নিশিশেষের তারার মতো

প্রবুদ্ধ বাগচী

 


এই অর্থনীতিটা কি খুব গর্বের মতো? এগুলো কি বোঝায় রাজ্যের অর্থনৈতিক কাজকাম খুব ইতিবাচকভাবে সফল? যদি সারা বছর বেশিরভাগ মানুষের হাতে কাজ থাকে, খরচের মতো অর্থ থাকে, যদি উৎপাদন বা পরিষেবা শিল্প থেকে মানুষ মোটামুটি ভাল পারিশ্রমিক পান তাহলে কেন তাঁকে এই মরশুমি শ্রমের বাজারে নাম লেখাতে হবে?

 

ইদানিং আমাদের ‘সাব্বজনীন দুগগাপুজো’ নিয়ে কথা বলতে গেলেই কেউ কেউ ফোঁস করে ওঠেন। পুজো মানেই নাকি বিশা–আ-ল সব অর্থনীতির ব্যাপার, দুর্গতিনাশিনীর আসল উদ্দেশ্য নাকি বাংলার অর্থনীতির মরা গাঙে হড়পা বান এনে আমাদের উদ্ধার করা। তার ওপর আবার ইউনেস্কো কীসব ঐতিহ্যের তকমা-টকমা দেওয়ায় এখন শখের প্রাণ গড়ের মাঠ। পুজো নিয়ে স্পিকটি নট থাকা ছাড়া আমাদের কোনও উপায় নেই। সদ্য পেরিয়ে-আসা গড়ের মাঠের ওই কার্নিভাল পর্বে (কার নিভাল?) এক সহনাগরিক ফুট কেটে লিখেছিলেন— শিল্পের বিসর্জন, বিসর্জনের শিল্প! কিন্তু বিসর্জন তো ফাইনাল টাচ, তার আগে খুঁটিপুজো থেকে তার মহড়া এবং প্রায় দেবীপক্ষের শুরু থেকেই লাগ ভেলকি লাগ শুরুয়াত। ‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জির’-কে চটকে চটকে তেতো করে ফেলার এক প্রাণান্ত প্রয়াস। মহানগরের কেন্দ্রে চড়াম চড়াম ঢাকের আওয়াজ শুনে ঢাকি তুলে নেওয়া। অবশেষে, মণ্ডপে মণ্ডপে থিমদেবীর চড়া দাগের আরাধনা— যে উদযাপনের পেছনে আঞ্চলিক জায়গিরদার ও তার উঁচু চেয়ারের আশীর্বাদ যে প্রত্যক্ষ, তা ঘোষিত ও প্রদর্শিত হয়ে থাকে মহাফ্লেক্সের বাহাত্তর পয়েন্টের অক্ষরে। কে করছেন, কারা করছেন এই তথ্য আরটিআই-এ চাইলেই যে সব সময়ে পাওয়া যায় এমন নয়। কিন্তু ‘সাব্বোজনীন’-এর সকল নেপথ্য নায়ক-নায়িকা কারা তা না জানালেই নয়। সুতরাং পুজো। সুতরাং কতশো কোটি টাকার যেন অর্থনীতির নাচনকোঁদন।

