স্মৃতিপরব: অধ্যায় ২, পর্ব ৪

নীহারকান্তি হাজরা

 

নদ-নদীর সঙ্গমভূমে

অধ্যায় ১: পর্ব ১পর্ব ২পর্ব ৩পর্ব ৪পর্ব ৫পর্ব ৬পর্ব ৭পর্ব ৮পর্ব ৯
অধ্যায় ২: পর্ব ১ পর্ব ২পর্ব ৩

 

সেই সব পথের কথা

দ্বারকেশ্বরের চারটি ঘাটের ভিতর দিয়ে কতগুলি পথ জেলাশহরে ঢুকত। এর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো ঘাট ছিল দ্বারকেশ্বর নদী পার হয়ে আমাদের বাঁকি গ্রাম এবং গন্ধেশ্বেরীর সঙ্গমস্থলকে দক্ষিণে রেখে সোজা চলে যেত লালবাজার হয়ে রানিগঞ্জের মোড়। পথে পড়ত একটি প্রাচীন জনপদ ভূতেশ্বর গ্রাম। এ-পথটিই প্রাচীন অহল্যাবাই রোড। আধুনিককালে এসে কেবল গরুর গাড়ি আর পায়ে চলার পথ হয়ে যায়। আরও পরে আর একটি পথ খড়্গপুর থেকে মেদিনীপুর, চন্দ্র্রকোণা, গড়বেতা, বিষ্ণুপরের ভিতর দিয়ে পৌঁছত সুরমানগর বা সুরপানাগর। এখানে দ্বারকেশ্বরের ঠিক অপরপারে ভাদুল। আগাগোড়া সিংহ এবং পালিত পদবিধারীদের গ্রাম। এই পথটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পাকাপোক্ত হয়ে গিয়ে নাম হয়ে যায় প্রথমে মিলিটারি রোড। তারপরে নাম হয় অহল্যাবাই রোড। বর্ষায় নদী পার হওয়ার জন্য তৈরি হত একটি বালুভূমির উপর পাথর মোরামের রাস্তা। আর যেখানে স্রোত সেখানে লোহার জাল, কাঠের পাটাতন ইত্যাদি দিয়ে সেতু। প্রতি বছর এটি নতুন করে তৈরি হত। তৈরি হত যানচলাচলের উপযুক্ত করে। এই মরশুমি পথটির পঞ্চাশ মিটার উপরে বিএনআর রেলের সেতু। গভীর কূলপ্লাবী বর্ষায় তখন রেলপথই ভরসা। এ-সবের মধ্যে অনেক পরে একটি চিরস্থায়ী সেতু তৈরি হল পাতাকলার ঘাটে। এটিকে লক্ষ করেই অহল্যাবাই রোডের একটি শাখা ভেদুয়াশোল রেলস্টেশনের পাশ দিয়ে চলে এল পাতাকলার সেতুর মুখে। জেলার দক্ষিণ থেকে আসা পথটি সোজা উঠত এই ঘাটে। স্থানটির নাম ধলডাং— ধবলডাঙা (বাঁকুড়া জেলায় কয়েকটি থাকের জাতির পদবই ধবল)। আবার এর আর এক নাম জগদল্লা। এটি একটি বহু জাতির বড় গ্রাম। দ্বারকেশ্বর নদী-সংলগ্ন। নদী পার হয়েই একটি পথ নদীটির উত্তর তীর বরাবর দুই-আড়াই কিলোমিটার গিয়ে একটি দেউলরীতির প্রাচীন একতেশ্বর শিবমন্দির। আমার দ্বিতীয় অধিবাসভূমিতে গিয়ে এই স্থাপত্যটিকে বহুবার দেখার সুযোগ হয়েছিল। প্রতি সোমবার একটি পূর্ণদুধ পিতলের হাম্বু ঘটি নিয়ে গন্ধেশ্বরী নদী পার হয়ে দ্বারকেশ্বরের পশ্চিম তীর বরাবর আঁকড়ের জঙ্গলের ভিতর দিয়ে সাড়ে তিন কিলোমিটার গেলেই এই মন্দির।

