তিনটি শালিখ
অবেলায়
পুরনো চিঠির সাথে দেখা হল
আজ অবেলায়
প্রবাসে ঘামের গন্ধ, অলমিতি বিস্তারেণ
মনোভার কমানোর ইতিবৃত্ত
পদ্মা গঙ্গা একাকার করিবার
সহজ উপায়।
শীর্ণ গাছের ডালে ঘুড়ি দোলে
ছবির মতন
কেমন আছ, ভালো আছি
বাড়ির মেনিটি ভালো আছে
ভুলু যে কোথায় গেল জানা নেই
ঘড়িটি ঠিক চলে তো?
অমূল্যরতন।
রেললাইনের পাশে বাড়ি
জানো মেঝে কাঁপে
কাঁপি থরোথরো
এখন এসব কথা বলি কাকে?
তুমি কি এসব শুনে
খুব রাগ করো?
দরবারি কানাড়ায় বাতি জ্বলে,
তাকে বলি অনির্বচনীয়
অন্ত্যমিলে নিলাজ বেহাগ হাসে
শোনো, দরজার পাশে যদি
খোলা চিঠি পড়ে থাকে
তাকে যেন ভালোবাসা দিও।
নেটওয়ার্কের সনেট
অদৃশ্যে সুতো বুনছে কে?
খোঁজো। নেটওয়ার্ক খোঁজো।
তোমার পিঠের কাছে রাখা আছে
যে বোতাম, লালনীল বাটনহোল
তাকে যদি কাশ্মির বলো,
সুতো কন্যাকুমারিকা, কাকদ্বীপ।
টেরর ছড়িয়ে আছে, টেরর টেরর খেলা
খেলতে নেমেছ যদি
আরও কিছু খোরাক জোগাও
নেটওয়ার্ক ছাড়া কিছু নেই, আর
প্লেসমেন্ট— সেও তো জলকে গেছে,
তাই তার বিচ্ছেদে বাঁচো ও শপথ নাও
অতি সূক্ষ্ম সাবোতাজ ককটেলে ঢেলে
অহরহ পান করো বিভক্ত মিছিলে।
পানের বরজ
পুকুর উন্মুক্ত ছিল।
অন্ধকারে চেয়েছিল পানের বরজ
রিমঝিম গিরতেই শাওনের
বিরক্ত অধৈর্য মুখ, শূন্য গরজ।
জলরঙে নীলাকাশ, নীল জল
মিথ্যা বলে যদি প্রকাশিত
এ যেন লবণজল, ব্যথা কমানোর মন্ত্র
জীবনে জারিত জল, বাতাসে জারিত।
ঘোলা জল, মাছ ধরে হুঁশিয়ার
অন্নবস্ত্র বাসস্থান কুহক যেমন
বেঁচে থেকো, ভালো থেকো, জেনে রেখো
জীবন ছ্যাঁচড়া অতি, বেচাল এমন।
বিষণ্ণ ফুল হেতু ফলটি বিষাদময়
মেঘমেঘ আকাশিয়া বাঁশি ফুকরায়
আজ তোরা কে কে যাবি ডুব দিতে
এমন অস্পৃশ্য দিনে, অতৃপ্ত বেলায়!
দু-একটি হাঁস চরে, দু-একটি গরু গাই
নগ্নপদ মানুষের পায়ে পায়ে ঘাট
কেউ যেন আচমকা নেমে গেছে, ফিরবে না
আপদ, আপদ যাক, বালাইটি ষাট!
তারপর অন্ধকার, তারপর নান্দীমুখ
অঙ্কটি সিঁড়িভাঙা, যদিও সহজ
এপারে মাটির ঘর, দালানটি নির্জন
ওইপারে একা একা পানের বরজ।


নরম, পেলব পালকে লেখা কবিতা। ভালো লাগলো।
ভালো থেকো, ভালো রেখো, কবি।