অর্থনীতির বুনিয়াদি ব্যাপারস্যাপার খুব ভাল বুঝি এমন নয়। কিন্তু ইদানিং দেখি, পুজোকর্তা ও তাঁদের প্রশ্রয়দাতা নানা পক্ষের পুজোর অর্থনীতি নিয়ে জ্ঞান অতি প্রগাঢ়। পুজোর জৌলুসকে ঠিক-ঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে না-পারলে বাংলার অর্থনীতি ধাক্কা খেতে পারে এমন শঙ্কাও কেউ কেউ প্রকাশ করছেন। গরিব ঘরের মা যেমন নিজে খান বা না-খান পুত্র-কন্যার মুখে দুমুঠো অন্নের ব্যবস্থা করে দেন, কার্যত আমাদের পুজো এখন এমনটাই। পুজো করতে হবে শুধু নয়, এখন বলা হচ্ছে পুজো করাতেই হবে। প্রতিটি অর্থবর্ষের শেষবেলায় যেমন সরকারি দফতরে চেতাবনি আসে, বরাদ্দের অর্থ যেমন করে হোক খরচ করে ফেলতেই হবে তেমনি পুজোর আয়োজকদের জন্য যে অনুদান ও ভর্তুকির অর্থ বরাদ্দ হয়েছে সেটা তাঁদের নিতেই হবে, খরচ করতেই হবে— হিসেব-নিকেশ পরে। আগে তুমি টাকাটা নিচ্ছ সেটা কবুল করো, তারপর পুরস্কার, তারপর কার্নিভাল। আর পুজোর অর্থনীতির হিসেবের কী গাণিতিক তত্ত্ব আছে জানা নেই তবে অন্তত এই বছরেও দেখা গেল তার সবচেয়ে কম পরিমাণ যদি পাঁচশো কোটি বলা হয়ে থাকে তবে তার আপার লিমিট নাকি পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা। দু-বছর আগে (২০২২) একটি নিউজ চ্যানেলের ভিডিও ক্লিপিং-এ রাজ্যের অর্থমন্ত্রী বলছেন, পুজোর মরশুমে সরকারের কোষাগারে পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা ঢুকেছে, আবার গত বছরের (২০২৩) একটা নিউজ চ্যানেলে দেখছি বিশেষজ্ঞরা বলছেন রাজ্যে চার হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। অর্থনীতির হিসেবে এত বড় একটা হেরফের হতে পারে? কী জানি, ছোটমুখে বড়কথা হয়ে যাবে হয়তো! এই বছরেই তো প্রথম শিখলাম পুজোর ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে ভেলপুরি বা ফুচকা না-খাওয়া নাকি ‘রাজ্যস্বার্থ-বিরোধী’ কাজ। হলই বা উদরাময় বা গ্যাসের বেদনা কিংবা পিত্তশূল, তাই বলে ভেলপুরি বিক্রেতার পুজোর বাড়তি উপার্জন আটকে দেওয়ার কী অধিকার আছে আমাদের? তাছাড়া, ফুচকা খেয়ে অম্লশূলে বিদ্ধ হলে হাতের কাছে রাখতেই হবে গ্যাসের বড়ি, তাতেও কাজ না হলে স্থানীয় ডাক্তার, বিকল্পে নার্সিংহোমের ‘নিবিড় শুশ্রূষাকক্ষ’। কী অনির্বচনীয় শৃঙ্খল— গ্যাসের বড়ির কোম্পানির লক্ষ্মীলাভ, পাড়ার ডাক্তারের বাড়তি ভিজিট, নার্সিংহোমের বাড়তি আয়। সবটাই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।

মোটা মাথায় যেটুকু বুঝি, পুজো মানে একটা প্রকাণ্ড কেনাকাটার বাজার। প্যান্ডেলের বাঁশ থেকে বিসর্জনের সিদ্ধি সবই কিনতে হয়। জামা-কাপড়-জুতো বা খাদ্যবিপণিগুলিতে নতুন অলঙ্করণের পোঁচ পড়ে, বাড়তি কর্মী নিয়োগ হয়। বাড়তি আয়ের মুখ নিশ্চয়ই তাঁরা দেখেন। প্যান্ডেলের ডেকোরেটার্স, আলোকশিল্পী, শব্দযন্ত্রী সবাই কিছু কিছু ব্যবসা করেন। আজকাল পুজোয় সোনার দোকানগুলিও বিপুল বিজ্ঞাপন দেন, হয়তো তাদেরও সেই খরচ উঠে আসে। ব্যবসা করেন ভ্রমণসংস্থাগুলিও, পুজোর মরশুমে রেল বা বিমানের আসন পাওয়া প্রায় দৈবী যোগাযোগ। কিন্তু সবই আসলে সাময়িক। বিগত কয়েক বছরে মূল পুজোর সময়সীমা ছুটিছাটার আড়ালে দিন পনেরোয় টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, আর, আগে-পরে তার প্রস্তুতিও বেশ অনেকটাই। পুজোর কেনাকাটা তো তার মাসখানেক আগে থেকেই শুরু হয়, আগেও তাই হত। এখন কথাটা হল পাঁচশোই হোক, পাঁচ হাজারই হোক বা পঞ্চাশ হাজার কোটিই হোক এই লেনদেনের বেশিটা যায় কাদের কাছে? নিশ্চয়ই রাজ্যের সাধারণ মানুষের হাতে নয়। আমার কেমন যেন মনে হয়, রাজ্যের সাধারণ মানুষের হাতে যদি বেশ উদ্বৃত্ত অর্থ থাকত তাহলে সেই ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ তাঁরা কোথাও না কোথাও বিনিময় করতে পারতেন সারা বছরেই, আলাদা করে পুজোর জন্য হা-পিত্যেশ করে থাকতে হত না।

