তিস্তা চক্রবর্তী

চারটি কবিতা

 

পড়শি

চেয়ার ছেড়ে নিঃশব্দে উঠে গেলে
অন্য কোথাও কলিংবেল বেজে ওঠে।

ছোট্ট আলপিন ফুঁড়ে দেয়
হেমন্তের আকাশপ্রদীপ,
বসন্তের করিডরে হইহই করে ঢুকে পড়ে
আদেখলা প্রেমিকের দল—

এইসব হুজুগ সরিয়ে
শুধু তোমার পাশে বসে থাকতে ইচ্ছে করে

যেভাবে ছাদের দড়িতে দোল খায়
হলুদ পাঞ্জাবি ঘেঁষে

সমুদ্রনীল শাড়ি

 

ফাঁদ

মাঝেমাঝে

শব্দের টেরাকোটা

ভেঙে ফেলি

আক্রোশে

ঝুরঝুরে মাটিতে
অসময় শোক ঝরে পড়লেই
পাশের ঘর থেকে
কে যেন

মেঘদূত হয়ে

ছুটে আসে
হাতে ধরিয়ে দেয় ধূসর রঙের পেন্সিল

ফুটিফাটা চৈত্রের শরীরে
তখন আশ্চর্য আষাঢ়—
চোখে কালো রুমাল বেঁধে
দ্বিধাহীন ভালবাসায়

ফিরে যাই,

জোনাকির ফুল

কপালের মাঝবরাবর

আলোর ফাঁদ পেতে বসে থাকে

 

মাধুকরী

নিছক সাজানো মুদ্রায়
রাত্রির ধ্যানভঙ্গ করে বসি রোজ।

আজানুলম্বিত স্পর্শ
বাড়িয়ে দিই ভালবাসার দিকে,
হাঁ করে চেয়ে দেখি
একটা ভিখিরি        আরেক ভিখিরির দিকে

এগিয়ে দিচ্ছে ছেঁড়া কম্বল—

চোখে জল আসে না আমার

কখনওই

ঘুমে গড়িয়ে পড়ার আগে,

দেখি

আমার সদ্য লেখা কবিতায়
তোমার জ্যোৎস্না-জড়ানো হাত

 

ঘুড়ি

কেটে

প্যাঁচ            যায়

গলির মুখে
ইনিয়েবিনিয়ে

কেঁদেছিল          যে বা যারা

বুকে
মুখ গুঁজে
তাদের চুল ছুঁয়ে
ভোকাট্টা চাঁদিয়াল
উড়ে যায়
বাতাসিয়া লুপে

চোখ নয়

আমার   আঙুল   জ্বলে   যায়

কাচ
মাঞ্জায়

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4953 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...