চৈতালী চট্টোপাধ্যায়ের লেখা

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়

নেশা-মেশা উদ্ধার

 

ছোটবেলা, অথচ নিষিদ্ধ ফলে কামড় দেয়ার ইচ্ছে যখন ষোলআনা, ঠিক সে-সময়, অর্থাৎ সত্তর দশকের গোড়ার দিকে, উনিশশো বাহাত্তর-তিয়াত্তর সাল নাগাদ, সম্ভবত, রজার মুর-এর জিরো জিরো সেভেন হিসাবে আগমন। জেমস বন্ডের সিনেমা, তখনও আমার দেখা, কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, অথচ আফ্রিকান সাফারি, কিংকং, টার্জান, এগুলো তখন আর আমার রুপোলি পর্দা থাকছে না শুধু, আমি উত্তম-সুচিত্রা দেখার অনুমতি পাব-পাব করছি। কিন্তু, জেমস বন্ড? নেভার! বাড়িতে টিভিও ছিল না যে লুকিয়ে দেখে নেব। কিংবা, ইউ টিউব। কলেজের চৌকাঠে পা রেখেই, বন্ধুদের হাত ছুঁয়ে একদৌড়ে পৌঁছে গেলাম নিউ এম্পায়ার, লাইটহাউস, গ্লোব, টাইগার…..। হ্যাঁ, যৌন-সুড়সুড়ি-দেয়া ডিটেকটিভ তো আমি তার আগে কখনও দেখিনি, শরদিন্দু, আগাথা ক্রিস্টি আর সত্যজিৎ রায়ের কল্যাণে, সব গোয়েন্দাদেরই কেমন যেন ব্রাক্ষ-ব্রাক্ষ ভাব ছিল। কিন্তু জেমস বন্ড, মানে রজার মুর…… আহা! লাইসেন্স টু কিল! মনে-মনে উচ্চারণ করলেই, ঘোর লাগে। দেখি। আর শিহরিত হই। আমার স্পষ্ট মনে আছে, হাত দিয়ে নয়, মেয়েদের পোষাকের চেন খুলতে, রজার মুর অন্য কী একটা ডিভাইস ব্যবহার করতেন যেন! শরীরী প্রেমে পড়তেন ঝটাপট, আমি তো হাঁ করে চেয়ে থাকতাম, কখন জেমস বন্ডের রোমহর্ষক কার্যকলাপের গায়ে প্রজাপতির মতো সুন্দরী কেউ বসবে বা শোবে!

এ-সবের মধ্যের মেল শভিনিজম, নারী-অপমান, বুঝতে পেরেও কেন যেন বুঝতে চাইতাম না। সে ওই রজার মুর-এর মাদক কি অন্যকিছু, আজও জানি না!

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4661 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...