এখন কথাটা হল, এই কেনাকেটা বলতে গেলে ক্রেতা-বিক্রেতার আর্থিক সংস্থানের বিষয়টাই সামনে আসে। সাধারণভাবে এই রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা সারা দেশের নিরিখে খুব ভাল এমন নয়। ভারী শিল্পের বিনিয়োগ প্রায় বন্ধ। কৃষিক্ষেত্রের মুনাফা অনেকটাই সঙ্কুচিত হচ্ছে। মাথাপিছু আয়ের বিচারে আমরা যে খুব ভাল অবস্থায় আছি এমন নয়। সবক্ষেত্রেই স্থায়ী কাজের পরিধি কমে গেছে। গ্রামে-শহরে হাতে কাজ জোগানোর জন্য যেসব সরকারি প্রকল্পগুলি ছিল সেগুলো রাজ্য-কেন্দ্র দুই সরকারের ছায়াযুদ্ধে কার্যত অস্তে গেছে। নিতান্ত কিছু অস্থায়ী গিগ-নির্ভর কাজ ছাড়া তেমন কোনও কাজ আমাদের ছেলেমেয়েদের হাতে নেই। দলে দলে অভিবাসী শ্রমিক হয়ে তাদের রাজ্যছাড়া হওয়ার কথা আজ সবাই জানেন। এমনকি রাজ্যে ন্যূনতম দৈনিক মজুরির হার অন্য রাজ্যের চেয়ে বেশ কম। সম্প্রতি আমরা দেখছি উত্তরবাংলার চা-বাগানগুলিতে উপযুক্ত বোনাসের দাবিতে পথে নেমে এসেছেন সেখানকার মহিলা চা-শ্রমিকরা। বন্ধ হয়ে গেছে চা-শ্রমিকদের জন্য চালানো স্বাস্থ্যক্লিনিক, অনিয়মিত ও কম মজুরি দিবালোকের মতো সত্যি। কিছুকাল আগে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান গ্রামের ছেলেমেয়েদের পাড়ায় চপ মুড়ি বিক্রির দোকান করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। চপ মুড়ি পাউরুটি ঘুগনি দিয়ে ঠিক কত হাজার কোটি টাকার অর্থনীতি গড়ে তোলা যায়?

কথাটা হল, মানুষের হাতে ঠিকমতো কাজ না থাকলে, তার মজুরি থেকে উদ্বৃত্ত অর্থ সঞ্চিত না হলে তিনি বাড়তি টাকা বিনিময় করবেন কোথায়? আছে চাহিদা ও ক্রয়ক্ষমতার বিষয়টাও। এটা ঠিক, নির্দিষ্ট একটা বড় মাপের অর্থনৈতিক লেনদেনের কেন্দ্রে থাকলে সাময়িক কিছু বেচাকেনা হয়। পুজোর কেনাকেটার হিড়িক সবরকম বিক্রেতাকেই কিছুটা বাজার দেয়। উৎসবের রোশনাই রাতে দামী পুজো প্যান্ডেলের আশেপাশে নামী খাদ্যবিপণির সামনে যখন কাতার দেওয়া ভিড়, ঠিক তখন ফুটপাথ-জোড়া সাময়িক রোল চাউমিনের দোকানেও খদ্দেরের হুটোপাটি। সবাই ব্যবসা করছেন। কিন্তু এর মধ্যেও একটা উদ্ভট সত্যি আছে। আমরা কমবেশি সবাই নিজেদের অভিজ্ঞতায় জানি, উৎসবের সময় প্রায় সব জিনিসেরই দাম বাড়ে। পোশাক জুতো খাদ্য-সহ যাবতীয় ভোগ্যপণ্য, প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় সব জিনিসই এর মধ্যে ঢুকে পড়ে। সত্যি যদি এত বিপুল পণ্যের চাহিদা থাকে এবং যথেষ্ট মজুত থাকে সবটাই, তাহলে এই দাম বেড়ে যাওয়াকে যুক্তি দিয়ে মানা যায় কীভাবে? আসলে বাড়ে না, বাড়িয়ে দেওয়া হয়? কেউ খুশি হলে মেনে না-ও নিতে পারেন কিন্তু একটু সমীক্ষা করলেই দেখতে পাবেন পোশাক-আশাক অলঙ্কার জুতো ঘড়ি ইলেক্ট্রনিক দ্রব্য প্রতিটির স্বাভাবিক দাম উৎসবের মরশুমের থেকে কম। অনলাইনে ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান ফেস্টিভ্যাল’ বা ‘ধনতেরাস অফার’ যাই থাক, সংবাদপত্রের পাতাজোড়া বিজ্ঞাপনে ‘ধামাকার’ ঘনঘটায় ক্রেতাদের প্রায় জলের দরে সব বিক্রি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও এর অন্তরালটা অত স্বাভাবিক নয় মোটেও। এর একটা কারণ অবশ্যই পণ্যের প্রচারে বিপুল খরচ হয় এই সময়েই। কিন্তু তারও গল্পটা আসলে একইরকম। একটা নির্দিষ্ট সময়কাল, তার মধ্যেই আমার সারা বছরের আয় কুড়িয়ে নিতে হবে। আর সেই কারণেই বিপুল প্রতিযোগিতার মধ্যে টিকে থেকে নিজের ব্যবসাকে উঁচু আয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেন ছেড়ে গেলে বেকায়দায় পড়ে হাত কামড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই। সারা বছর আমার বিপণির বিদ্যুৎ বিলের টাকাটুকু উঠবে তো?

