা কোন বিশেষ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নিজস্ব অ্যালগরিদম এ-ধরনের একটি সতর্কবার্তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল, সেই বিষয়েও তারা প্রকাশ্যে কিছু জানাতে বাধ্য নয়। অ্যাপলের তরফে এমন দুটি বক্তব্যের পিছনেও কিন্তু নির্দিষ্ট যুক্তি রয়েছে।

প্রথমত, সরাসরি কোনও নির্দিষ্ট সংস্থার দিকে যদি আঙুল তুলতে হয় তাহলে অ্যাপলের তরফে অযাচিত আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও, অ্যাপলের স্পষ্ট বক্তব্য, অনেক সময়েই এ-ধরনের রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট সংস্থার তরফে নজরদারি চালানোর বিষয়টি এমন অত্যাধুনিক সমস্ত প্রযুক্তি ও যন্ত্রের সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত হয়, সেক্ষেত্রে কোনও যন্ত্রের উপর কোনও আরেকটি যন্ত্রের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হয়েছে— এটুকুই কেবল সতর্কতা-অ্যালগরিদমে ধরা পড়ে। নির্দিষ্ট করে নজরদারির পিছনে থাকা যন্ত্র বা সংস্থাকে সবসময়ে শনাক্ত করে ওঠা যায় না। তদুপরি, ঠিক কী কারণে বা কোন বিশেষ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নিজস্ব অ্যালগরিদম এ-ধরনের একটি সতর্কবার্তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল, সেই বিষয়েও তারা প্রকাশ্যে কিছু জানাতে বাধ্য নয় কারণ— সেই তথ্য জানালে, কীভাবে তাদের সতর্কতা-অ্যালগরিদমটি কাজ করে সেই বিষয়ে আক্রমণকারী সংস্থা বা প্রযুক্তিকে সচেতন করে দেওয়া হবে, এবং পরবর্তীতে সেই আক্রমণকারীও সতর্কতা-অ্যালগরিদমটিকে এড়ানোর রাস্তা খুঁজে বের করে ফেলবে। এছাড়াও, আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে অন্তত প্রযুক্তির দিক থেকে বলা যায়, যতই অ্যাপলের তরফে আইনি জটিলতা এড়াতে ‘ফলস অ্যালার্ম’-এর বিষয়টিকে তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া থাকুক না কেন, এ-ধরনের নজরদারি সম্ভব; এবং অ্যাপল বা তেমন একেকটি সংস্থার দ্বারা নির্মিত তাদের সতর্কতা-অ্যালগরিদমগুলির মাধ্যমে এমন একেকটি ‘ফলস অ্যালার্ম’ জারির সম্ভাবনাও নেহাতই নগণ্য।

এবারে আসা যাক রাজনীতির প্রশ্নে। প্রযুক্তিগতভাবে এই সতর্কতামূলক বার্তাগুলি পাওয়ার ক্ষেত্রে যে-বিন্যাস বা ‘প্যাটার্ন’ দেখা গিয়েছে, তাও কিন্তু বিশেষ এক রাজনৈতিক অঙ্কের দিকেই ইঙ্গিত করেছে। রাজনৈতিক নেতারাও সেই বিষয়টিকে তাঁদের বক্তব্যে তুলে এনেছেন। যে-কয়জন রাজনীতিকের তরফে এই বার্তা পাওয়ার বিষয়টিকে সামনে আনা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই বিজেপি-বিরোধী কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত— এবং, এহ বাহ্য, একমাত্র আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ব্যতীত, প্রত্যেকেই নব-গঠিত বিরোধী-জোট ‘ইন্ডিয়া’র সদস্যও বটে। এই অভিযোগ ক্রমাগত উঠতে থাকায়, ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরের তরফে জানানো হয়, আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলও নাকি এমন সতর্কবার্তা পেয়েছেন। যদিও পীযূষ গোয়েলের তরফে এই বিষয়ে কোনও প্রকাশ্য বিবৃতি মেলেনি। এ-ভিন্ন বিজেপি বা কেন্দ্রীয় শাসকদলের কোনও নেতা বা নেত্রীই এ-ধরনের সতর্কবার্তা পেয়েছেন বলে শোনা যায়নি। কাজেই, বিশেষ একটি দেশের, বিশেষ কিছু বিরোধী রাজনৈতিক দলের উচ্চপদস্থ নেতৃত্বেরাই যদি এমন একটি সতর্কবার্তা একই সময়ে একই সঙ্গে পেয়ে থাকেন, বিষয়টিকে ‘ধ্বংসাত্মক রাজনীতি’ বলে উড়িয়ে না দিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বা দফতরের উচিত পূর্ণাঙ্গ তদন্তের উপরেই গুরুত্ব আরোপ করা।