আঁকড়ের জঙ্গল পার হওয়া রোমাঞ্চকর ছিল। নদীতীর ধরে বহু গ্রামের শ্মশানভূমির সংলগ্ন এই জঙ্গল আসলে বিস্তৃত একটি প্রাচীন পরিত্যক্ত আমবাগান। আগাছা, কুটুস, শরের নিবিড় একটানা ঝোপ, আমগাছের শাখা থেকে ঝুলে পড়া গুলঞ্চলতার কুণ্ডলী বেশ ভয়ের ছিল। মাঝেমধ্যে ছিল বেশ কিছু তাল গাছ। আর এদের মাথায় ছিল বড় সংখ্যার শকুনের বাস। নিচের শ্মশান এবং ভাগাড়ের গবাদি পশুর শব আত্মস্থ করার প্রয়োজনে তারা মুক্ত ডানায় নিচে নেমে একটা তীক্ষ্ন উল্লাসে অশরীরী শব্দের বেগ তৈরি করত। তারপরে খানিকটা দেহ খুবলে নিয়ে আধো ডানায় পিছিয়ে পড়ত। তার জায়গা নিত অন্য কেউ। এরই ভিতর দিয়ে পায়ে চলার একটি সরু পথ। স্থানটিকে নিয়ে বহু গল্পকথা প্রচলিত ছিল। অমাবস্যার রাতে এই জঙ্গলে যাওয়া নিয়ে বাজি ধরার গল্প ছিল। একটি লোক একবার রাজি হয়ে গেল সে অমাবস্যার গভীর রাতে গিয়ে বাগানের মাঝখানে একটা গোঁজ পুঁতে দিয়ে আসবে। রাত্রি এগারোটার পর হাত পরিমাণ একটা কাঠের টুকরো নিয়ে সে রওয়ানা হয়ে গেল। অপেক্ষা করে ভোর হয়ে যাওয়ার পরও সে যখন ফিরল না তখন অকুস্থলে গেল বাজি ধরার দল। গিয়ে দেখলে লোকটি মৃত। গোঁজটি পোঁতা। হাতুড়ি পড়ে। তাহলে? বোঝা গেল ভয়টা ঘাড়ে আর পিঠে চাপতেই সে দ্রুত কাজটি সারতে গিয়ে কাছার ভিতর দিয়ে গোঁজটি পুঁতেছে আর তারপর পালাতে গিয়ে কাছায় টান। কাজেই তারপর…।

