দেবার্ক মিথিয়া
পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম পাঁচমুড়া। এই গ্রামটি কেবল একটি ঠিকানা নয়— এটি এক জীবন্ত আখ্যান, যা যুগ যুগ ধরে মাটির ছোঁয়ায় শ্বাস নেয়। এখানে ভোর হয় কুমোরের চাকার একটানা শব্দে। বাতাসে মিশে থাকে পোড়া মাটির মিষ্টি গন্ধ। এই গ্রামের কোনায় কোনায় লুকিয়ে আছে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য, যা হাজার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এখনও বহমান। প্রায় ৭০টি ঘর কুম্ভকারের বাস এই পাঁচমুড়ায়, যাঁদের জীবন, জীবিকা ও স্বপ্ন— সবকিছুই আবর্তিত হয় এই ধূসর মাটিকে ঘিরে।
পাঁচমুড়ার টেরাকোটা শিল্পের ইতিহাস অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক। এই শিল্পশৈলীর বিকাশ এক দিনে হয়নি। এর পেছনে রয়েছে বহু বছরের লোকবিশ্বাস, আঞ্চলিক সংস্কৃতি আর ভৌগোলিক সুবিধা। এই অঞ্চলের বিশেষ ধরনের পলিমাটিই এই মৃৎশিল্পের বিকাশের মূল কারণ। রাঢ় বাংলার এই লালচে মাটিতে এক ধরনের আঁটোসাঁটো ভাব রয়েছে, যা পোড়ামাটির জিনিসকে টেকসই ও মজবুত করে তোলে। আর এখানকার কুম্ভকার সম্প্রদায়ের মানুষ লালমাটির এই বিশেষ গুণ সম্পর্কে বহু শতাব্দী ধরে অবগত।

ঐতিহাসিকভাবে, বাঁকুড়ার মল্ল রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতা এই শিল্পের ভিতকে আরও মজবুত করেছে। শুধু টেরাকোটার ঘোড়া নয়, বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তিনির্মাণ ও মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার কাজে উৎসাহ দিতেন এই মল্ল রাজারা। তাঁদের আর্থিক আনুকূল্যেই এই শিল্প পারিবারিক পেশা থেকে একটি প্রধান শিল্পরূপে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। বাঁকুড়ার এই অঞ্চলে টেরাকোটা শিল্পের কেন্দ্রীভবনের পেছনে রয়েছে দুটি প্রধান কারণ। প্রথমত, এখানকার ধর্মরাজ ঠাকুর ও অন্যান্য লোকায়ত দেবদেবীর পূজায় মানত হিসেবে মাটির ঘোড়া উৎসর্গ করার প্রচলিত প্রথা থেকে স্থানীয়ভাবে টেরাকোটার জিনিসের চাহিদা বৃদ্ধি; এবং দ্বিতীয়ত, পাঁচমুড়ায় কাঁচামালের সহজলভ্যতা।
টেরাকোটা একটি ল্যাটিন শব্দ। ‘টেরা’ মানে মাটি এবং ‘কোটা’ মানে পোড়ানো। অর্থাৎ, টেরাকোটা বলতে পোড়ামাটির তৈরি শিল্পকর্মকে বোঝানো হয়। প্রথমে আঠালো মাটি, খড়কুটো, তুষ ও বালি মিশিয়ে একটি নরম মাটির তাল তৈরি করা হয়। তারপর সেই মাটির তাল দিয়ে মূর্তি, ভাস্কর্য, ফলক বা বিভিন্ন ব্যবহারিক জিনিস বানিয়ে সেগুলিকে রোদে শুকিয়ে আগুনে পোড়ানো হয়। এতে জিনিসগুলি শক্ত ও মজবুত হয়ে ওঠে।
এই শিল্প মানবসভ্যতার এক প্রাচীনতম নিদর্শন। হরপ্পা, মহেঞ্জোদড়ো ও অন্যান্য প্রাচীন সভ্যতার প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যে বহু টেরাকোটার দ্রব্যসামগ্রীর নিদর্শন পাওয়া গেছে। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের নানা জায়গায় মন্দির, মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপত্যে টেরাকোটার বিস্তৃত ব্যবহার চোখে পড়ে।