বিরোধী রাজনীতিকদের উপর নজরদারি চালানোর বিষয়টি এদেশে বা এই সরকারের আমলেও নতুন নয়। এর আগে ২০১৯-এর নভেম্বরে ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও-র বিরুদ্ধে করা একটি মামলায় বহুজাতিক সংস্থা হোয়াটস্যাপের তরফে আদালতে জানানো হয়,[1] পূর্বোক্ত সংস্থার তৈরি পেগাসাস সফটওয়্যারকে ব্যবহার করে বিপুল সংখ্যক হোয়াটস্যাপ-ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য বা বার্তালাপের উপরে নজরদারি চালানো হয়েছে। সেই মামলাতেই হোয়াটস্যাপের তরফে আদালতে জানানো হয়, পেগাসাসকে ব্যবহার করে যে সংখ্যক হোয়াটস্যাপ-ব্যবহারকারীর উপরে নজরদারি চালানো হয়েছে তাঁদের মধ্যে বিপুল সংখ্যায় ভারতীয় বিরোধী রাজনীতিক ও স্বাধীন-নিরপেক্ষ সাংবাদিকদের নাম পাওয়া গিয়েছে। এনএসও-র ঘোষিত নীতি অনুসারে তাঁরা কিছু নির্দিষ্ট সরকারি সংস্থা ব্যতীত আর অন্য কোনও সংস্থাকে পেগাসাস সফটওয়্যারটি বিক্রি করে না। কাজেই ভারতীয় রাজনীতিক-সাংবাদিকদের উপর নজরদারি চালাতে পেগাসাস যদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ভারত সরকারের নির্দিষ্ট পদক্ষেপ ছাড়া আপাতদৃষ্টিতে তা অসম্ভব। এছাড়াও, ২০১৭ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত আরও একটি রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে,[2] ইজরায়েলের সঙ্গে বিশেষ প্রতিরক্ষা-চুক্তি অনুসারে ভারত সরকার পেগাসাস সফটওয়্যারটি ব্যবহারের অনুমতি পায়।

শেষত, আমরা যদি নির্দিষ্ট করে যে-কয়জন রাজনীতিকের তরফে এই অভিযোগ আনা হয়েছে, তাঁদের ব্যক্তিগত কিছু প্রতিক্রিয়া-পদক্ষেপকে খতিয়ে দেখি, শশী থারুর, পবন খেড়া, প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদি— এঁরা প্রত্যেকেই যে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন কেবল তাই নয়, তাঁদের বক্তব্য-ভাষণ-প্রচার ইত্যাদির মাধ্যমে তাঁরা দেশব্যাপী জনমত তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র আদানি-গোষ্ঠীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের যোগসাজশ নিয়ে ও সেই পরিপ্রেক্ষিতে আদানি-গোষ্ঠীর অকল্পনীয় সম্পদবৃদ্ধি নিয়ে একাধিকবার সংসদে ও সংসদের বাইরে সরব হয়েছেন। এর ফলে তাঁর বিরুদ্ধে হঠাৎ ‘টাকার বিনিময়ে তিনি এ সমস্ত প্রশ্ন করেছেন’ এমন এক অদ্ভুত অভিযোগ নিয়ে এসে তাঁকে সংসদীয় এথিকস কমিটির তদন্তের মুখোমুখি হতে বাধ্য করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে তাঁর ব্যক্তিগত কিছু ছবি, জীবনের ঘটনাকে ব্যবহার করে, চরিত্রহননের কদর্য চেষ্টা হয়ে চলেছে। সেই একই সময়ে তাঁর তরফেও এমন সতর্কবার্তা পাওয়ার ঘটনাটিকে কি নেহাতই কাকতালীয় বলে ব্যাখ্যা করা চলে? মনে রাখতে হবে এই আদানি-গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার ‘অপরাধেই’ কিন্তু রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ খারিজের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় শাসকদল জানকবুল লড়াই চালিয়েছিল। সবশেষে আরও একটি তথ্য উল্লেখ না করলেই নয়। ২০২১-এর জুলাইতে স্বাধীন বেসরকারি সংবাদ সংস্থা ‘দ্য ওয়্যার’এর তরফে একটি রিপোর্টে জানানো হয়,[3] পেগাসাস-নির্মাতা এনএসও-র ওয়েবসাইট থেকে ফাঁস হয়ে যাওয়া গোপন বেশ কিছু তথ্য অনুসারে, তাঁদের যে সমস্ত ক্রেতা-সংস্থা রয়েছে, সেই সমস্ত সংস্থাগুলির ফোন-নম্বর থেকে প্রায় ৩০০টিরও বেশি ভারতীয় ফোন-নম্বর মিলেছে। অর্থাৎ ভারতের তরফে পেগাসাস কেনার বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অস্বীকার করা, এই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও কঠিন হয়ে পড়ে। এখানেই শেষ নয়, ১২ জনেরও বেশি রাজনৈতিক নেতার পাশাপাশি, গত ৩১ অক্টোবর ২০২৩— ‘দ্য ওয়্যার’-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরদারাজনের কাছেও অ্যাপলের তরফে নজরদারির সতর্কবার্তা পৌঁছয়!

কাজেই, সবটুকুকে বোধহয় আর কাকতালীয় বলে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না কোনওভাবেই।


[1] Pegasus breach: India denies WhatsApp hack amid outrage. BBC News. Nov 1, 2019
[2] Pegasus: India parliament opens amid furore over Pegasus ‘lies’. BBC News. Jan 31, 2022.
[3] Varadarajan, Siddharth. Pegasus Project: How Phones of Journalists, Ministers, Activists May Have Been Used to Spy On Them. The Wire. Jul 18, 2021.


*মতামত ব্যক্তিগত

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4664 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...