এই পথ পার হয়ে যেতে হত ঘটিভরা দুধ নিয়ে। ঘটির আকারগত অনেক নাম ছিল মনে আছে— মুর্শিদাবাদি, রাজস্থানি, কটকি, বৃন্দাবনি এই সব। হাম্বু ঘটি ছিল আকারে ছয় ইঞ্চি এবং ব্যাস চার। নারকেল কুলের আকারের। মন্দিরটির চারপাশে কয়েকটি ভগ্ন এবং একটি নাসিকাবিহীন অক্ষত দাঁড়ানো জৈন শ্রমণ। সিঁদুর লেপা। স্থানীয় পুরোহিতবর্গ এর নাম রেখেছেন খাঁদারানি। রাজপথে ফেরার আগে এই মন্দির। স্পুনার, বেগলার, বিনয় ঘোষ. যোগেশচন্দ্র এই সব আরও আরও মহাশয়েরা এটিকে চুলচেরা করে দেখেছেন। আমার অপটু অবোধ দেখা একবারে ভিন্ন। সোমবার সকালেই বসে যেত নদীর তীর বরাবর বেশ কয়েকটা গরম তেলেভাজা-মুড়ি আর জিলিপির দোকান। স্থাপত্যটির অধিবাস একটি বিস্তৃত ভূমিখণ্ডে। একটু দূরে জনপদ। চৈত্রমাস ছাড়া মন্দিরটিতে লোকসমাগম কম। কেবল অবশ্য-কৃত্যের লোকজন। কোনও পান্ডা-পূজারির নির্মম ব্যাকুলতা নেই। আমার সঙ্গী আমাদের কুলপুরোহিতের পুত্র। গর্ভগৃহে প্রবেশ করেই এক থাক নির্দিষ্ট মাপের সিঁড়ি দিয়ে প্রায় হাত ছয় নিচে নেমেই একটি চতুষ্কোণ জলাধার। স্বল্প গভীর। মাঝখানে (যতদূর মনে করতে পারি) একটি ঈষৎ বাঁকা ফুট-খানেক মসৃণ প্রস্তরখণ্ড। ইনিই শিব। অথবা তাঁর শ্রীপদ। এটির উপরে দুধের পাত্রের সমর্পণ। ইনিই মহাদেব। চৈত্রের গাজনে-গর্জনে ইনিই একতেশ্বর নাথমুনি মহাদেব (নাথমুনি? এই ধর্মের হেড অফিস গোরখপুর। গোরক্ষনাথ। তিনি দীক্ষিত তাঁর স্ত্রীর কাছে। ময়নামতী। বাঁকুড়া শহরে দোলতলার আগে একটি বসতির নাম যোগীপাড়া)। গাছের নিচে বসে শালপাতার ঠোঙায় মুড়ি আর তেলেভাজার সুবাস। নদীর স্বচ্ছ জলধারায় আকাশ। বালুর রাশি। গাছের ছায়ার নাচন। আজ এতদিন পরে ভাবি আমার আকর্ষণটা ঠিক কোথায় ছিল! তবে এ-কালের এই প্রসঙ্গটি মনে এসেছে দুবার। বহু বহু কাল পরে যখন গেছি আসামে কামাখ্যার মন্দিরে। প্রবেশপথের সারি দেওয়া দোকানে পূজার উপচার। নিঃশব্দ। পান্ডাকে ডেকে আনতে হয়। আর একবার রাত্রি চারটেয় গৌরীকুণ্ডে স্নান সেরে তারার আলোয় রওয়ানা দিয়েছিলুম কেদার। পর্বতের খাঁজে কুয়াশা ঢাকা দু-ফুট পথরেখায় হাল্কা বরফের গুঁড়ো। সূর্যাস্তের পর একটি ছোট সেতু পার হয়ে কেদার। এখানেও গর্ভগৃহে একটি ত্রিকোণ প্রস্তরখণ্ড। আরও আরও পিছনে আমার সেই সাঁওতাল মাসির গ্রামের পিছনেও জড়াজড়ি বিশাল শালের নিচে প্রস্তরখণ্ড!

আবার পথরেখা। একতেশ্বরকে ডানহাতে রেখে রাস্তাটি পার হল বিএনআর রেলের লাইন। তারপর জুড়ে গেল দ্বারকেশ্বরের মরশুমি সেতু পার হয়ে আসা রাস্তায়। এর পর শহর। একটু গিয়েই রানিগঞ্জের মোড়। সোজা পথটি চলে গেল রানিগঞ্জ। আর ডানদিকে দোলতলার পরে গন্ধেশ্বরী পার হয়ে মেজিয়া-গঙ্গাজলঘাটি। রানিগঞ্জের মোড় থেকে এককালে ছাড়ত উটের গাড়ি। এটি বলেছিলেন আমাদের সংস্কৃতের শিক্ষক ধরণীধর শাস্ত্রী। তাঁর বাড়ি ছিল দোলতলায়। চড়েছিলেন স্বয়ং। কিন্তু গঙ্গাজলঘাটি? এ নামটি আজও ভাবিয়ে চলেছে। রাঢের পুরাভূমিতে ইতস্তত বসবাসী ব্রাহ্মণদের আচমনের প্রয়োজনের এই ঘাটিতে গঙ্গাজলের আয়োজন? দামোদর তখন নাব্য। দ্বারকেশ্বরও। এটির সম্মিলিত প্রবাহ ভাগীরথীতে। নাম রূপনারায়ণ। গঙ্গাজলঘাটি থেকে খানিকটা নিচের দিকে নামলেই পুষ্কর্ণা বা পখন্না। চন্দ্রবর্মা।

