অথ যুগন্ধর সংবাদ

হকারভাই

 

 

“প্রজাগুলের ক্রীড়াক্ষেত্রে গোল বেঁধেছে বহুত জোর—
‘বেশি! বেশি!’ বলে ওরা চাচ্ছেটা কী, ও সঞ্জু!”

“আপনারই সব ছানাপোনা, আপনারই সব বংশধর
মিলেছে আজ দিদির ডাকে, উঠছে ঘাড়ে পরস্পর
‘GOAT’-এর মেলায় ভিড় জমেছে, গোঠে নয়কো, ধেয়ান দিন
প্রজাগুলের এ সাম্রাজ্যে অন্যতম ‘আচ্ছে দিন’

এসেছে এক বহুত নামী সর্বশ্রেষ্ঠ যুগন্ধর
এমন একটা খেলায়, যাতে জম্বুদ্বীপের যা বহর
কহতব্য নয় তা, যদিচ এককালেতে নাম ছেল
নালার পাঁকের রাজনীতি আর পাঁচের মতো সেও খেল

প্রজাগুলের চিন্তাভাবনা যৎকিঞ্চিৎ সাবলটার্ন
বলেই এসব বহর-টহর ডহর মেরে করছে খান
মেলা কর্ম, মেলা ধর্ম, মেলা হি পরমং ইসে
এসব বলে প্রজার কোলে প্রচুর আমোদ ভাগ দিসে

কোলের আমোদ ঝোলের আমোদ আমোদ দিয়ে যায় চেনা
এসব ভেবেই যুগন্ধরের সময়-টময় সব কেনা
অনেক কড়ি ফেললে তবেই এমনতরো জলসা হয়
আগলা বছর পাঁচ বছরের নির্বাচনের সময়, নয়?”

“নির্বাচন কী? যাক গে ওসব! সামনে কে ও? যুধিষ্ঠির?”
“যুধিষ্ঠিরের হদ্দমুদ্দ, দেখছেন না কেমন বীর?
কোমর ধরে টান মেরেছে যুগন্ধরের! বাপরে বাপ!
একলাফেতে শীর্ষে গেল সেলফি নেবার ওয়ার্ল্ড কাপ!”

“ওয়ার্ল্ড কাপ কী? সেলফি কী বা? কীসব তুমি বলতেছ?”
“ছাড়েন সেসব, দেখছি বাপা কেমন তুমি গোল দেছ!
দাঁড়ান! দাঁড়ান! গোলটা কোথায়, হঠাৎ দেখি গোলমালে
নব্যযুগের বানরসেনা ভেঙচি কেটে ফাঁকতালে
ভাঙছে চেয়ার রামের নামে, ছুঁড়ছে বোতল পটাং পট!
পুলিশ-টুলিশ থেকেও দেখছি শান্তির পুত বিহাইন্ড কট্‌!

অনেক টঙ্কা নগ্‌দে গুণে দেখতে যারা এসছিল
শখের প্রাণটি সামলে ধরে সক্কলে পিঠটান দিল!
দেখার মধ্যে দেখল খানিক মন্ত্রীনেতার ঝাকমারি
সঙ্গে তাঁদের চণ্ডচ্যালার লম্ফঝাঁপান দিগদারি।

মাসের পরে মাস ধরে যে যজ্ঞমেলার অ্যারেঞ্জমেন্ট
কয় মিনিটেই ফুরায় গেল ফুচকার প্রায়, আপ ইট ওয়েন্ট।

ভেবেই ছিলাম আসবে সুদিন যুগন্ধরের পথ ধরে
কোথায় বা কী, ভূতের ফাঁকি, মিলিয়ে গেল ফস্‌ করে…

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 5228 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...