১৯৬৯ সালে পাঁচমুড়ার মৃৎশিল্পী রাসবিহারী কুম্ভকার টেরাকোটা শিল্পের জন্য জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর এই গ্রামের নাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকে এই শিল্পের গুরুত্ব অনেকখানি বেড়ে যায়। পাঁচমুড়ার শিল্পীরা মূলত পোড়ামাটির ঘোড়া তৈরি করলেও, তাঁরা বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তিও (যেমন ধর্মরাজ ঠাকুর ও শীতলা ঠাকুর) গড়েন। একই সঙ্গে, দৈনন্দিন ব্যবহারের ফুলদানি, থালা-বাসন, ঘর সাজানোর জিনিস ও খেলনা তৈরি করেন। তবে, পাঁচমুড়াকে মানুষ চেনে তার পোড়ামাটির ঘোড়ার জন্য। এই টেরাকোটার ঘোড়া শুধু একটি শিল্পকর্ম নয়, এটি এই অঞ্চলের লোকবিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এটি কোনও সাধারণ মূর্তি নয়; এই ঘোড়া মানুষের বিশ্বাস ও ভক্তির প্রতীক— যুগ যুগ ধরে যা এখানকার মানুষজন ধর্মরাজ ঠাকুরের মন্দিরে মানত হিসেবে উৎসর্গ করে আসছেন। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, এই ঘোড়া তাঁদের মনের ইচ্ছা দেবতার কাছে পৌঁছে দিতে সাহায্য করে। তাই এই ঘোড়া তৈরি করা শিল্পীর কাছে শুধু রুটি-রুজি নয়, এটি একটি পবিত্র কাজও বটে।
পাঁচমুড়ার এই ঘোড়ার দীর্ঘ গ্রীবা, খাড়া কান ও সুঠাম দেহাবয়ব একে অন্য সব মাটির ঘোড়ার থেকে আলাদা করে তুলেছে। এর গায়ে যে সূক্ষ্ম নকশা করা হয়, তা শিল্পীর মনের ভাব ও ঐতিহ্যের এক সুন্দর প্রতিফলন। বৃত্তাকার নকশাগুলি সূর্যের প্রতীক, আর সাপের মতো পেঁচানো রেখাগুলি জীবনীশক্তির প্রতীক। জ্যামিতিক নকশাগুলি প্রকৃতির বিভিন্ন রূপকে তুলে ধরে। প্রতিটি কারিগর যেন তাঁর পূর্বপুরুষদের জ্ঞান ও আঞ্চলিক সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাকে এই নকশার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন।

একজন কারিগর যখন এই ঘোড়া তৈরি করেন, তখন তাঁর মনে শুধু উপার্জনের চিন্তা থাকে না, থাকে এক গভীর আবেগ। তাঁরা জানেন, এই ঘোড়াটি কোনও এক ভক্তের বিশ্বাসকে বহন করে নিয়ে যাবে দেবতার কাছে; আবার অন্যদিকে আনন্দ দেবে কোনও শিল্পসমঝদারকে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই শিল্প তাঁদের রক্তে প্রবাহিত হয়েছে— যার প্রমাণ মেলে প্রতিটি সৃষ্টির নিপুণতা, দৃঢ়তা ও শৈল্পিক রূপে। এইভাবেই পাঁচমুড়ার ঘোড়া মাটি থেকে উঠে এসে এক জীবন্ত গল্পে পরিণত হয়।
পাঁচমুড়ার শিল্পীদের এই শিল্পসৃষ্টির জন্য দীর্ঘ ও শ্রমসাধ্য প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। প্রথমে শুকিয়ে যাওয়া পুকুর বা জমি থেকে বিশেষ ধরনের মাটি সংগ্রহ করা হয়। এই মাটির সঙ্গে বালি ও অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে সেটিকে শিল্পকর্মের উপযোগী করে তোলার কাজটি করে থাকেন প্রধানত পরিবারের মহিলারা। তাঁদের হাতেই কাদার তালের রূপান্তর শুরু হয় শিল্পের উপযোগী মাটিতে। পাঁচমুড়ার এক প্রবীণ শিল্পী সন্তোষী কুম্ভকার বলেন,
পুরুষরা তো মাঠে গিয়ে মাটি কাটে। কিন্তু সেই মাটি থেকে কাঁকর আর খড়কুটো বেছে, তার থেকে মণ্ড তৈরি করার আসল কাজটা আমাদের। এই মাটি নরম আর মসৃণ না হলে কোনও মূর্তিই সুন্দর হবে না।
অর্থাৎ, টেরাকোটা শিল্পের সূচনা মহিলাদের হাতেই। এরপর শুরু হয় আসল কাজ। মাটির মূর্তির বিভিন্ন অংশ আলাদাভাবে তৈরি করে তাকে জোড়া লাগানো হয়। যেমন, ঘোড়ার ক্ষেত্রে প্রথমে মাথা, গলা, পা ও পেট আলাদাভাবে তৈরি হয়। এই কাজ অত্যন্ত কঠিন— যেখানে সামান্য ত্রুটি পুরো শিল্পকর্ম নষ্ট করে দিতে পারে। তাই এখানকার শিল্পীরা তাঁদের শিল্পসৃষ্টির সময় কাজে পরম মনোযোগ দেন।

আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে পাঁচমুড়ার শিল্পীরা প্রায়শই প্রকৃতির হাতের পুতুল। বর্ষার জল, শীতের রোদ আর মেঘলা আকাশ— সবই তাঁদের জীবনচক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে। এক তাল মাটি থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ শিল্প সৃষ্টি করতে মাসের পর মাস সময় কেটে যায়। এর প্রতিটি ধাপে প্রকৃতির সহায়তা লাগে। বর্ষার মেঘ আকাশ কালো করে এলে তাঁদের বুকটা ছ্যাঁৎ করে ওঠে— এই বুঝি বৃষ্টি নামল! এই বৃষ্টি শুধু আকাশভাঙা জল নয়, তাঁদের স্বপ্ন ভাঙার শব্দ। তারই অনুরণন শোনা গেল শিল্পী মুরলী কুম্ভকারের গলায়। তিনি বলছিলেন,
বৃষ্টির জন্য ঘোড়ার বিভিন্ন অংশ ঠিকমতো শুকোতে পারে না। পোড়ানোর ভাটা ভিজে থাকে, সেখানে আগুন জ্বালালে ঘোড়ার পা, গলা, দেহ— কিছুই ঠিকভাবে পোড়ে না, ফেটে যায়। আর সময়মতো এই ঘোড়াগুলি যদি ডেলিভারি দিতে না পারি, তাহলে অর্ডার বাতিল হবে।
শিল্পী জহরলাল কুম্ভকার শীতলার মূর্তিতে মাটির টান দিতে দিতে একই কথা বলছিলেন,
কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি চলছে, কোনও মূর্তিই রোদের মুখ দেখছে না। যেখানে পোড়াব সেখানে জল জমে আছে। না পারছি শুকোতে, না পারছি পোড়াতে।
অথচ এগুলোই তাঁদের সম্বৎসর রোজগারের একমাত্র পথ। এমন সমস্যা শুধু মুরলীবাবু বা জহরবাবুর নয়, পাঁচমুড়ার প্রতিটি শিল্পীর।