পথের বৃত্তান্তে এসে পড়তেই এর আগে ছেড়ে আসা রাজহাটের কথা এসে গেল। এই রাজহাট থেকে এক গ্রহাচার্য বিচরণের পথে ঘরে এলেন। প্রায় বৃদ্ধ। হাতে একটি ছোট টিনের বাক্স। উঠানে একটা লোহার চেয়ারে বসে চা পানের পর গ্রহশান্তির বিভিন্ন কবচের নাম বলে গেলেন। এগুলির নাম যন্ত্র। প্রতিশ্রুতি দিলেন আমাকে একটি যন্ত্র তৈরি করে দেবেন যেটি উপলব্ধ হতে পঞ্চাশ হাজার বীজমন্ত্র জপ করতে হবে। ওটি এসে পড়লে সোনা বা রূপার মাদুলিতে ভরে ডান বাহুতে লাল সুতো দিয়ে পরতে হবে। মূল্য বা দক্ষিণা মনে নেই। তিনি এনেওছিলেন। সেটা পরলে রাধুবাবু বা করালীবাবুর ভীতি নিরাময় হয়ে দিগগজ হওয়ার রাজপথ এসে যেত। উনি বলেছিলেন রাজহাটের কথা। বেশ কিছু আচার্য ব্রাহ্মণ, শঙ্খবণিক, তন্তুবায়, তাম্বুলি এবং তিলি সম্প্রদায়ের চাষিবাসিদের গ্রাম। একদিন উত্তর-দক্ষিণশায়ী দ্বারকেশ্বরের বিস্তৃত বালুরাশির পরে ঝুঁকে পড়া সবুজ তীরের মুখে স্বচ্ছ স্রোত পার হয়ে পৌঁছলাম যে গ্রামটিতে, নাম তপোবন। ধূসর মাটিতে বাঁশবন, বুনোকুলের ঝোপ, মিষ্টি আলু আর অন্যান্য রবিশস্যের ক্ষেত। সাধুর আশ্রম। পরিপাটি নিকানো। শরের বেড়া। গায়ে তরুলতা। এরই মাঝখানে প্রায় চল্লিশ ফুট চওড়া একটি বরাবর ধূসর মাটির পথ। একটু এগিয়ে ডানদিকে পথ থেকে নেমে একটি সবুজ অল্প-উঁচু বিস্তৃত জমির উপরে একটি মন্দির। শ্রীরামচন্দ্র পূজিত হন। এটিকে ছাতা দিয়েছে একটি শতাব্দীপ্রাচীন আমগাছ। তাঁর একটি পিতলের রথ আছে। এখানে বিজয়ার পরের সাতদিন সোজা আর উল্টোরথের মাঝখানে বড় মেলা বসে।  আরও একটু ডান দিকে দ্বারকেশ্বরকে একটু তফাতে রেখে সোনাতাপল গ্রাম। এটির সীমায় একটি উঁচু ঢিবির উপর ইতস্তত দেউলরীতির ছাপ রেখে চলা ত্রিকোণ প্রবেশদ্বারের উপরে খাড়া উঁচু প্রাচীন দেউলরীতির মন্দির। চারপাশে ছড়ানো অসংখ্য নির্মাণ উপকরণের পাতলা টালির স্তূপ। দীর্ঘ সময় ধরে এগুলি ব্যবহৃত হয়ে এসেছে সোনাতাপল গ্রামের গৃহস্থদের প্রয়োজনে। (আমার এই দেখার বিশ বছর পরে এটি সংরক্ষণে আসে।)

