মার্টিন এস্পাদার কবিতা

শৌভিক দে সরকার

 

১৯৫৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মার্টিন এস্পাদা। ১৯৮২ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘দা ইমিগ্রান্ট আইসবয়’স বোলেরো’ প্রকাশিত হয়। ‘সিটি অফ কাফিং অ্যান্ড ডেড রেডিয়েটরস’, ‘ইমাজিন দা এঞ্জেলস অফ ব্রেড’, ‘আলাবাঞ্জা’ তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। পুয়ের্তোরিকোর বিভিন্ন অনুষঙ্গ উঠে আসে এস্পাদার কবিতায়। দীর্ঘদিন ল্যাটিনো শ্রমিকদের অভিবাসনের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি এবং আইনি পরামর্শদাতা হিসেবেও কাজ করেছেন। ‘রবার্ট ক্রেলি এ্যাওয়ার্ড’, ‘প্যাটারসন পোয়েট্রি প্রাইজ’ ছাড়াও ‘ন্যাশনাল বুক ক্রিটিক্স সার্কল অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘পুলিতজার প্রাইজ’-এর জন্য মনোনীত হয়েছিলেন এস্পাদা। বর্তমানে তিনি ম্যাসাচুসেটস-আমহার্স্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।

 

চিনানদেগায় বন্যার পর

নিকারাগুয়া
আসলে একটা বাদামী রঙের মেয়ে
রিফ্যুজি ক্যাম্পের কাদার মধ্যে
যে দাঁড়িয়ে আছে
আর যার মাথার ওপরে
কোনওমতে দাঁড়িয়ে একটা সবুজ পাখি
ঠোঁট ফাঁক করে হাসতে হাসতে
রাস্তার দিকে নজর রাখছে

 

সত্যিকারের বেশ্যার ছেলের ফোটো

না কোনও অশ্লীল কিছু না,
একজন সত্যিকারের বেশ্যার
বাচ্চা ছেলেটা জানত অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে
কীভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়
যাতে তার মা
পূর্বপুরুষদের দাসত্বের জীবনে
ফিরে যেতে পারে
জানত রাতের বেলায় মালিক কীভাবে
শরীরে থাবা বসায়
মা যখন টলটলে রামের ভেতর
কাদা হয়ে ঘুমিয়ে থাকে

আর সেই সত্যিকারের বেশ্যার ছেলেটাই একদিন
কমিউনিটি সেন্টারে সাঁতারের দলের সঙ্গে
পোজ দিয়ে ছবি তোলে
হাতটাকে মুঠো করে শূন্যে ছুঁড়ে দেয়
চিয়ার লিডারদের মতো হাসে
সিগারেটের লুকোনো ছ্যাঁকা গায়ে নিয়ে
একজন সার্কাসের পালোয়ান
অফিস থেকে চীজ আর ক্র্যাকার
চুরি করতে থাকে যেখানে দরজাটা
ইচ্ছে করেই খোলা রাখা হয়।

 

ঝড়

লা মুয়ের্তে এস উনা তরমেন্তা

মৃত্যু আসলে একটা ঝড়,
ছেলেটা বলেছিল
আর গ্রামগুলো
ছেতরে যাওয়া পিঁপড়ের ঢিবি।
এল সালভাদর সেনার হেক্টর:
চোদ্দ বছর বয়সে জোর করে
ভর্তি করা হয়েছিল সেনাবাহিনীতে
তিন বছর পর অবশ্য পালিয়ে গিয়েছিল সে।
বড় কানওয়ালা ছেলেটা
একটা শার্ট গায়ে দিয়েই
এখানে পৌঁছানোর জন্য
হেঁটে পার হয়েছিল গুয়াতেমালা
মেহিকো আর অ্যারিজোনা,
প্রায় ডুবে গিয়েছিল বর্ডারে
অজস্র নদী আর থকথকে কাদায়
সে চাইত আমেরিকায়
সবাই তাকে টনি বলে ডাকবে।

বেসমেন্টের ভেতরে
রাস্তার মাঝখানে দেখা শব্দগুলোর
অনুবাদ করে তাকে বুঝতে হত
কোথায় খাওয়া জুটবে
টনি ধার করে কেনা বড় কোটটার
হুড মাথার ওপর টেনে নিয়ে
কাঁধ ঝাঁকাতে শুরু করত,
একজন সন্ন্যাসী চার্চের ঘণ্টার আওয়াজে
ছায়ার দিকে ঘুষি ছুঁড়তে ছুঁড়তে,
একটা গানের দিকে চলে যাচ্ছে
দূর থেকে এগিয়ে আসছে হেলিকপ্টারের শব্দ
ঝড়
আর ছেতরে যাচ্ছে পিঁপড়ের ঢিবিগুলো।

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4658 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...