মৃৎশিল্পীদের লড়াই শুধু প্রকৃতির সঙ্গেই নয়, অর্থনীতির কঠিন বাস্তবের সঙ্গেও। শিল্পের প্রতিটি ধাপে যে কঠোর অর্থনীতি কাজ করে, তা বেশিরভাগ সময়ই মানুষের চোখের আড়ালে থেকে যায়। কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে পণ্য বিক্রি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে শোষণ এখন এই শিল্পের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। মাটি ও জ্বালানির দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়লেও, শিল্পীরা তাঁদের পণ্যের দাম বাড়াতে পারেন না। এর পেছনে রয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদের অদৃশ্য হাত। এরা শহর থেকে এসে শিল্পীদের সারামাসের পরিশ্রমের ফল জলের দরে কিনে নিয়ে যায়, আর বহুগুণ বেশি দামে বিক্রি করে দেশ-বিদেশের সমঝদার ক্রেতাদের কাছে। ফলে শিল্পীর শ্রমের সিংহভাগই চলে যায় এই ফড়েদের পকেটে।
পাঁচমুড়ার শিল্পীরা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি মেলায় তাঁদের পণ্য বিক্রির সুযোগ পান। আপাতদৃষ্টিতে এটি বড় সুযোগ মনে হলেও, এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে এক ভিন্ন ধরনের লড়াই। কলকাতা বা অন্য বড় শহরের মেলায় অংশগ্রহণের জন্য কারিগরদের বাড়ি থেকে দূরে যেতে হয়, যা তাঁদের কাছে অতিরিক্ত খরচের বোঝা। যাতায়াত, থাকা-খাওয়ার খরচ এবং স্টল ভাড়া প্রায়শই তাঁদের সামান্য লাভটুকুও খেয়ে ফেলে। মেলায় ক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ থাকলেও, বেশিরভাগ কারিগরের পক্ষেই এই খরচের ভার বহন করা সম্ভব হয় না। ফলে শেষ পর্যন্ত তাঁরা সেই মধ্যস্বত্বভোগীদের উপরই নির্ভর করতে বাধ্য হন। জহরলাল কুম্ভকার বা মুরলী কুম্ভকারের মতো শিল্পীরা জানেন, তাঁদের ঘোড়াগুলি শহরের দামি শোরুমে কয়েক গুণ বেশি দামে বিক্রি হয়। তবু তাঁরা নিরুপায়।

শুধু প্রকৃতির সঙ্গে বা বাজারের কঠিন বাস্তবের সঙ্গেই লড়াই করেন না পাঁচমুড়ার শিল্পীরা, তাঁদের নিরন্তর সংগ্রাম সরকারি উদাসীনতা এবং ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলির জটিল পদ্ধতির সঙ্গেও। মৃৎশিল্পী মুরলী কুম্ভকার স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে সরকারিভাবে কোনও কার্যকর সাহায্য মেলেনি। ঋণের সহজলভ্যতা কিংবা বিপণনের জন্য সরকারি প্ল্যাটফর্মের অভাব তাঁদের অস্তিত্বকে আরও বিপন্ন করে তুলেছে। বেশিরভাগ সময়ে কারিগরদের কাছে ব্যাঙ্কে যাওয়ার মতো প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও জামানত থাকে না। আর থাকলেও ঋণগ্রহণ প্রক্রিয়ার জটিলতা তাঁদের নিরুৎসাহিত করে। ফলে, তাঁরা স্থানীয় মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হন, যা তাঁদের ঋণের জালে আবদ্ধ করে রাখে। যদি এই শিল্পীরা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং সহজ শর্তে ঋণের সুবিধা পেতেন, তবে ফড়েদের এড়িয়ে শিল্পের প্রকৃত মূল্য পেতেন।
মৃৎশিল্পের বাজারে এই কঠিন বাস্তবতা শিল্পীদের পরবর্তী প্রজন্মকে ক্রমশ এই পেশা থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। মুরলী কুম্ভকারের দুই ছেলে, সবুজ ও সঞ্জীব, বাবার সঙ্গে কাজ করলেও জানেন যে এই শিল্পে শুধু আবেগ দিয়ে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তবু আশার কথা, সবুজ ও সঞ্জীব বাপ-ঠাকুরদার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে পুরনো জ্ঞানের সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তিকে মিলিয়ে এক নতুন পথের সন্ধান করছেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের পণ্য সরাসরি ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁদের এই উদ্যোগই হয়তো পাঁচমুড়ার শিল্পকে এই কঠিন অর্থনৈতিক সংগ্রামের মুখে টিকিয়ে রাখবে।

পাঁচমুড়ার প্রতিটি টেরাকোটা ঘোড়া, প্রতিটি শীতলার মূর্তি কেবল একটি মাটির বস্তু নয়; এটি এই গ্রামের মানুষের নীরব কান্না, কঠোর পরিশ্রম এবং বেঁচে থাকার অদম্য ইচ্ছার প্রতীক। পাঁচমুড়া আমাদের মনে করিয়ে দেয়— শিল্প কেবল একটি পণ্য নয়, এটি একটি জীবন্ত ঐতিহ্য, যা সংরক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এক নতুন ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
*সমস্ত ছবি লেখকের তোলা