পথে আসি। পরের গ্রাম শান্তোড়। এটি দক্ষিণ রাঢ়ি কায়স্থ বিশ্বাস পদবীধারীদের গ্রাম। আর এর পরই রাজহাট-বীরসিংহপুর। পথের দুপাশে শতাব্দীপ্রাচীন অশ্বত্থ এবং অসংখ্য ঝুরির বটগাছ। আর একটি গাছ যেটি এই প্রাচীন পথের দুই পাশে সাজানো, জেলাশহর পর্যন্ত দেখা মিলবে। সোজা উঠে গিয়ে অনেক ওপরে শাখাপ্রশাখার বিস্তার। গুঁড়ি আর প্রত্যঙ্গ সাদা। শীতে ঠিক রজনীগন্ধার আকারের অগণন ফুল ফোটে। অপূর্ব সুবাসের ফুল ঝরে পড়ে পাদমূলে। পাতাগুলি জবাপাতার আকারের। কিনারায় খাঁজ। বননিম। এর উদ্ভিদ-বিজ্ঞানগত নাম wild margosa। রাজপথের দুপাশে সারি দেওয়া গোলাকার থাম দিয়ে ধরে থাকা দু-তলা বাড়ি। প্রায় আধ কিলোমিটার। ইটের উপর শাঁখচুনের মসৃণ পলেস্তারায় বিচিত্র মানচিত্র। কালো হয়ে যাওয়া সবুজ শ্যাওলা। রাজপথের দুপাশে চকবন্দি হয়ে ছাদহীন দালানগুলি ছড়িয়ে গেছে। ভিতরে ভিতরে গলিপথ। ঘরগুলি অনেককাল জানালা দরজা হারিয়েছে। শূন্যপথে শব্দ তুলে বাতাস খেলা করে। বহু পিছনের একটি বয়স্ক লোকের দেখা মিলেছিল এ-পাড়ায়। “বহুকাল আগেই এরা চলে গেছে কলকাতার আশে পাশে এবং ভবানীপুর। তাম্বুলিদের, শঙ্খবণিকদের বাড়ি সব। এখানে বাণিজ্য চলত। শাঁখ ক্রয়-বিক্রয়ের এই বিখ্যাত বাণিজ্যক্ষেত্রে এখনও কয়েকঘর উদ্বৃত্ত শাঁখারির বাস। পড়ে আছে জমিবদ্ধ চাষিবাসি। আর কিছু আচার্য গ্রহবিপ্র ব্রাহ্মণ।” এখানের প্রচলিত রাজহাটি পাই তার পতনের পরেও বহুকাল ধরে এর বৈভবের চিহ্ন বহন করে গেছে। এখানে আবার আমাকে পৌঁছতে হবে, বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা হয়ে। ওই শাঁখ আর তার বাণিজ্যপথ নিয়ে। দ্বারকেশ্বর তীরের এই সব জনপদ ধরে এগিয়ে গেছে অহল্যাবাই রাজপথ।

এরপর হরিহরপুর, প্রসিদ্ধ শিবালয়। তিনি বরদানে মুক্তহস্ত। চৈত্রের সংক্রান্তিতে মেলা বসে। নানা জাতির বসবাস। ডাইনে একাদশ শতাব্দের সুষমাময় বহুলাড়া দেউলকে রেখে একটি প্রাচীন নদীঘাট পার হয়েই বিপরীতে অযোধ্যা। এরপর বনবিষ্ণুপুর। প্রাচীন এই পথগুলির বিবরণ আরও পরে চলে আসবে। আমার ওই বয়সেই এই পথে অযোধ্যা পর্যন্ত দেখা ঘটেছিল। এই জনপদের জমিদার গঙ্গোপাধ্যায় পদবির লোকেরা। সুরম্য অট্টালিকার গ্রাম অযোধ্যা। বহু মন্দির এবং বহু আকারের। এই বৈভব এসেছিল নীলচাষ থেকে। জঙ্গলময় নীলকুঠির অবশেষ তখনও অটুট। এমনকি নীল সেদ্ধ করে তার কাথ্‌ শুকনো করার প্রয়োজনে অগ্নিশালার ইটের চতুষ্কোণ চিমনিটিও। এখানেই ছিলেন বেণু গঙ্গোপাধ্যায়। ইনি যুগান্তরের স্বপনবুড়ো। আর একজন ছিলেন বহু পরের বাম আমলে ডেপুটি স্পিকার। অনিল গঙ্গোপাধ্যায়।

 

[ক্রমশ]

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 5217 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

1 Comment

  1. অসাধারণ বর্ণনা। বর্ণনার পরিবর্তে চিত্রায়ন শব্দটি বোধহয় উপযুক্ত হত। পড়ে ঋদ্ধ হলাম।
    একটি সংশোধনী। বাম আমলের ডেপুটি স্পিকার অনিল গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিবর্তে মুখোপাধ্যায় হবে সম্ভবত। আর উনি কি অযোধ্যা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন?

1 Trackback / Pingback

  1. স্মৃতিপরব: অধ্যায় ২, পর্ব ৮ – ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

Leave a Reply to SUBAS MUKHOPADHYAY Cancel reply