অন্যরকম মেয়ের সনেট ১
এসব গোপন কথা পাখিরাও জানে না, পুরুষ
দেখেছ কেবল তুমি পোড়া দাগ, যন্ত্রণার ভুলে
নাভিতে স্বস্তিক ফোঁটা, কাঁধের জড়ুলে আঁকা ক্রুশ,
প্রগাঢ় পচন-চিহ্ন। রাপুনজেলের মতো চুলে
কীভাবে লুকিয়ে রাখে আত্মঘাতী অক্ষরের আলো
নরম কবিতা নয়, ব্যথা, রাগ, অভিমান, শোক…
খোঁজোনি সেসব। শুধু বেছে বেছে বেসেছিলে ভালো
ভোরের পাখির মতো মেয়েটির নরম পালক
এখন বছর-শেষে দেখেছ জলের পাশে মাটি
মাটিতে প্রখর বাষ্প, আগুন, গরম লাল লাভা
ভয় পেয়ে গেছ বুঝি? ঈগলের মতো সে ডানাটি
তোমার দুঃস্বপ্ন। চাও চড়ুইয়ের গল্পটা আবার
যে নারী আগুন-আলো, রোদ, বৃষ্টি, শোক-তাপ-প্রেম
তাকে তো চাওনি তুমি। চেয়েছিলে নিভৃত হারেম…
অন্যরকম মেয়ের সনেট ২
আগুনের মধ্যে দিয়ে হেঁটে আসা অশ্বারোহী নয়
স্বপ্নে যে এসেছে তার আকাশি সুতির পাঞ্জাবিতে
রান্নার তেল হলুদ। ওই রঙই তার পরিচয়।
মেয়ে তবু দূরবর্তী, দাঁড়িয়েছে পেছন সারিতে
একা আর ভয়ে ভয়ে। ফোড়নের গন্ধ জানে না সে
রন্ধনে দ্রৌপদী নয়। উপরন্তু আনাড়ি ভীষণ
ভিক্ষুকের মতো ঘোরে কলার পাতের আশেপাশে
পাছে সময়ের আগে শুরু হয় কাঙালি ভোজন
চিরকাল অনাহূত, কেউ তাকে ডাকেনি, ডাকে না
স্বপ্নের ভেতরে পথ। মেয়ে হাঁটে পুরুষের দিকে
খিদের ময়দান ঘিরে থাকা যত নারায়ণী সেনা
ব্যঞ্জনা খোঁজে না, খোঁজে ব্যঞ্জন-ময়ী রমণীকে
ভিখিরির মেয়ে তবু খোঁজে সেই পুরুষের হাত
যে তাকে মায়ের মতো মেখে দেবে দুর্দিনের ভাত।
আহা! বিশেষত দ্বিতীয়টা।