
পাঁচটি কবিতা
এটা চাহিদার ব্যাপার
আপনি কিন্তু আমার হিংসাকে একদম আমলে নিচ্ছেন না
মদ খাই না কিন্তু আমি মদ্যপ
দয়া করে আমাকে একটু গালাগালি করুন তো
আজকের সিঁড়িঘর আর সেদিনের আঁতুরঘর কোনও দিকেই মনোযোগী হতে পারছিনে
দায় নেই দহন নেই আকাশ উধাও
তারাব্যবসায়ীর চিকচিকে চোখ জেল্লাদার অর্গানিক কোরিওগ্রাফি
ঠিকানা ছাড়া ওপরতলায় এসে আপনার মুখ দেখেই বুঝেছি আপনি শিশু
পৃথিবীর অন্যসব শিশুর মতো শিশুমুখ
তারামাছ আর সমুদ্র পারস্পরিক নির্ভরশীলতা সত্ত্বেও
দ্বাদশ শতাব্দীর চূর্ণবিহারের অগ্নিস্ফুলিঙ্গে সমাচ্ছন্ন
যিশুর নৈশভোজের দু-হাজার বছর পর আজ আমি কথা বলব জল নিয়ে
জল জলোচ্ছ্বাস জলাতঙ্ক
চোখ বন্ধ করে ভাবুন তো এরা পরস্পর কি অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কিত
ঝাড়বাতিটা দুলছে দুলছে দেওয়াল অথবা ছাদ কাকে সে চুমু খাবে
স্বাতন্ত্র্যবোধক কেন আমরা দুশ্চিন্তার পাথর দিয়ে চেপে রাখব
আর পবিত্র রজঃস্বলা ঝর্ণা
মানুষের জন্মান্তরবাদের চইচই কুলকুচি নিরন্তর প্রতিধ্বনিময় প্রাসাদে
আপাতত আপনি আপনার পাছাটা সামলে রাখুন
পাণ্ডুর জোসনা আমরা অনেকগুলো কুকুর
অসুস্থ ক্ষিপ্ত ক্ষুধার্ত
চোখ কান খোলা রাখুন বিধবার ঊরুদেশময় শিল্পপরমায়ু
গর্ভনিরোধক সত্ত্বেও একসময় দেখবেন দাঁত গজিয়েছে কখন
আপনার নিজের পাছায়
দাঁত আপনাকে কামড়াবে কিন্তু আপনি মনেও করতে পারবেন না প্রাথমিকে
সেই কবি-কবি শিক্ষক কী বলেছিলেন
কাঁটা
কাজের ফাঁকে ফাঁকে
আমি তাকে বলেছি
আমার ভালবাসার মেয়েটির কথা
সে দেখিয়েছে
তার প্রিয় পুরুষের নখের দাগ
মেয়েটির ভিতর বড় হচ্ছে
আমার আগুনের কাঁটালতা
পুরুষের কাছ থেকে সে উপহার পেয়েছে
রাতের কোলাহল
কাজের ফাঁকে ফাঁকে
কোলাহল
কাজের ফাঁকে ফাঁকে
নখের দাগ
কিন্তু আমরা কীভাবে জানব
কেন চায়ের ধোঁয়া আকাশকে ঢেকে ফেলেছে
কেন রাতজাগা পাখিদের সঙ্গে
চাঁদের মাখামাখি
আমি তাকে বলেছি
নিয়ম আর সাদা কাগজের গর্জনে
সত্যি কথাটা আর বলাই হবে না
সত্যি কথাটা কী
আমি তাকে বলেছি
এ বিষয়ে আমরা কিছু জানিই না
কাজের ফাঁকে ফাঁকে
বৃষ্টি
কাজের ফাঁকে ফাঁকে
বৃষ্টি ছিল না
আর থাকলেও
এরকম বৃষ্টি তো ছিল না
বৃষ্টি
বৃষ্টির কুকুর
আমার ভালবাসার মেয়েটি
তার ভালবাসার পুরুষটি
দুটিই
আমাদের হারানো বাঁকুড়ার ঘোড়া
আমরা তাদের খুঁজছি
খুঁজে চলেছি
পরস্পর
আমাদের দুজনের ভিতর
খুকি
ছেলেটার ছেলেমানুষিই এই হযবরল-র জন্য দায়ী:
চালের বাতায় মুরগিটা কক্ কক্ করে ডাকছে
পেট ফেটে ডিম না বেরোনো অব্দি তার স্বস্তি নেই
ও-বাড়ির নতুন বউ কলপাড়ে বালতিটা ফেলে দিলে
ঝনঝন ঝনঝন শব্দে তার প্রতিবাদ হল
আর তখনই হাবা কোথাকার, বুদ্ধু
আমাকে জঙ্গল ভেবে
বউপাখি, মৃগনাভি, লতায় লটকে থাকা নরম জোনাকপোকা
খুঁজতে লাগল
পেয়েও অনবরত খুঁজতে লাগল
খুঁজতে লাগ…
দমকা বায়ুর সাথে মার চোখ স্থির
বাড়ি কিছুদিন গুম; কাপ, প্লেট, বাজারের থলে
নিজের নিজের মতো স্থান বদলায়
হঠাৎ সানাই এল দুর্গত বাড়িতে
আত্মীয়স্বজন পাড়াপড়শির জন্য মর্ত্যে ইন্দ্রসভা
টুকটুকে পুতুলের মতো আমাকে সাজিয়ে
তুলে দেওয়া হল
নতুন টাকার মতো
আনকোরা মচমচে এক ছেলের হাতে
রাতে তার মুখ ভাল করে দেখার আগেই
আমাকে সে শুইয়ে দিল বিছানায়
তারপর ছেলেমানুষের মতো কী কী খুঁজল
তা দেখতে এল না কেউ
কেউ দেখতে এল না
লালন
গত ছয় দিন ধইরা আমি শুনতেছি
পিওর প্যাশন্স নিয়া
প্রমিজ করছিলাম
তোমারে
যে আমি লালন শুনব
শুনতেই থাকব
যতক্ষণ না খুঁইজ্জা পাই
আর
দু-হাতে খামচাইয়া ধরি দুইটা অণ্ডকোষ
জ্যুসি
ক্রিস্টাল
দুইটা অণ্ডকোষ
তোমার
আর তোমার লালনের
ঘোড়ার গাড়ি
বনের মধ্যে আমরা ছিলাম একটা ঘোড়ার গাড়িতে
মা বাবা আর তিন ভাইবোন
সন্ধ্যা
সন্ধ্যায় কোনও ঘোড়াকে ঘাস খাওয়ানো যায় না
আর ঝড়ে পড়লে ঘোড়ার ছোটার গতি বাড়ে
কেন বাড়ে
যেহেতু ঝড়কে সে-সময় সরাইখানায় ঢোকানো যাবে না
আর জানালাটানালা ছাড়া যে কোনও সন্ধ্যাই মারাত্মক
এখন আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন— সহিস তখন কোথায় ছিল