
দশটি কবিতা
সহজ মানুষ
অনেকদিন এভাবে দরজা খোলা আছে…
থাক—
অত ভেবো না
জল দাও
একবিন্দু জল…
তার পর—
নিবিড় বাঁশবনে-জঙ্গলে
ঢাকা পড়ে যাব…
স্বপ্ন
একদিন চলো…
যাওয়া যাক
সুলেমানি দরগায়
যেখানে নীলকণ্ঠ পাখি থাকে
স্বপ্ন—
অনেকদিন আগের…
বাতি
দাও, কেড়েও আবার নাও
কেন, কাঁটার আঘাত দাও
আখড়াতে
কখন যে প্রদীপের বুক জ্বলে যায়
নিভে যায় বাতি
শুধু, ক্ষীণ হয়ে আসে পায়ের শব্দ
ক্ষীণ হয়ে আসে…
পাগল
তাকে ধরা যায় না
তাই, সাবধানে আগলে বসে থাকি
ধরতে গেলে ছিঁড়ে পালায় এমন মিহি
তাকে দেখা যায় না
যেন, জল জমেছে সুতোর উপর
আছে কি নেই, হাওয়ায় দোলে
হঠাৎ-রোদের খানিক ঝলক…
চলে যাওয়ার দিন
বহুদিন প্রতীক্ষার পর
সে আর ফেরে না।
কী জানি কেন?
এই ধুলো রোদ্দুরের মধ্যে
সে একা ঘুরে বেড়ায়,
চলে যাওয়ার দিন এসেছে তবে!
রিফিউজি ক্যাম্পে
শীত ঘন হয়ে এলে
চারদিকে
পঞ্চ শব্দের বাজনা বাজে
একজন মানুষ
একটা দেশ
যেন ডুবে আছে
হাত বাড়িয়ে ডাকছে
বাঁচবার জন্যে
রিফিউজি ক্যাম্প শুধু ভাত খায়
জন্ম
শিরশির করে ওঠে
মাথার ভেতর যত অন্ধকার
কার হাতের কাঁপুনি
এসে লাগে বুকে
এই পড়ে থাকা
শস্যক্ষেতটুকু পার হতে
আমার এক জন্মযুগ কেটে যাবে…
মায়া
আলগোছে ফেলো পা
যদি ফুলে বিঁধে যায় কাঁটা
আমি আছি বলে— কত মায়া
যদি না থাকি— এত দুঃখ, ব্যথা
ডুবে গেলে তারা
দমে দমে জেনে যাবে
জোড়া পাখি ভেঙে গেলে
হয় না তো কথা
শক্তি
যেটুকু আনন্দ
এই যাওয়া-আসার মাঝে।
কোথা থেকে এসেছ!
বেকার এক দেহ
সব শক্তি তোমার কাছে।
শব্দ— স্থির।
টিকটিক— স্থির।
ক্যামেরা— স্থির।
শুধু জলে-ধোয়া এক আলো
ভেসে যায়…
সে
যেন জল,
শান্ত; স্থির।
আমি তো লাঙল মাত্র
জমিতে ঘুরে মরছি একা।
সে—
মাতলে ঝড় ওঠে
রেগে গেলে বানভাসা আত্রাই
কাঁদলে একরাশ বর্ষা।
সবিনয় মার্জনা করো,
আসলে তুমিই তো চাষি।