এই অর্থনীতিটা কি খুব গর্বের মতো? এগুলো কি বোঝায় রাজ্যের অর্থনৈতিক কাজকাম খুব ইতিবাচকভাবে সফল? যদি সারা বছর বেশিরভাগ মানুষের হাতে কাজ থাকে, খরচের মতো অর্থ থাকে, যদি উৎপাদন বা পরিষেবা শিল্প থেকে মানুষ মোটামুটি ভাল পারিশ্রমিক পান তাহলে কেন তাঁকে এই মরশুমি শ্রমের বাজারে নাম লেখাতে হবে? খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এই ‘উৎসব মরশুম’-এ বিভিন্ন শহরের ছোট বড় মাঝারি দোকানে শপিং মলে মিষ্টির দোকানে রেস্টুরেন্টে অস্থায়ীভাবে পনেরো দিন বা একমাসের জন্য বাড়তি কর্মী নিয়োগ করা হয় সেটা শুধুমাত্র ওই বাড়তি ক্রেতার ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য। ঠাকুর জলে পড়লেই তাঁদের ছুটি। যেমন গ্রামীণ অনুষঙ্গে ফিরে যান আমাদের ঢাকিরা, প্যান্ডেলে বাঁশ বাঁধা ডেকোরেটর কর্মীরা— এগুলো কোনওটাই তাঁদের সারা বছরের কাজ নয়। হাতে পয়সা আসায় উৎসবের জোয়ারে এসে হয়তো অনেকেই কিছু বাড়তি খরচ করেন এইসময়। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন প্রয়োজনীয় খরচের থেকে বাজে খরচেই মানুষকে চেনা যায় বেশি। সে-সব মেনে নিলেও আদপে তো খরচ করার সংস্থান আসবে কোথা থেকে সেইটাই মূল প্রশ্ন। আসছে কি? অর্থনীতির পণ্ডিতরা কী নিদান দেবেন জানি না, তবে সম্বৎসর কাজের খোঁজে ঘুরে ঘুরে হা-ক্লান্ত হয়ে শুধুমাত্র উৎসবের হুজুগে দু-চার পয়সা রোজগার করা জ্যান্ত অর্থনীতির সঞ্চারপথ কি না সে বিষয়ে সংশয় বিস্তর। তুলনা হিসেবে এই জায়গা থেকেই কিন্তু বইমেলা বিষয়টা ব্যাখ্যা করা হয়। বাংলার প্রকাশকরা শুধু ওই কলকাতা বইমেলার দশ-বারো দিনে নিজেদের সারা বছরের আয়ের বড় অংশ তুলে নেন— বাংলা পুস্তক প্রকাশনার ক্ষেত্রে এটা মোটেই শুভ ইঙ্গিত নয়। বইয়ের ব্যবসার তুলনায় রাজ্যের অর্থনীতি অনেক বড়, কিন্তু প্রবণতাটা প্রায় একই ধরনের। অন্তত কয়েক বছর ধরে পুজো-অর্থনীতি নামে যে মোলায়েম গল্পটা আমাদের স্বাদু করে পরিবেশন করা হচ্ছে তার মধ্যে এইরকম হাজারো প্রশ্নের চোরকাঁটা আছে বইকি!

আমাদের রীতিই এইরকম, উৎসবের মরশুমে শেষপাতে পরিবেশিত হয় বিসর্জনের এক জগঝম্প শোভাযাত্রা। বিপুল এক শব্দের মহাসমুদ্র আকাশ-বাতাস মথিত করে ঢুকে পড়ে আমাদের গেরস্থালিতে, আমাদের জড়োসড়ো মগজে। কোনওরকম ডেসিবেলামির গোঁড়ামি না রেখেই। ডিজে ইজে এফজে থেকে জেডজে অবধি সেই ক্যাকোফনির দুর্নিবার বিস্তার— পারলে বারোটি স্বরের ঝুঁটি ধরে নাড়া দিয়ে সে দাপিয়ে দেখাতে পারে তার প্রবল প্রভুত্ব। এটাও উৎসব। আদপে এই গঙ্গাযাত্রা ওই উৎসবীয় অর্থনীতির। শুধু এক প্রবল বুদবুদের ফুটে ওঠা ও ফেটে যাওয়া। ওই বিসর্জন ‘কার্নিভাল’-এর ফুরিয়ে যাওয়া মানেই মরশুমি কাজের ইতি, যে যার মতো বাকি এগারো মাসের বেঁচে থাকার রসদ কুড়নো। আসছে বছর আবার হবে। হবে তো? ঢাকের বাদ্যি থামলে মিষ্টি শোনায়। না, সবার জন্য নয়।


*মতামত ব্যক্তিগত

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4887 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...